আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন লক্ষ্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেছেন, ‘আমরা এখন নির্বাচনের সড়কে ঢুকেছি। দেশের মানুষ ধানের শীষের অপেক্ষায় আছে।’

আজ বুধবার বিকেলে নগরের নিউমার্কেট মাড়ে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম বার্ষিকী উপলক্ষে বিজয় শোভাযাত্রা পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির উদ্যোগে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘আজকের জনসভা, মিছিল প্রমাণ করেছে দেশের মানুষ ধানের শীষের পক্ষের শক্তি। দেশের মানুষ বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী শক্তির পক্ষে। দেশের মানুষ শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সৈনিক, বেগম খালেদা জিয়ার সৈনিক, তারেক রহমানের নেতৃত্বে নতুন বাংলাদেশ গড়তে চায়।’

আমীর খসরু আরও বলেন, আজ থেকে শপথ নিতে হবে, সবাইকে যার যার এলাকায় যেতে হবে, মানুষের ঘরে ঘরে যেতে হবে। আগামী দিনের যে কর্মসূচি, রূপরেখা, দেশের মানুষের সব রাজনৈতিক, সাংবিধানিক, গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরিয়ে দেওয়ার যে রূপরেখা বিএনপি তৈরি করেছে, তা মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে হবে।

শেখ হাসিনার নানা সমালোচনা করে তিনি বলেন, আবারও কিছু কিছু শক্তি নেমেছে দেশের মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়ে জনগণকে বাইরে রেখে তাদের মতো করে সিদ্ধান্ত নিয়ে, তাদের মতো করে দেশ চালাতে। এটা বাংলাদেশের মানুষ কোনো দিনও গ্রহণ করবে না।

নগর বিএনপির সদস্যসচিব নাজিমুর রহমানের সভাপতিত্বে ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব হেলাল উদ্দিন, নগর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শওকত আজম খাজার পরিচালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন মেয়র শাহাদাত হোসেন, কেন্দ্রীয় বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান, সহসাংগঠনিক সম্পাদক মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দীন, হারুন অর রশীদ, শ্রম সম্পাদক এ এম নাজিম উদ্দীন, নগর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম, কেন্দ্রীয় বিএনপির সদস্য হুম্মাম কাদের চৌধুরী প্রমুখ।

আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরীর নেতৃত্বে বিজয় শোভাযাত্রা নিউমার্কেট মোড় থেকে শুরু হয়ে কোতোয়ালি মোড়, লালদীঘি, বকশির হাট, আন্দরকিল্লা, চেরাগি মোড় হয়ে প্রেসক্লাবের সামনে এসে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। তবে নগরের প্রাণকেন্দ্র নিউমার্কেট মোড়ে সমাবেশস্থল হওয়ায় আজ দুপুরের পর থেকে আশপাশের এলাকায় যানজটের ভোগান্তিতে পড়েন লোকজন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র স র সদস য রহম ন

এছাড়াও পড়ুন:

মাদক পাচার রোধে সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার: স্বরাষ্ট্র

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, মাদক পাচার সমূলে বিনষ্ট করার জন্য সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিচ্ছে সরকার।

রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের কাছে এসব কথা জানান। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সভাপতিত্বে সভা অনুষ্ঠিত হয়।

মাদককে দেশের জন্য সবচেয়ে বড় সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, মাদক আসে এবং এর বিনিময়ে আমাদের দেশ থেকে চাল, সার এবং ওষুধসহ অন্যান্য সামগ্রী পাচার হয়ে যায়। 

তিনি বলেন, মাদক পাচার শুধু কক্সবাজার বা চট্টগ্রাম থেকেই হচ্ছে না বরং বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা- এসব এলাকা থেকেও চাল ও সার পাচার হয়ে যাচ্ছে। 

আরাকান আর্মির যোগসূত্র উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, মিয়ানমারের আরাকান আর্মি মূলত মাদকের উপরেই বেঁচে আছে। এই পাচার বন্ধ করার জন্য বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিশেষভাবে নৌ বাহিনী এবং কোস্টগার্ডকে সাগরে নিয়োজিত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যেন তারা পাচার বন্ধ করতে পারে।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, একটি ভালো খবর হলো, মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান বেড়েছে। মাদকদ্রব্য আটকের ঘটনা বেড়ে যাওয়ায় মাদকের দামও বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি বলেন, দেশের নিজস্ব সম্পদ রক্ষায় কোনো অবস্থাতেই যেন সার, চাল ও অন্যান্য সামগ্রী দেশ থেকে পাচার না হতে পারে, সেজন্য সরকার সর্বাত্মক ব্যবস্থা নিতে প্রস্তুত।

তিনি জানান, সভায় একটি গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সমস্যা নিয়েও আলোচনা হয়। নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যানের সম্পত্তি বিক্রি সংক্রান্ত একটি সমস্যার সমাধান হয়েছে। নাসা গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রায় ২৫০ কোটি টাকা সমস্যার সমাধানে তার সম্পত্তি বিক্রি করার জন্য স্বাক্ষর করে দিয়েছেন। এর আগে তিনি বিক্রি করতে রাজি হননি, তবে গতকাল তিনি রাজি হয়েছেন। এর ফলে শ্রমিক ভাইদের সমস্যা সমাধান হবে এবং তারা তাদের বকেয়া টাকা পেয়ে যাবেন।

পূজায় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি বলেন, আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সভায় আলোচনা হয়েছে। আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর থেকে পূজামণ্ডবগুলোতে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন শুরু হবে। এবার মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয় থেকে প্রায় ৮০ হাজার নারী কর্মীকেও কাজে লাগানো হবে।

তিনি আশ্বস্ত করে বলেন, এবার দেশের সব জায়গায় পূজা নির্বিঘ্নে অনুষ্ঠিত হবে।

নির্বাচন নিয়ে প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেশ স্বাধীন এবং গণমাধ্যমও স্বাধীন। নির্বাচন খুব শান্তিপূর্ণভাবে এবং উৎসবমুখর হবে। 

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, কৃষকরা আলুর ন্যায্য দাম পাচ্ছেন না, যা সংবাদপত্রে সেভাবে আসছে না। যদি কৃষকরা আলুর দাম না পান এবং তাদের খরচ না উঠাতে পারেন, তবে আগামী বছর তারা আলু চাষাবাদ নাও করতে পারে, যার ফলে ভবিষ্যতে আলুর দাম আবার বেড়ে যেতে পারে। 

তিনি জানান, কোল্ড স্টোরগুলোর জন্য একটি মূল্য নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও তা খুব একটা কার্যকরী হচ্ছে না । এজন্য সাধারণ মানুষকে আলু খাওয়াটাও বাড়াতে হবে বলে পরামর্শ দেন তিনি।

ঢাকা/এএএম/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