শেরপুরে কৃষি কর্মকর্তাকে মারধরের অভিযোগে ছাত্রদল নেতা বহিষ্কার
Published: 6th, November 2025 GMT
শেরপুরের নকলায় উপজেলা কৃষি কর্মকর্তাকে মারধর ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ছাত্রদলের এক নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকালে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের পক্ষ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে নকলা উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব রাহাত হাসান কাইয়ুমকে প্রাথমিক সদস্যপদসহ সংগঠনের সব পদ থেকে বহিষ্কার করা হলো।
এর আগে গতকাল বুধবার দুপুরে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার মোরসালিনকে কার্যালয়ে ঢুকে মারধরের অভিযোগ ওঠে রাহাত ও তাঁর সহযোগী ফজলুল হকের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় রাতে কৃষি কর্মকর্তা বাদী হয়ে নকলা থানায় মামলা করেন। মামলায় উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব রাহাত হাসান কাইয়ুম (৩৫) ও ফজলুল হককে (৩২) আসামি করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুরে নকলা উপজেলা কমপ্লেক্সের কৃষি অফিসে ঢোকেন উপজেলা ছাত্রদলের সদস্যসচিব রাহাত ও ছাত্রনেতা ফজলুল হকসহ কয়েকজন। তাঁরা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহরিয়ার মোরসালিনের কাছে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির তালিকা নিয়ে জানতে চান এবং কোন ‘নেতাকে’ কত বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে, সে সম্পর্কেও প্রশ্ন করেন। এ সময় কৃষি কর্মকর্তা তাঁদের জানান, এই কর্মসূচিতে নির্ধারিত কৃষকদের নামেই বরাদ্দ দেওয়া হয়, রাজনৈতিক নেতাদের নামে নয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁরা গালাগাল ও হুমকি দেন, একপর্যায়ে কর্মকর্তাকে মারধর করেন। চিৎকার শুনে কার্যালয়ের কর্মচারীরা এসে শাহরিয়ার মোরসালিনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
আরও পড়ুননকলায় কৃষি কর্মকর্তাকে মারধর, ছাত্রদলের দুই নেতার বিরুদ্ধে মামলা৫ ঘণ্টা আগেঅভিযুক্ত রাহাত হাসান কাইয়ুম ও ফজলুল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
নকলা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রাসেল সরকার বলেন, ‘ছাত্রনেতা হয়ে একজন সরকারি কর্মকর্তাকে মারধর করা কোনোভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়। দলের পক্ষ থেকে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আজ সকালে কেন্দ্রীয় কমিটির চিঠি পেয়েছি।’
নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাবিবুর রহমান বলেন, ঘটনার পর সরকারি কাজে বাধা ও মারধরের অভিযোগে মামলা নেওয়া হয়েছে। তদন্ত চলছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত ক ছ ত রদল র ফজল ল উপজ ল সরক র ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
মুগ্ধের ভাই স্নিগ্ধ: বিএনপিতে যোগ দিলেন যে কারণে
জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ মুগ্ধের ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ সম্প্রতি বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। দলের প্রাথমিক সদস্য ফরম পূরণ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হাতে তুলে দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগদান করেন তিনি।
স্নিগ্ধর হঠাৎ বিএনপিতে যোগদান নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। বিএনপিতে যোগদান বিষয়ে তিনি নিজেই মুখ খুলেছেন।
বৃহস্পতিবার এ প্রসঙ্গে ফেসবুক পেজে মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধর স্ট্যাটাস হুবহু তুলে ধরা হলো:
‘‘আসসালামু আলাইকুম
আমি মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। জুলাইয়ের পর থেকে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানের যে জোয়ার উঠেছে, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে, সেই তরুণদের একজন প্রতিনিধি হিসেবে আমিও সামাজিকভাবে নানা কার্যক্রমের প্রতিনিধিত্ব করেছি। পাশাপাশি তরুণদের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়তে রাজনৈতিক পরিবর্তনের যে প্রচেষ্টা চলছে সেই লক্ষ বাস্তবায়নে রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছি।
আপনারা জানেন যে আমি বা আমার ভাইদের কেউই রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম না, মুগ্ধ একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবেই দেশের জন্য জীবন দিয়েছে। তাই আমি মনে করি মুগ্ধসহ সকল শহিদ কোন রাজনৈতিক দলের নয়, তারা সকল মানুষ এবং দেশের সম্পদ।
বর্তমান প্রেক্ষাপটে এবং এই নতুন বাস্তবতায় সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত জায়গা থেকে বাংলাদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করছি। এবং সম্পূর্ণ নিজ যোগ্যতায় এগিয়ে যেতে চাই।
অরাজনৈতিক প্লাটফর্ম থেকে জুলাইকে নানাভাবে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েছি, এখন সময় এসেছে রাজনৈতিকভাবে জুলাইয়ের প্রতিনিধিত্ব করার। আমার রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার পিছনে অন্যতম কয়েকটি কারণ হলো-
সর্বোচ্চ জায়গা থেকে জুলাইকে প্রতিনিধিত্ব করা। জুলাই শহিদ, আহত যোদ্ধা, শহিদ পরিবার এবং সর্বোপরি জুলাইয়ের ভয়েস হয়ে উঠা, রাজনীতিতে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব করা এবং বাংলাদেশপন্থী ও জুলাইপন্থী সকল অংশীজনের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলা। রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে যোগদান কারার পিছনে আমার কয়েকটি কারণ রয়েছে। প্রথমত বিএনপির দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের ইতিহাস রয়েছে তাছাড়া বিএনপির রাজনৈতিক দর্শন এবং রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখা ২০২৩ এর অনেক জায়গা আছে যেগুলো নিয়ে সরাসরি কাজ করতে আমি আগ্রহী।
দ্বিতীয়ত আমি মনে করি, সকল পরিসরে জুলাইয়ের প্রতিনিধিত্ব থাকা প্রয়োজন। তাই আমি বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত হচ্ছি। এতে করে জুলাইয়ের ঐক্য শক্তিশালী এবং দীর্ঘায়িত হবে বলে আমি মনে করি।
তাছাড়া বিএনপির সন্মানিত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান চাচ্ছেন যে আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের হয়ে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব করি যা আমারও অন্যতম রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার একটি। এর মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী দল এবং তরুণদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরীতে ভূমিকা রাখতে পারবো বলে আমি মনে করি।
তবে সর্বোপরি আমি সকল রাজনৈতিক দল এবং বাংলাদেশ ও জুলাইপন্থী সকলের সাথে কাজ করে যেতে চাই। রাজনৈতিক ঐক্যের মাধ্যমে সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মান আমার রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার আরেকটি অন্যতম লক্ষ্য। আমার এই পথচলাই সকলের সহযোগিতা ও পরামর্শ কামনা করছি। মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানসহ জনমানুষের সকল সংগ্রাম চির অম্লান হোক।
আরেকটি বিষয়, এতদিন যত দায়িত্ব আমি পালন করেছি সব দায়িত্ব নিষ্ঠা এবং সততার সাথে পালন করেছি। যদি কোন অভিযোগ থাকে দয়া করে অভিযোগে সীমাবদ্ধ না রেখে প্রমাণসহ উপস্থাপন করবেন এবং গঠনমূলক সমালোচনা করবেন। নতুন বাংলাদেশে সবাই মিলে এতটুকু সংস্কার তো আমরা আশাই করতে পারি।’’
ঢাকা/নঈমুদ্দীন//