ভৈরবকে জেলা ঘোষণা ও ঢাকা বিভাগে অন্তর্ভুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ
Published: 12th, October 2025 GMT
কিশোরগঞ্জের ভৈরবকে প্রস্তাবিত ৬৫তম জেলা ঘোষণার দাবিতে বিক্ষোভ ও সড়ক অবরোধ করেছেন স্থানীয় লোকজন। একই সঙ্গে কিশোরগঞ্জ ও ভৈরবকে ঢাকা বিভাগে রাখার দাবি জানানো হয়েছে।
আজ রোববার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ভৈরবের মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্য ‘দুর্জয় ভৈরব’ চত্বরে ‘ভৈরবের সর্বস্তরের জনগণ’ ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। পরে তাঁরা ভৈরব–ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করেন। এতে অন্তত ৩০ মিনিট মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল।
প্রসঙ্গত, ভৈরবকে ৬৫তম জেলা হিসেবে ঘোষণা করতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ২০০৯ সালের ১৫ অক্টোবর একটি পরীক্ষা ও পর্যালোচনা কমিটি করে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছিল। তবে পরবর্তী সময় জেলা করার ব্যাপারে অন্য কোনো উদ্যোগ নেয়নি সরকার। এ ছাড়া সম্প্রতি কিশোরগঞ্জকে সরকার ময়মনসিংহ বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে, এমন খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। তবে সরকারিভাবে এমন ঘোষণার সত্যতা পাওয়া যায়নি। ওই খবরের ভিত্তিতে আজ বিক্ষোভ করেন স্থানীয় লোকজন।
বিক্ষোভে অন্যদের মধ্যে গণ অধিকার পরিষদের সংগঠক ইমতিয়াজ আহমেদ, উপজেলা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আবির আহমেদ, সমাজকর্মী হান্নান আহমেদ, জুনায়েদ আহমেদ, রাকিবুল হাসান, রিয়াজ আহমেদ, মো.
সভা শেষে বিক্ষুব্ধ লোকজন ভৈরব উপজেলা অভিমুখে যান। সেখানে গিয়ে তাঁরা ভৈরব–ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করেন। আধা ঘণ্টা পর দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। দাবি আদায় না হলে রেল ও সড়কপথ অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সড়ক অবর ধ ক শ রগঞ জ ক অবর ধ আহম দ ভ রবক
এছাড়াও পড়ুন:
ভিক্টোরিয়ায় চিকিৎসা নিতে এসে মৃত্যু, স্বজনরা জানলো দুইদিন পর
শহরের নিতাইগঞ্জের নারায়ণগঞ্জ জেনারেল (ভিক্টোরিয়া) হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসেন এক পঞ্চাশোর্ধ্ব ব্যক্তি। প্রথমে সে জরুরী বিভাগে থাকা ডাক্তারকে দেখান। সেখান থেকে তাকে পাঠানো হয় ২১৫ নাম্বার ওয়ার্ডের কার্ডিওলজি ডাক্তারের কাছে।
কার্ডিওলজি ডাক্তার তাকে ইসিজি করতে বললে তিনি ইসিজি করে এসে ডাক্তারের সামনেই মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং সেখানেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। গত ২৪ নভেম্বর (সোমবার) সকালে এ ঘটনাটি ঘটে।
মৃত্যু ব্যক্তিটির নাম আব্দুল জব্বার। তিনি ফতুল্লা থানাধীন পূর্ব সস্তাপুর এলাকায় অস্থায়ী বাসিন্দা। তার গ্রামের বাসা ময়মনসিংহ জেলায়। পেশায় তিনি ছিলেন মাছ বিক্রেতা।
