Risingbd:
2025-11-06@10:28:49 GMT

আজ পুরুষদের রান্না করার দিন

Published: 6th, November 2025 GMT

আজ পুরুষদের রান্না করার দিন

প্রথমেই বলে নেওয়া ভালো, যেসব পুরুষ রান্না করেন না, আজকের এই দিনটিতে তারা রান্না করতে পারেন। কারণ দিবসটি তাদের জন্য। 

রান্না করা কোনো নির্দিষ্ট লিঙ্গের  মানুষের কাজ নয়। এটি পুরুষ এবং নারী উভয়ই করতে পারেন।  যদিও বেশিরভাগ সংস্কৃতিতে পারিবারিকভাবে নারীরাই প্রধানত রান্নার কাজ করে থাকেন। তবে আধুনিক যুগে এবং বিভিন্ন পেশাদার ক্ষেত্রে পুরুষদেরও অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে। বিশ্বের অনেক বিখ্যাত শেফ পুরুষ। মূলত, রান্না করা একটি দক্ষতা এবং একটি প্রয়োজনীয় সাংসারিক কাজ।  যা লিঙ্গ নির্বিশেষে যে কেউ করতে পারে। তবে আজকের দিনটি স্পেশালি পুরুষদের জন্য। আজ 'মেন মেক ডিনার ডে"। পুরুষদের রান্না করার দিন। 

আরো পড়ুন:

নিউ ইয়র্ক-এর ফার্স্ট লেডি ‘রামা দুয়াজি’

রোমান সম্রাজ্ঞী মেসালিনাকে যেকারণে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিলো

পৃথিবীর অন্যত্র যে চিত্রই থাক বাংলাদেশের  সামাজিক প্রথা অনুযায়ী রান্নাঘর কেবল নারীদের জন্যই! অল্প কিছু দম্পতি  ব্যতিক্রম। 

নতুন প্রজন্মের পুরুষেরা অবশ্য রান্নায় শেখায় মনোযোগ দিচ্ছেন। নিজেরাই বিশেষ পদ রান্না শিখছেন, সেক্ষেত্রে ইউটিউবে বিভিন্ন রান্না দেখে তারা আগ্রহী হয়ে উঠছেন। আবার সত্যিকারভাবে অনেক পুরুষ চান, সংসারের কাজ ভাগ করে নিতে; তারা দায়িত্ব নিয়েই কাজটি করে থাকেন। যেসব পুরুষ রান্নার কাজটি আগ্রহের সঙ্গে করেন তাদের অভিনন্দন। 

যুক্তরাষ্ট্রে এই দিবসের উৎপত্তি হলেও এর আবেদন সর্বজনীন। দিনটি পালিত হয় নভেম্বরের প্রথম বৃহস্পতিবার।

জানা যায়, কানাডার অটোয়া শহরের স্যান্ডি শার্কি এ দিনের প্রবর্তন করেছিলেন। প্রায় ১৪ বছর আগে শুধুমাত্র তার স্বামী রব বেনেটের হাত দিয়ে একদিন রান্না করানোর উদ্দেশ্যেই তিনি এই দিবসের সূচনা করেছিলেন। 

ঢাকা/লিপি

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবনের বুকে শেষ হলো রাস উৎসব

খুলনার কয়রা উপজেলার কপোতাক্ষ মহাবিদ্যালয়ের প্রভাষক বিদেশ রঞ্জন মৃধা আজ বৃহস্পতিবার ভোরে ট্রলার থেকে নামলেন কয়রার ঘাটে। তিন দিন পর তিনি ফিরেছেন সুন্দরবনের গভীর দুবলারচরের আলোরকোল থেকে। চোখে–মুখে ক্লান্তি, কিন্তু ভেতরে প্রশান্তি।

বিদেশ রঞ্জন মৃধা বলেন, ‘গতকাল বুধবার ভোরে বঙ্গোপসাগরের প্রথম জোয়ারে পুণ্যস্নান শেষে আমরা ফিরতি পথ ধরে আজ লোকালয়ে পৌঁছাতে পেরেছি। আমার মা আর দিদি—দুজনেই অসুস্থ। তাঁরাও ছিলেন, খুব ভয়ে ছিলাম।’

