বিচ্ছেদের গুঞ্জন উড়ালেন পূর্ণিমা
Published: 22nd, October 2025 GMT
কিছু দিন ধরে গুঞ্জন উড়ছে, স্বামী আশফাকুর রহমান রবিনের সঙ্গে ভেঙে গেছে জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা পূর্ণিমার সংসার। বুধবার (২২ অক্টোবর) বিকেলে নিজের ফেসবুক পেজে স্বামীর সঙ্গে তোলা একটি ছবি পোস্ট করে সেই গুঞ্জনের আগুনে জল ঢাললেন এই অভিনেত্রী।
ছবিটিতে দেখা যায়, একটি রেস্তোরাঁয় স্বামীর হাত ধরে হাস্যোজ্জ্বল মুখে বসে আছেন পূর্ণিমা। এ ছবিই স্পষ্ট করে যে—বিচ্ছেদের খবরটি নিছক গুজব, এখনো একসঙ্গেই সুখে আছেন তারা। যদিও এ বিষয়ে সরাসরি কোনো বক্তব্য দেননি পূর্ণিমা।
আরো পড়ুন:
সুখ-দুঃখ মিলিয়েই জীবন, জন্মদিনে পূর্ণিমা
২০২২ সালে বিয়ে করেন পূর্ণিমা ও আশফাকুর রহমান রবিন। পূর্ণিমার স্বামী রবিন পেশায় বহুজাতিক একটি প্রতিষ্ঠানের মার্কেটিং বিভাগের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। পড়াশোনা করেছেন অস্ট্রেলিয়ার সিডনির একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
এর আগে পূর্ণিমার একটি ইঙ্গিতপূর্ণ ফেসবুক পোস্ট থেকেই শুরু হয় নানা জল্পনা। সেখানে তিনি লিখেছিলেন, “মানুষের ভিড়ে কিছু মুখ থাকে, যাদের আমরা আপন ভেবে হৃদয়ের দরজা খুলে দিই। কিন্তু সময়ের কঠিন পরীক্ষায় টের পাই, তারা আসলে সম্পর্কের আবরণে লুকিয়ে থাকা বিষধর সাপ। এদের থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়, কারণ মিথ্যা সম্পর্কের ভিড়ে নিজেকে হারিয়ে ফেলার চেয়ে নিঃসঙ্গতা অনেক বেশি শান্ত, নিরাপদ ও মর্যাদাপূর্ণ।”
এই পোস্টের পর অনেকে ধরে নিয়েছিলেন, স্বামী রবিনের সঙ্গে পূর্ণিমার সম্পর্ক ভেঙে গেছে। কিন্তু বুধবারের পোস্টে অভিনেত্রী পরিষ্কার করে দিয়েছেন—সবকিছু ঠিক আছে, তারা এখনো একসঙ্গে আছেন।
কাজের সূত্র ধরেই পূর্ণিমা ও রবিনের পরিচয়। তিন বছরের বন্ধুত্ব থেকে গড়ে ওঠে প্রেম, আর সেই সম্পর্কই পরিণয় পায় ২০২২ সালে।
উল্লেখ্য, আশফাকুর রহমান রবিনের সঙ্গে এটি পূর্ণিমার দ্বিতীয় বিয়ে। এর আগে ২০০৭ সালের ৪ নভেম্বর আহমেদ জামাল ফাহাদকে বিয়ে করেছিলেন পূর্ণিমা। ২০১৪ সালে এ সংসার আলো করে জন্ম নেয় একটি কন্যাসন্তান।
বর্তমানে চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন উভয় মাধ্যমেই সক্রিয় পূর্ণিমা। পারিবারিক জীবনের পাশাপাশি কাজেও সমান মনোযোগী এই অভিনেত্রী।
ঢাকা/রাহাত/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র রব ন র
এছাড়াও পড়ুন:
এসএসসির পর একসঙ্গে এইচএসসি পাস করলেন বাবা–মেয়ে, ফলে এগিয়ে বাবা
নাটোরের লালপুরে মেয়ে হালিমা খাতুনের (১৮) সঙ্গে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেন বাবা আবদুল হান্নান (৪৩)। ফলাফলে মেয়েকে ছাড়িয়ে গেছেন বাবা। জিপিএ-৪.৩ নিয়ে পাশ করেছেন আবদুল হান্নান। অন্যদিকে তাঁর মেয়ে হালিমা পেয়েছেন ৩.৭১।
