বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টায় যখন শীতল ঝরনা খালের ওপর নির্মিত ৪৫ বছরের পুরোনো সেতু ভেঙে পড়ে, তখন চট্টগ্রাম নগরে ভারী বর্ষণ হচ্ছিল। সেতুটির অবস্থান বায়েজিদ বোস্তামী সড়কে। এটি নগরের প্রধান ও ব্যস্ততম সড়কের একটি, যার ওপর দিয়ে প্রতিদিন ৬০ থেকে ৭০ হাজার গাড়ি চলাচল করে। তবে সেতুটি যখন ভেঙে পড়ে তখন ছিল ভোরবেলা। ফলে ছিল না গাড়ির চাপ। এতে সৌভাগ্যক্রমে বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে।

চট্টগ্রাম নগরের অক্সিজেনের স্টারশিপ গলির মুখে এই সেতু নির্মাণ করা হয়েছিল ১৯৮০ সালে। সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ ছিল বলে স্বীকার করেছেন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন প্রকৌশলীরা। ভেঙে পড়ার আগেই সেতুটি নতুন করে নির্মাণের জন্য প্রকল্প নিয়েছে বলে দাবি করেন তাঁরা। কিন্তু সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সেখানে কোনো সতর্কতামূলক বার্তা কিংবা সাইনবোর্ড টাঙায়নি সিটি করপোরেশন।

জানতে চাইলে সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ রিফাতুল করিম চৌধুরী বলেন, সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় বর্ষা মৌসুম শেষে ভেঙে নতুন করে করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। বর্ষা মৌসুমের মধ্যে ভেঙে পড়বে, তা তাঁদের ধারণায় ছিল না। এ জন্য কোনো ধরনের সতর্কসংকেত বা সাইনবোর্ড ছিল না।

এখন সেতু ভেঙে পড়ার কারণ নির্ণয় এবং ভবিষ্যতে কীভাবে এড়ানো যায়, তার সুপারিশের জন্য প্রধান প্রকৌশলীকে প্রধান করে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সিটি করপোরেশন। কমিটির অন্য সদস্যরা হচ্ছেন প্রধান পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধি ও সিটি করপোরেশনের সংশ্লিষ্ট নির্বাহী প্রকৌশলী। কমিটিকে চার কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা

সিটি করপোরেশনের প্রকৌশলী ও কর্মকর্তাদের পাশাপাশি স্থানীয় লোকজনও বলেছেন, সেতুটি অনেক দিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ মনে হচ্ছিল। এর আগে অনেক কর্মকর্তা ঘুরে গেছেন। কিন্তু কিছু হয়নি।

সেতুর পাশে আবুল কালামের চায়ের দোকান ও কামাল উদ্দিনের পান-সিগারেটের দোকান রয়েছে। তাঁরা বলেন, বৃহস্পতিবার ভোর পাঁচটা থেকে সেতুটি কাঁপছিল। তবে তাঁরা তেমন গুরুত্ব দেননি। কিন্তু সকাল ছয়টার সময় হঠাৎ করে সেতুটি দেবে গিয়ে ভেঙে পড়ে। ভোরের দিকে হওয়ায় সড়কেও গাড়ি ছিল না। তবে দিনের বেলায় যদি সেতুটি ভেঙে পড়ত, তাহলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটত।

স্থানীয় বাসিন্দা, দোকানি, ট্রাফিক পুলিশের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হলেও সেখানে কোনো ধরনের সতর্কসংকেত বা সাইনবোর্ড ছিল না। তাঁরা বলছেন, সিটি করপোরেশন অন্তত লাল পতাকা বা কোনো সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দিতে পারত।

স্থানীয় বাসিন্দা স্কুলশিক্ষক আবুল মনসুর প্রথম আলোকে বলেন, সড়কের এই সেতুর ওপর দিয়ে তিনি নিয়মিত স্কুলে যাতায়াত করেন। আজকেও গেছেন। সময়ের হেরফের হলে হয়তো নিজেরাই দুর্ঘটনার শিকার হতেন। এমন একটি ঝুঁকিপূর্ণ সেতু সিটি করপোরেশন এভাবে কেন ফেলে রেখেছে, তা বোধগম্য নয়। মানুষের জানমাল নিয়ে এ ধরনের অবহেলা মেনে নেওয়া যায় না।

