পাবনা-৩ আসনে বিএনপি থেকে প্রাথমিক মনোনয়নপ্রাপ্ত জাতীয়তাবাদী কৃষকদলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন সম্প্রতি তার বাড়িতে প্রতিবেশীদের নিয়ে মতবিনিময় সভা করেছেন। সেই সভায় আওয়ামী লীগের অনেক নেতা উপস্থিত ছিলেন। এমন একটি বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে সমালোচনা ঝড়। অনেকেই এটিকে নেতিবাচক হিসেবে মন্তব্য করছেন। বিএনপি দলীয় নেতাকর্মীও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

জানা গেছে, গত ২৯ জুলাই (মঙ্গলবার) সকাল আটটা থেকে সাড়ে নয়টা পর্যন্ত চাটমোহর উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের বোঁথড় গ্রামে নিজ বাসভবনে প্রতিবেশীদের সাথে মতবিনিময় করেন কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন। সেদিন বিএনপি নেতাকর্মীদের সাথে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের অনেক নেতা।

‘শিরোনামহীন রাজনীতি’ নামের একটি ফেসবুক পেজে ওইদিনের ছবিসহ একটি লেখা পোস্ট করা হয়। সেই লেখার তথ্য মতে, সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিলচলন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল কুদ্দুস, বিলচলন ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কিংকর সাহা, বিলচলন ইউনিয়ন কৃষকলীগের সহ-সভাপতি রতন ঠাকুর, উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক পালো মিয়া, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলামের বড় ভাই তয়জাল হোসেন।’

সেই মতবিনিময় সভার ছবি ও লেখা ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে সবখানে চলছে সমালোচনার ঝড়। স্থানীয় বিএনপি নেতাদের মাঝেও দেখা গেছে বিরুপ প্রতিক্রিয়া।

ফেসবুকে এইচ এম রুবেল নামের একজন মন্তব্য করেছেন ‘উনি কেন্দ্রীয় নেতা, উনি তো সবাইকে চিনবে না এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু স্থানীয় নেতারা কী করছেন? এটাই হল সব থেকে বড় প্রশ্ন। জাতি জানতে চায়।’

সোহাগ রানা নামের একজনের মন্তব্য, ‘স্থানীয় নেতারা আওয়ামী লীগের পূর্নবাসন করতে চাচ্ছে।’ সাইদুল প্রধান নামের এক ব্যক্তি বলেন, ‘দেখেতো মনে হচ্ছে আওয়ামী পুনর্বাসনের মহা উৎসব।’

এস কে জামান নামের একজন মন্তব্য করেছেন, ‘আওয়ামী লীগ পুনবার্সন করার এজেন্ডা চলছে নাকি বুঝলাম না! এই সব দৃশ্য দেখার জন্যই কি এত বছর রাজপথে ছিলাম?’

আতিকুর রহমান নামের একজন বলেন, ‘স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও এ আসনের আপামর গণ-মানুষ, প্রাথমিক মনোনয়নের নামে এখানে রাজনীতির যে প্রহসন চলছে- তা রুখে দিতে সকলেরই সামষ্টিকভাবে যৌথ সিদ্ধান্তে আসা উচিত। নচেৎ, স্থানীয় বিএনপি এবং বিএনপি করা নেতাকর্মীদের জন্য বিষয়টি অশনি সংকেতের পূর্বাভাস দিচ্ছে।’

এ বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য সচিব ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান হাসাদুল ইসলাম হীরা বলেন, ‘আমাদের দলের কথা হলো আওয়ামী লীগের কাউকে বিএনপিতে আশ্রয় প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না। তুহিন সাহেব সিনিয়র নেতা। কৃষকদল একটি বৃহৎ সংগঠন। তিনি চাটমোহরে আসার পর কৃষকদলের বেশকিছু কমিটি দিয়েছেন, যেখানে বেশিরভাগ কমিটিতে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের পুনর্বাসন করা হয়েছে। পাবনা-৩ আসনে তিনি তো মূলত নেতাকর্মী শুন্য। তার কোনো লোক নাই। তাই তিনি আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের আশ্রয় দিয়ে নিজের দল ভারী করার চেষ্টা করছেন। এটি আমাদের দলের জন্য খুবই লজ্জাজনক। তিনি দলের সিদ্ধান্তকে অবমাননা করেছেন। এখন দলের হাইকমান্ড তার বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেবে সেটি তারা ভাল জানে।’’

পাবনা-৩ আসনের সাবেক এমপি কে এম আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “বিষয়টি হতাশাজনক। এমন কাজ কাম্য নয়। এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। মানুষের কাছে নেতিবাচক মেসেজ যায়। এমন কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত। আমাদের আরো সতর্ক থাকতে হবে।”

এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন বলেন, ‘‘দলের নির্দেশে আমি পাবনা-৩ এ কাজ শুরু করেছি। সেদিন আমি আমার প্রতিবেশিদের ডেকেছিলাম। তাদের নাস্তা করার দাওয়াত দিয়েছিলাম। নন পলিটিক্যাল আয়োজন ছিল। সেখানে জামায়াত ছিল, বিএনপিসহ মহিলাদল নেতাকর্মী সবাই ছিল। আওয়ামী লীগের বড় কোনো নেতা ছিল না। কিছু সমর্থক থাকতে পারে। প্রতিবেশিদের কোনো দল হয় না। প্রতিবেশিদের ডাকছি নাস্তার দাওয়াত দিছি। আসেন, আমি আপনাদের এলাকায় নির্বাচন করতে আসছি, আপনারা দোয়া করবেন, শেষ। তারা আসছে, নাস্তা করে চলে গেছে।’’

