পাঁচ ব্যাংকের প্রশাসক কার্যালয়ে আসা শুরু করেছেন, গ্রাহকের চাপ নেই
Published: 6th, November 2025 GMT
পাঁচ ইসলামি ব্যাংকে নিয়োগ পাওয়া প্রশাসকেরা আজ সকাল থেকে কার্যালয়ে আসা শুরু করেছেন। আজ তাঁরা ব্যাংকগুলোর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে একাধিক সভা করেছেন। পাশাপাশি কোনো কোনো প্রশাসক সারা দেশের শাখা ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে অনলাইনে সভা করেছেন।
রাজধানীতে এসব ব্যাংকের কয়েকটি শাখা ঘুরে দেখা গেছে, শাখাগুলোয় গ্রাহকের তেমন উপস্থিতি নেই। ফলে টাকা উত্তোলনের চাপও নেই।
আলোচ্য পাঁচ ব্যাংক হলো—ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী, ইউনিয়ন, এক্সিম ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক। এর মধ্যে এক্সিম ব্যাংক ছিল ব্যাংক উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) তৎকালীন চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের এবং বাকি চারটি ছিল চট্টগ্রামের এস আলম গ্রুপের কর্ণধার ও বহুল আলোচিত ব্যবসায়ী সাইফুল আলমের নিয়ন্ত্রণে। তাঁরা দুজনেই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠজন বলে পরিচিত ছিলেন।
গতকাল বুধবার ব্যাংক পাঁচটিতে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে আদেশ জারি করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এক্সিম ব্যাংকের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক শওকাতুল আলম। সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের দায়িত্ব পেয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সালাহ উদ্দিন। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের দায়িত্ব পেয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মুহাম্মদ বদিউজ্জামান দিদার। গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের দায়িত্ব নিয়েছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিচালক মো.
তাঁদের সঙ্গে আরও চারজন করে কর্মকর্তা নিয়োগ দিয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ফলে পাঁচ ব্যাংকে মোট ২৫ কর্মকর্তা দায়িত্ব নিয়েছেন।
আজ সকালে বনানীর ইউনিয়ন ব্যাংকের শাখা ও ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের গুলশান শাখা ঘুরে দেখা যায়, তেমন কোনো গ্রাহকের উপস্থিতি নেই। ব্যাংক দুটির কর্মকর্তারা জানান, সকালে কয়েকজন গ্রাহক টাকার জন্য এসেছিলেন। তাঁদের জানানো হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংক দায়িত্ব নিয়েছে। এখন এটি সরকারি ব্যাংক। এরপর তাঁরা ফিরে গেছেন।
এদিকে সোশ্যাল ইসলামী, গ্লোবাল ইসলামী ও এক্সিম ব্যাংকের গুলশান শাখায় কিছু গ্রাহক দেখা গেছে। ব্যাংক কর্মকর্তারা তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, চিন্তা নেই, এখন তাঁদের আমানত নিরাপদ। যাঁদের জরুরি ভিত্তিতে টাকা প্রয়োজন, তাঁরা আগামী এক মাসের মধ্যে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত টাকা ফেরত পাবেন।
এই পাঁচ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ বাতিল করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি এমডিদেরও পদত্যাগ করতে বলা হয়েছে। ফলে প্রশাসকেরা এখন ব্যাংক পরিচালনা করবেন। তাঁরা ব্যাংক পাঁচটি একীভূতকরণের উদ্যোগ নেবেন। এরপর এই পাঁচ ব্যাংক মিলে নতুন এক ব্যাংক হবে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কর মকর ত ল ইসল ম গ র হক কর ছ ন এক স ম
এছাড়াও পড়ুন:
টেকনাফে সেতুর নিচে পানিতে ভাসছিল সাবেক ইউপি সদস্যের লাশ
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের রঙিখালী এলাকার একটি সেতুর নিচে পানিতে ভাসমান অবস্থায় ইউনুস সিকদার (৪২) নামের এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার সকাল আটটার দিকে মরদেহটি উদ্ধার করা হয়।
নিহত ইউনুস সিকদার উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের চান্দলীপাড়ার প্রয়াত মোহাম্মদ কাশেমের ছেলে। তিনি সাবরাং ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য ছিলেন। ইউনুস সিকদার বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো ক্রীড়া সংসদ টেকনাফ উপজেলা শাখার সভাপতি ছিলেন। বাড়ি থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে তাঁর লাশ পাওয়া গেছে।
টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, টাকার লেনদেন নিয়ে ইউনুস সিকদারকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।
পুলিশ জানায়, পানি থেকে উদ্ধারের সময় নিহত ইউনুস সিকদারের পরনে পায়জামা পরা ছিল। শরীরের ওপরের অংশে কাপড় ছিল না। শরীরেও আঘাতের চিহ্ন আছে।
ওসি আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর বলেন, আজ সকাল আটটার দিকে রঙিখালী এলাকার একটি সেতুর নিচে পানিতে ভাসমান অবস্থায় ইউনুস সিকদারের লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেন। এরপর পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে। রঙিখালী এলাকাটি মাদক বেচাবিক্রি এবং ডাকাত-সন্ত্রাসীদের আস্তানা হিসেবে পরিচিত। হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটন এবং এর নেপথ্যে থাকা লোকজনকে শনাক্তের কাজ চলছে।
তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে রঙিখালী এলাকার একজন জনপ্রতিনিধি ও একজন বাসিন্দা জানান, ইয়াবা বিক্রির ৯০ লাখ টাকা লেনদেন নিয়ে ইউনুস সিকদারের সঙ্গে স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী বাহিনীর মধ্যে বিরোধ চলছিল। টাকার জন্য রাতে ইউনুস সিকদার সাবরাং এলাকা থেকে রঙিখালীতে গিয়েছিলেন। এরপর হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।
ইউনুস সিকদারের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় কয়টি মামলা আছে, তা জানা যায়নি। এ বিষয়ে টেকনাফ মডেল থানার ওসি বলেন, মামলার বিষয়টি তাঁরা অনুসন্ধান করে দেখছেন।