কোথায় হেরেছে বাংলাদেশ, কী ব্যাখ্যা দিলেন মিরাজ
Published: 9th, October 2025 GMT
ম্যাচটা কি আসলে বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ের সময়ই হেরে গিয়েছিল? চাইলে এমনটাই বলা যায়। এখনকার ওয়ানডেতে তো আর ২২১ রান নিয়ে জেতার আশা করা যায় না। আফগানিস্তান আর বাংলাদেশের ব্যবধানটা গড়ে দিয়েছে ব্যাটিংই। আরও নির্দিষ্ট করে বললে—জুটি গড়া।
আফগানিস্তানকে ২২২ রানের লক্ষ্য দেওয়ার পথে বাংলাদেশ পেয়েছিল মাত্র একটি বড় জুটি। তাওহিদ হৃদয়ের সঙ্গে মিলে তৃতীয় উইকেটে অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজ করেছিলেন ১৪১ বলে ১০১ রান। কিন্তু দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটি? সেটি হৃদয় আর সাইফ হাসানের ৪০ বলে ২৮ রান!
অন্যদিকে রান তাড়ায় নেমে আফগানিস্তানের কোনো জুটি শত রান ছাড়ায়নি। তবু তিনটি জুটি পঞ্চাশ পেরিয়েছে। আর সেটাই যথেষ্ট ছিল ম্যাচ জেতার জন্য। দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ আর ইব্রাহিম জাদরান শুরু করেছিলেন ৫২ রানের জুটি দিয়ে। এরপর তৃতীয় উইকেটে গুরবাজ ও রহমত শাহ ১১১ বলে ৭৮ রান যোগ করে ম্যাচটা প্রায় মুঠোয় নিয়ে নেন। দুজনই ৫ বলের মধ্যে আউট হয়ে গেলে কিছুটা চাপ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু তখনই আজমতউল্লাহ ও শহীদির ৫৯ রানের জুটি আফগানিস্তানকে এগিয়ে দেয়। শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেট হাতে রেখে আর ৭ বল বাকি থাকতেই জয় তুলে নেয় তারা।
জুটি গড়তে না পারার ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন মিরাজ.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আফগ ন স ত ন
এছাড়াও পড়ুন:
কত টাকার সম্পদ রেখে গেছেন গায়ক জুবিন?
মাত্র ৫২ বছর বয়সে ভারতীয় গায়ক জুবিন গার্গের আকস্মিত মৃত্যু মেনে নিতে পারছেন তার লাখ লাখ ভক্ত-অনুরাগীরা। সিঙ্গাপুর থেকে তার মরদেহ আসামে পৌঁছানোর পর কার্যত থমকে যায় রাজ্যটি। লাখ লাখ শোকাহত ভক্ত-অনুরাগী গুয়াহাটিসহ রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকে গিয়ে ভিড় করে; তৈরি হয় ভারতের সাংস্কৃতিক ইতিহাসের অন্যতম স্মরণীয় মুহূর্ত; যা একজন সুপারস্টারের তারকা খ্যাতিকেও হার মানায়।
৪০টি ভাষায় ৩৮ হাজারের বেশি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন জুবিন। আসামের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিকপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পী ছিলেন তিনি। মৃত্যুকালে কত টাকার সম্পদ রেখে গেছেন, তা নিয়েও ভক্ত-অনুরাগীদের আগ্রহের শেষ নেই। চলুন জেনে নিই, জুবিনের মোট সম্পদের পরিমাণ—
আরো পড়ুন:
প্রেক্ষাগৃহে আসছে ‘বান্ধব’
অস্কারে যাচ্ছে বাংলাদেশের ‘বাড়ির নাম শাহানা’
টাইমস অব ইন্ডিয়া এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নানা উৎস থেকে অর্থ উপার্জন করেছেন জুবিন গার্গ। এ তালিকায় রয়েছে—গান বিক্রি, লাইভ কনসার্ট, চলচ্চিত্রে অভিনয়, ব্র্যান্ড এনডোর্সমেন্ট। চলতি বছরের আগস্ট মাসে তার আয় ছিল আনুমানিক, ৩৩-৪৬ লাখ রুপি। জুবিন গার্গের মোট সম্পদের পরিমাণ প্রায় ৮ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ভারতীয় মুদ্রায় ৭০ কোটি রুপি (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯৬ কোটি ১৩ লাখ টাকা)।
ভারতীয় অন্য তারকাদের মতো জুবিনেরও গাড়ির প্রতি আলাদা প্রেম ছিল। বিলাসবহুল গাড়ি ব্যবহার করতেন এই গায়ক। তার সংগ্রহে ছিল বিএমডব্লিউ এক্স৫, মার্সিডিজ-বেঞ্জ, রেঞ্জ রোভার ভেলার এবং একটি এসইউভি। মোটর সাইকেলের প্রতিও জুবিনের দুর্বলতা ছিল। প্রায়ই তাকে দামি ও শক্তিশালী বাইক চালাতে দেখা যেত। তার জীবনযাপন স্পষ্টভাবে তার সাফল্য এবং গাড়ি-বাইকের প্রতি ভালোবাসার প্রতিফলন ছিল।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর সিঙ্গাপুরে মারা যান জুবিন গার্গ। সময় যত গড়াচ্ছে, তার মৃত্যু নিয়ে তৈরি হচ্ছে ধোঁয়াশা। নানা ধরনের সন্দেহ দানা বাঁধছে। প্রাথমিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল, স্কুবা ডাইভিং করতে গিয়ে জুবিনের মৃত্যু হয়েছে। পরে দাবি করা হয়, স্কুবা ডাইভিং নয়, সাঁতার কাটতে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে। তার গানের দলের সদস্য শেখরের দাবি, বিষপ্রয়োগে হত্যা করা হয়েছে তাকে। ফলে বরেণ্য এই গায়কের মৃত্যু যেন গোলক ধাঁধায় রূপ নিয়েছে।
১৯৭২ সালের ১৮ নভেম্বর মেঘালয়ের তুরা শহরে অসমীয়া একটি ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন জুবিন গার্গ। তার বাবার নাম মোহনী মোহন ববঠাকুর, মায়ের নাম ইলি ববঠাকুর। প্রখ্যাত সংগীত পরিচালক জুবিন মেহতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মোহন-এলি দম্পতি পুত্রের নাম রাখেন জুবিন ববঠাকুর। কিন্তু পিতা-মাতার পদবি ‘ববঠাকুর’ বহন না করে, তিনি তার ব্রাহ্মণ গাত্রের (গোত্র) উপাধি ‘গার্গ’ গ্রহণ করেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে তার একটি স্বতন্ত্র পরিচয় তৈরি হয়—যা বিশ্বজোড়া অনুপ্রেরণার সঙ্গে অসমীয় ঐতিহ্য রক্ষা করে। যদিও ‘মানব ধর্মে’ বিশ্বাসী ছিলেন জুবিন।
জুবিন গার্গ একাধারে ছিলেন গায়ক, সংগীত পরিচালক, সুরকার, গীতিকার, সংগীত প্রযোজক, অভিনেতা ও চলচ্চিত্র পরিচালক। ১৯৯২ সালে অনুষ্ঠিত যুব মহোৎসব পাশ্চাত্য একক পরিবেশনায় স্বর্ণপদক লাভ করার পর জুবিনের জীবন বদলে যায়। ১৯৯২ সালে অসমীয়া অ্যালবাম ‘অনামিকা’ মুক্তির মাধ্যমে জুবিন পেশাদার সংগীতজগতে প্রবেশ করেন। ২০০৬ সালে ‘গ্যাংস্টার’ সিনেমায় ‘ইয়া আলী’ গান গেয়ে তাক লাগিয়ে দেন জুবিন। তারপর বেশ কিছু সুপারহিট গান উপহার দেন তিনি। ভারতীয় বাংলা সিনেমার বেশ কিছু সুপারহিট গানের শিল্পী জুবিন।
মাত্র ৩ বছর বয়সে গান শুরু করেছিলেন জুবিন। অসমীয়া লোকসংগীত, শাস্ত্রীয় সংগীত, পাশ্চাত্য এবং বলিউড সংগীত—সব ক্ষেত্রেই দক্ষতা দেখিয়েছেন জুবিন। বলিউড তাকে খ্যাতি ও অর্থ দিলেও, তিনি ফিরে এসেছিলেন আসামে—নিজের মানুষের প্রতি দায়িত্ববোধ ও অনুপ্রেরণামূলক সংগীত তৈরির ইচ্ছায়। পরে বলিউডে খুব একটা কাজ করতে দেখা যায়নি তাকে। আসামের আঞ্চলিক সংগীত নিয়েই বেশি ব্যস্ত ছিলেন এই শিল্পী।
ঢাকা/শান্ত