ভিডিও গেম কি মস্তিষ্ক বিকশিত করে
Published: 8th, October 2025 GMT
ভিডিও গেম নিয়ে বিতর্ক বহু পুরোনো। ভিডিও গেমস শিশু-কিশোরদের দক্ষতা বাড়ায় নাকি কেবল সময়ের অপচয় করে, তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে। তাই শিশুদের ভিডিও গেম খেলা নিয়ে অনেক অভিভাবকই উদ্বিগ্ন থাকেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সাময়িকীতে প্রকাশিত তথ্যমতে, ভিডিও গেম খেলার অভ্যাস শিশু-কিশোরদের মস্তিষ্ক ও আচরণে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে। এই প্রভাব সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে গেমের ধরন এবং তা কতক্ষণ খেলা হচ্ছে তার ওপর।
ভিডিও গেম খেলার উপকারিতা নিয়ে স্নায়ুবিজ্ঞানীরা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, কিশোর-কিশোরীরা নিয়মিত ভিডিও গেম খেললে তাদের মস্তিষ্কের কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চলে উন্নতি দেখা যায়। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী ডাফিন ব্যাভেলিয়ার বলেন, অ্যাকশনভিত্তিক বা কৌশলগত ভিডিও গেম, যেমন রিয়েল-টাইম স্ট্র্যাটেজি গেমগুলো কিশোর-কিশোরীদের নিয়ন্ত্রণ ও দৃষ্টি আকর্ষণ ক্ষমতা উন্নত করে। এ গেমগুলো দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও একাধিক তথ্যের মধ্যে মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত গেম খেলা শিশুদের মস্তিষ্কের কাঠামোতে পরিবর্তন আনতে পারে। মস্তিষ্কের বাঁ প্রিফ্রন্টাল করটেক্স ও কগনিটিভ নিয়ন্ত্রণে যুক্ত অঞ্চলে স্বাভাবিক ধূসর পদার্থের ঘনত্ব বৃদ্ধি পেতে দেখা গেছে। ধূসর পদার্থ হলো সেই অংশ যেখানে নিউরোনাল প্রসেসিং হয়। সহজ ভাষায়, গেম খেলার মাধ্যমে মস্তিষ্ক যেন আরও দক্ষ ও সুসংগঠিত হয়ে উঠছে।
বর্তমানে জনপ্রিয় কিছু গেম, যেমন মাইনক্রাফট বা ফোর্টনাইটের খেলার তথ্য সংগ্রহ করেছেন বিজ্ঞানীরা। মাইনক্রাফটের মতো স্যান্ডবক্স গেমে শিশুরা নিজেদের জগৎ তৈরি করে। শিশুদের স্থানিক যুক্তি ও সমস্যা সমাধানের দক্ষতা ব্যাপকভাবে উন্নত করে। এটি অনেকটা ভার্চ্যুয়াল লেগো খেলার মতো, যেখানে কোনো গাইডলাইন থাকে না। ফোর্টনাইট বা অন্যান্য মাল্টিপ্লেয়ার গেম খেলার সময় কিশোর-কিশোরীরা আন্তর্জাতিক গেমারদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। একটি অভিন্ন লক্ষ্যের জন্য দলগতভাবে পরিকল্পনা করা ও দ্রুত পরিস্থিতিতে যোগাযোগ স্থাপন করা তাদের টিমওয়ার্ক ও যোগাযোগের দক্ষতা শক্তিশালী করে তোলে।
বিজ্ঞানীরা ভিডিও গেমের উপকারিতার পাশাপাশি ক্ষতিকর দিকসমূহ স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন। অতিরিক্ত ভিডিও গেম খেলার সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হলো গেমিং ডিজঅর্ডার বা গেমিং আসক্তি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন এটিকে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী ওরসোলে কিরালি জানান, রাতে অতিরিক্ত গেম খেললে ঘুমের ধরন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়, যা পরের দিন মনোযোগের অভাব ও বিরক্তির সৃষ্টি করে। আসক্তিমূলক গেমিংয়ের ক্ষেত্রে শিশুরা স্কুলের পড়া বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ থেকে মনোযোগ সরিয়ে নেয়। যখন কোনো গেম বাস্তবতাকে এড়িয়ে চলার মাধ্যম হয়ে ওঠে এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতা তৈরি করে, তখন তা উদ্বেগ ও বিষণ্নতার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
সূত্র: সায়েন্স ডাইরেক্ট ডটকম, ওয়্যারড ডটকম