আবদুল হান্নান ও হালিমা লালপুর উপজেলার গোপালপুর পৌরসভার নারায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা। হান্নান রাজশাহীর বাঘা উপজেলার কাকড়ামারি কলেজ থেকে এবং তাঁর মেয়ে হালিমা লালপুর উপজেলার গোপালপুর ডিগ্রি কলেজ থেকে চলতি বছরের এইচএসসি পরীক্ষা অংশ নেন। এর আগে ২০২৩ সালে একসঙ্গে এসএসসি পরীক্ষায় পাস করেন তাঁরা।
হালিমা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার জন্মের আগেই আমার বাবা এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন। কিন্তু পাস করতে পারেননি। পরে ঘটনাটি জানার পর ধরেই নিয়েছিলাম, বাবা পড়ালেখায় ইতি টেনেছেন। কিন্তু ২০২৩ সালে বাবা কাউকে না জানিয়ে আবার এসএসসি পরীক্ষা দিতে বসলে ঘটনাটি আমাদের পরিবারে তো বটেই, দেশে আলোচিত হয়। এরপর বাবা পড়ালেখায় আরও সিরিয়াস (সচেতন) হন। সংসারের কাজের ফাঁকে ফাঁকে তিনি আমার সঙ্গেই পড়ালেখা করেছেন। পরীক্ষা দিয়ে আমার চেয়েও ভালো ফল করেছেন। আমি এতে মন খারাপ করিনি। বরং বাবার ফল আমাকে আরও ভালো করার উৎসাহ জুগিয়েছে।’
পড়ালেখার প্রতি নিজের আগ্রহের কথা প্রকাশ করে আবদুল হান্নান জানান, ছোটবেলা থেকে তিনি পড়ালেখায় ভালো ছিলেন। কিন্তু অভাবের সংসারে পড়ালেখার জন্য তেমন পরিবেশ পাননি। ১৯৯৮ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে বিশেষ কারণে অকৃতকার্য হন। পরিবারের প্রয়োজনে পড়ালেখা ছেড়ে গোপালপুর রেলগেটে চায়ের দোকান দিয়ে বসেন। এরপর বিয়ে করে সংসারী হন। কিন্তু মনের মধ্যে শিক্ষিত হওয়ার আগ্রহ দমে যায়নি। মেয়ের এসএসসি পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন করার সময় হঠাৎ নিজেরও পরীক্ষায় বসার ভাবনা আসে। কাউকে না জানিয়ে তাই নিজেই পরীক্ষার প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। পরীক্ষার সময় হঠাৎ বিষয়টি জানাজানি হয়। তখন আবারও অকৃতকার্য হওয়ার দুঃস্বপ্ন ভর করে।
একটু থেমে আবদুল হান্নান বলেন, তবে সৃষ্টিকর্তা নিরাশ করেননি। এসএসসি পাস করেন। এরপর প্রকাশ্যে পড়ালেখা শুরু করেন। রাজশাহীর বাঘা উপজেলার কাকড়ামারি কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষার জন্য রেজিস্ট্রেশন করেন। মেয়ের সঙ্গে বসে পড়ালেখা করতে থাকেন এবং শেষে কাঙ্ক্ষিত ফলও পান। ফলাফলে মেয়েকে টপকে যাওয়ার ঘটনা অপ্রত্যাশিত হলেও তিনি বিস্মিত হননি। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘পড়ালেখা যখন নতুন করে শুরু করেছি, তখন শেষ পর্যন্ত (মাস্টার্স) পড়বই। চাকরি করার বয়স হয়তো থাকবে না। তাতে কিছুই আসে–যায় না। আমি এই সমাজের একজন উচ্চশিক্ষিত নাগরিক হয়ে বেঁচে থাকতে চাই।’
আবদুল হান্নানের ভাবনা ইতিবাচক বলে মন্তব্য করেছেন নাটোরের জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রোস্তম আলী হেলালী। তিনি বলেন, শিক্ষালাভের কোনো বয়স নেই। আবদুল হান্নান তাঁর মেয়ে হালিমা খাতুনের সঙ্গে এইচএসসি পাস করে এ কথা প্রমাণ করেছেন। তিনি চাকরির জন্য নয়, জ্ঞান অর্জনের জন্য পড়ছেন। এটা সমাজের জন্য একটা ইতিবাচক পদক্ষেপ। তাঁদের উভয়কেই অভিনন্দন।