আঞ্চলিক ওপেন চ্যাম্পিয়নশিপে পুরস্কার পেল বাংলাদেশ দল
Published: 21st, September 2025 GMT
ওয়ার্ল্ড রোবট অলিম্পিয়াডের (ডব্লিউআরও) এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ওপেন চ্যাম্পিয়নশিপে বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা ফিউচার ইঞ্জিনিয়ার্স ক্যাটাগরিতে দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে। একই সঙ্গে তারা পেয়েছে দুটি বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার।
ফিলিপাইনের রাজধানী ম্যানিলায় তিন দিনব্যাপী এই আয়োজনে আজ রোববার ফলাফল ঘোষণা করা হয়েছে। অলিম্পিয়াডে ২৫টি দেশের ১৬০টি দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে।
অলিম্পিয়াডে ফিউচার ইঞ্জিনিয়ার্স সিনিয়র বিভাগে অংশ নিয়ে দ্বিতীয় হয়েছে আদমজী ক্যান্টনমেন্ট কলেজের আনাস বিন আজিম ও রাজউক উত্তরা মডেল কলেজের সৈয়দ মো.
আনাস বিন আজিম জানান, ‘হোটেলের লবিতে পুরো রাত জেগে অনুশীলনের পর এই অর্জন আমাদের জন্য সত্যিই বিশেষ এক অনুভূতি। প্রতিটি মুহূর্তের পরিশ্রম যেন আজ সার্থক হয়েছে। এই পুরস্কার শুধু আমাদের নয়, বরং বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের স্বপ্ন এবং সম্ভাবনার প্রতীক।’
অন্যদিকে ফিউচার ইনোভেটরস সিনিয়র বিভাগে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে স্টার্টআপ আইডিয়া পুরস্কার অর্জন করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আবরার আবির এবং ঢাকা রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের আ জ ম ইমতেনান কবিরের দল সাফ এআই।
বাংলাদেশ দলের দলনেতা চট্টগ্রাম ইনডিপেনডেন্ট ইউনিভার্সিটির স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ডিন ও ওয়ার্ল্ড রোবট অলিম্পিয়াড বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের সমন্বয়ক অধ্যাপক আসিফ ইকবাল দলের সব সদস্যকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীদের এই জয় অসাধারণ। বিশেষ করে অন্যান্য দেশের তুলনায় আমাদের রোবট উপকরণের ঘাটতি রয়েছে। এমনকি আসার পথে চীনে ব্যাটারিগুলো রেখে দেওয়ার পরও নতুন করে সবকিছু সংযোজন করে তারা দৃঢ় মানসিকতা নিয়ে লড়াই করেছে।’
বাংলাদেশ ওপেন সোর্স নেটওয়ার্কের (বিডিওএসএন) উদ্যোগে গত জুনে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ওপেন চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে চারটি দলকে ফিলিপাইনের প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত হয়। ব্রেইন স্টেশন ২৩ ও ক্রিয়েটিভ আইটি এই আয়োজনে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রস ক র অল ম প আম দ র
এছাড়াও পড়ুন:
ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমাতে চালাতে হবে সাইকেল
সাইকেল চালানো শরীরের জন্য ভালো। পকেটের ওপরও চাপ কমায়। সম্প্রতি করা এক গবেষণায় সাইকেল চালানোর উপকারিতার তালিকা আরও দীর্ঘ হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, চলাচলের জন্য কেউ যদি গাড়ির বদলে সাইকেল বেছে নেন, তবে তা মস্তিষ্কের বিভিন্ন জটিলতা কমানোর ক্ষেত্রেও বেশ কাজে আসে।