তিনি আরো বলেন, ‘‘কোনো পলিটিক্যাল প্রোগ্রামও হয় নাই, বক্তব্যও হয় নাই, কিচ্ছু হয় নাই। এইসব যারা বলছে, তারা বলে কোনো লাভ হবে না, আপনাদেরকেও সতর্ক থাকতে হবে। প্রতিদিন রাস্তাঘাটে মানুষের মাঝে গণসংযোগ করছি, সকল শ্রেণি-পেশার শত শত মানুষের সাথে বুক মিলাচ্ছি, দোয়া চাচ্ছি। এখন কি আমি শুনবো যে আপনি কোন দল করেন, তারপর বুক মিলাবো? আমরা দল মত নির্বিশেষে সবারই ভোট প্রার্থণা করব। আর আমি প্রতিবেশিদের নিয়ে বসব, এটা নিয়ে সমালোচনা হবে। এটা ব্যাড পলিটিক্স, নোংরা পলিটিক্স।’’

ঢাকা/শাহীন/এস

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ত কর ম দ র ন ম র একজন উপস থ ত পল ট ক কর ছ ন আওয় ম ব এনপ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রুডো ও সোফি: জীবন থেমে থাকে না, হৃদয় আবার ডাকে

জাস্টিন ট্রুডো যখন রাজনীতিতে আসেন, তখন থেকেই তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে সাধারণ মানুষের আগ্রহ ছিল তুঙ্গে। বিশেষ করে তাঁর স্ত্রী সোফি গ্রেগোয়ার সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ছিল অনেকের কাছে এক আদর্শ প্রেমের গল্প। কিন্তু ২০২৩ সালের আগস্টে তাঁদের বিচ্ছেদের ঘোষণায় অনেকেই বিস্মিত হন। কারণ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাঁদের তুমুল প্রেমময় ছবি, সন্তানদের হাস্যোজ্জ্বল মুখ দেখে ভক্তরা ধারণা করেছিলেন, এমন জুটির ভাঙন কখনো সম্ভব নয়। হাতে হাত রেখে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত কাটাবেন তাঁরা। কিন্তু মানুষ ভাবে এক, হয় আর এক।

‘এক বৈশাখে দেখা হল দুজনার/ জ্যৈষ্ঠিতে হল পরিচয়/ আসছে আষাঢ় মাস মন তাই ভাবছে/ কি হয় কি হয়!’

ট্রুডো ও সোফির প্রথম দেখা বৈশাখ মাসে হয়তো হয়নি। তাঁদের দেখা হয়েছিল শৈশবে। সোফি ছিলেন ট্রুডোর ছোট ভাই মিশেলের স্কুলের সহপাঠী ও বন্ধু। এই সূত্রে ট্রুডো পরিবারে যাতায়াত ছিল সোফির। সে সময় তাঁদের মধ্যে কোনো প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠেনি। তাঁদের প্রেমের সূত্রপাত হয় অনেক বছর পরে, ২০০৩ সালে, যখন তাঁরা একটি দাতব্য অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ট্রুডোর বয়স তখন ৩১, আর সোফির ২৮।

সোফি তখন একজন টেলিভিশন ও রেডিও উপস্থাপক। ট্রুডো ছিলেন একজন শিক্ষক ও বক্তা। সেই অনুষ্ঠানে তাঁদের মধ্যে এক গভীর সংযোগ তৈরি হয়। সোফি একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, ট্রুডোর সঙ্গে কথা বলার সময় তিনি যেন তাঁর ‘আত্মার আয়না’ দেখতে পাচ্ছিলেন। ট্রুডোও সোফির বুদ্ধিদীপ্ত, প্রাণবন্ত উপস্থিতি ও সামাজিক সচেতনতায় মুগ্ধ হয়েছিলেন। দ্রুতই তাঁদের মধ্যে বন্ধুত্ব প্রেমের সম্পর্কে গড়ায়। ২০০৪ সালের অক্টোবরে সোফিকে বিয়ের প্রস্তাব দেন ট্রুডো। সোফি সানন্দে রাজি হন।

জাস্টিন ট্রুডো ও সোফি গ্রেগোয়ার

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘ট্রাম্প-মোদি ব্রোমান্স’ সত্ত্বেও ভারত–মার্কিন সম্পর্ক তলানিতে কেন, সামনে কী
  • সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়েও নারী কেন ন্যায্য হিস্যা পাবে না
  • টাঙ্গাইলে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ৩
  • পঞ্চগড়ে ছুরিকাঘাতে ছাত্রদলের কর্মী নিহত, প্রতিবাদে বিক্ষোভ
  • এখানে অযোগ্যরা তেল দেওয়া ছাড়া জায়গা তৈরি করতে পারে না
  • ঢাবিতে বিক্ষোভে মেয়েদের ভিডিও করার সময় কলেজছাত্র আটক
  • মোদির অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসই শেষ পর্যন্ত কাল হয়ে দাঁড়ালো
  • মাগুরায় ‘রেডি টু কুক ফিশ’ প্রযুক্তিতে সফল উদ্যোক্তা লিজা
  • ট্রুডো ও সোফি: জীবন থেমে থাকে না, হৃদয় আবার ডাকে