একসময় চিঠির অপেক্ষায় মানুষ বসে থাকত। দূরের প্রিয়জনের হাতের লেখা খাম খুলে পড়ত কেউ হাসতে হাসতে, কেউ চোখের জল ফেলতে ফেলতে। সেই চিঠির সঙ্গে যুক্ত ছিল এক টুকরো রঙিন ইতিহাস—ডাকটিকিট। আজ প্রযুক্তির চরম উৎকর্ষে চিঠি প্রায় হারিয়ে গেছে, তবু কিছু শৌখিন মানুষ আজও পরম মমতায় বাঁচিয়ে রেখেছেন সেই হারিয়ে যাওয়া ডাকটিকিটের জগৎ।
ঢাকার আগারগাঁওয়ের দৃষ্টিনন্দন ডাক ভবনটি এই কদিন যেন পরিণত হয়েছে সেই সব মানুষের মিলনমেলায়। বিশ্ব ডাক দিবস উপলক্ষে ভবনের নিচতলায় চলছে তিন দিনব্যাপী বিশেষ ডাকটিকিট প্রদর্শনী। আয়োজন করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয় এবং দেশের প্রাচীনতম ফিলাটেলি সংগঠন বাংলাদেশ ন্যাশনাল ফিলাটেলিক অ্যাসোসিয়েশন।
বছরজুড়ে ঢাকায় ছোট-বড় নানা প্রদর্শনী হয় বটে, তবে জাতীয় পর্যায়ের এই আয়োজন একেবারেই ব্যতিক্রম, একটি প্রতিযোগিতামূলক প্রদর্শনী। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা ৫৩ জন সংগ্রাহক তাঁদের অমূল্য সংগ্রহ ৬৪টি ফ্রেমে সাজিয়ে তুলেছেন দর্শনার্থীদের সামনে। প্রতিটি ফ্রেম যেন আলাদা এক পৃথিবী। কোথাও সিনেমা, কোথাও খেলাধুলা, পশুপাখি বা পতাকার ওপর প্রকাশিত ডাকটিকিটে ফুটে উঠেছে ইতিহাস, সংস্কৃতি ও বৈচিত্র্যের গল্প।
তিনটি ফ্রেমজুড়ে দেখা যায় বিশ্বের নোবেলজয়ীদের নিয়ে প্রকাশিত ডাকটিকিট। ‘নোবেল পুরস্কারের ৭৫ বছর’ শিরোনামে সাজানো এই সংগ্রহের মালিক চিনু সাহা। অন্যদিকে সংগ্রাহক এডওয়ার্ড তরুণ রায় উপস্থাপন করেছেন বিশ্বের প্রথম তিনটি বিরল ডাকটিকিট—যুক্তরাজ্যে ১৮৪০ সালে প্রকাশিত এক পেনি মূল্যের কালো ‘পেনি ব্ল্যাক’, নীল ‘ব্লু পেনি’ ও লাল ‘রেড পেনি’। তাঁর ফ্রেমে রয়েছে সেই সব ডাকটিকিট–সংবলিত প্রাচীন খামও—প্রায় দুই শ বছরের পুরোনো, সময়ের সাক্ষী হয়ে থাকা ইতিহাসের দলিল।
প্রদর্শনীর পাশাপাশি চলছে ডাকটিকিট, মুদ্রাসহ শৌখিন পণ্যের কেনাবেচা.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
না না, আমি টিশার্ট পরি না
আগের পর্ব