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভিডিও গেম কি মস্তিষ্ক বিকশিত করে
ভিডিও গেম নিয়ে বিতর্ক বহু পুরোনো। ভিডিও গেমস শিশু-কিশোরদের দক্ষতা বাড়ায় নাকি কেবল সময়ের অপচয় করে, তা নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে। তাই শিশুদের ভিডিও গেম খেলা নিয়ে অনেক অভিভাবকই উদ্বিগ্ন থাকেন। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সাময়িকীতে প্রকাশিত তথ্যমতে, ভিডিও গেম খেলার অভ্যাস শিশু-কিশোরদের মস্তিষ্ক ও আচরণে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলে। এই প্রভাব সম্পূর্ণভাবে নির্ভর করে গেমের ধরন এবং তা কতক্ষণ খেলা হচ্ছে তার ওপর।
ভিডিও গেম খেলার উপকারিতা নিয়ে স্নায়ুবিজ্ঞানীরা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, কিশোর-কিশোরীরা নিয়মিত ভিডিও গেম খেললে তাদের মস্তিষ্কের কিছু নির্দিষ্ট অঞ্চলে উন্নতি দেখা যায়। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী ডাফিন ব্যাভেলিয়ার বলেন, অ্যাকশনভিত্তিক বা কৌশলগত ভিডিও গেম, যেমন রিয়েল-টাইম স্ট্র্যাটেজি গেমগুলো কিশোর-কিশোরীদের নিয়ন্ত্রণ ও দৃষ্টি আকর্ষণ ক্ষমতা উন্নত করে। এ গেমগুলো দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও একাধিক তথ্যের মধ্যে মনোযোগ ধরে রাখার ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত গেম খেলা শিশুদের মস্তিষ্কের কাঠামোতে পরিবর্তন আনতে পারে। মস্তিষ্কের বাঁ প্রিফ্রন্টাল করটেক্স ও কগনিটিভ নিয়ন্ত্রণে যুক্ত অঞ্চলে স্বাভাবিক ধূসর পদার্থের ঘনত্ব বৃদ্ধি পেতে দেখা গেছে। ধূসর পদার্থ হলো সেই অংশ যেখানে নিউরোনাল প্রসেসিং হয়। সহজ ভাষায়, গেম খেলার মাধ্যমে মস্তিষ্ক যেন আরও দক্ষ ও সুসংগঠিত হয়ে উঠছে।
বর্তমানে জনপ্রিয় কিছু গেম, যেমন মাইনক্রাফট বা ফোর্টনাইটের খেলার তথ্য সংগ্রহ করেছেন বিজ্ঞানীরা। মাইনক্রাফটের মতো স্যান্ডবক্স গেমে শিশুরা নিজেদের জগৎ তৈরি করে। শিশুদের স্থানিক যুক্তি ও সমস্যা সমাধানের দক্ষতা ব্যাপকভাবে উন্নত করে। এটি অনেকটা ভার্চ্যুয়াল লেগো খেলার মতো, যেখানে কোনো গাইডলাইন থাকে না। ফোর্টনাইট বা অন্যান্য মাল্টিপ্লেয়ার গেম খেলার সময় কিশোর-কিশোরীরা আন্তর্জাতিক গেমারদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়। একটি অভিন্ন লক্ষ্যের জন্য দলগতভাবে পরিকল্পনা করা ও দ্রুত পরিস্থিতিতে যোগাযোগ স্থাপন করা তাদের টিমওয়ার্ক ও যোগাযোগের দক্ষতা শক্তিশালী করে তোলে।
বিজ্ঞানীরা ভিডিও গেমের উপকারিতার পাশাপাশি ক্ষতিকর দিকসমূহ স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছেন। অতিরিক্ত ভিডিও গেম খেলার সবচেয়ে বড় ঝুঁকি হলো গেমিং ডিজঅর্ডার বা গেমিং আসক্তি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও আমেরিকান সাইকিয়াট্রিক অ্যাসোসিয়েশন এটিকে মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এ বিষয়ে বিজ্ঞানী ওরসোলে কিরালি জানান, রাতে অতিরিক্ত গেম খেললে ঘুমের ধরন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়, যা পরের দিন মনোযোগের অভাব ও বিরক্তির সৃষ্টি করে। আসক্তিমূলক গেমিংয়ের ক্ষেত্রে শিশুরা স্কুলের পড়া বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ থেকে মনোযোগ সরিয়ে নেয়। যখন কোনো গেম বাস্তবতাকে এড়িয়ে চলার মাধ্যম হয়ে ওঠে এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতা তৈরি করে, তখন তা উদ্বেগ ও বিষণ্নতার ঝুঁকি বাড়াতে পারে।
সূত্র: সায়েন্স ডাইরেক্ট ডটকম, ওয়্যারড ডটকম