৩ নভেম্বর শুরু হওয়া সুন্দরবনের দুবলারচরের আলোরকোলে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শতবর্ষের ঐতিহ্যবাহী তিন দিনের রাস উৎসব শেষ হয় গতকাল ভোরে। পূর্ণিমার জোয়ারের লোনাজলে পুণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে এ উৎসবের পরিসমাপ্তি ঘটে।
ভোর সাড়ে পাঁচটা থেকে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী চলে পুণ্যস্নান। আলোরকোলের দুই কিলোমিটারজুড়ে তখন শুধু ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য। হাজারো নারী-পুরুষ, শিশু ও বৃদ্ধ একসঙ্গে নেমে পড়েন সমুদ্রের জলে। শঙ্খধ্বনি, কীর্তন, ঢাকের বাদ্য আর ধূপের গন্ধে ভরে ওঠে পুরো এলাকা।

কয়রার মহারাজপুর এলাকার পুণ্যার্থী মনোজিত কুমার রায় বলেন, ‘পূর্ণিমার জোয়ারে স্নান করলে পাপমোচন হয়—এ বিশ্বাস নিয়েই গিয়েছিলাম। সৈকতের পাড়ে চোখ বুজে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছি।’

বন বিভাগের হিসাবে, এবারের রাস উৎসবে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ১৩ হাজার ৫১৯ জন পুণ্যার্থী অংশ নিয়েছেন। পূজা-অর্চনা, ভজন ও লীলাকীর্তন শেষে গতকাল ভোরে তাঁরা সাগরে স্নান করে নিজ নিজ গন্তব্যে রওনা হন। উৎসব চলাকালে বন বিভাগ, কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী ও পুলিশের একাধিক দল সার্বক্ষণিক টহলে ছিল। গত মঙ্গলবার সমুদ্রে স্নান করতে গিয়ে সুমন নামের এক পুণ্যার্থী নিখোঁজ হলেও কোস্টগার্ড পরে তাঁকে জীবিত উদ্ধার করে।

রাস উৎসবের ইতিহাস সম্পর্কে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের কয়রা উপজেলা সভাপতি অরবিন্দ মণ্ডল বলেন, উনিশ শতকের শুরুর দিকে সাধু হরিভজন প্রথম দুবলারচরের আলোরকোলে রাসপূর্ণিমার পূজা শুরু করেন। তিনি তাঁর ভক্তদের নিয়ে সাগরে পুণ্যস্নান করতেন। পরে ধীরে ধীরে এই আয়োজন লোকসমাগমের মাধ্যমে এক বৃহৎ রাসমেলায় পরিণত হয়। তবে ২০১৭ সাল থেকে বন বিভাগের সিদ্ধান্তে মেলার আয়োজন বন্ধ আছে।

রাস উৎসবের সময় সুন্দরবনে হরিণ শিকার বেড়ে যায়—এ অভিযোগ পুরোনো। তবে এ বছর বন বিভাগ বলছে, অপরাধ সংঘটিত হওয়ার আগেই তারা দমন করতে পেরেছে।

পূর্ব বন বিভাগের বিভাগীয় কর্মকর্তা রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, ‘রাস উৎসবের দ্বিতীয় দিন কেওড়াবনে টহলের সময় বনরক্ষীরা প্রায় চার হাজার ফুট লম্বা হরিণ শিকারের ফাঁদ উদ্ধার করেন। এবার উৎসবের সময় ৩২ জন শিকারি আটক হয়েছেন। শিকারের ফাঁদগুলো আগেভাগে না সরাতে পারলে শতাধিক হরিণ মারা যেত।’

দুবলারচরের আলোরকোলে রাস উৎসব উদ্‌যাপন পরিষদের সভাপতি কামাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, শতাব্দীকাল ধরে আলোরকোলে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের রাস উৎসব অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। ভারত থেকেও অনেক ভক্ত অংশ নেন। এটি শুধু পূজা নয়, এক আধ্যাত্মিক মিলনমেলা।

সুন্দরবন খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ বলেন, এবারের রাস উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয়েছে। পুণ্যার্থীরা সব নির্দেশনা মেনে অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেছেন। আগাম প্রস্তুতি ও যৌথ টহলের কারণে অপরাধও অন্য বছরের তুলনায় অনেক কম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