নারী বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে বড় জয় পেয়েছে অস্ট্রেলিয়া। আজ বুধবার (০৮ অক্টোবর) কলম্বোর আর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে পাকিস্তানের মেয়েদের তারা হারিয়েছে ১০৭ রানের ব্যবধানে।

অস্ট্রেলিয়া আগে ব্যাট করতে নেমে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। ৭৬ রানেই হারিয়ে বসে ৭ উইকেট। ধ্বংস্তুপের উপর দাঁড়িয়ে অসাধারণ সেঞ্চুরি করেন বেথ মুনি। আর অপরাজিত হাফ সেঞ্চুরি করেন অ্যালানা কিং। তাদের দুজনের ব্যাটে ভর করে ৯ উইকেটে ২২১ রান তোলে অজি মেয়েরা। মুনি ১১৪ বলে ১১ চারে করেন ১০৯ রান। আর অ্যালানা ৩টি চার ও ৩ ছক্কায় করেন অপরাজিত ৫১ রান।

আরো পড়ুন:

মায়ের দেশের হয়ে অভিষেক রাঙাতে পারলেন না রস টেইলর

অ্যাশেজ সিরিজে অনিশ্চিত কামিন্স

বল হাতে পাকিস্তানের নাশরা সান্ধু ১০ ওভারে ৩৭ রানে ৩টি উইকেট নেন। রামিন শামিম ১০ ওভারে ১ মেডেনসহ ২৯ রানে ২টি ও ফাতিমা সানা ১০ ওভারে ১ মেডেনসহ ৪৯ রানে নেন ২টি উইকেট।

রান তাড়া করতে নেমে পাকিস্তানের মেয়েরাও পড়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে ৩৬.

৩ ওভারে ১১৪ রানে অলআউট হয়। পাকিস্তানের সিদরা আমিন ৫ চারে সর্বোচ্চ ৩৫ রান করেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৫ রান করেন রামিন শামীম।

বল হাতে অস্ট্রেলিয়ার কিম গার্থ ৬ ওভারে ১৪ রানে ৩টি উইকেট নেন। অ্যানাবেল সাদারল্যান্ড ৮.৩ ওভারে ১ মেডেনসহ ১৫ রানে নেন ২টি উইকেট। আর মেগান শট ৫ ওভারে ১ মেডেনসহ ২৫ রানে নেন ২টি উইকেট।

অনবদ্য সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ম্যাচসেরা হন বেথ মুনি।

ঢাকা/আমিনুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ১ ম ড নসহ উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

বীমা আইন ২০১০: সঠিক প্রয়োগ হলে বীমা খাতের উন্নয়ন সম্ভব

বিদ্যমান আইনের সঠিক প্রয়োগ হলে বীমা খাতের উন্নয়ন ও সংস্কার সম্ভব। বীমা আইন- ২০১০ এ বীমা কোম্পানিতে নিরীক্ষা, তদন্ত, প্রশাসক নিয়োগ, আইন লঙ্ঘন ও অর্থ আত্মসাতে দোষী ব্যক্তিদের অপসারণ ও আত্মসাতকৃত অর্থ উদ্ধারের বিধান রাখা হয়েছে। ফলে বীমা খাত সংস্কারের জন্য প্রয়োজন বীমা আইন ২০১০ এর সঠিক প্রয়োগ। আর এ জন্য বীমা আইনের সংশোধন নয়, আইনের যথাযথ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন নিয়ন্ত্রক সংস্থার সদিচ্ছা।

শনিবার (২২ নভেম্বর) রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি আয়োজিত বীমা আইন- ২০১০ সংশোধনী শীর্ষক এক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এসব মন্তব্য করেন। সভা সঞ্চালনা করেন ইন্স্যুরেন্স নিউজ বিডি’র সম্পাদক ও প্রকাশক মোস্তাফিজুর রহমান টুংকু। 

সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইডিআরএ’র সাবেক সদস্য (লাইফ) সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লা। সভায় ইন্স্যুরেন্স রিপোর্টার্স ফোরামের (আইআরএফ) সভাপতি গাজী আনোয়ার, বিআইপিডি’র মহাসচিব কাজী মো. মোরতুজা আলীসহ বিমা খাতের সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনায় বক্তারা বলেন, বীমা আইনের সংশোধনীতে তফসিল-১ তুলে দেওয়াসহ কোম্পানির চেয়ারম্যান নিয়োগ, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক, সিএফও এবং কোম্পানি সেক্রেটারি নিয়োগ অনুমোদনের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রক সংস্থায় দেওয়া হলে কোম্পানি পরিচালনায় বিরূপ প্রভাব পড়বে। এতে পরিচালক বা নির্বাচিত চেয়ারম্যান- তাদের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্নের অযুহাতে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন। যা সংস্কারের পরিবর্তে নতুন সংকট তৈরি করবে।

বক্তারা আরো বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর বীমা খাত সংস্কারের কোন উদ্যোগ নিতে পারেনি আইডিআরএ। তারা বীমা আইন ২০১০ এর সংশোধনী ছাড়া নিয়ন্ত্রণ ও সংস্কারে কোন ভূমিকা রাখতে পারেনি। লাইফ বীমা খাতের যেসব কোম্পানি তহবিল তছরুফ হয়েছে তা উদ্ধার, গ্রাহকদের বকেয়া দাবি পরিশোধ, তহবিল তছরুফে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনী ব্যবস্থা গ্রহণে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। নন-লাইফ বীমা খাতের অবৈধ কমিশন বন্ধ ও দক্ষ জনবল তৈরিতে কোন ভূমিকা রাখতে পারেনি।

বক্তারা বলেন, বীমা আইন ২০১০ প্রণীত হয় ২০১০ সালে। এর মধ্যেই কি কারণে সংশোধনীর প্রয়োজন হলো- সেটিও স্পষ্ট নয়। নিয়ন্ত্রক সংস্থা গঠিত হয় ২০১০ সালে। অথচ নিয়ন্ত্রক সংস্থা এখনো চলছে প্রেষণে আসা সরকারি কর্মকর্তাদের দ্বারা। যাদের বেশিরভাগের-ই বীমা বিষয়ক অভিজ্ঞতা নেই। ফলে বীমা আইন-২০১০ এর সঠিক প্রয়োগ হয়েছে কিনা- আইন সংশোধনের আগে সে বিষয়টি আরো ব্যাপকভাবে পর্যালোচনা প্রয়োজন।

বক্তারা বলেন, বীমা কোম্পানি তদন্তের জন্য বীমা আইন ২০১০ এর ৪৮ ধারা, বিশেষ নিরীক্ষার জন্য ২৯ ধারা, প্রশাসক নিয়োগের জন্য ৯৫ ধারা, চেয়ারম্যান, পরিচালক ও মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তার গ্রাহক স্বার্থ ক্ষুণ্ন করার অপরাধে অপসারণ করার বিধান ৫০ ধারায় এবং বীমা কোম্পানির আত্মসাতকৃত অর্থ পুনরুদ্ধারের জন্য ১৩৫ ও ১৩৬ ধারায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। এসব বিধানের সঠিক প্রয়োগ হলে বীমা খাতের বিদ্যমান সংকট নিরসন করা সম্ভব। তাই বীমা আইন ২০১০ সংশোধনীর এই প্রস্তাবনা আরো ব্যাপক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার প্রস্তাবও করেন বক্তারা।

