সাধের কক্সবাজার দেখা হলো না কুমিল্লার আমিনুল হকের পরিবারের
Published: 5th, November 2025 GMT
সাধের কক্সবাজার দেখা হলো না কুমিল্লার আমিনুল হকের পরিবারের। সমুদ্র দেখার আনন্দযাত্রা পরিণত হলো মৃত্যুর মিছিলে। কক্সবাজার পৌঁছার মাত্র ৫০ কিলোমিটার আগে চকরিয়ায় ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় নিঃশেষ হয়ে গেল পুরো পরিবার।
বুধবার (৫ নভেম্বর) সকাল পৌনে ৯টার দিকে কক্সবাজার-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চকরিয়ার হাঁসেরদিঘী ঢালায় যাত্রীবাহী বাস ও পর্যটকবাহী মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান ওই পরিবারের পাঁচজন।
আরো পড়ুন: চকরিয়ায় বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে একই পরিবারের নিহত ৫
নিহতরা হলেন- আমিনুল হকের বোন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ ১৫তম ব্যাচের ছাত্রী সাদিয়া হক, শ্যালিকা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রী ফারজানা মজুমদার, আমিনুলের স্ত্রী, বৃদ্ধা মা এবং শাশুড়ি।
গুরুতর আহত হয়েছেন- আমিনুল হক, তার শিশুকন্যা এবং শ্যালক। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে মালুমঘাট খ্রিস্টান হাসপাতালে পাঠান। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
নিহতদের বাড়ি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার চান্দিশকরা গ্রামে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কুমিল্লা থেকে কক্সবাজারগামী পর্যটকবাহী মাইক্রোবাসটির সঙ্গে চকরিয়ার হাঁসেরদিঘী এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা মারছা পরিবহনের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে দুমড়েমুচড়ে যায় মাইক্রোবাসটি। ঘটনাস্থলেই পাঁচজনের মৃত্যু হয়।
মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ওসি মেহেদী হাসান বলেন, “দুর্ঘটনার খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহায়তায় উদ্ধার অভিযান চালাই। আহতদের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে এবং নিহতদের মরদেহ মালুমঘাট খ্রিস্টান হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, দ্রুতগতি এবং অসতর্কভাবে গাড়ি চালানোর কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে। তদন্তের পর পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব র র চকর য়
এছাড়াও পড়ুন:
দুই দিনে যেতে পারেননি কোনো পর্যটক, কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন জাহাজ চলাচল অনিশ্চিত
নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ পর্যটকদের জন্য খুলে দিয়েছে সরকার। সরকারি ঘোষণায় বলা হয়েছিল, কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন দুই হাজার পর্যটক যেতে পারবেন। কিন্তু দুই দিনে একজন পর্যটকও যেতে পারেননি। কারণ, পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল বন্ধ। কবে থেকে জাহাজ চলাচল শুরু হবে, তা নিয়েও কেউ নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না।
কক্সবাজার শহরের বাঁকখালী নদীর নুনিয়াছটা বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকেই পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াতের কথা। এ জন্য ১ হাজার ৭০০ জন ধারণক্ষমতার দুটি জাহাজ—এমভি কর্ণফুলী ও এমভি বার আউলিয়া চলাচলের অনুমতি পেয়েছে। কিন্তু গতকাল শনিবার ও আজ রোববার ওই রুটে কোনো জাহাজ চলেনি। আরও চারটি জাহাজ চলাচলের অনুমতির জন্য আবেদন করেছে।
সরকারি প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে পর্যটকেরা শুধু দিনের বেলায় সেন্ট মার্টিন ভ্রমণ করতে পারবেন, রাত যাপন করা যাবে না, তবে ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে রাতযাপনের সুযোগ থাকবে। বিআইডব্লিউটিএ ও পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান সেন্ট মার্টিনে যেতে পারবে না। পর্যটকদের বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকতে হবে। কিউআর কোডবিহীন টিকিট নকল বলে গণ্য হবে।
সেন্ট মার্টিনের পরিবেশ অক্ষুণ্ন রাখতে রাতের বেলায় সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি, বারবিকিউ পার্টি, কেয়াবনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা বিক্রি, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক-ঝিনুকসহ জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সৈকতে মোটরসাইকেল বা সি-বাইকসহ মোটরচালিত যান চলাচলও বন্ধ। নিষিদ্ধ পলিথিন বহন এবং একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক (চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর মিনিপ্যাক, পানির বোতল ইত্যাদি) ব্যবহারে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
পর্যটক নেই, ফাঁকা ঘাটআজ সকাল সাতটায় নুনিয়াছটা বিআইডব্লিউটিএ জেটিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, কোনো যাত্রী নেই। বাঁকখালী নদীতেও পর্যটকবাহী কোনো জাহাজ দেখা যায়নি। ঘাটে অবস্থান করছিলেন পরিবেশ অধিদপ্তর ও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। জানা যায়, গতকাল সকালে তিনজন পর্যটক টিকিট কেটে সেন্ট মার্টিন যাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন, পরে জাহাজ না থাকায় ফিরে যান।
পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের উপপরিচালক খন্দকার মাহবুব পাশা প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ১ নভেম্বর থেকে তিন মাসের জন্য সেন্ট মার্টিন উন্মুক্ত করা হয়েছে। কিন্তু জাহাজ চলাচল বন্ধ থাকায় গত দুই দিনে কোনো পর্যটক যেতে পারেননি। নভেম্বরে দিনে গিয়ে দিনে ফেরার নিয়ম থাকায় সময় ও সুযোগ কম, আবার দীর্ঘ জাহাজযাত্রার কারণে অনেকেই নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। তারপরও আমরা সরকারি নির্দেশনা বাস্তবায়নে ঘাটে অবস্থান করছি।’
জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, টানা ৯ মাস বন্ধ থাকার পর ১ নভেম্বর থেকে তিন মাসের জন্য কক্সবাজার-সেন্ট মার্টিন রুটে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়। তবে উখিয়ার ইনানী নৌবাহিনীর জেটিঘাট কিংবা টেকনাফের কোনো স্থান থেকে এখনো জাহাজ চলাচলের অনুমতি নেই।
জেলা প্রশাসক মো. আবদুল মান্নান বলেন, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সংকট নিরসনের চেষ্টা চলছে।
গত ডিসেম্বরে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ ছেড়ে কক্সবাজারের পথে পর্যটকবাহী একটি জাহাজ