ভর্তি পরীক্ষায় বৃত্ত ভরাটের কাজটি কি আরেকটু সহজ করা যায় না
Published: 5th, October 2025 GMT
প্রতিবছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। একটি ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন এবং সেটির ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে তাদের ভবিষ্যৎ। ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারার কারণে বা পরীক্ষায় সামান্যতম ভুলের কারণে অনেকের সে স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যায়।
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সফলতার সঙ্গে অনেক দিন ধরে ভর্তি পরীক্ষাগুলো আয়োজন করে চলছে। আগে নিজ নিজ ক্যাম্পাসে পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হলেও বর্তমানে বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা দেশব্যাপী বিভিন্ন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা চট্টগ্রাম, খুলনা, রংপুর, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন কেন্দ্রে একই দিনে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিবছরের মতো কিছুদিনের মধ্যে আবারও অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা। ভিন্ন ভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিয়ে থাকলেও কিছু জায়গায় রয়েছে সাদৃশ্য। এর মধ্যে একটি হলো ওএমআর বা অপটিক্যাল মার্ক রিডার পদ্ধতি। যেখানে বহু নির্বাচনী প্রশ্নের সঠিক উত্তর বলপয়েন্ট কালি দিয়ে বৃত্ত ভরাট করে দিতে হয়। মেশিনের মাধ্যমে সে ভরাট করা কালি পড়ে (মার্ক রিডার) স্বয়ংক্রিয়ভাবে নম্বর দেওয়া হয়।
শুধু পরীক্ষার্থী নয়, কিছু ক্ষেত্রে তো দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদেরও ঝুঁকিতে ফেলে দেওয়া হয়। কিছু কিছু পরীক্ষায় দায়িত্বরত শিক্ষককে নাম লিখে তারপর সাইন করতে হয়, যেটি ব্যক্তিগত গোপনীয়তার সুস্পষ্ট লঙ্ঘনকিন্তু সে ওএমআর ফরমে উত্তরের পাশাপাশি রোল নম্বর বা সিরিয়াল নম্বরের জন্যও বৃত্ত ভরাট করতে হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সেগুলোর সঙ্গে সেট কোড বা বিভাগের বৃত্তও ভরাট করতে হয়। এই তথ্যগুলোর কোনো একটি ভুল হলে সব প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিলেও লাভ হবে না। ভুল বুঝতে পারলে ম্যানুয়ালি চেক করে কিছু ক্ষেত্রে সংশোধন সম্ভব হলেও সব ক্ষেত্রে হবে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চাইলে পরোক্ষভাবে হলেও প্রক্রিয়াটি কিছুটা স্বস্তিদায়ক করতে পারে। কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া যাক। যদিও পরীক্ষার মান ও গোপনীয়তা রক্ষার জন্য বেশ কিছু জিনিস বিস্তারিত বিচার–বিশ্লেষণের দাবি রাখে, তারপরও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি আমলে নিয়ে কোনো না কোনো উপায়ে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি লাঘব করার বিষয়টি ভেবে দেখা যেতে পারে।
যেমন ওএমআর ফরমের একটি নমুনা কপি আগেই ওয়েবসাইটে দিয়ে দিলে, পরীক্ষার্থী আগে থেকেই সেটি দেখে আসতে পারে। সে ক্ষেত্রে তাঁদের পরীক্ষাকেন্দ্রে এসে একেবারে নতুন কিছুর সম্মুখীন হতে হয় না। পরীক্ষার উদ্দেশ্য তো জ্ঞান যাচাই করা, বৃত্ত ভরাটের দক্ষতা যাচাই করা নয়।
