‘তাড়াতাড়ি ঘুম ভাঙছিল, না হলে সব জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যেত পানিতে’
Published: 7th, August 2025 GMT
ভোরে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গিয়েছিল। ঘুম থেকে উঠে চট্টগ্রাম নগরের চকবাজারের মুহম্মদ আলী শাহ লেনের বাসিন্দা আবদুল হামিদ দেখেন, বাসায় স্রোতের মতো পানি ঢুকছে। সবাই মিলে দ্রুত ঘরের জিনিসপত্র সরিয়ে নেন। তিনি বলেন, ‘ভাগ্য ভালো তাড়াতাড়ি ঘুম ভাঙছিল, না হলে ঘরের সব জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে যেত পানিতে।’
আবদুল হামিদদের এলাকায় ভোর পাঁচটা থেকে পানি উঠতে শুরু করে। পানি জমে ছিল সকাল সাতটা পর্যন্ত। পানি নামার পর নোংরা ও ময়লা পানি সরিয়ে নিতে হয় এলাকার মানুষদের।
খাল ও নালা-নর্দমা পরিষ্কারে পরিচ্ছন্নতা বিভাগের কর্মীদের গাফিলতি নিয়ে আগের দিন বুধবার সন্ধ্যায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোর রাতের ভারী বৃষ্টিতে চকবাজারের মতো নগরের বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
সকালে রাস্তাঘাট ও অলিগলি পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় দুর্ভোগে পড়েন কর্মস্থলমুখী মানুষ। প্রবল বর্ষণ ও জলাবদ্ধতার কারণে সন্তানকে নিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যেতে ভোগান্তিতে পড়তে হয় অভিভাবকদের।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম নগরের আমবাগান কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বুধবার সকাল ৯টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৮১ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়। এর মধ্যে গতকাল দিবাগত রাত ৩টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ছয় ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ৫০ মিলিমিটার। মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে এই বৃষ্টি হচ্ছে।
১০ দিনের ব্যবধানে চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন এলাকায় আবারও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এর আগে গত ২৮ জুলাই ১০২ মিলিমিটার বৃষ্টিতে নগরের অনেক এলাকায় হাঁটু থেকে কোমরসমান পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে যায় নগরের রাস্তাঘাট ও অলিগলি, বসতঘর।
গত তিন বছরে ৩০ বার ডুবেছে চট্টগ্রাম নগর—গত বছর (২০২৪) ৬ বার, ২০২৩ সালে ১৪ বার ও ২০২২ সালে ১০ বার। আর চলতি মৌসুমে অন্তত চার দফা তলিয়ে যায় নগরের অনেক এলাকা।
আজ ভোররাতের ভারী বৃষ্টিতে নগরের বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, চকবাজার, শুলকবহর, কাতালগঞ্জ, কাপাসগোলা, বাদুড়তলা, জিইসি মোড়, প্রবর্তক মোড়, ঝাউতলা, জাকির হোসেন সড়কের রেলক্রসিং, চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা, চান্দগাঁওয়ের ফরিদারপাড়া, নয়াবাজার, মৌসুমি আবাসিক এলাকা, আগ্রাবাদ বাণিজ্যিক এলাকাসহ অনেক এলাকায় গোড়ালি থেকে হাঁটুসমান পানি জমে ছিল।
নগরের ঝাউতলা এলাকার বাসিন্দা শহীদুল ইসলাম বলেন, সকালের বৃষ্টিতে তাঁদের এলাকায় হাঁটুসমান পানি উঠেছিল। পানি জমে ছিল দেড় থেকে দুই ঘণ্টা। অফিসে যেতে শুধু একটা জায়গায় না, অন্তত চারটি জায়গায় পানি জমে থাকতে দেখেন। কিছু দূর পরপর পানি জমে থাকায় অফিসে যেতেও দেরি হয়।
চট্টগ্রাম নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনে সিডিএ দুটি, সিটি করপোরেশন একটি, পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এসব প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ৩৮৯ কোটি টাকা। গত ৮ বছরে প্রকল্পগুলোর কাজে খরচ হয়েছে ৯ হাজার ৮৫২ কোটি ১৩ লাখ টাকা। আট বছর ধরে এসব প্রকল্পের কাজ চললেও এখনো নতুন খাল খননের পুরো কাজ, অন্তত ১৪টি জলকপাট (স্লুইসগেট), ১০টি খালের সংস্কার ও প্রশস্তকরণ, খালের ভেতরে বালুর ফাঁদ (সিল্টট্র্যাপ), নালার নির্মাণকাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি।
গত বুধবার সন্ধ্যায় সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে আয়োজিত এক সভায় মেয়র শাহাদাত হোসেন বলেন, খাল-নালা পরিষ্কারে গাফিলতি রয়েছে। ময়লা–আবর্জনা পরিষ্কারে গাফিলতি রয়েছে। এতে সিটি করপোরেশনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রকল প এল ক য় ক এল ক
এছাড়াও পড়ুন:
রাষ্ট্রদূত হলেন দুই সেনা কর্মকর্তা
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল কবীর আহাম্মদ ও বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেনকে রাষ্ট্রদূত পদে নিয়োগ দিয়েছে সরকার।
রোববার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাষ্ট্রদূত পদে প্রেষণে নিয়োগের জন্য তাঁদের চাকরি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ন্যস্ত করা হয়েছে।
এই আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়।