এই গবেষণা করেছে যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য গবেষণাবিষয়ক তথ্যের সবচেয়ে বড় ভান্ডার ‘ইউকে বায়োব্যাংক’। সম্প্রতি গবেষণাটি জেএএমএ নেটওয়ার্ক ওপেন সাময়িকীতে প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, প্রাইভেট কার, বাস, ট্রেনে ভ্রমণের চেয়ে সাইকেল ব্যবহার করলে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি ১৯ শতাংশ এবং আলঝেইমার রোগের ঝুঁকি ২২ শতাংশ পর্যন্ত কমে।
ডিমেনশিয়া বলতে মস্তিষ্কের চিন্তাশক্তি, স্মৃতিশক্তি ও কাজ করার ক্ষমতা হ্রাসকে বোঝায়। বিভিন্ন রোগের কারণে ডিমেনশিয়া হতে পারে। এমন একটি রোগ হলো আলঝেইমার। যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবার (এনএইচএস) তথ্য অনুযায়ী, মস্তিষ্কের কোষের ভেতরে ও আশপাশে অস্বাভাবিকভাবে প্রোটিন জমলে আলঝেইমার হতে পারে।
এই গবেষণায় ২০০৬ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত প্রায় ৪ লাখ ৮০ হাজার মানুষ অংশ নেন। তাঁদের গড় বয়স ছিল সাড়ে ৫৬ বছর। গবেষণায় যাতায়াতের চারটি বিকল্প তুলে ধরা হয়। অংশগ্রহণকারীদের কাছে জানতে চাওয়া হয়—বিগত চার সপ্তাহে যাতায়াতের জন্য তাঁরা কোন বিকল্পটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করেছেন।
যাতায়াতের ওই বিকল্পগুলোর মধ্যে ছিল—একেবারেই সক্রিয় না থাকা, অর্থাৎ বাস বা ট্রেনে করে যাতায়াত করা। আরেকটি ছিল হেঁটে যাতায়াত। তৃতীয় বিকল্পটি ছিল হাঁটা ও সক্রিয় থাকা লাগে না—এমন সব মাধ্যম ব্যবহার করে যাতায়াত। আর শেষ ধরনটি ছিল সাইকেল চালিয়ে এবং অন্য ধরনগুলো ব্যবহার করে যাতায়াত।
গবেষণায় অংশগ্রহণকারীরা নিজেদের যাতায়াতের ধরনগুলো নির্বাচন করার ১৩ বছরের বেশি সময় পর দেখা যায়, ৮ হাজার ৮৪৫ জনের মস্তিষ্কে ডিমেনশিয়া দেখা দিয়েছে। আর ৩ হাজার ৯৫৬ জন আলঝেইমারে আক্রান্ত। এ ছাড়া যাঁরা যাতায়াতের ক্ষেত্রে হাঁটাহাঁটির ওপর ভরসা করেন, তাঁদের ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি ৬ শতাংশ কম।
গবেষণায় সাইকেল চালানোর ফলে ডিমেনশিয়া ও আলঝেইমারের ঝুঁকি কমার প্রমাণও পাওয়া গেছে। এ–ও দেখা গেছে যে মস্তিষ্কের হিপোক্যাম্পাস নামক অংশের তুলনামূলক বড় আয়তনের সঙ্গে সাইকেল চালানোর সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। মস্তিষ্কের এই অংশে স্মৃতি সংরক্ষণ থাকে এবং কোনো কিছু শেখার সঙ্গে জড়িত।
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের স্টোনি ব্রুক ইউনিভার্সিটির স্নায়ুবিদ্যা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক জো ভারগেস বলেন, দশকের পর দশক ধরে চালানো গবেষণায় দেখা গেছে, ব্যায়াম মস্তিষ্কের জন্য ভালো। সাইকেল চালানো হৃৎপিণ্ড সুস্থ রাখে এবং মস্তিষ্কে রক্ত চলাচল ও পরিপাকের সক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এতে করে হয়তো ডিমেনশিয়ার ঝুঁকি কমে। তবে কেউ যদি সাইকেল চালানো শুরু করতে চান, তাহলে আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করতে হবে। দেখে নিতে হবে তিনি এখনই সাইকেল চালানো শুরু করার জন্য যথেষ্ট সুস্থ কি না। নাকি এর জন্য আগে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে।