শহীদ মিনারে প্রাথমিক শিক্ষকদের অবস্থান, ২ উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি
Published: 9th, November 2025 GMT
দশম গ্রেডসহ তিন দফা দাবিতে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। এছাড়া, তাদের কর্মসূচিতে পুলিশের হামলার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ও প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা।
রবিবার (৯ নভেম্বর) দুপুরে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে গিয়ে দেখা গেছে, শত শত শিক্ষক এলাকাভিত্তিক দলবদ্ধ হয়ে অবস্থান কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন। এসময় তাঁরা, 'শিক্ষকদের ওপর হামলা কেন, জবাব চাই জবাব চাই', 'শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি মেনে নাও নিতে হবে',' তুমি কে আমি কে শিক্ষক শিক্ষক' এমন স্লোগান দেন।
‘প্রাথমিক শিক্ষক দাবি বাস্তবায়ন পরিষদ’ এর সদস্য মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, “গতকাল আমাদের তিন দফা দাবি আদায়ে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে শাহবাগে শিক্ষকদের ওপর পুলিশের হামলার ঘটনায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করছি। আমাদের বিদ্যালয়গুলোতে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি চলবে। সরকারকে বলবো, শিক্ষকদের ন্যায্য দাবি মেনে নেন।”
শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান ও বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া শহীদ মিনারে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে এসে একাত্মতা প্রকাশ করে বলেন, “শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালনকালে পুলিশ আক্রমণ চালিয়েছিল— এই কথা শুনে আমি ঠিক থাকতে পারিনি। কোনো সভ্য দেশে শিক্ষকদের উপর লাঠিচার্জ হয়নি। বিগত সময়ে আমি ৪০টি মামলার আসামি ছিলাম। এই হলো বাংলাদেশের বাস্তব অবস্থা।”
অধ্যক্ষ সেলিম ভূইয়া বলেন, “১০ম গ্রেড একটা সামান্য দাবি, এই দাবিটাই পূরণ করতে পারেন না। শিক্ষকরা বিগত ১৭ বছরে অনেক হয়রানির শিকার হয়েছেন। আপনারা যারা উপদেষ্টা হয়েছেন তাদের চেনেই না অনেকে। কিন্তু আমাদের চেনে। টালবাহানা ছেড়ে দিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবি মেনে নেন। যদি না মানেন শিক্ষক কর্মচারী ঐক্য জোট এই শিক্ষকদের দাবির সাথে একাত্মতা ঘোষণা করছি। আমরা মাঠে আসার আগেই দাবি মেনে নেন।”
এর আগে বেতন গ্রেড বাড়ানোসহ তিন দফা দাবিতে শনিবার আন্দোলনরত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের মিছিল শাহবাগে গেলে ছত্রভঙ্গ করে দেয় পুলিশ।
শিক্ষকদের অভিযোগ, এ ঘটনায় অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন এবং কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। কর্মসূচি পালনে বাধা পেয়ে আন্দোলনরত শিক্ষকরা আবার শহীদ মিনারে ফিরে গিয়ে সেখানে অবস্থান নেন। শনিবার সকাল থেকে তারা সেখানে অবস্থান করছিলেন। বিকেল ৪টার দিকে শিক্ষকরা মিছিল নিয়ে অগ্রসর হলে শাহবাগ থানার সামনে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পুলিশ বিনা উসকানিতে তাঁদের ওপর হামলা চালায় বলে দাবি করেন।
অন্যদিকে পুলিশ জানায়, শিক্ষকেরা বাধা উপেক্ষা করে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে এগোতে চাইলে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ সদস্যরা পদক্ষেপ নেন। শিক্ষকদের হামলায় কয়েকজন পুলিশ সদস্যও আহত হন।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের তিনটি দাবি হলো- দশম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড সমস্যার সমাধান এবং শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি বাস্তবায়ন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের তথ্যানুযায়ী, দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৬৫ হাজার ৫৬৯টি। এসব বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষকের সংখ্যা তিন লাখ ৮৪ হাজারের বেশি। শিক্ষার্থী প্রায় এক কোটি।
ঢাকা/রায়হান/ইভা
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবস থ ন কর উপদ ষ ট র শ ক ষকদ র শ ক ষকর সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
শাহবাগে লাঠি, কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড নিয়ে শিক্ষকদের ওপর চড়াও পুলিশ
বেতন গ্রেড বাড়ানোসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনরত প্রাথমিক শিক্ষকদের মিছিল শাহবাগে ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ। বেশ কয়েকজন শিক্ষক আহত হয়েছেন পুলিশের লাঠিপেটায়। শিক্ষকদের ওপর কাঁদানে গ্যাসের শেল, সাউন্ড গ্রেনেড এবং জলকামান থেকে গরম পানিও ছোড়া হয়।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই সহকারী শিক্ষকেরা আজ শনিবার সকাল থেকে ঢাকায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অবস্থান করছিলেন। বিকেলে তাঁরা মিছিল নিয়ে শাহবাগে এলে পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে মিছিল আটকে দেয়। শিক্ষকেরা ব্যারিকেড ভাঙতে চাইলে পুলিশ তাঁদের ওপর চড়াও হয়।
শিক্ষকেরা অভিযোগ করেছেন, পুলিশ বিনা উসকানিতে তাঁদের ওপর হামলা চালায়। অন্যদিকে পুলিশ বলছে, শিক্ষকেরা প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার দিকে এগোতে চাইলে তাঁদের বাধা দেওয়া হয়।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এই সহকারী শিক্ষকদের তিন দফা দাবি হলো—সহকারী শিক্ষকদের বেতন ১০ম গ্রেডে দেওয়া, শতভাগ বিভাগীয় পদোন্নতি এবং চাকরির ১০ ও ১৬ বছর পূর্তিতে উচ্চতর গ্রেড প্রদান।
কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে থেকে বেলা সাড়ে তিনটার দিকে শিক্ষকেরা শাহবাগ অভিমুখে রওনা দেন। বিকেল চারটার দিকে শাহবাগের কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের সামনে এসে তাঁরা পুলিশ ব্যারিকেডে পড়েন।
শিক্ষকেরা জানান, শহীদ মিনার থেকে শাহবাগ চত্বর অভিমুখে পদযাত্রা ও প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষরের জন্য কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্যে কলম সমর্পণের কর্মসূচি ছিল তাঁদের। গণগ্রন্থাগারের সামনে পুলিশ তাঁদের আটকে দিলে তাঁরা ব্যারিকেড ভাঙার চেষ্টা করেন। পুলিশ প্রথমে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। এরপর লাঠিপেটার পাশাপাশি জলকামান ব্যবহার করে।
বেতন গ্রেড বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনরত প্রাথমিক শিক্ষকদের ওপর পুলিশ চড়াও হতে গেলে বাধা হয়ে দাঁড়ান এক শিক্ষক। আজ শনিবার বিকেলে ঢাকার শাহবাগে