একটা নির্দিষ্ট বয়সের পর বেশির ভাগ মানুষ, বিশেষত নারীরা অস্টিওপোরোসিস বা হাড়ক্ষয় রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। প্রাথমিক পর্যায়ে কোনো লক্ষণ থাকে না। সাধারণত নরম হয়ে যাওয়া ভঙ্গুর হাড় হঠাৎ ভেঙে গেলে যে লক্ষণ প্রকাশ পায়, তখন বেশ দেরি হয়ে যায়।

অস্টিওপোরোসিসজনিত হাড়ভাঙা প্রবীণদের শয্যাশায়ী হওয়ার অন্যতম কারণ। সাধারণত পুরুষের তুলনায় নারীরা এ রোগে বেশি আক্রান্ত হন। পঞ্চাশোর্ধ্ব নারীদের ক্ষেত্রে এই রোগের ঝুঁকি বেশি। তবে পুরুষেরাও যে এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন না, এমন নয়।

হাড়ের মূল উপাদান ক্যালসিয়াম, ফসফরাস ও ভিটামিন-ডি। এর কোনো একটি উপাদানের অভাব দেখা দিলেই হাড় নরম হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হয়। তাই এসব উপাদানের জোগান অল্প বয়স থেকেই পর্যাপ্ত হতে হবে। কারণ, হাড় কতটা মজবুত হবে, তা অল্প বয়সেই নির্ধারিত হয়ে যায়।

যেমন খাদ্যাভ্যাস প্রয়োজন

অস্টিওপোরোসিস প্রতিরোধে যথেষ্ট আমিষ খেতে হবে, যা পেশি ও হাড়কে মজবুত করে। নিয়মিত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন–ডি যুক্ত খাবার খেতে হবে। অভ্যাস করতে হবে প্রতিদিন কিছু ব্যায়ামের। ধূমপান করা যাবে না। যেসব খাবার হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখে, সেগুলো নিয়মিত খেতে হবে।

ক্যালসিয়াম

হাড়ের স্বাস্থ্য ভালো রাখার অন্যতম উপাদান ক্যালসিয়াম। শিমের বিচি, কাঁঠালের বিচি, বাদাম, মটরশুঁটি, ডাল ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস। দুধ বা দুধের তৈরি খাবার খেতে হবে রোজ। কাঁটাযুক্ত ছোট মাছেও ক্যালসিয়াম পাওয়া যায়।  

ভিটামিন–সি

ভিটামিন–সি কোলাজেন নামে হাড়ের সংযোগস্থলের পিচ্ছিল পদার্থ তৈরিতে সহায়তা করে। এতে হাড়ের ঘর্ষণ কম হয়, যা হাড়ক্ষয় প্রতিরোধ করে। প্রতিদিন কিছু দেশীয় টকজাতীয় ফল যেমন পেয়ারা, আমলকী, আমড়া, জাম্বুরা ইত্যদি খেতে হবে।

জিংক

জিংকের অন্যতম উৎস সামুদ্রিক মাছ, লাল মাংস, চিংড়ি, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার, ডিম, বাদাম, শিমের বিচি, কাঁঠালের বিচি, মটরশুঁটি, চিয়া সিড, সূর্যমুখীর বীজ, মাশরুম ইত্যাদি। শাকসবজিতে থাকা জিংক সহজে হজম হয় না। চেষ্টা করতে হবে প্রাণিজ উৎস থেকে জিংক নিতে।

ওমেগা–৩ ফ্যাটি অ্যাসিড

সামুদ্রিক ও তৈলাক্ত মাছের অন্যতম উপাদান হচ্ছে ভিটামিন ডি ও ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড, যা হাড়ের গঠনের জন্য অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। তাই নিয়মিত সামুদ্রিক মাছ খেতে হবে। এ ছাড়া চিয়া সিড, সূর্যমুখীর বীজ, বাদাম ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের ভালো উৎস।

ভিটামিন–ডি

ভিটামিন-ডির ৭০ ভাগ উৎস সূর্যের আলো। তাই প্রতিদিন ১৫ থেকে ২০ মিনিট সূর্যের রোদ গায়ে মাখুন। শুধু খাবার থেকে কখনোই ভিটামিন ডির চাহিদা পূরণ হয় না। খাবারের মধ্যে তেলযুক্ত মাছ, মাছের তেল, ডিমের কুসুম, গরুর কলিজা, মাশরুম ইত্যাদি ভিটামিন ডির উৎস।

মো.

ইকবাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক য লস য় ম উপ দ ন

এছাড়াও পড়ুন:

অবশেষে সৎকার হলো হিমাগারে থাকা ভারতীয় নাগরিকের মরদেহ

শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের হিমাগারে দীর্ঘদিন ধরে থাকা ভারতীয় নাগরিক রাজনের (৬৩) মরদেহের সৎকার করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে পৌরসভার মনোহরবাজার শ্মশানঘাটে মরদেহটি সৎকার করা হয়। প্রায় ৭ মাস ধরে এই মরদেহ সদর হাসপাতালের হিমাগারে রাখা ছিল।

আরো পড়ুন:

নড়াইলে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় সাংবাদিকের ভাইয়ের মৃত্যু

নবাবগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে বৃদ্ধের মৃত্যু, ভস্মীভূত ১১ ঘর 

রাজন ভারতের দিল্লি প্রদেশের দিলিপের ছেলে। তবে তার জেলার নাম জানা যায়নি।

শরীয়তপুর কারা কর্তৃপক্ষ জানায়, রাজন নামে এই ব্যক্তিকে ২০২২ সালের আগস্ট মাসের ২৫ তারিখে শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলার পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানা এলাকা থেকে আটক করা হয়। তার বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের দায়ে মামলা হয়। ২০২৩ সালের ১৯ নভেম্বর ওই মামলায় তাকে এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন আদালত। সাজার মেয়াদ শেষ হওয়ায় তিনি আর পি বন্দী হিসেবে কারাগারে ছিলেন। 

গত ১৮ মে রাজন অসুস্থ হয়ে পড়লে সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক পরীক্ষা শেষে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এরপর থেকেই রাজনের মরদেহ সদর হাসপাতালের হিমাগারে রাখা ছিলো। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মরদেহটি সৎকারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। 

শরীয়তপুরের জেল সুপার বজলুর রশিদ বলেন, “রাজন নামের ওই ব্যক্তি আর পি বন্দী ছিলেন। হঠাৎ করে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এরপর থেকে তার মরদেহ হিমাগারে রাখা ছিল। পরে দুই দেশের (বাংলাদেশ-ভারত) উচ্চ পর্যায়ে সভার মাধ্যমে মরদেহটি দাহ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সৎকার শেষে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়ে দেব।” 

ঢাকা/সাইফুল/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