গ্যাস অনুসন্ধানে দুটি কূপ খননে পেট্রোবাংলার সঙ্গে চীনের কোম্পানির চুক্তি
Published: 7th, August 2025 GMT
গ্যাস অনুসন্ধানে দুটি কূপ খননে চীনের একটি কোম্পানির সঙ্গে আজ বৃহস্পতিবার চুক্তি করেছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা)।
চুক্তি অনুসারে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার তিতাস ও কুমিল্লার বাখরাবাদ গ্যাসক্ষেত্রে এ দুটি কূপ খনন করবে চায়না ন্যাশনাল পেট্রোলিয়াম কোম্পানির (সিএনপিসি) সহযোগী কোম্পানি সিএনপিসি চুয়াংইং ড্রিলিং ইঞ্জিনিয়ারিং কোম্পানি লিমিটেড (সিসিডিসি)।
পেট্রোবাংলা থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে আজ এ চুক্তির কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়েছে, দেশের বিরাজমান জ্বালানিঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে ভূগর্ভস্থ গভীরতম স্তর থেকে গ্যাস অনুসন্ধানে বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ডস কোম্পানি লিমিটেড (বিজিএফসিএল) দুটি গ্যাসক্ষেত্রে কূপ দুটি খনন করছে। আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে নির্বাচিত সিসিডিসি ৫৯৪ কোটি ২৫ লাখ টাকায় কূপ দুটি খনন করবে।
পেট্রোবাংলা বলছে, সফলভাবে খনন সম্পন্ন হলে দেশের গ্যাস খাতে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে এবং বর্তমানের চেয়ে গ্যাসের মজুত বৃদ্ধি পাবে। কূপ খনন শেষে তিতাস-৩১ কূপ থেকে দিনে প্রায় দেড় কোটি ঘনফুট গ্যাস এবং বাখরাবাদ-১১ কূপ থেকে দিনে প্রায় ১ কোটি ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হবে বলে আশা করছে পেট্রোবাংলা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, তিতাস-৩১ কূপে ৫ হাজার ৬০০ মিটার এবং বাখরাবাদ-১১ কূপে ৪ হাজার ৩০০ মিটার খনন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। কূপ খনন, ভূমি অধিগ্রহণ ও গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় হবে ৭৯৮ কোটি টাকা। ২০২৫ সালের জুলাই থেকে ২০২৭ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। গভীর কূপ দুটি খননের মাধ্যমে তিতাস ও বাখরাবাদ গ্যাসক্ষেত্রের ৩ হাজার ৭০০ মিটার থেকে ৫ হাজার ৬০০ মিটার ভূ-অভ্যন্তরে গ্যাসের উপস্থিতি, বিস্তৃতি ও গ্যাস মজুত নিশ্চিত হওয়া যাবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
চট্টগ্রাম নগরে নেতৃত্বশূন্য যুবদল, হতাশ তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা
গত বছরের সেপ্টেম্বরে বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয় চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের কমিটি। এক বছর পার হলেও নতুন কমিটি গঠন করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে নগরে সাংগঠনিকভাবে পিছিয়ে পড়ছে দলটি। কমিটি না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়ছেন দলের তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা।
নেতা-কর্মীরা জানান, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। কমিটি থাকলে দলের প্রার্থীদের জন্য ওয়ার্ড, থানা কমিটিসহ তৃণমূল পর্যায়ে প্রচারণা চালানো সহজ হতো। এখন কমিটি না হওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে শৃঙ্খলা বিনষ্ট হচ্ছে।
দলীয় সূত্র জানায়, নির্বাচনের আগেই কমিটি ঘোষণার বিষয়টি বিবেচনা করা হচ্ছে। স্থানীয় নেতাদের পছন্দের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে কমিটি গঠন করার চেষ্টা করছে কেন্দ্র।
২০১৮ সালের ১ জুন মোশাররফ হোসেনকে সভাপতি ও মোহাম্মদ শাহেদকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের পাঁচ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর চার মাসের মাথায় ঘোষণা করা হয় ২৩১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এর পর থেকে নেতৃত্বহীন অবস্থায় রয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর যুবদল।