এদিকে তার মৃত্যুবরণ হাসপাতালে এক প্রকার হৈচৈ পড়ে যায়। কারণ, তার সাথে কোন স্বজন ছিলো না। ফলে কার কাছে লাশটি বুুঝিয়ে দিবেন সেই লোক খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। ফলে শুরু হয় লাশটির স্বজনদের অনুসন্ধান। কিন্তু স্বজনদের সন্ধান না পেয়ে লাশটি রাখা হয় হিমঘরে।
গত দুইদিন ধরে সোস্যাল মিডিয়া থেকে শুরু করে বিভিন্নভাবে লাশটির স্বজনদের অনুসন্ধান করা হয়। কিন্তু কোনভাবেই স্বজনদের সন্ধান না পেয়ে লাশটি অজ্ঞাতভাবে লাফন করার জন্য জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদনের প্রস্তুতি নেয়া হয়।
বুধবার (২৬ নভেম্বর) সকাল ১১টার দিকে এ আবেদনটি নিয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন হাসপাতালের অফিস সহায়ক সাউদ নূরে শফিউল কাদের। তিনি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সামনে যাওয়ার পর পরই তাকে হাসপাতাল থেকে কল করে বলা হয়, ‘লাশটির স্বজনদের সন্ধান পাওয়া গেছে। আপনি দ্রুত হাসপাতালে চলে আসুন।’
এদিকে জরুরী বিভাগের পাশে লাশকাটা ঘরের সামনে অশ্রুসিক্ত নয়নে দাঁড়িয়ে আছে মৃত আব্দুল জব্বারের ছেলে আমির হামজা। তিনি এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না যে, তারা পিতা মারা গেছে। একদম জলজ্যান্ত মানুষটি বাসা থেকে অনেকটাই সুস্থভাবেই বেড়িয়ে আসলেন, অথচ তিনি আজ মৃত। এসব ভেবেই তিনি অনেকটাই দুঃখে শোকে কাতর। এমন পরিস্থিতিতে তার বক্তব্য নেয়ার সুযোগ ছিলো না।
তবে এ বিষয়ে মৃত আব্দুল জব্বারের চাচাতো ভাই মো: মফিজুল ইসলাম বলেন, যথারীতি ২৪ নভেম্বর সকাল আনুমানিক ৯টার দিকে বাসা থেকে বের হয়ে আসেন আব্দুল জব্বার। তার পর থেকে তার আর কোন খোঁজ পাইনি। আমরা তাকে গত দুইদিন ধরে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজি করছি।
কিন্তু পাই নি। আজ সকালে আমাদের এলাকারই এক মহিলা বলে, ওনাকে নাকি এ হাসপাতালে দেখছে। তার কথা শুনে আমরা এ হাসপাতালে এসে তার খোঁজ নেওয়ার চেষ্টা করি। পরে জানতে পারি, এখানে চিকিৎসা নিতে এসে তিনি মারা গেছে।
তিনি আরও বলেন, এখন আমাদের লাশ বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমরা লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ী ময়মনসিংহে নিয়ে যাবো এবং ওখানে দাফন করবো।
এ ব্যাপারে হাসপাতালটির ওয়ার্ড মাষ্টার শাহাদাৎ হোসেন বলেন, তিনি প্রথমে জরুরী বিভাগে আসেন। সেখান থেকে তাকে ২১৫ নাম্বার ওয়ার্ডের কার্ডিওলজি স্যারের কাছে পাঠানো হয়। স্যার তাকে ইসিজি করতে বললে তিনি ইসিজি করিয়ে নিয়ে আসেন। কিন্তু হঠাৎ করেই স্যারের রুমে মাটিতে পড়ে যান এবং সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
তিনি বলেন, আমরা তার স্বজনদের খোঁজ পেতে অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু পাই নি। আজ তাই ডিসি স্যারের কাছে লিখিত আবেদন নিয়ে পাঠিয়েছিলা যে, এ লাশটি এখন কি করবো। তার নির্দেশনা আসলে আমরা তাকে অজ্ঞাত লাশ হিসেবে দাফন করতাম।
আল্লাহ্’র রহমতে এর আগেই তার স্বজনরা চলে আসছে। আমরা মৃত ব্যক্তির যাবতীয় তথ্য ও ছবির সাথে মিলিয়ে এবং যাচাই করে এ স্বজনদের হাতে লাশটি বুঝিয়ে দিচ্ছি।