হংকংয়ের বিপক্ষে ম্যাচ খেলতে গত সোমবার ঢাকায় এসেছেন। প্রথম দিনেই যোগ দেন অনুশীলনে। আজ দ্বিতীয় দিনে জাতীয় স্টেডিয়ামে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন হামজা চৌধুরী। সিলেটের আঞ্চলিক ভাষায় উত্তর দিয়েছেন বেশি। কিছু কথা বলেছেন সিলেটির সঙ্গে ইংরেজি মিশিয়ে।

বাংলাদেশ দল মনে করে হামজা বাংলাদেশের লিওনেল মেসি। হামজা নিজে কী মনে করেন। অনুশীলনে যাওয়ার আগে এটাই ছিল হামজার কাছে শেষ প্রশ্ন। লেস্টার সিটির ফুটবলারের কণ্ঠে বিনয়, ‘অবশ্যই না। এটা দলীয় গেম। এমনকি মেসিও যদি বাংলাদেশের হয়ে খেলতেন.

..তবুও আমাদের ট্যাকটিকস ঠিক করা এবং টিম স্পিরিট গড়ে তোলার মতো চ্যালেঞ্জ থাকতই। ফুটবল কখনো একজনের খেলা নয়। বিশেষ করে আমাকে কেন্দ্র করে তো নয়ই।’

শেষটা টেনেছেন এভাবে, ‘আমাদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, আমরা যেভাবে একটা জাতি হিসেবে আছি, সেভাবেই ঐক্যবদ্ধ থাকা। ইনশা আল্লাহ, আমরা একসঙ্গে থাকলে সফল হতে পারব।’

আরও পড়ুনহংকং ম্যাচের প্রাথমিক দলে যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী জায়ান২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫চাপ সব দেশের লাগিই আছে। আমরা তরুণ দল। অভিজ্ঞতা লইয়া আমরা ইনশা আল্লাহ সফল টিম হইমু।হামজা চৌধুরী

৯ অক্টোবর জাতীয় স্টেডিয়ামে এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে হংকংয়ের বিপক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ফুটবলপ্রেমীরা হামজার দিকে তাকিয়ে। তিনি নিজে তৈরি? কতটা মানিয়ে নিতে পেরেছেন দলের সঙ্গে? উত্তরটা দেন এভাবে, ‘আমি ভালোভাবে মানিয়ে নিছি। তৃতীয়বারের মতো আমি আইছি। আমার সম্পর্ক খুব ভালো অইছে, প্লেয়ারের সঙ্গে, কোচের সঙ্গে। টিম সপ্তাহখানেক ধরে কঠিন পরিশ্রম করতেছে। খুব ভালা লাগতেছে। আমরা জিতমু।’

জাতীয় স্টেডিয়ামে সতীর্থদের সঙ্গে অনুশীলনে হামজা চৌধুরী

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বিদ্যালয়ে যেনতেন পড়াশোনা, ভরসা কোচিং ও গৃহশিক্ষক

রাজধানীর ১৯০ বছরের পুরোনো ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলে শিক্ষকদের বসার কক্ষে একজন শিক্ষকের সঙ্গে আলাপ চলছিল (১১ সেপ্টেম্বর)। তখন ক্লাস শেষ করে এলেন আরেকজন শিক্ষক। ওই শিক্ষক বললেন, তিনি একই সময়ে দুটি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিয়েছেন। বাংলা ও কৃষিশিক্ষার। তবে তিনি হিসাববিজ্ঞানের শিক্ষক। শিক্ষকসংকটের কারণেই তাঁকে আরেক বিষয়ের ক্লাস নিতে হচ্ছে।

পাশে বসে ছিলেন পদার্থবিজ্ঞানের একজন শিক্ষক। তিনি যোগ করলেন, তাঁকেও নিজের বিষয়ের পাশাপাশি শারীরিক শিক্ষার ক্লাস নিতে হয়। দিনে পাঁচ-ছয়টি করে সপ্তাহে প্রায় ২৫টি ক্লাস নিতে গিয়ে ভালোভাবে পড়ানো কঠিন হয়ে পড়ে।

ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলটি সদরঘাট এলাকায় অবস্থিত। এটি অবিভক্ত বাংলার প্রথম সরকারি উচ্চবিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত। গত ১১ সেপ্টেম্বর ওই স্কুলে গিয়ে জানা যায়, সেখানে দুই পালায় শিক্ষার্থী প্রায় দুই হাজার। শিক্ষক আছেন মাত্র ৩৯ জন। শিক্ষকের পদসংখ্যা ৫৩। ১৪টি খালি। গড়ে ৫১ শিক্ষার্থীর বিপরীতে ১ জন শিক্ষক। শিক্ষকেরা পড়ানোর চাপে হিমশিম খান। ক্লাসে মানসম্মত পড়াশোনা করানো কঠিন হয়ে পড়ে।

