৫ দফা দাবি না মানলে ১১ নভেম্বর ঢাকার চিত্র ভিন্ন হবে: জামায়াত নেতা গোলাম পরওয়ার
Published: 6th, November 2025 GMT
জামায়াতে ইসলামীসহ আটটি দল যে পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলন করছে, ১১ নভেম্বরের আগে অন্তর্বর্তী সরকারকে সেসব দাবি মেনে নিতে বলেছেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার। তিনি বলেন, ১১ নভেম্বর আটটি রাজনৈতিক দলের উদ্যোগে রাজধানীতে মহাসমাবেশ হবে। ঢাকার মহাসমাবেশ লক্ষ লক্ষ জনতার পদভারে মুখর হওয়ার আগে সরকার যেন পাঁচ দফা দাবি মেনে নিয়ে জুলাই সনদের গণ–আকাঙ্ক্ষার প্রতি সম্মান প্রদর্শন করে। তা না হলে ১১ নভেম্বর ঢাকার চিত্র ভিন্ন হবে।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা দুইটার দিকে ঢাকার মৎস ভবন মোড়ে এক ব্রিফিংয়ে মিয়া গোলাম পরওয়ার এ কথা বলেন। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি ও ওই আদেশের ওপর নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করাসহ পাঁচ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করে জামায়াতসহ আন্দোলনরত আটটি দল। আজ বেলা ১১টার দিকে দলগুলো আলাদা আলাদা মিছিল নিয়ে পল্টন মোড়ে এসে সমবেত হয়।
এরপর সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি পল্টন থেকে জাতীয় প্রেসক্লাব হয়ে মৎস ভবন এলাকায় এলে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে তাতে বাধা দেয়।
এরপর ৮ দলের ৯ জন নেতা রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিতে যান। তাঁরা হলেন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ফজলুল বারী মাসউদ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক মূসা, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ইউসুফ সাদিক হক্কানী, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মুসা বিন ইযহার, জাগপার সহসভাপতি ও মুখপাত্র রাশেদ প্রধান, বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টির সভাপতি এ কে এম আনোয়ারুল ইসলাম।
সেখান থেকে ফিরে ব্রিফিংয়ে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, নেতারা যখন যমুনায় গেলেন, তখন প্রধান উপদেষ্টার সভাপতিত্বে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক চলছিল। জামায়াতসহ অন্য দলগুলোর আবেদন ছিল, প্রধান উপদেষ্টা না হলেও একজন উপদেষ্টাকে তাদের কাছে পাঠাতে হবে। পরে প্রধান উপদেষ্টার পক্ষ থেকে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খানকে পাঠানো হয়।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, শিল্প উপদেষ্টা রাজনৈতিক সংকট নিরসনে সরকারের আন্তরিকতার কথা জানিয়েছেন। পাশাপাশি এক সপ্তাহের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আলোচনা করে সরকারকে সিদ্ধান্ত জানানোর স্মরণ করে দিয়েছেন। আটটি দল এ ক্ষেত্রে সরকারকে সহযোগিতার কথা বলেছে। দলগুলোর এই আলোচনায় সরকারেরও সহযোগিতা প্রয়োজন বলে শিল্প উপদেষ্টাকে জানানো হয়েছে।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আটটি দলের দাবিগুলো শিল্প উপদেষ্টাকে পড়ে শোনানো হয়েছে। তিনি দাবির প্রতি দ্বিমত করেননি। প্রধান উপদেষ্টার কাছে এই স্মারকলিপি পৌঁছে যথাযথ প্রক্রিয়ায় পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেছেন তিনি।
জামায়াতসহ আট দলের দাবিগুলো হলো জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নভেম্বর মাসের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে বা উচ্চকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর’ জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ ল প উপদ ষ ট গ ল ম পরওয় র উপদ ষ ট ক সরক র র ইসল ম দলগ ল
এছাড়াও পড়ুন:
প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিলেন জামায়াতসহ ৮ জনের নেতারা
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টাকে স্মারকলিপি দিয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বাধীন ৮ দলীয় জোটের শীর্ষনেতারা।
বৃৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) দুপুরে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ারের নেতৃত্বে ৮ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনায় গিয়ে এই স্মারকলিপি জমা দেন। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার পক্ষে স্মারকলিপি গ্রহণ করেন শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান।
সেখান খেকে বেরিয়ে এসে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার সাংবাদিকদের বলেন, “যমুনায় যাওয়ার পর প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের মহাপরিচালক স্মারকলিপি গ্রহণের দায়িত্বে ছিলেন, তবে আমাদের দাবি ছিল আমরা মহাপরিচালকের কাছে স্মারকলিপি দেব না। আমরা প্রধান উপদেষ্টার কাছেই স্মারকলিপি দিতে চেয়েছি। পরে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশে শিল্প উপদেষ্টা আদিলুর রহমান আমাদের স্মারকলিপি গ্রহণ করেছেন।”
“আমরা ৮ দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ আদিলুর রহমানের সঙ্গে আলোচনা করেছি, স্মারকলিপি পড়ে শুনিয়েছি। শিল্প উপদেষ্টা আমাদের দাবির সঙ্গে দ্বিমত করেননি। তিনি প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে আমাদের পাঁচ দাবি নিয়ে আলোচনা করবেন বলে জানিয়েছেন” যোগ করেন পরওয়ার।
৮ দলের প্রতিনিধি হিসেবে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এ এইচ এম হামিদুর রহমান আযাদ, খেলাফত মজলিসের নায়েবে আমির আহমদ আলী কাসেমী ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপার) সহসভাপতি রাশেদ প্রধান যমুনায় যান।
তার আগে বৃহস্পতিবার দুপুরে যমুনার উদ্দেশ্যে ৮ দলের পদযাত্রা রাজধানীর মৎস্য ভবন মোড়ে আটকে দেয় পুলিশ।
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নের আদেশ জারি, জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোটসহ পাঁচ দফা দাবিতে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার আগে পল্টন মোড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন ৮ দলের শীর্ষনেতারা।
দলগুলোর পাঁচ দফা দাবি হলো- জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন আদেশ জারি এবং ওই আদেশের ওপর নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট আয়োজন করা; আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে বা উচ্চকক্ষে পিআর (সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব) পদ্ধতি চালু করা; অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা; ‘ফ্যাসিস্ট’ সরকারের সব জুলুম–নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা এবং ‘স্বৈরাচারের দোসর’ জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।
৮ দলীয় জোটের মধ্যে রয়েছে- জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ফিরোজ