প্রতিবেশী এক বন্ধুর আত্মীয়ের জানাজায় যাচ্ছিলেন ইশতিয়াক আহমেদ। পথে দ্রুতগামী একটি বাস তাঁকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। ফেনী কলেজ থেকে সদ্য স্নাতকোত্তর পাস করে চাকরির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। জানাজার নামাজ পড়তে গিয়ে লাশ হয়ে গেলেন ২৭ বছর বয়সী তরতাজা এই যুবক। কে জানত, অল্প সময়ের ব্যবধানে তাঁর জানাজাও পড়তে হবে স্বজনদের।

আজ রোববার বিকেলে ফেনী-সোনাগাজী আঞ্চলিক সড়কের সদর উপজেলার গোবিন্দপুর বটতলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত ইশতিয়াক ফেনী সদর উপজেলার কালীদহ ইউনিয়নের গোবিন্দপুর গ্রামের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কবীর আহমদের ছেলে।

নিহত ব্যক্তির বন্ধু ও স্বজনেরা জানান, আজ বিকেলে বাড়ি থেকে বের হয়ে প্রতিবেশী এক বন্ধুর নানির জানাজায় যাচ্ছিলেন ইশতিয়াক আহমেদ। ফেনী-সোনাগাজী আঞ্চলিক সড়কের সদর উপজেলার গোবিন্দপুর বটতলা এলাকায় এলে দ্রুতগতির একটি বাস তাঁকে ধাক্কা দিয়ে চলে যায়। এ সময় স্থানীয় লোকজন তাঁকে উদ্ধার করে ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ফেনী ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক (ইএমও) মো.

রায়হান উদ্দিন বলেন, হাসপাতালে আনার আগে ইশতিয়াকের মৃত্যু হয়েছে। তাঁর মাথায় গুরুতর আঘাত ছিল।

ইশতিয়াকের আকস্মিক মৃত্যুতে তাঁর পরিবারের সবাই বাক্‌রুদ্ধ হয়ে পড়েছেন বলে জানান তাঁর বন্ধু হাসান আহমেদ। তিনি বলেন, দুই ভাইয়ের মধ্যে ইশতিয়াক সবার ছোট। তাঁর মা ছোট ছেলের মৃত্যুর সংবাদ শুনে বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন।

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ সামছুজ্জামান বলেন, নিহত ব্যক্তির মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। দুর্ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকা বাসটির সন্ধান করছে পুলিশ। এই ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা চলমান।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইশত য় ক

এছাড়াও পড়ুন:

‘স্বপ্ন ছিল বুকে জড়িয়ে ধরার, এখন আশা দাফনটা যদি অন্তত করতে পারি’

সাদা রঙের দেয়াল ঘেরা সাদামাটা ছোট্ট একটি হলঘর। ডজনখানেক মা ও স্ত্রী চুপচাপ বসে আছেন সামনের সারিতে। বাবা, ভাই ও বন্ধুরা দাঁড়িয়ে আছেন পেছনের দিকে, দেয়াল ঘেঁষে। সবার চোখ স্থির ফিলিস্তিনের গাজার দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত খান ইউনিসের নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সের ওই কক্ষের একটি স্ক্রিনের দিকে। সেখানে দেখানো হচ্ছে পচে-গেলে যাওয়া মরদেহের ছবি। এসব দেহাবশেষের কোনো একটি হয়তো তাঁদেরই এক প্রিয়জনের।

গাজার স্থানীয় কর্তৃপক্ষের আমন্ত্রণে এখানে এসেছে পরিবারগুলো। নিবিষ্টভাবে ছবিগুলো দেখছেন পরিবারের সদস্যরা। এ আশায় যে, ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে নিহত এই ফিলিস্তিনিদের মধ্যে যদি নিখোঁজ স্বজনকে শনাক্ত করা যায়।

মরদেহগুলো সম্প্রতি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে হওয়া বন্দী বিনিময় চুক্তির অংশ হিসেবে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ হস্তান্তর করেছে। মরদেহগুলোতে নির্যাতন ও পচনের সুস্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে। তবে এগুলো ফেরত দেওয়া হয়েছে শনাক্তকরণের কোনো উপায় ছাড়াই। এমনকি মৃত্যুর তারিখ বা স্থানেরও উল্লেখ করা হয়নি।

গাজায় ডিএনএ পরীক্ষার সরঞ্জাম না থাকায় স্বজনদের জন্য তাঁদের প্রিয়জনকে শনাক্ত করার একমাত্র উপায় হলো পচে-গলে বিকৃত হয়ে যাওয়া মরদেহের ছবি মনোযোগ দিয়ে দেখা। এটি যেমন নিদারুণ যন্ত্রণাভরা এক প্রক্রিয়া, ঠিক তেমনই আর কোনো উপায়ও নেই।

স্ক্রিনে দেখানো পচে-গলে যাওয়া মরদেহের ছবি দেখে স্বজনদের শনাক্তের চেষ্টা। গাজার নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্স; ১৮ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘স্বপ্ন ছিল বুকে জড়িয়ে ধরার, এখন আশা দাফনটা যদি অন্তত করতে পারি’