শিগগির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে চান না ট্রাম্প
Published: 22nd, October 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মধ্যে শিগগিরই সরাসরি কোনো বৈঠক হচ্ছে না। গতকাল মঙ্গলবার হোয়াইট হাউস থেকে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। এদিন রাতেই পাল্টাপাল্টি ব্যাপক হামলা চালিয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। এতে ইউক্রেনে অন্তত ছয়জন নিহত হয়েছেন।
পুতিনের সঙ্গে সোমবার ফোনালাপ করেন ট্রাম্প। ওই ফোনালাপে হাঙ্গেরিতে দুজনের মধ্যে বৈঠকের বিষয়ে ঐকমত্য হয়। ক্রেমলিন থেকে জানানো হয় যে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। মূলত রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধ থামানোর লক্ষ্যে এই বৈঠকের কথা ছিল। এর আগে আলাস্কায়ও সরাসরি বৈঠক করেছিলেন দুই নেতা।
ফোনালাপের পরদিন হোয়াইট হাউস জানায়, পুতিনের সঙ্গে শিগগিরই বৈঠকের কোনো পরিকল্পনা নেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের। কারণ, তিনি ব্যর্থ কোনো বৈঠক করতে চান না। এ বিষয়ে মস্কোর মতও একই। তবে এমন বৈঠকের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন রুশ কর্মকর্তারা। ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেছেন, বৈঠকের কোনো দিন নির্ধারণ হয়নি। আর প্রস্তুতির জন্য সময় প্রয়োজন।
ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে শিগগিরই বৈঠকের বিষয়টি নাকচ করা হলেও, মস্কোর দিক থেকেও একই পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না, তা নিশ্চিত করতে পারেননি রাশিয়ার পররাষ্ট্র উপমন্ত্রী সের্গেই রিয়াবকভ। রয়টার্সকে তিনি বলেন, বৈঠকের প্রস্তুতি এখনো নেওয়া হচ্ছে। তাঁরা বড় কোনো বাধা দেখতে পাচ্ছেন না। এটি একটি কঠিন প্রক্রিয়া। তবে এটাই কিন্তু কূটনীতিকদের কাজ।
বৈঠক বিলম্বিত হওয়ার খবর এমন সময় এল, যখন ইউক্রেনের সঙ্গে শান্তিচুক্তির জন্য নিজেদের পুরোনো শর্তগুলোর ওপর আবার জোর দিচ্ছে মস্কো। শর্তগুলোর একটি হলো ইউক্রেনের দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলজুড়ে থাকা পুরো দনবাস এলাকা রাশিয়ার কাছে ছেড়ে দেওয়া। যদিও যুদ্ধক্ষেত্রে সম্মুখসারি বরাবর সংঘাত থামানোর যে প্রস্তাব ট্রাম্প দিয়েছেন, তারও বিরুদ্ধে যায় এসব শর্তগুলো।
এদিকে ট্রাম্প–পুতিন বৈঠকের পেছানোর খবর আসার পর মঙ্গলবার রাতে পাল্টাপাল্টি ব্যাপক হামলা চালিয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেন। ইউক্রেনের সরকারি কর্মকর্তারা আজ বুধবার জানিয়েছেন, রাশিয়ার হামলায় রাজধানী কিয়েভ ও আশপাশের এলাকায় ছয়জন নিহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে। হামলায় অনেক এলাকা বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সুনামগঞ্জে যাদুকাটা থেকে অবৈধভাবে বালু তোলায় ছয়জনের কারাদণ্ড
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীতে অবৈধভাবে বালু তোলার অভিযোগে ছয় ব্যক্তিকে কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গতকাল সোমবার রাত ১২টা থেকে আজ মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৪টা পর্যন্ত নদীতে অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাঁদের সাজা দেওয়া হয়।
উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে গতকাল রাতে দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে নদীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালিত হয়। বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১০-এর আওতায় পরিচালিত এই অভিযানে বালুভর্তি নৌকাসহ ছয়জনকে আটক করা হয়।
আরও পড়ুনযাদুকাটা নদীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে ৫১ জনের বিরুদ্ধে মামলা১৫ অক্টোবর ২০২৫ছাতক উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোজাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে অবৈধ বালুসহ একটি ট্রলার জব্দ এবং চারজনকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে চারজনকেই এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই রাতে দিরাই উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) জিয়াউল হাসানের নেতৃত্বে পরিচালিত অপর অভিযানে যাদুকাটা নদীর তীরের মাটি কাটার অভিযোগে দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়। তাঁদের প্রত্যেককে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্র জানায়, তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদীতে সুনামগঞ্জের সবচেয়ে বড় দুটি বালুমহাল আছে। মামলা-সংক্রান্ত জটিলতায় পাঁচ মাস বন্ধ থাকার পর চলতি মাসে আবারও বালু উত্তোলন শুরু হয়। কিন্তু শুরুতেই লাউড়েরগড় সীমান্তসংলগ্ন এলাকায় ইজারার বাইরে গিয়ে একটি পক্ষ অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে। ৬ থেকে ১১ অক্টোবর পর্যন্ত ওই এলাকায় বালু লুটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর ও ইজারাদার তিনটি মামলা করেছে।
আরও পড়ুনসুনামগঞ্জে বালু লুট : আসামির তালিকায় আছে আন্দোলনকারীদেরও নাম১৭ অক্টোবর ২০২৫স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, নদীর পাড় কেটে বালু তোলার কারণে আশপাশের গ্রাম ও স্থাপনাগুলো ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, এ বছর যাদুকাটা নদীর দুটি বালুমহাল প্রায় ১০৭ কোটি টাকায় ইজারা দেওয়া হয়েছে। তবে মামলা-সংক্রান্ত জটিলতায় ইজারাদারদের মহাল বুঝিয়ে দিতে দেরি হয়। চলতি মাসে প্রশাসন মহাল হস্তান্তরের পর সেখানে আবার বালু তোলা শুরু হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, সুনামগঞ্জের কোথাও অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করতে দেওয়া হবে না। এ জন্য নিয়মিত অভিযান চলবে।