ব্যাংকে বেশি টাকা থাকলে আপনার কাছ থেকে শুল্ক কেটে রাখবে। এত দিন ব্যাংক হিসাবে এক লাখ টাকার বেশি থাকলে আবগারি শুল্ক কেটে রাখা হতো। এখন থেকে তিন লাখ টাকার বেশি থাকলে আবগারি শুল্ক কেটে রাখা হবে। গত জুনে চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘোষণার সময় এই পরিবর্তন আনা হয়। অবশ্য এতে গ্রাহকেরা কিছুটা স্বস্তি পাবেন।

ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহের দিকে ব্যাংকের গ্রাহকদের মুঠোফোনে টাকা কেটে নেওয়ার খুদে বার্তা আসে। এ নিয়ে অনেকে এ ধরনের টাকা কেটে রাখার ব্যাখ্যা বুঝতে পারেন না। তখন আবগারি শুল্ক কেটে ফেলে ব্যাংকগুলো।

আবগারি শুল্ক কী

আবগারি শুল্ক হলো একধরনের পরোক্ষ কর। যা সরকার নির্দিষ্ট কিছু পণ্য, সেবা বা আর্থিক কার্যক্রমের ওপর ধার্য করে। যেমন ব্যাংকে টাকা রাখা, মুঠোফোনে কথা বলা, সিগারেট কেনা ইত্যাদি। এ ধরনের শুল্ক কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের আয় ও মুনাফার ওপর বসে না। কোনো কার্যকলাপ বা সুবিধা ব্যবহারের ক্ষেত্রে বসে।

কোনো গ্রাহকের ব্যাংক হিসাবে বছরে একবার হলেও তিন লাখ টাকা থাকলে আবগারি শুল্ক দিতে হবে। মনে রাখতে হবে, এই আবগারি শুল্ক বসে হিসাবের স্থিতির ওপর।

কত টাকা থাকলে কত শুল্ক

আপনার হিসাবে যদি বছরের যেকোনো সময় তিন লাখ টাকা পর্যন্ত থাকে। তাহলে কোনো আবগারি শুল্ক কাটা হবে না। তিন লাখ ১ টাকা থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত ১৫০ টাকা; ৫ লাখ ১ টাকা থেকে ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ৫০০ টাকা; ১০ লাখ ১ টাকা থেকে ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত ৩ হাজার টাকা; ৫০ লাখ ১ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ৫ হাজার টাকা; এক কোটি টাকা ১ টাকা থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত ১০ হাজার টাকা; ২ কোটি ১ টাকা থেকে ৫ কোটি টাকা পর্যন্ত ২০ হাজার টাকা এবং ৫ কোটি টাকার বেশি ৫০ হাজার টাকা আবগারি শুল্ক দিতে হবে।

কীভাবে কাটে

প্রতিবছর জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর মাসের মধ্যে কোনো ব্যাংক হিসাবে আমানত বা স্থিতির পরিমাণ যদি একবার তিন লাখ টাকা বা তার ওপরের স্তরগুলোর সীমা অন্তত একবার স্পর্শ করে, তাহলে নির্দিষ্ট হারে আবগারি শুল্ক দিতে হয়। একাধিকবার স্পর্শ করলেও একবারই আবগারি শুল্ক কাটা হয়।

একজন গ্রাহকের একাধিক ব্যাংক হিসাবে আবগারি শুল্ক আরোপ হয়, এমন স্থিতি থাকলেও প্রতিটি হিসাব থেকে আবগারি শুল্ক কাটা হবে। উদাহরণ দিয়ে বলা যেতে পারে, আপনার যদি ৪ লাখ টাকা থাকে, তা যদি আপনার ৩ ব্যাংক হিসাবে লেনদেন হয়। তবে তিনটি ব্যাংক হিসাব থেকেই ১৫০ টাকা করে ৪৫০ টাকা কাটা হবে। সাধারণত ডিসেম্বর মাসের শেষ সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে এই অর্থ টাকা হয়। কোনো ক্ষেত্রে জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহেও কাটা হয়।

কোন হিসাব থেকে কাটা হয়

মোটাদাগে সব ধরনের হিসাব থেকেই আবগারি শুল্ক কাটা হয়। যেমন সঞ্চয়ী হিসাব, চলতি হিসাব, এফডিআর, ডিপোজিট পেনশন স্কিম (ডিপিএস), বেতনভিত্তিক হিসাব ইত্যাদি।

কেন আবগারি শুল্ক

আবগারি শুল্ক বসানোর বেশ কিছু কারণ আছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) এই আবগারি শুল্ক আদায় করে। তবে এনবিআরের পক্ষে ব্যাংকগুলো হিসাব থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আবগারি শুল্ক কেটে সরকারি কোষাগারে জমা দেয়। আবগারি শুল্ক কাটার উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হলো রাজস্ব সংগ্রহের উৎস, উচ্চ আয়ের করদাতাদের করজালে আনা; ব্যাংক হিসাবে স্বচ্ছতা; আর্থিক শৃঙ্খলা; প্রশাসনিক সুবিধা বা করদাতার সুবিধা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: একব র আবগ র র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

