দেশে গত এক দশকে ইন্টারনেট ও স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বেড়েছে। চাকরির ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মগুলোর প্রসারে দেশে অনলাইনে চাকরির আবেদন এখন অনেকটাই সহজ হয়ে গেছে।

সোশ্যাল মিডিয়া ম্যানেজমেন্ট ও অ্যানালিটিকস প্ল্যাটফর্ম নেপোলিয়নক্যাটের রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেশে ফেসবুক ব্যবহারকারী প্রায় ৭ কোটি ৫০ লাখ। আর লিংকডইন ব্যবহারকারী ১ কোটি ১০ লাখ। তাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও বিভিন্ন গ্রুপ ও বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে চাকরির খোঁজ পাওয়া যায়। এ ছাড়া লিংকডইনের মাধ্যমে চাইলে নিজের বানানো সিভি দিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে আবেদন করতে পারেন। সে ক্ষেত্রে কোন প্রতিষ্ঠান চাকরির বিজ্ঞাপন দেয়, সেই বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে।

এবার দেখা যাক, দেশের জনপ্রিয় চাকরি খোঁজার প্ল্যাটফর্মগুলো কী, কীভাবে আবেদন করা যায়।

বিডিজবস ডটকম

অনলাইনে চাকরি খোঁজার জন্য ‘বিডিজবস ডটকম’ অনেকের কাছে পরিচিত। বিডিজবসের ওয়েবসাইট ও মোবাইল অ্যাপ—দুই মাধ্যমেই চাকরির আবেদন করা যায়। এই প্ল্যাটফর্মে চাকরির ধরন, অবস্থান, অভিজ্ঞতা, বেতন কিংবা শিক্ষাগত যোগ্যতা অনুযায়ী আলাদা করে চাকরি খোঁজা যায়। এই প্ল্যাটফর্মে ই–মেইল ও মুঠোফোন নম্বরের মাধ্যমে নিবন্ধন করে যে কেউ তাঁর নিজের তৈরি সিভি (জীবনবৃত্তান্ত) দিয়ে আবেদন করতে পারবেন। সিভি না থাকলে এই প্ল্যাটফর্মে সিভি বানিয়ে আবেদন করা যায়।

বিডিজবসের তথ্য বলছে, প্রতিদিন দুই লাখের বেশি চাকরিপ্রার্থী বিডিজবসের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করেন। প্রতি মাসে চার হাজার প্রতিষ্ঠান প্রায় ১০ হাজারের মতো চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকে। এখন পর্যন্ত প্রতিষ্ঠানটির কাছে ৫০ লাখের বেশি সিভি রয়েছে।

বিডিজবসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) এ কে এম ফাহিম মাসরুর প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা হয়তো দেশের চাকরির বাজারে যে অবদান রাখছি, তা অনেক কম। তবে গত এক দশকে গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের সংখ্যাও দ্বিগুণ হয়েছে। তবে আমাদের দেশে চাকরিপ্রার্থীদের দক্ষতা বাড়াতে ইংরেজি ছাড়া অন্য ভাষা শেখার ক্ষেত্রেও গুরুত্ব দিতে হবে।’

সম্ভব

দেশে চিকিৎসক কিংবা প্রকৌশলীদের চাকরির সুযোগ বেশি। ড্রাইভার, রেস্টুরেন্ট কর্মী, ডাটা এন্ট্রিসহ এমন ধরনের পেশাজীবীদের চাকরির খোঁজ পাওয়া সহজ নয়। তবে সম্ভবের মাধ্যমে এসব চাকরির খোঁজ খুব সহজেই পাওয়া যায়। টাকা ছাড়া অ্যাপ ইনস্টল করে নিবন্ধনের মাধ্যমে আবেদন করা যাবে। অ্যাপের মাধ্যমে চাকরি না হলেও জানা যাবে কেন চাকরি হয়নি, যা ভবিষ্যতে চাকরিপ্রার্থীর জন্য দক্ষতা উন্নয়নে কাজে লাগবে।

সম্ভবের দেওয়া তথ্য বলছে, গুগল প্লে স্টোরে অ্যাপটি এখন পর্যন্ত ২০ লাখ বার ডাউনলোড করা হয়েছে। সম্ভবের অ্যাপের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৬০ লাখের বেশি আবেদন করা হয়েছে। প্রতি মাসে অ্যাপটি ব্যবহার করেন প্রায় তিন লাখ চাকরিপ্রার্থী। সম্ভবের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ৩০ হাজারের বেশি প্রার্থী চাকরি পেয়েছেন।

সম্ভবের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) রিফাদ হোসেন বলেন, অনলাইনে চাকরির আবেদনের ফলে সময় ও টাকা দুটিই বেঁচে যাচ্ছে। ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে চাকরির আবেদনে অনেক বেশি স্বচ্ছতা রয়েছে। অনলাইনে চাকরি খোঁজা ও আবেদন—দুটির চাহিদা বাড়ছে।

বিক্রয় জবস

দেশের চাকরির বাজারে কেনাবেচার বিজ্ঞাপন প্ল্যাটফর্ম বিক্রয় ডটকমের আলাদা চাকরির প্ল্যাটফর্ম বিক্রয় জবস। বিশেষ করে ড্রাইভার, ডেলিভারি রাইডার, নিরাপত্তা প্রহরী, টেকনিশিয়ান, গৃহকর্মী এবং ছোট ও মাঝারি ব্যবসার জন্য সহকারীসহ নানা ধরনের পেশার কর্মীদের জন্য চাকরির খোঁজ পাওয়া যায়। চাকরিপ্রার্থীরা তাঁদের যোগ্যতা ও অবস্থান অনুযায়ী চাকরি খুঁজে আবেদন করতে পারছেন এই প্ল্যাটফর্মে।

