ঢাকা-ময়মনসিংহ বাস চলাচল বন্ধ, ভোগান্তি
Published: 12th, October 2025 GMT
ময়মনসিংহে পরিবহন শ্রমিকপক্ষের পাল্টা কর্মসূচির কারণে রবিবার (১২ অক্টোবর) সকাল থেকে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
শ্রমিকরা জানান, ঢাকায় পরিবহন মালিক শ্রমিক ফেডারেশনের নির্দেশনায় ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটের সব বাস অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে জেলা মোটরযান মালিক সমিতি ও ময়মনসিংহ জেলা শ্রমিক ইউনিয়ন।
আরো পড়ুন:
‘যেভাবে রাস্তা হচ্ছে, মানুষকে কবর দেওয়ার জন্যও জায়গা থাকবে না’
চট্টগ্রামে বাসচাপায় হেফাজত নেতার মৃত্যু, সড়ক অবরোধ
আরো পড়ুন: জুলাইযোদ্ধা লাঞ্ছিত, ঢাকা-ময়মনসিংহ রুটে বাস চলাচল বন্ধ
রবিবার ভোর থেকে বন্ধ রয়েছে ময়মনসিংহ, শেরপুর, জামালপুর, নেত্রকোণা ও কিশোরগঞ্জসহ পাঁচ জেলার বাস। দুর্ভোগে পড়েছেন ঢাকাগামী যাত্রীরা। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস হওয়ায় ঢাকায় কর্মরত যাত্রীরা বিকল্প যানবাহনে গন্তব্যে ফেরার চেষ্টা করছেন।
ময়মনসিংহের মাসকান্দা বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, বাস টার্মিনাল থেকে ছেড়ে যাচ্ছে না ইউনাইটেডসহ সৌখিন পরিবহনের অন্তত ৩০০ গাড়ি। ফলে সকালে অফিসগামী ও বিভিন্ন গন্তব্যে যেতে ইচ্ছুক যাত্রীরা বাস টার্মিনালে এসে পড়েন চরম বিপাকে।
আরো পড়ুন: ময়মনসিংহ থেকে ঢাকাগামী ইউনাইটেড ও সৌখিন পরিবহন বন্ধ
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন শ্রমিক জানান, গতকাল শনিবার বিকেলে ইউনাইটেড পরিবহনের ১৬টি বাস বন্ধ থাকার আশ্বাসে মাসকান্দা বাসট্যান্ডে জুলাইযোদ্ধা ও এনসিপি নেতাকর্মীরা তাদের অবস্থান কর্মসূচি এবং ঢাকা বাইপাস এলাকা থেকে পরিবহন শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেন। পরে শ্রমিক নেতাদের নির্দেশে আজ সকাল থেকে আবারো ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডে এবং বিভাগের ময়মনসিংহ, নেত্রকোণা, শেরপুর, জামালপুর ছাড়াও কিশোরগঞ্জের সব দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
ঢাকাগামী যাত্রীরা বলেন, গতকাল থেকে অনেকেই ঢাকা যাওয়ার চেষ্টা করছেন, কিন্তু আন্দোলনের কারণে যেতে পারছেন না। হুটহাট করে এমন বাস বন্ধের সিদ্ধান্ত কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা চাই, অন্তত বাসস্ট্যান্ড রাজনীতি মুক্ত থাকুক।
ইউনাইটেড পরিবহনের চালকের সহকারী সোহেল রানা বলেন, “বাস বন্ধ থাকলে আমাদের না খেয়ে থাকতে হয়। কিন্তু এবার বাস বন্ধের যৌক্তিক কারণ রয়েছে। একটি ঘটনা ঘটায় শ্রমিক অরিণ জেলে রয়েছে। তারপরে ১৬টি বাস বন্ধের পাশাপাশি জব্দ করতে হবে এমন দাবি মানার মতো নয়। কারণ এসব বাসের সঙ্গে শ্রমিকদের রিজিক জড়িত।”
ময়মনসিংহ জেলা মোটরমালিক সমিতির সভাপতি ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আলমগীর মাহমুদ আলম বলেন, “এনসিপির কয়েকজনকে সামনে রেখে একটি পক্ষ বিষয়টি বড় করছে। তারা অনৈতিক সুবিধা নিতে প্রায়ই এমন ঝামেলা সৃষ্টি করে।”
তিনি আরো বলেন, “গতকাল জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আমিনুল হক শামীম পরিচালিত ১৬ বাস বন্ধের পাশাপাশি একটি মনিটরিং টিম গঠন করার সিদ্ধান্ত হওয়ায় বাস চলাচল শুরুর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ঢাকার নেতারা তা মানতে নারাজ, যে কারণে ইউনাইটেড এবং সৌখিন পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকে। আজ সকাল থেকে বিভাগের চার জেলাসহ কিশোরগঞ্জের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।”
ঢাকা/মিলন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সড়ক পর বহন ব স বন ধ র পর বহন
এছাড়াও পড়ুন:
ভিক্টোরিয়ায় চিকিৎসা নিতে এসে মৃত্যু, স্বজনরা জানলো দুইদিন পর