মূল প্রবন্ধে আইডিআরএ’র সাবেক সদস্য (লাইফ) সুলতান-উল-আবেদীন মোল্লা বলেন, “বীমা আইন-২০১০ -এ ১৬০টি ধারা আছে এবং প্রতিটি ধারায় কম-বেশি একাধিক উপধারা আছে। আইডিআরএ কর্তৃক আনিত সংশোধনী প্রস্তাবে মূল ১৬০ টি ধারার মধ্যে ৯৯টি মূল ধারা অপরিবর্তিত রেখেছে। কিন্তু সেগুলোর উপধারাগুলো পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে। বাকী ৬১টি ধারার উপধারাসহ তাদের পরির্তন, পরিমার্জন, সংযোজন ও বিয়োজনের সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে। মূল ১৬০টি ধারার মধ্যে- কয়েকটি বিলুপ্ত বা বাতিল প্রস্তাব করেছে। অধিকন্তু ৬৪ নতুন ধারা, উপ-ধারাসহ সংশোধনী প্রস্তাব করা হয়েছে।”

বীমা আইনের সংশোধনীর বিষয়ে তিনি বলেন, “বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ শুধু যে বীমা শিল্পকে নিয়ন্ত্রণ বা কন্ট্রোল করার জন্য তৈরি করা হয়েছে তা কিন্তু নয়। যেহেতু বীমা খাত অনুন্নত এবং অবহেলিত, জনগণ বীমা সম্পর্কে সচেতন নয় এবং বীমার জ্ঞান নেই- তাই এই শিল্পের বিকাশে নিয়ন্ত্রণের পাশাপশি উন্নয়নের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু প্রস্তাবিত সংশোধনী আইনে বীমা উন্নয়নে কোন ধরনের প্রস্তাব করা হয় নাই।”

বীমা আইন ২০১০-এ সংশোধনী প্রস্তাবনার বিষয়ে তিনি বলেন, “বীমা আইন-২০১০ বীমাশিল্প নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট নয়। কর্তৃপক্ষ প্রস্তাবিত আইনে আরো ক্ষমতা বৃদ্ধির প্রস্তাব করেছে। ব্যাংকিং আইন-১৯৯১ অনুযায়ী বাংলাদেশ ব্যাংক, ব্যাংক নিয়ন্ত্রণে যে ক্ষমতা ব্যবহার করে, বীমাশিল্প নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষ একইরূপ ক্ষমতা ধারণ করতে চায়। কর্তৃপক্ষ নন-লাইফ বীমা কোম্পানির চেয়ে লাইফ বীমা কোম্পানিকে বেশি বেশি নিয়ন্ত্রণ করতে চায়। যদিও পলিসিগ্রহীতার স্বার্থ সংরক্ষণের কথা বিবেচনা করে পরিবর্তন চাচ্ছে। কিন্তু বীমা গ্রহীতার দাবি পরিশেধে ৯০ দিনের বিধান অপরিবর্তিত রেখেছে।”

বীমা আইন অমান্যকারীদের ক্ষেত্রে ৫ লাখ টাকা থেকে ১ কোটি টাকা জরিমানার প্রস্তাব করেছে। বীমা আইন-২০১০ এর মূল ধারার বিপরীতে যে সকল বিধি-প্রবিধান করা হয়েছে বা করতে হবে সেগুলোকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বীমা আইন-২০১০ এর তফসিল-১ বাদ দিয়েছে। এর পরিবর্তে কর্তৃপক্ষের সময় সময় নির্দেশনা দিবে তার প্রস্তাব করেছে।”

কাজী মো. মোরতুজা আলী বলেন, “সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। যেসব সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে তা স্পষ্ট নয়। তাই সংজ্ঞা যদি বুঝতে না পারা যায় তাহলে বাস্তবায়ন সম্ভব হবে না। যেসব সংশোধন প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তা উন্নয়ন বান্ধব না, নিয়ন্ত্রণ বান্ধব। আমি যতটুকু বুঝতে পেরেছি, উন্নয়নের গুরুত্ব কম দেওয়া হয়েছে, নিয়ন্ত্রণকে গুরুত্ব বেশি দেওয়া হয়েছে। যদিও বলা হচ্ছে, গ্রাহকের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য এই আইনের প্রবর্তন।”

ঢাকা/নাজমুল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