প্রতিবছর উল্লেখযোগ্যসংখ্যক পরীক্ষার্থী বাবার নামে মা এবং মায়ের নামের জায়গায় বাবার নাম লিখে রাখে। সেটি নিয়ে তারা অযথাই পরীক্ষা চলমান সময়ে আশঙ্কায় ভোগে, যেটি পরীক্ষায় প্রভাব ফেলে। সমস্যার মূল কারণ, প্রবেশপত্রে যে ক্রমে মা-বাবার নাম আছে, কিছু ইউনিটের ওএমআরে ঠিক উল্টো ক্রমে মা-বাবার নাম লিখতে দেওয়া হয়। এই ক্রম প্রবেশপত্র এবং ওএমআর ফরমে একই থাকা উচিত। নাহলে টেনশনে থাকা পরীক্ষার্থীরা অবচেতন মনেই এই ভুল করে চলবে।
কোথাও কোথাও এক নির্দেশনায় বলা থাকে, প্রবেশপত্র অনুযায়ী লিখতে হবে। আবার আরেক নির্দেশনায় বলা থাকে ইংরেজিতে লিখতে হবে। কিন্তু ওএমআর কিংবা প্রবেশপত্রে সেটি দেখা গেল লেখা আছে বাংলায়। বিষয়গুলো পরস্পরবিরোধী। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মানুষ সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্ভুল প্রক্রিয়া প্রত্যাশা করে। বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্যরা অনুসরণ করবে, সেটিই স্বাভাবিক। অতএব সেখানে এসব ছোটখাটো ভ্রান্তি না থাকলেই ভালো।
ওএমআর ফরমে স্বাক্ষরের জায়গায় এমন কিছু বাংলা থাকে, যেগুলো পরীক্ষার্থী না বুঝেই অনেক সময় স্বাক্ষর করে দেয়। যেমন পর্যবেক্ষকের স্বাক্ষর, পরীক্ষকের স্বাক্ষর, নিরীক্ষকের স্বাক্ষর। এগুলোও ওএমআর ফরম ডিজাইনের সময় বিবেচনায় নিলে আরও স্পষ্ট করা যায় বা বোধগম্য বাংলায় প্রকাশ করা যায়।
ভিন্ন ভিন্ন ইউনিটে ভিন্ন ভিন্ন ওএমআর না করে কেন্দ্রীয়ভাবে সমন্বয় করে সব ইউনিটের জন্য কমন ফরম করতে পারলে আরও ভালো হয়। ইউনিটভেদে কয়েকটি অতিরিক্ত তথ্য ছাড়া মূল প্রশ্নোত্তর অংশ দেখতে একই রকম হতেই পারে। কোথাও বলা থাকে এমসিকিউ শেষ করেই লিখিত শুরু করতে পারবে, আবার কোথাও বলা থাকে কেবল নির্দিষ্ট সময়ের পরই শুরু করতে পারবে। ভিন্ন ভিন্ন নির্দেশনা না হয়ে সেগুলোও একই নির্দেশনার ভেতর নিয়ে আসা সম্ভব হলে উত্তম।
এমসিকিউ ফরম নির্ভুলভাবে পূরণ করার ওপর শিক্ষার্থীর ভর্তি সামান্যতম নির্ভরশীল হওয়া উচিত কি? অনেক পরীক্ষায় বলা থাকে, ভুল করলে নতুন ওএমআর পাবে না বা কিছু ফরম অবশিষ্ট থাকা সাপেক্ষে পাবে। কেন? এমনিতেই থাকে টেনশনে, তার ওপর যাচ্ছে সময়, কেউ কি ইচ্ছা করে ভুল করতে চায়? যতবার ভুল করবে, ততবার ওএমআর দিতে সমস্যা কোথায়?
শুধু পরীক্ষার্থী নয়, কিছু ক্ষেত্রে তো দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদেরও ঝুঁকিতে ফেলে দেওয়া হয়। কিছু কিছু পরীক্ষায় দায়িত্বরত শিক্ষককে নাম লিখে তারপর সাইন করতে হয়, যেটি ব্যক্তিগত গোপনীয়তার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। কোনো অবস্থাতেই শনাক্ত করা যায় এমন ব্যক্তিগত তথ্য কোথাও দেওয়া উচিত নয়।
একটি সুন্দর ভবিষ্যতের আশায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুয়ারে আসেন। ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমেই সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তাঁদের প্রথম পরিচয় ঘটে। কেউ কেউ সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে পা রাখেন, কারও কারও জন্য পরিচয় পর্বটাই হয়ে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একমাত্র আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ। একটু আন্তরিক হলে সে পরিচয় পর্বকে দুঃস্বপ্নের বদলে বরং স্মরণীয় করে রাখাটা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য কি খুব কঠিন কিছু?
ড.