আজ সরেজমিনে দেখা যায়, সেতুটি ইটের ভিত্তির ওপর তৈরি। কিন্তু সড়কের দুই পাশ থেকে ইটের ভিত্তি ভেঙে মাঝখানের অংশ ধসে পড়ে। এতে তিন টুকরো হয়ে গেছে সেতুটি। এখন চারপাশে দড়ি টানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেতুর ভেঙে পড়া অংশের পাশেই ওয়াসার দুটি বড় আকারের পানির পাইপ গেছে।

এক পাশ ভেঙে পড়ায় এখন অক্সিজেন থেকে ২ নম্বর গেটমুখী অংশ দিয়ে গাড়ি চলাচল করছে। তবে এই পাশের একাংশেও মাটি দেবে বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। এক পাশের গাড়ি গেলে অন্য পাশের গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখতে হচ্ছে ট্রাফিক পুলিশদের। এতে দুই পাশেই গাড়ির জট তৈরি হয়েছে। বিশেষ করে স্কুল ছুটির সময় গাড়ির দীর্ঘ সারি দেখা যায়। আর সাপ্তাহিক কর্মদিবসের শেষ দিন হওয়ায় সন্ধ্যার দিকে যানজটের ভোগান্তি আরও বাড়তে পারে বলে জানান দায়িত্বরত ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তারা।

চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী আনিসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সেতুটি অনেক দিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় শীতল ঝরনা খাল প্রশস্ত করার পর আরও বেশি ঝুঁকি তৈরি হয়। কেননা ওই সময় খালের প্রশস্ততা বেড়ে গিয়েছিল। সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সেতু সংস্কারের জন্য ৮ কোটি টাকার প্রাক্কলন করা হয়েছে। দরপত্র বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

ব্যস্ততম সড়কের ওপর সেতু ভেঙে পড়ার খবর পেয়ে তা দেখতে যান ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (আইইবি) চট্টগ্রাম কেন্দ্রের সাবেক চেয়ারম্যান দেলোয়ার মজুমদার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, খালটি যেভাবে প্রশস্ত করা হয়েছে, সেতুটি আগের মতোই সরু ছিল। ফলে ওপর থেকে নেমে আসা বৃষ্টির পানির ঢলে সেতুটিতে ধাক্কা দিত। ক্রমাগত মাটি সরতে সরতে আজকে সেতু ভেঙে গেছে। এখন শুধু সংস্কার করলে হবে না, খালের মতো প্রশস্ততা রাখতে হবে সেতু।

নগরের ব্যস্ততম সড়কে সেতু ভেঙে পড়ার খবর পেয়ে আজ সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র শাহাদাত হোসেনও। তিনি বলেন, জলাবদ্ধতা নিরসন প্রকল্পের আওতায় খালে কাজ করা হয়েছে। এতে খালে পানিপ্রবাহের কারণে সেতুটির মাটি সরে যাওয়ায় এ ঘটনা ঘটে। তবে সেতুটি ভেঙে ৬০ ফুট করার পরিকল্পনা রয়েছে। এখন দ্রুত তা নির্মাণ করা হবে।

আরও পড়ুনচট্টগ্রামে সেতু ভেঙে দুই ভাগ৮ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ইনব র ড কর মকর ত দ র ঘটন প রশস ত ন প রক ধরন র হওয় য় সড়ক র র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

রিজার্ভ চুরির অর্থ উদ্ধারে ঢাকার আদালতের আদেশ

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনায় ফিলিপাইনের রিজাল কমার্শিয়াল ব্যাংকিং করপোরেশনে (আরসিবিসি) থাকা ৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বাজেয়াপ্ত করে ফেরত আনার আদেশ দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বৃহস্পতিবার ঢাকার মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত এ আদেশ দেন।