ফেসবুক ও লিংকডইন

ফেসবুকে এখন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব পেজ বা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে চাকরির আবেদন দেয়। এর পাশাপাশি চাকরির সংবাদ, পার্টটাইম জব ইন বাংলাদেশ, জব ইনফরমেশন বাংলাদেশ, এনজিও জবস বাংলাদেশসহ নানা গ্রুপ রয়েছে। যেখানে নিয়মিত চাকরির খবর পাওয়া যায়। তবে লিংকডইন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উচ্চতর কর্মকর্তাসহ প্রতিষ্ঠানের অফিশিয়াল পেজ থেকে চাকরির বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। এর পাশাপাশি কী ধরনের চাকরির খবর সামনে আসবে, তা–ও ঠিক করা যায় লিংকডইনে।

এ ছাড়া বিভিন্ন বড় প্রতিষ্ঠান ও কোম্পানির অফিশিয়াল ওয়েবসাইটেও চাকরির তথ্য পাওয়া যায়। বিভিন্ন গণমাধ্যমের ওয়েবসাইটেও চাকরির আলাদা তথ্য দেওয়া থাকে। বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) ওয়েবসাইটেও বিভিন্ন ধরনের সরকারি চাকরির হালনাগাদ তথ্য পাওয়া যায়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এই প ল য টফর ম চ কর প র র থ চ কর র ব জ ব ড জবস র র চ কর র চ কর র খ ব যবহ র ফ সব ক য় বস ই র জন য ধরন র

এছাড়াও পড়ুন:

দাপুটে জয়ে ক্যাম্প ন্যুতে বার্সেলোনার প্রত্যাবর্তন

ফেরান তোরেসের দুর্দান্ত জোড়া গোল আর শুরুর দিকেই রবার্ট লেভানদোভস্কির আঘাত; সব মিলিয়ে দুই বছর পর ন্যু ক্যাম্পে ফিরে এসে একেবারে রাজকীয় ভঙ্গিতেই নিজেদের উপস্থিতি জানান দিল বার্সেলোনা। ১০ জনের বিলবাওকে ৪-০ গোলে বিধ্বস্ত করে লা লিগায় টানা তিন জয়ের আনন্দে ভাসল কাতালানরা।

নবায়ন কাজের কারণে দীর্ঘ বিরতির পর ন্যু ক্যাম্পে এটি ছিল বার্সার প্রথম ম্যাচ। শুরুতেই যেন সেই অপেক্ষার সব ক্ষত মুছে দিলেন লেভানদোভস্কি। ম্যাচের মাত্র চার মিনিটে প্রতিপক্ষের বক্সের বাইরে বল কাড়ার পর নিচু শটে উনাই সিমোনকে পরাস্ত করেন তিনি।

আরো পড়ুন:

দ্রুততম ৪৪ গোলে রোনালদোর রেকর্ড ভাঙলেন এমবাপ্পে

মৌসুমের প্রথম এল ক্লাসিকোতে বার্সেলোনাকে হারাল রিয়াল

এরপর দানি ওলমোর প্রচেষ্টা ঠেকিয়ে দেয় বিলবাওয়ের রক্ষণ দেয়াল। লামিন ইয়ামালের শটও রুখে দেন সিমোন। অন্যদিকে আক্রমণে উঠেও সুযোগ নষ্ট করেন উনাই গোমেজ ও নিকো উইলিয়ামস। আয়েরিক লাপোর্তের হেডও পোস্টের বাইরে দিয়ে যায়।

এরপর ফেরান তোরেস ও ফিরমিন লোপেজও গোলের খোঁজে সক্রিয় হন। গার্সিয়া চোট কাটিয়ে একাদশে ফিরেই বিলবাওয়ের নিশ্চিত গোল ঠেকান।

হাফটাইমের ঠিক আগে ইয়ামালের দারুণ বাঁকানো পাসে সুযোগ পান তোরেস। নিচু শটে সিমোনকে পরাস্ত করে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন তিনি। সিমোন ছুঁয়ে দিলেও গোল ঠেকাতে পারেননি।

বিরতির পর মাত্র তিন মিনিটের মাথায় লোপেজ দারুণ এক প্রচেষ্টায় সোজা শটে তৃতীয় গোলটি করেন। ৫৪ মিনিটে লোপেজের ওপর বিপজ্জনক ট্যাকল করে ওইহান সানসেট লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়লে বিলবাওয়ের দুর্ভাগ্য আরও ঘনীভূত হয়।

এরপর ডানি ভিভিয়ান হুমকি তৈরি করলেও লক্ষ্যভেদ করতে পারেননি। পাল্টা আক্রমণে ওলমোর শটও অল্পের জন্য বাইরে যায়। ভিভিয়ান পরে আরেকবার হেডে গোল করতে উদ্যত হয়েছিলেন, তবে গার্সিয়ার গ্লাভসে আটকে যায় বল।

অবশেষে ৯০ মিনিটে ইয়ামালের সূক্ষ্ম পাস ধরে ঠান্ডা মাথার ফিনিশিংয়ে ম্যাচের শেষ শব্দটি লিখে দেন ফেরান তোরেস।

দুই বছর পর ঘরের মাঠে ফিরল বার্সেলোনা। আর তোরেস-ইয়ামালরা যেন সেই আনন্দকে ফুটিয়ে তুললেন মাঠজুড়ে গোলের আতশবাজিতেই।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