২০১৮ সালের ১ জুন মোশাররফ হোসেনকে সভাপতি ও মোহাম্মদ শাহেদকে সাধারণ সম্পাদক করে চট্টগ্রাম মহানগর যুবদলের পাঁচ সদস্যের কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর চার মাসের মাথায় ঘোষণা করা হয় ২৩১ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি। গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর কমিটি মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ায় বিলুপ্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এর পর থেকে নেতৃত্বহীন অবস্থায় রয়েছে চট্টগ্রাম মহানগর যুবদল।কমিটি গঠনের উদ্দেশ্যে চলতি বছরের জানুয়ারিতে মহানগর যুবদলের শীর্ষ দুই পদের জন্য প্রার্থীদের রাজনৈতিক বৃত্তান্ত জমা নেওয়া হয়। পদ পেতে আগ্রহী অর্ধশতাধিক ব্যক্তি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে রাজনৈতিক বৃত্তান্ত জমা দেন। প্রার্থীরা এতে ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট পর্যন্ত আন্দোলন-সংগ্রামে নিজের ভূমিকা–সম্পর্কিত তথ্য উল্লেখ করেছেন। পরের মাসের শেষের দিকে প্রার্থীদের সাক্ষাৎকারও নেওয়া হয়েছে।
আহ্বায়ক পদ পেতে রাজনৈতিক বৃত্তান্ত জমা দেওয়া কয়েকজন হলেন নগর যুবদলের বিলুপ্ত কমিটির সভাপতি মোশাররফ হোসেন, নগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ, সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি ইকবাল হোসেন ও সাবেক সহসভাপতি শাহেদ আকবর প্রমুখ।
সদস্যসচিব পদে জীবনবৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন নগর যুবদলের সাবেক সহসভাপতি ফজলুল হক, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক এমদাদুল হক, সাবেক যুগ্ম সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম প্রমুখ। এর মধ্যে এমদাদুল হককে গত ১২ জুলাই দখল ও চাঁদাবাজির অভিযোগে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। তবে তিনি দাবি করেছেন, পদপ্রত্যাশী হওয়ায় মিথ্যা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। কমিটির শীর্ষ পদের জন্য আরও আলোচনায় আছেন নগর স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি এইচ এম রাশেদ খান ও নগর ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি গাজী সিরাজ উল্লাহ। নগর যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন পদে না থাকলেও দলের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। সামনেও করব।’
নির্বাচনের আগেই কমিটি আসবে। সৎ, ত্যাগী ও দলের দুঃসময়ে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের মূল্যায়ন হবে।—মীর হেলাল উদ্দীন, সহসাংগঠনিক সম্পাদক, বিএনপিনগর যুবদলের তৃণমূল পর্যায়ের একাধিক নেতা-কর্মী জানান, বর্তমানে কোনো কমিটি না থাকলেও তাঁরা দলীয় বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন। কিন্তু সাংগঠনিক কাজকে এগিয়ে নিতে নেতৃত্বের প্রয়োজন। বিশেষ করে আগামী সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ইউনিট, ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে নেতৃত্ব থাকা দরকার। কমিটি থাকলে মানুষের ঘরে ঘরে গিয়ে ধানের শীষের প্রার্থীর জন্য ভোট চাইতে সুবিধা হবে। এরই মধ্যে বিএনপির একটি সহযোগী সংগঠন উঠান বৈঠক থেকে শুরু করে মানুষের ঘরে ঘরে যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে কমিটি না থাকায় যুবদল পিছিয়ে রয়েছে।
আগামী সংসদ নির্বাচনে দলকে এগিয়ে রাখতে নির্বাচনের আগে কমিটি ঘোষণা করা দরকার জানিয়ে নগর যুবদলের বিলুপ্ত কমিটির সহসভাপতি শাহেদ আকবর প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওয়ার্ড ও ইউনিট পর্যায়ে কমিটি থাকলে দলের কাজ আরও গতিশীল হবে।’
নগর বিএনপির সদস্যসচিব নাজিমুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আগামী সংসদ নির্বাচন যেহেতু কয়েক মাস পরে। আশা করা যায় এর আগেই কমিটি ঘোষণা হতে পারে।’
চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক মীর হেলাল উদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, ‘নির্বাচনের আগেই কমিটি আসবে। সৎ, ত্যাগী ও দলের দুঃসময়ে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের মূল্যায়ন হবে।’
জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় যুবদলের দপ্তর সম্পাদক নুরুল ইসলাম বলেন, ‘কমিটির যাচাই-বাছাই প্রায় শেষ। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে শিগগিরই কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে। আরও কয়েকটি জেলার কমিটিও পরিকল্পনায় রয়েছে।’