বিমানবন্দরে ফুল হাতে নিয়ে চেনা এক নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে ড‌্যারেন স‌্যামি বলেন, ‘‘আমি তো এখানে নতুন নই। খুব পরিচিত। খুব বিখ‌্যাত।’’ ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুইবারের বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কের মুখে হাসি থামে না। কেননা বাংলাদেশ তার কাছে খুব আপন, বেশ পরিচিত। 

মিরপুর স্টেডিয়াম অনেকটাই তার নখদর্পনে। দেশের জার্সিতে খেলেছেন। বিপিএলে খেলেছেন, অধিনায়কত্ব করেছেন। উল্লাস, উৎসব, উন্মাতাল সময় কাটিয়েছেন। শুধু জাতীয় দলের ক্রিকেটার নয়, স্থানীয় ক্রিকেটার, কর্মকর্তা, পুরোনো মাঠ কর্মীদের সঙ্গেও তার সখ‌্যতা রয়েছে। 

আরো পড়ুন:

হিলির সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশকে ১০ উইকেটে হারাল অস্ট্রেলিয়া

অভিজ্ঞতায় সৌম‌্য দলে, মাহিদুলকে নিয়ে ২০২৭ বিশ্বকাপের ভাবনা

গতকাল রাতে বাংলাদেশে পা রেখে আজ তার বিশ্রামে থাকার কথা। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের কোচ বিশ্রামে থাকলেন কই। দুপুরের পরপর দুই ক্রিকেটারকে নিয়ে চলে এলেন মিরপুরে। ব্রেন্ডন কিং ও আথানেজ অনুশীলন করেছেন। স‌্যামি শিষ‌্যদের অনুশীলনের পাশাপাশি মিরপুরের উইকেট নিয়ে খোঁজ খবর নিয়েছেন। 

মাঠ ও উইকেট প্রস্তুতের দায়িত্বে থাকা টনি হেমিংয়ের সঙ্গে লম্বা সময় কথা বলতে দেখা যায় তাকে। একাডেমি মাঠে অনুশীলনের পাশাপাশি মিরপুরের ২২ গজও দেখেছেন তিনি। বোঝার চেষ্টা করেছেন শনিবার থেকে শুরু হতে যাওয়া ওয়ানডে সিরিজের উইকেট কেমন হতে পারে। 

কোচ স‌্যামি এবারই প্রথম বাংলাদেশে এলেন। হৃদয়ের খুব কাছে বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা তার। এবার নতুন পরিচয়েই ব-দ্বীপের দেশটিকে হারাতে হবে। 

দুই দলের জন‌্যই এই সিরিজটি গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বকাপে খেলার টিকিট নিশ্চিতে এই সিরিজের রেটিং পয়েন্ট বেশ কাজে আসবে। 

ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইক ট

এছাড়াও পড়ুন:

বিমানবন্দরে ক্রিকেটারদের হেনস্থা, জড়িতদের ধরতে আইন–শৃঙ্খলা বাহিনীর সাহায্য চেয়েছে বিসিবি

ঢাকার হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে বুধবার রাতে জাতীয় দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে অসদাচরণ করা ব্যক্তিদের ভিডিও ফুটেজ দেখে খুঁজে বের করার চেষ্টা করছে আইন–শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।

এ ছাড়া এক ফেসবুক পোস্টে মিরপুরে শনিবার থেকে শুরু ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের খেলা দেখতে গেলে দর্শকদের ‘শায়েস্তা’ করার হুমকিদাতাকেও খুঁজছে আইন–শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বিসিবির একজন দায়িত্বশীল পরিচালক বৃহস্পতিবার রাতে প্রথম আলোকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে বুধবার রাতে দেশে ফিরে বেশ বাজে অভিজ্ঞতাই হয়েছে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের। হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ওপেনার মোহাম্মদ নাঈমসহ কয়েকজন ক্রিকেটারকে হেনস্থা করেছেন একদল লোক।