বিদ্যালয়টির দুজন শিক্ষার্থী জানাল, তারা নিয়মিত কোচিং ও গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ে। একজন বলল, সে বাসায় দুজন গৃহশিক্ষকের কাছে পড়ে। খরচ মাসে সাড়ে ছয় হাজার টাকা।

ঢাকা কলেজিয়েট স্কুলের এ চিত্র আসলে পুরো দেশের মাধ্যমিক শিক্ষার প্রতিচ্ছবি; বরং কোথাও কোথাও পরিস্থিতি আরও খারাপ। শিক্ষকের অভাব, বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের সংকট এবং দুর্বল পাঠদানের কারণে শিক্ষার্থীরা দক্ষতা অর্জন করতে পারছে না। এতে পড়াশোনা থেকে ঝরে পড়ছে অনেকে।

সর্বশেষ বাংলাদেশ শিক্ষা পরিসংখ্যান-২০২৩ প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাধ্যমিকে ঝরে পড়ার হার ৩৩ শতাংশ।

সচ্ছল মা-বাবা সন্তানদের বাসায় গৃহশিক্ষক রেখে পড়াতে পারেন। কোচিং-বাণিজ্য রমরমা। মধ্যম আয়ের মা-বাবা সন্তানদের কোচিং ও গৃহশিক্ষকের কাছে পড়াতে গিয়ে বড় ধরনের আর্থিক চাপে পড়ছেন। নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র পরিবারের সন্তানেরা কোচিংয়ে পড়ার সুযোগ পাচ্ছে না, বাসায় গৃহশিক্ষক রাখার সামর্থ্য পরিবারগুলোর নেই। ফলে অনেক ক্ষেত্রে নিম্নবিত্ত পরিবারের সন্তানেরা পড়াশোনায় ভালো করতে পারছে না।

অবশ্য সরকারি ও এমপিওভুক্ত স্কুলের পেছনে জনগণের করের টাকা ঠিকই খরচ হচ্ছে। বেসরকারি বিদ্যালয়ে উচ্চ হারে বেতন ও ভর্তি ফি নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু পড়াশোনার মান নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

গৃহশিক্ষকের কাছে পড়া এবং কোচিংয়ের এই প্রবণতা কেবল ঢাকা নয়, সারা দেশে মোটামুটি একই। ময়মনসিংহের একটি বিদ্যালয়ে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া এক ছাত্রের বাবা প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর সন্তান সকালে কোচিংয়ে পড়ে। তারপর বিদ্যালয়ে যায়। এরপর বিকেলে আবারও কোচিং। সন্ধ্যায় বাসায় আসেন গৃহশিক্ষক। তিনি বলেন, খরচ অনেক। কিন্তু কিছু করার নেই। ভালো পড়াশোনা তো করাতে হবে।

অন্তর্বর্তী সরকার ১১টি বিষয়ে কমিশন গঠন করলেও বাদ দিয়েছে শিক্ষাকে। প্রাথমিক ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার মানোন্নয়নে পরামর্শ দিতে শিক্ষাবিদ ও ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির ইমেরিটাস অধ্যাপক মনজুর আহমদকে প্রধান করে কমিটি হয়েছিল। কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নে অগ্রগতি সামান্যই।প্রথম আলো ফাইল ছবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ডিপো থেকে তেল চুরি তদন্তে কমিটি করেছে জ্বালানি বিভাগ
  • রাবিতে নবীন শিক্ষকদের নিয়ে প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু
  • পুলিশের শটগান-ওয়াকিটকি নিয়ে পালান দুই আসামি, একজন গ্রেপ্তার
  • ইলিয়াস কাঞ্চনের জন্য দোয়া চাইলেন দিতিকন্যা লামিয়া
  • তিনি একজন উৎপাত সৃষ্টিকারী, তাঁকে চিকিৎসক দেখানো উচিত: থুনবার্গকে ট্রাম্পের উপহাস
  • সর্বসম্মতি ক্রমে সভাপতি আমিনুল
  • ‘ইলিয়াস কাঞ্চন ভাইয়ের অসুস্থতার খবরে আমরা গভীরভাবে ব্যথিত’
  • বিগ ব্যাশ, পন্টিং প্রেম ও হোবার্ট হারিকেনস নিয়ে রিশাদের উচ্ছ্বাস
  • বিদ্যালয়ে যেনতেন পড়াশোনা, ভরসা কোচিং ও গৃহশিক্ষক