বি এম মইনুল হোসেন অধ্যাপক ও পরিচালক, তথ্য প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
[email protected]
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পর ক ষ র থ ব ত ত ভর ট পর ক ষ য় অন ষ ঠ ত ভ ল কর র জন য ইউন ট
এছাড়াও পড়ুন:
ভর্তি পরীক্ষায় বৃত্ত ভরাটের কাজটি কি আরেকটু সহজ করা যায় না
প্রতিবছর হাজার হাজার শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। একটি ভালো প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের স্বপ্ন এবং সেটির ওপর অনেকাংশে নির্ভর করে তাদের ভবিষ্যৎ। ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারার কারণে বা পরীক্ষায় সামান্যতম ভুলের কারণে অনেকের সে স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যায়।
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সফলতার সঙ্গে অনেক দিন ধরে ভর্তি পরীক্ষাগুলো আয়োজন করে চলছে। আগে নিজ নিজ ক্যাম্পাসে পরীক্ষাগুলো অনুষ্ঠিত হলেও বর্তমানে বেশ কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা দেশব্যাপী বিভিন্ন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হয়। যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা চট্টগ্রাম, খুলনা, রংপুর, ময়মনসিংহসহ দেশের বিভিন্ন কেন্দ্রে একই দিনে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিবছরের মতো কিছুদিনের মধ্যে আবারও অনুষ্ঠিত হবে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষা। ভিন্ন ভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিয়ে থাকলেও কিছু জায়গায় রয়েছে সাদৃশ্য। এর মধ্যে একটি হলো ওএমআর বা অপটিক্যাল মার্ক রিডার পদ্ধতি। যেখানে বহু নির্বাচনী প্রশ্নের সঠিক উত্তর বলপয়েন্ট কালি দিয়ে বৃত্ত ভরাট করে দিতে হয়। মেশিনের মাধ্যমে সে ভরাট করা কালি পড়ে (মার্ক রিডার) স্বয়ংক্রিয়ভাবে নম্বর দেওয়া হয়।
শুধু পরীক্ষার্থী নয়, কিছু ক্ষেত্রে তো দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদেরও ঝুঁকিতে ফেলে দেওয়া হয়। কিছু কিছু পরীক্ষায় দায়িত্বরত শিক্ষককে নাম লিখে তারপর সাইন করতে হয়, যেটি ব্যক্তিগত গোপনীয়তার সুস্পষ্ট লঙ্ঘনকিন্তু সে ওএমআর ফরমে উত্তরের পাশাপাশি রোল নম্বর বা সিরিয়াল নম্বরের জন্যও বৃত্ত ভরাট করতে হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে সেগুলোর সঙ্গে সেট কোড বা বিভাগের বৃত্তও ভরাট করতে হয়। এই তথ্যগুলোর কোনো একটি ভুল হলে সব প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিলেও লাভ হবে না। ভুল বুঝতে পারলে ম্যানুয়ালি চেক করে কিছু ক্ষেত্রে সংশোধন সম্ভব হলেও সব ক্ষেত্রে হবে না। তবে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ চাইলে পরোক্ষভাবে হলেও প্রক্রিয়াটি কিছুটা স্বস্তিদায়ক করতে পারে। কয়েকটি উদাহরণ দেওয়া যাক। যদিও পরীক্ষার মান ও গোপনীয়তা রক্ষার জন্য বেশ কিছু জিনিস বিস্তারিত বিচার–বিশ্লেষণের দাবি রাখে, তারপরও শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি আমলে নিয়ে কোনো না কোনো উপায়ে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি লাঘব করার বিষয়টি ভেবে দেখা যেতে পারে।
যেমন ওএমআর ফরমের একটি নমুনা কপি আগেই ওয়েবসাইটে দিয়ে দিলে, পরীক্ষার্থী আগে থেকেই সেটি দেখে আসতে পারে। সে ক্ষেত্রে তাঁদের পরীক্ষাকেন্দ্রে এসে একেবারে নতুন কিছুর সম্মুখীন হতে হয় না। পরীক্ষার উদ্দেশ্য তো জ্ঞান যাচাই করা, বৃত্ত ভরাটের দক্ষতা যাচাই করা নয়।