কাজের ভার কমাতে বিখ্যাত ব্যক্তিরা যা করেন

বিশ্ব বিখ্যাত ব্যক্তিরা কাজের ভার কমাতে এবং নতুন চিন্তার খোঁজে নিজস্ব উপায় খুঁজে নেন। যেমন কেউ জঙ্গলে সময় কাটাতে চলে যান আবার কেউ-কেউ কাজ করার জন্য সবচেয়ে ‍উপযুক্ত সময়টুকু খুঁজে বের করেন। 

২০১৪ সালে, টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গবেষণায় দেখা গেছে, ‘‘মানসিক বিশ্রাম ও চিন্তা করা শেখার ক্ষেত্রে সহায়ক। 

আরো পড়ুন:

কুকুরদের সম্মানে যে ‘তিহার’ পালন করে নেপাল

জাপানের প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রীকে কেন ‘কট্টর রক্ষণশীল’ বলা হয়

কোনো বিষয়ে না ভাবলে অনেক বেশি শেখার চেষ্টা আপনাকে বিভ্রান্ত করে ফেলতে পারে এবং আপনাকে নতুন বিষয়ে দক্ষতা অর্জনে বাধা দিতে পারে। ’’

সুতরাং এটি গুরুত্বপূর্ণ যে, আপনি শুধু পরিশ্রম করলে হবে না, ওই পরিশ্রম কেন করছেন, কীভাবে পরিশ্রম করলে দক্ষতা বাড়ানো সহজ হবে; সেগুলোও খুঁজে বের করতে হবে। এটিও গুরুত্বপূর্ণ যে ভাবনার সময়টি যেন সুগঠিত হয়, না হলে আপনি বিভ্রান্ত হতে পারেন। চলুন জানা যাক বিখ্যাত ব্যক্তিরা কাজ ও ভাবনার মধ্যে কীভাবে সমন্বয় করেন। 

বিল গেটস প্রকৃতির কাছে আশ্রয় নেন

কাজে পরিপূর্ণ  মনোনিবেশ করার জন্য কাজের মাঝে বিরতি প্রয়োজন। এক্ষেত্রে বিল গেটস একটি নিয়ম মেনে চলেন। তিনি  প্রতিবছর পুরো দুই সপ্তাহ সময় কাটান জঙ্গলে। এই সময়ে তিনি নতুন চিন্তার খোঁজ করেন। এই রীতির নাম দিয়েছেন  ‘থিং উইক’ মানে ‘ভাবনার সপ্তাহ’। সপ্তাহজুড়ে কর্মযজ্ঞ থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়ে প্রকৃতির সঙ্গে একাত্ম হন তিনি। বিল গেটস এই প্রক্রিয়ায় আরও বেশি সৃষ্টিশীল হওয়ার উদ্দীপনা খুঁজে নেন। 

ম্যালকম সবচেয়ে সুন্দর সময়ের খোঁজ করেন
আপনি কী খেয়াল করেছেন, দিনের কোনো একটি নির্দিষ্ট সময়ে আপনি সবচেয়ে মনোযোগী হয়ে কাজ করতে পারেন? ম্যালকম গ্ল্যাডওয়েল নিজের কাজ ভালোভাবে করার জন্য সময় বাঁচাতে বলেছেন। এবং কোন সময়টায় আপনি ভালো কাজ করতে পারেন, সেই সময়টা খুঁজে বের করে কাজে লাগাতে বলেছেন। 

ভারমুক্ত হয়ে কাজ করতে বলেন মিশেল ওবামা
একটি কর্মক্ষেত্রে কখনও সুস্থির থাকে না। কর্মীদের মধ্যে মনোমালিন্য থাকে, বন্ধুত্ব থাকে, সহযোগিতা ও প্রতিযোগীতা থাকে।  সব কিছুর আগে নিজেকে গুরুত্ব দিতে হবে। সুখকে প্রাধান্য দিতে হবে—এমনটাই মনে করেন মিশেল ওবামা।  আপনিও কর্মক্ষেত্রে নিজেকে ভারমুক্ত করতে এবং নিজের কাজ এগিয়ে নিতে সহকর্মীদের পেছনে লেগে না থেকে নিজেকে গুরুত্ব দিন। এভাবে ভাবলে কর্মক্ষেত্রে চাপ কম অনুভূত হবে। ভারমুক্ত হয়ে কাজ করতে হবে। এই নীতিই মেনে চলেন মিশেল ওবামা। 

সামর্থ্যের ওপর ভরসা রাখতেন মোহাম্মদ আলী
সর্বকালের সেরা বক্সার বলা হয় মোহাম্মদ আলীকে। তিনি মনে করতেন—‘আমিই সেরা’ এই বাক্যটি মনে প্রাণে ধারণ না করলে সফল হওয়া কঠিন। তার মতে, শুধু পরিশ্রম করলেই হবে না, সেরা হতে নিজের সামর্থ্যকে প্রাধান্য দিতে হবে। তবে জয়ী হতে পারবেন।

সূত্র: সাকসেস ডটকম অবলম্বনে

ঢাকা/লিপি

সম্পর্কিত নিবন্ধ