শহরের নিতাইগঞ্জের নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন এক পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তি। প্রথমে সে জরুরী বিভাগে থাকা ডাক্তারকে দেখান। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয় ২১৫ নাম্বার ওয়ার্ডের কার্ডিওলজি ডাক্তারের কাছে।
কার্ডিওলজি ডাক্তার তাকে ইসিজি করতে বললে তিনি ইসিজি করে এসে ডাক্তারের সামনেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং সেখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। গত ২৪ নভেম্বর (সোমবার) সকালে এ ঘটনাটি ঘটে।
মৃত্যু ব্যক্তিটির নাম আব্দুল জব্বার। তিনি ফতুল্লা থানাধীন পূর্ব সস্তাপুর এলাকায় অস্থায়ী বাসিন্দা। তার গ্রামের বাসা ময়মনসিংহ জেলায়। পেশায় তিনি ছিলেন মাছ বিক্রেতা।
এদিকে তার মৃত্যুবরণ হাসপাতালে এক প্রকার হৈচৈ পড়ে যায়। কারণ, তার সাথে কোন স্বজন ছিলো না। ফলে কার কাছে লাশটি বুুঝিয়ে দিবেন সেই লোক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। ফলে শুরু হয় লাশটির স্বজনদের অনুসন্ধান। কিন্তু স্বজনদের সন্ধান না পেয়ে লাশটি রাখা হয় হিমঘরে।
গত দুইদিন ধরে সোস্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্নভাবে লাশটির স্বজনদের অনুসন্ধান করা হয়। কিন্তু কোনভাবেই স্বজনদের সন্ধান না পেয়ে লাশটি অজ্ঞাতভাবে লাফন করার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদনের প্রস্তুতি নেয়া হয়।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে এ আবেদনটি নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন হাসপাতালের অফিস সহায়ক সাউদ নূরে শফিউল কাদের। তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সামনে যাওয়ার পর পরই তাকে হাসপাতাল থেকে কল করে বলা হয়, ‘লাশটির স্বজনদের সন্ধান পাওয়া গেছে। আপনি দ্রুত হাসপাতালে চলে আসুন।’
এদিকে জরুরী বিভাগের পাশে লাশকাটা ঘরের সামনে অশ্রুসিক্ত নয়নে দাঁড়িয়ে আছে মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে আমির হামজা। তিনি এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না যে, তারা পিতা মারা গেছে। একদম জলজ্যান্ত মানুষটি বাসা থেকে অনেকটাই সুস্থভাবেই বেড়িয়ে আসলেন, অথচ তিনি আজ মৃত। এসব ভেবেই তিনি অনেকটাই দুঃখে শোকে কাতর। এমন পরিস্থিতিতে তার বক্তব্য নেয়ার সুযোগ ছিলো না।
তবে এ বিষয়ে মৃত আব্দুল জব্বারের চাচাতো ভাই মো: মফিজুল ইসলাম বলেন, যথারীতি ২৪ নভেম্বর সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে আসেন আব্দুল জব্বার। তার পর থেকে তার আর কোন খোঁজ পাইনি। আমরা তাকে গত দুইদিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করছি।
কিন্তু পাই নি। আজ সকালে আমাদের এলাকারই এক মহিলা বলে, ওনাকে নাকি এ হাসপাতালে দেখছে। তার কথা শুনে আমরা এ হাসপাতালে এসে তার খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করি। পরে জানতে পারি, এখানে চিকিৎসা নিতে এসে তিনি মারা গেছে।
তিনি আরও বলেন, এখন আমাদের লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ী ময়মনসিংহে নিয়ে যাবো এবং ওখানে দাফন করবো।
এ ব্যাপারে হাসপাতালটির ওয়ার্ড মাষ্টার শাহাদাৎ হোসেন বলেন, তিনি প্রথমে জরুরী বিভাগে আসেন। সেখান থেকে তাকে ২১৫ নাম্বার ওয়ার্ডের কার্ডিওলজি স্যারের কাছে পাঠানো হয়। স্যার তাকে ইসিজি করতে বললে তিনি ইসিজি করিয়ে নিয়ে আসেন। কিন্তু হঠাৎ করেই স্যারের রুমে মাটিতে পড়ে যান এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
তিনি বলেন, আমরা তার স্বজনদের খোঁজ পেতে অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু পাই নি। আজ তাই ডিসি স্যারের কাছে লিখিত আবেদন নিয়ে পাঠিয়েছিলা যে, এ লাশটি এখন কি করবো। তার নির্দেশনা আসলে আমরা তাকে অজ্ঞাত লাশ হিসেবে দাফন করতাম।
আল্লাহ্’র রহমতে এর আগেই তার স্বজনরা চলে আসছে। আমরা মৃত ব্যক্তির যাবতীয় তথ্য ও ছবির সাথে মিলিয়ে এবং যাচাই করে এ স্বজনদের হাতে লাশটি বুঝিয়ে দিচ্ছি।