গুদামে বিষাক্ত গ্যাসের মাত্রা ১৪৯ পিপিএম, মুহূর্তেই অচেতন হয়ে মৃত্যুর ঝুঁকি
Published: 17th, October 2025 GMT
রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়ি এলাকায় আগুনে পুড়ে যাওয়া রাসায়নিক গুদামের ভেতরে বিষাক্ত হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসের উপস্থিতি পেয়েছে ঢাকা মহানগর পুলিশের বোম্ব ডিসপোজাল (বোমা নিস্ক্রিয়করণ) ইউনিট।
আজ শুক্রবার বিকেলে গুদামের ভেতরে হাইড্রোজেন সালফাইড গ্যাসের মাত্রা ছিল ১৪৯ পিপিএম। এই গ্যাস কোথাও ১০০ পিপিএমের বেশি থাকলে মানুষ তাৎক্ষণিকভাবে অচেতন হয়ে মারা যেতে পারে বলে জানা গেছে।
ডিএমপির বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের দলনেতা সহকারী পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান আজ বিকেলে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। এর আগে তিনিসহ ইউনিটের চার সদস্য গ্যাস ডিটেকটর ও অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে গুদামের ভেতরে যান।
মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান বলেন, ‘গ্যাস ডিটেকটর দিয়ে গুদামের টক্সিক (বিষাক্ত) গ্যাসের মাত্রা নেওয়ার চেষ্টা করেছি। গতকাল আমরা হাইড্রোজেন সালফাইড, যেটা টক্সিক একটা গ্যাস এবং মানবদেহের জন্য খুবই ক্ষতিকর, সেটার ফাইন্ডিংস পেয়েছিলাম ২০ পিপিএমের ওপরে,.
মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান আরও বলেন, হাইড্রোজেন সালফাইড ১০০ পিপিএম থাকলেই একজন মানুষ তাৎক্ষণিক অচেতন হয়ে মারা যাবে, যদি যথাযথ নিরাপত্তা সরঞ্জাম ছাড়া ভেতরে যায়। এ ছাড়া আশপাশে প্রচুর বিষাক্ত উপাদান বাতাসে রয়েছে। আশপাশে অন্তত ১৫০-৩০০ মিটার এলাকা থেকে মানুষকে সরিয়ে নেওয়া ভালো। আর যেদিকে বাতাস যাবে, সেদিকে অন্তত দেড় কিলোমিটার মানুষ সরিয়ে নিতে পারলে ভালো।
গুদামের ভেতরে এখনো অনেক রাসায়নিকের বস্তা পড়ে আছে জানিয়ে মোহাম্মদ মাহমুদুজ্জামান আরও বলেন, ‘গুদামের বাইরে হাইড্রোজেন সালফাইডের মাত্রা ৭০-৮০ পিপিএমের মতো। গতকাল কার্বন মনো–অক্সাইডের উপস্থিতি আমরা পাইনি। কিন্তু আজ গুদামে ৩ পিপিএম পেয়েছি।’
ঘটনাস্থলের আশপাশে কাউকে না যাওয়ার পরামর্শ দেন মাহমুদুজ্জামান। তিনি বলেন, উৎসুক মানুষ ও অনেক নিহত ব্যক্তিদের স্বজনেরা ভিড় করছেন। তাঁদের প্রতি সহানুভূতি আছে। তবে মাথায় রাখতে হবে, এটা সাধারণ কোনো আগুন নয়, কেমিক্যালের আগুন। এর আশপাশে যাওয়া যাবে না। কাছে গেলেই এটা কোনো না কোনোভাবে বিপজ্জনক হতে পারে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ দ ম র ভ তর প প এম র আশপ শ
এছাড়াও পড়ুন:
সখীপুরে স্কুলছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার
টাঙ্গাইলের সখীপুরে জিহাদ (১০) নামের এক স্কুলছাত্রের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরিবারের দাবি, তুচ্ছ ঘটনায় মায়ের বকুনি খেয়ে অভিমানে সে আত্মহত্যা করেছে।
মঙ্গলবার (৩ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সখীপুর উপজেলার বেতুয়া গ্রামে নিজ বাড়ি থেকে জিহাদের লাশ উদ্ধার করা হয়।
জিহাদ ওই এলাকার প্রবাসী আনিস মিয়ার ছেলে। সে স্থানীয় বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ত।
জিহাদের চাচাত ভাই জনি জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর বাড়িতে একই বয়সের চাচাত ভাইয়ের সঙ্গে জিহাদের ঝগড়া হয়। এতে রাগ করে জিহাদের মা তাকে বকাঝকা করেন। এরপর সে দৌড়ে নিজের ঘরে যায়। রাত ৮টার দিকে ওই ঘরে ঢুকে জিহাদকে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। দ্রুত তাকে উদ্ধার করে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে সখীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, জিহাদের মা বিলাপ করছেন। স্বজনরা তাকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
আরিফুর রহমান নামে স্থানীয় এক ব্যক্তি আক্ষেপ করে বলেন, “ঘটনাটি মর্মান্তিক। এটি বর্তমান সময়ে যারা বাবা-মা আছেন, তাদের জন্য শিক্ষণীয়। শিশুর প্রতি কেমন আচরণ করতে হবে, এ বিষয়ে আমাদের শিক্ষা গ্রহণ করতে হবে।”
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক আবু বকর সিদ্দিক জানিয়েছেন, হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই ওই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর পুলিশকে তা জানানো হয়েছে।
সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম ভূঞা বলেছেন, মরদেহ থানায় নিয়ে আসা হয়েছিল। পরিবারের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঢাকা/কাওছার/রফিক