প্রতিবছর উল্লেখযোগ্যসংখ্যক পরীক্ষার্থী বাবার নামে মা এবং মায়ের নামের জায়গায় বাবার নাম লিখে রাখে। সেটি নিয়ে তারা অযথাই পরীক্ষা চলমান সময়ে আশঙ্কায় ভোগে, যেটি পরীক্ষায় প্রভাব ফেলে। সমস্যার মূল কারণ, প্রবেশপত্রে যে ক্রমে মা-বাবার নাম আছে, কিছু ইউনিটের ওএমআরে ঠিক উল্টো ক্রমে মা-বাবার নাম লিখতে দেওয়া হয়। এই ক্রম প্রবেশপত্র এবং ওএমআর ফরমে একই থাকা উচিত। নাহলে টেনশনে থাকা পরীক্ষার্থীরা অবচেতন মনেই এই ভুল করে চলবে।
কোথাও কোথাও এক নির্দেশনায় বলা থাকে, প্রবেশপত্র অনুযায়ী লিখতে হবে। আবার আরেক নির্দেশনায় বলা থাকে ইংরেজিতে লিখতে হবে। কিন্তু ওএমআর কিংবা প্রবেশপত্রে সেটি দেখা গেল লেখা আছে বাংলায়। বিষয়গুলো পরস্পরবিরোধী। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মানুষ সর্বোচ্চ পর্যায়ের নির্ভুল প্রক্রিয়া প্রত্যাশা করে। বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্যরা অনুসরণ করবে, সেটিই স্বাভাবিক। অতএব সেখানে এসব ছোটখাটো ভ্রান্তি না থাকলেই ভালো।
ওএমআর ফরমে স্বাক্ষরের জায়গায় এমন কিছু বাংলা থাকে, যেগুলো পরীক্ষার্থী না বুঝেই অনেক সময় স্বাক্ষর করে দেয়। যেমন পর্যবেক্ষকের স্বাক্ষর, পরীক্ষকের স্বাক্ষর, নিরীক্ষকের স্বাক্ষর। এগুলোও ওএমআর ফরম ডিজাইনের সময় বিবেচনায় নিলে আরও স্পষ্ট করা যায় বা বোধগম্য বাংলায় প্রকাশ করা যায়।
ভিন্ন ভিন্ন ইউনিটে ভিন্ন ভিন্ন ওএমআর না করে কেন্দ্রীয়ভাবে সমন্বয় করে সব ইউনিটের জন্য কমন ফরম করতে পারলে আরও ভালো হয়। ইউনিটভেদে কয়েকটি অতিরিক্ত তথ্য ছাড়া মূল প্রশ্নোত্তর অংশ দেখতে একই রকম হতেই পারে। কোথাও বলা থাকে এমসিকিউ শেষ করেই লিখিত শুরু করতে পারবে, আবার কোথাও বলা থাকে কেবল নির্দিষ্ট সময়ের পরই শুরু করতে পারবে। ভিন্ন ভিন্ন নির্দেশনা না হয়ে সেগুলোও একই নির্দেশনার ভেতর নিয়ে আসা সম্ভব হলে উত্তম।
এমসিকিউ ফরম নির্ভুলভাবে পূরণ করার ওপর শিক্ষার্থীর ভর্তি সামান্যতম নির্ভরশীল হওয়া উচিত কি? অনেক পরীক্ষায় বলা থাকে, ভুল করলে নতুন ওএমআর পাবে না বা কিছু ফরম অবশিষ্ট থাকা সাপেক্ষে পাবে। কেন? এমনিতেই থাকে টেনশনে, তার ওপর যাচ্ছে সময়, কেউ কি ইচ্ছা করে ভুল করতে চায়? যতবার ভুল করবে, ততবার ওএমআর দিতে সমস্যা কোথায়?
শুধু পরীক্ষার্থী নয়, কিছু ক্ষেত্রে তো দায়িত্বে থাকা শিক্ষকদেরও ঝুঁকিতে ফেলে দেওয়া হয়। কিছু কিছু পরীক্ষায় দায়িত্বরত শিক্ষককে নাম লিখে তারপর সাইন করতে হয়, যেটি ব্যক্তিগত গোপনীয়তার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। কোনো অবস্থাতেই শনাক্ত করা যায় এমন ব্যক্তিগত তথ্য কোথাও দেওয়া উচিত নয়।
একটি সুন্দর ভবিষ্যতের আশায় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুয়ারে আসেন। ভর্তি পরীক্ষার মাধ্যমেই সেই বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তাঁদের প্রথম পরিচয় ঘটে। কেউ কেউ সেই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বিশ্ববিদ্যালয় অঙ্গনে পা রাখেন, কারও কারও জন্য পরিচয় পর্বটাই হয়ে থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে একমাত্র আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ। একটু আন্তরিক হলে সে পরিচয় পর্বকে দুঃস্বপ্নের বদলে বরং স্মরণীয় করে রাখাটা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য কি খুব কঠিন কিছু?
ড. বি এম মইনুল হোসেন অধ্যাপক ও পরিচালক, তথ্য প্রযুক্তি ইনস্টিটিউট, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
[email protected]