গতকাল রোববার রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির প্রধান অতিরিক্ত আইজিপি মো. ছিবগাত উল্লাহ বলেন, প্রায় ৯ বছর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে সাইবার জালিয়াতির মাধ্যমে চুরি হওয়া ৮১ মিলিয়ন ডলার (৮ কোটি ১০ হাজার ডলার) বাজেয়াপ্তের নির্দেশ দিয়েছেন ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. সাব্বির ফয়েজ। ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংক পাচারে জড়িত ছিল বলে সিআইডির আবেদনের ভিত্তিতে আদালত এ নির্দেশ দেন।

ছিবগাত উল্লাহ বলেন, রিজার্ভ চুরির ঘটনার মধ্যে শ্রীলঙ্কা থেকে দুই কোটি ডলার ফেরত আসে। আর আরসিবিসির মাধ্যমে ২০১৬ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি মাত্র ৬৮ হাজার ডলার ফেরত পায় বাংলাদেশ। প্রায় ১৪ মিলিয়ন ডলার অন্য উদ্যোগে ফেরত আসে। এখন আরসিবিসির কাছে পুরো ৮১ মিলিয়ন ডলারই ফেরত চাওয়া হচ্ছে, যেটা আদালত বাজেয়াপ্ত করার আদেশ দিয়েছেন।

আরসিবিসির বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্কের আদালতে করা মামলার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডি প্রধান বলেন, এর সঙ্গে সিআইডির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। সিআইডির কাছে যে মামলা আছে, সে ব্যাপারে কাজ চলছে। সমাপ্তির পথে, খুব দ্রুতই মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া হবে।

আদালতের আদেশে বলা হয়, তদন্তে সংগৃহীত তথ্যপ্রমাণ এবং ফিলিপাইন সরকারের পাঠানো মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকোয়েস্ট (এমএলএআর) পর্যালোচনা করে প্রমাণিত হয়েছে যে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংকে রক্ষিত বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে হ্যাকাররা অবৈধভাবে ৮১ মিলিয়ন ডলার সরিয়ে ফিলিপাইনের আরসিবিসি ব্যাংকের বিভিন্ন হিসাবে স্থানান্তর করেছিল।

সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিশেষ প্রসিকিউটর এহসানুল হক সমাজী বলেন, আদালতের আদেশ কার্যকর করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে আদেশের কপি (অনুলিপি) পাঠানো হয়েছে। প্রশাসনিক প্রক্রিয়া শেষে টাকা দেশে ফেরত আসবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

২০১৬ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভ ব্যাংক অব নিউইয়র্কে (ফেড) থাকা বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ মার্কিন ডলার চুরি হয়। রিজার্ভ থেকে অর্থ চুরির তথ্য ১ দিন পর জানতে পারলেও বাংলাদেশ ব্যাংক তা ২৪ দিন গোপন রাখে। ৩৩তম দিনে বাংলাদেশ ব্যাংক বিষয়টি তৎকালীন অর্থমন্ত্রীকে আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়।

সিআইডির ভাষ্য, জাতিসংঘের কনভেনশন অ্যাগেইনস্ট ট্রান্সন্যাশনাল অর্গানাইজড ক্রাইম (ইউএনটিওসি), ফিলিপাইনের আইন এবং ফিন্যান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্কফোর্সের (এফএটিএফ) নির্দেশনার আলোকে এবং সর্বশেষ আদালতের নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ সরকার এখন ফিলিপাইনের সরকারের কাছ থেকে এই অর্থ ফেরত আনার ব্যবস্থা করবে।

সুইফট সিস্টেম ব্যবহার করে ৩৫টি ভুয়া বার্তা (মেসেজ) পাঠিয়ে ফেডে রাখা বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব থেকে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি হয়। এর মধ্যে একটি মেসেজের মাধ্যমে শ্রীলঙ্কায় একটি ‘ভুয়া’ এনজিওর নামে ২০ মিলিয়ন ডলার সরিয়ে নেওয়া হলেও বানান ভুলের কারণে সন্দেহ হওয়ায় শেষ মুহূর্তে তা আটকে যায়। বাকি চারটি মেসেজের মাধ্যমে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার সরিয়ে নেওয়া হয় ফিলিপাইনের মাকাতি শহরে রিজল কমার্শিয়াল ব্যাংকের জুপিটার স্ট্রিট শাখায় ‘ভুয়া তথ্য’ দিয়ে খোলা চারটি অ্যাকাউন্টে।