এ ঘটনার কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এসব ভিডিওতে দেখা যায়, বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার সময় কিছু লোক নাঈমের গাড়ির খুব কাছে গিয়ে ‘ভুয়া, ভুয়া’ বলে দুয়ো দিচ্ছে, গালাগাল করছে। একই দৃশ্য দেখা গেছে তাসকিন আহমেদ বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার সময় তাঁর গাড়ির আশেপাশেও। এসব ভিডিওতে ক্রিকেটারদের উদ্দেশে করা গালাগালও স্পষ্ট শোনা গেছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিসিবির ওই পরিচালক মুঠোফোনে এই প্রতিবেদককে বলেছেন, ‘দুটি বিষয়ই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর নজরে আনা হয়েছে। তাঁরা এই দুই ঘটনায় জড়িতদের খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। সরকার বিষয়টিকে খুবই গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে।’

এশিয়া কাপের পর আরব আমিরাতে আফগানিস্তানকে টি–টোয়েন্টি সিরিজে ৩–০ তে ধবলধোলাই করলেও ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ উল্টো ধবলধোলাই হয়েছে। বিমানবন্দরে ক্রিকেটারদের প্রতি সে কারণেই ক্ষোভ জানিয়েছে কিছু লোক। তবে তাদের ক্ষোভের প্রকাশ ছিল আক্রমণাত্মক।

বাংলাদেশ দল খারাপ খেলায় ক্ষোভ জানিয়ে দেওয়া এক ব্যক্তির ফেসবুক পোস্টের ভাষাও একই রকম আক্রমণাত্মক। তাঁর বাসা মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামের খুব কাছে উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘মিরপুরের কিছু ভাই ব্রাদার মিলে একটা টিম গঠন করতেসি, যারা এই অবস্থায়ও মাঠে এই দলের খেলা দেখতে আসবেন, তাদের শায়েস্তা করার জন্য।’

তিনি আরও লিখেছেন, ‘প্রিয় দলের খেলা দেখতে এসে কেউ বেধড়ক মার খেলে বা highly Injured হলে মিরপুরবাসীকে দায় দিতে পারবেন না।’

এ ধরনের ফেসবুক পোস্টকে বাংলাদেশ দলের দর্শক–সমর্থক এবং ক্রিকেটারদের জন্যও নিরাপত্তার হুমকি মনে করেন বিসিবির ওই পরিচালক, ‘খেলায় খারাপ ফলাফল হতে পারে। সে জন্য সমালোচনাও হতে পারে। কিন্তু এ ধরণের উসকানিমূলক হুমকি কোনোভাবেই কাম্য নয়। আমরা স্টেডিয়ামকে ক্রিকেটার ও দর্শকদের জন্য নিরাপদ রাখতে চাই।’

বিসিবির অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, তারা মনে করে এই ঘটনার পেছনে একটি রাজনৈতিক দলের মদদ থাকতে পারে। আইন–শৃঙ্খলাবাহিনী সেটিও খতিয়ে দেখবে।
বিমাবন্দরের ঘটনায় হতাশা প্রকাশ করে এর আগে ক্রিকেটার নাঈম এক ফেসবুক পোস্টে দাবি করেন, ব্যর্থ হলেও ক্রিকেটাররা সমর্থকদের মুখে হাসি ফোটানোর চেষ্টা করেন।

নাঈম লিখেছেন, ‘আজ যেভাবে আমাদের প্রতি ঘৃণা (প্রকাশ করা হয়েছে), গাড়িতে আক্রমণ করা হয়েছে, তা সত্যিই কষ্ট দেয়। আমরা মানুষ, ভুল করি, কিন্তু কখনো দেশের প্রতি ভালোবাসা-চেষ্টার ঘাটতি রাখি না। প্রতিটা মুহূর্তে চেষ্টা করি দেশের জন্য, মানুষের জন্য, আপনাদের মুখে হাসি ফোটাতে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