ভিন্নমত ছাড়াই জুলাই সনদ স্বাক্ষর হলে সবচেয়ে ভালো হতো: জামায়াত
Published: 17th, October 2025 GMT
ভিন্নমতগুলো ছাড়াই জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ স্বাক্ষর হলে সবচেয়ে ভালো হতো বলে মন্তব্য করেছেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ। তিনি বলেন, জুলাই সনদ স্বাক্ষর হলেও তাতে সংকট থেকে গেছে। পাশাপাশি এটি বাস্তবায়নের চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে বলেও মনে করেন এই জামায়াত নেতা।
শুক্রবার বিকেলে জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫-এর স্বাক্ষর অনুষ্ঠান শেষে হামিদুর রহমান আযাদ সাংবাদিকদের এ কথা বলেন। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা সনদে স্বাক্ষর করেন।
হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ‘আজকে সিগনেচার সেরিমনিটা (সনদ সই অনুষ্ঠান) একটা সুন্দর সমাপ্তির জন্য হয়েছে। কিন্তু ঐকমত্য কমিশনে যে ৮৪টি ধারায় আমরা একমত হয়েছি, কেউ কেউ নোট অব ডিসেন্ট (ভিন্নমত) দিয়েছে। সবচেয়ে ভালো হতো নোট অব ডিসেন্ট ছাড়াই যদি স্বাক্ষর হতো।’
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে জামায়াতের কোনো সংশয় আছে কি না—সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে দলটির এই সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ‘আমরা বলেছি, আইনি ভিত্তি দিতে হবে। আইনি ভিত্তি যদি না দেন, তাহলে এই সনদটা, বিপ্লবের স্পিরিট (চেতনা), ঐকমত্যে পৌঁছানোর উদ্দেশ্যটা ব্যাহত হবে এবং অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। এ জন্য আমরা আইনি ভিত্তির জন্য আগেও বলেছি। একটা আদেশ জারি করতে হবে এবং গণভোটের মাধ্যমে এটা টেকসই করতে হবে।’
এর আগে জুলাই জাতীয় সনদ ২০২৫ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন ২৫টি রাজনৈতিক দলের নেতারা। এর মধ্যে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, নাগরিক ঐক্য, গণসংহতি আন্দোলন, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি), খেলাফত মজলিস, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলন, আমার বাংলাদেশ পাটি (এবি পার্টি), জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন (এনডিএম), বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, গণ অধিকার পরিষদ (জিওপি), বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয়তাবাদী সমমনা জোট, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা, বাংলাদেশ এলডিপি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, গণফোরাম, জাকের পার্টি, জাতীয় গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, বাংলাদেশ লেবার পার্টি, ভাসানী জনশক্তি পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, ইসলামী ঐক্যজোট এবং আমজনতার দলের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) জুলাই সনদে স্বাক্ষর করেনি। এ ছাড়া বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), বাসদ (মার্ক্সবাদী) ও বাংলাদেশ জাসদ সনদে স্বাক্ষর করেনি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অনুষ্ঠানে থাকলেও জুলাই সনদে সই করেনি গণফোরাম
জুলাই জাতীয় সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে যোগ দিলেও তাতে সই করেনি ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন দল গণফোরাম।
আজ শুক্রবার বিকেলে জুলাই সনদ স্বাক্ষর অনুষ্ঠানের পর গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
মিজানুর রহমান বলেন, ‘সংবিধানের ১৫০–এর ২ অনুচ্ছেদ তারা বলেছে বিলুপ্ত করা হবে। এবং পঞ্চম, ষষ্ঠ এবং সপ্তম তফসিলে রাখা হবে না। আমরা বলেছিলাম যে এটা যদি সংশোধন করে তাহলে এবং প্রক্লেমেশন অব ইনডিপেনডেন্টস যদি এটা রাখে তাহলে আমরা স্বাক্ষর করব। আমাদের আশ্বস্ত করেছিল যে এটা সংশোধন হবে। কিন্তু অনুষ্ঠানে গিয়ে চূড়ান্ত কপিটা আমরা পাইনি। শুধু স্বাক্ষরের কপিটা দেওয়া হয়েছিল। এ জন্য আমরা স্বাক্ষর থেকে বিরত ছিলাম।’
জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় শুক্রবার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের উপস্থিতিতে জুলাই সনদে স্বাক্ষর করে রাজনৈতিক দলগুলো। বৃষ্টি মাথায় এই অনুষ্ঠানে বিএনপি, জামায়াতে ইসলামীসহ ২৫টি দল যোগ দেয়। তাদের মধ্যে গণফোরাম সনদে সই করেনি। জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং চারটি বাম দল অনুষ্ঠানে যোগই দেয়নি, সইও করেনি।
অনুষ্ঠানে সনদে সই না করলেও পরে সই করার ইঙ্গিত দিয়ে মিজানুর রহমান বলেন, ‘বৃষ্টির পরে আমরা চূড়ান্ত কপির একটা বই পেয়েছি এবং তারা (জাতীয় ঐকমত্য কমিশন) আমাদের বলেছে যে এটা সংশোধন করা হয়েছে। এখন যেহেতু তারা এটা সংশোধন করেছে, আমরা তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরে স্বাক্ষর করব।’
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ জানিয়েছিলেন, পরবর্তী সময়েও সনদে সই করার সুযোগ রয়েছে।
গণফোরাম নেতা মিজানুর বলেন, ‘আমাদের কিছু নোট অব ডিসেন্ট আছে। যেমন আমাদের সংবিধানের চার মূলনীতি—বাঙালি জাতীয়তাবাদ...এ রকম অনেকগুলো বিষয় আছে। এটাও পর্যালোচনা করছি এবং তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ইতিবাচকভাবে আমরা নিচ্ছি।’