অল্প সময়ের মধ্যে ওই অর্থ ব্যাংক থেকে তুলে নেওয়া হয়, ফিলরেম মানি রেমিট্যান্স কোম্পানির মাধ্যমে স্থানীয় মুদ্রা পেসোর আকারে সেই অর্থ চলে যায় তিনটি ক্যাসিনোর কাছে। এর মধ্যে একটি ক্যাসিনোর মালিকের কাছ থেকে দেড় কোটি ডলার উদ্ধার করে বাংলাদেশ সরকারকে বুঝিয়ে দেওয়া হলেও বাকি অর্থ উদ্ধারে তেমন কোনো অগ্রগতি হচ্ছিল না। জুয়ার টেবিলে হাতবদল হয়ে ওই টাকা শেষ পর্যন্ত কোথায় গেছে, তারও কোনো হদিস মিলছিল না।

২০২০ সালের ২৭ মে ২০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে করা ওই মামলায় অর্থ রূপান্তর, চুরি, আত্মসাতের অভিযোগে রিজার্ভের অর্থ চুরির ঘটনায় আরসিবিসির বিরুদ্ধে নিউ ইয়র্কের আদালতে মামলা করে বাংলাদেশ ব্যাংক। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ওই মামলা চালিয়ে নেওয়ার অনুমতি দেন নিউইয়র্কের আদালত। তবে ব্যক্তিগত এখতিয়ার না থাকায় চারজন বিবাদীকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

এদিকে ফিলিপাইনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক মুদ্রা পাচার ঠেকাতে ব্যর্থ হওয়ায় ১ কোটি ৯১ লাখ ডলার জরিমানা করে আরসিবিসিকে। ওই সময় করা এক মামলায় ফিলিপাইনের আদালত ২০১৯ সালে আরসিবিসির শাখা ব্যবস্থাপক মায়া সান্তোস দেগিতোকে মুদ্রা পাচারের আট দফা অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করেন। বাংলাদেশ ব্যাংকের করা মামলায়ও তাঁকে আসামি করা হয়।

রিজার্ভ চুরির ঘটনায় বাংলাদেশেও একটি মামলা করা হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড বাজেটিং বিভাগের যুগ্ম পরিচালক জুবায়ের বিন হুদা ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ মতিঝিল থানায় মামলাটি করেন। মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন এবং তথ্য ও প্রযুক্তি আইনে দায়ের করা ওই মামলায় সরাসরি কাউকে আসামি করা হয়নি।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির ঘটনা পর্যালোচনায় অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত কমিটির সময় গত ৮ জুলাই আরও তিন মাস বাড়ানো হয়েছে। সে অনুযায়ী চলতি সেপ্টেম্বরের ৩০ তারিখের মধ্যে পর্যালোচনা কমিটির সুপারিশ দেওয়ার কথা।

এর আগে গত ১১ মার্চ আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলকে প্রধান করে ছয় সদস্যের পর্যালোচনা কমিটি করে সরকার। এ কমিটিকে রিজার্ভ চুরির ঘটনার তদন্তকাজের অগ্রগতি, এ-সংক্রান্ত সরকারি অন্যান্য পদক্ষেপের পর্যালোচনা, এ ঘটনার দায়দায়িত্ব নির্ধারণ এবং এর পুনরাবৃত্তি রোধে প্রয়োজনীয় সুপারিশ দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। এ জন্য ওই কমিটিকে তিন মাস সময় দেওয়া হয়। নির্ধারিত সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় পরে আরও তিন মাস সময় বাড়ানো হয়।

পর্যালোচনা কমিটির সদস্যরা হলেন জ্বালানি উপদেষ্টা ফাওজুল কবির খান; ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর, বিমান বাংলাদেশে এয়ারলাইনসের পরিচালক আলী আশফাক ও রূপালী ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল হুদা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