টনি হেমিং কিংবা গামিনি ডি সিলভা। পট পরিবর্তনে মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের দায়িত্বে যে-ই আসুক না কেন, ঐতিহ‌্য পরিবর্তনের কোনো সুযোগ কী আছে? 

২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরের পর মিরপুরে আবার ফিরল ওয়ানডে। এ সময়ে গামিনি ডি সিলভার পরিবর্তে মিরপুরের দায়িত্বে হেমিং। কিন্তু চিরচেনা মিরপুর পাল্টাতে পারেনি স্পিন দূর্গ। ধীর গতির, লো বাউন্সের উইকেট। তাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ রীতিমত হিমশিম খেল। 

আরো পড়ুন:

রিশাদের ৬ উইকেটে বাংলাদেশের বিশাল জয়

পাকিস্তানি হামলায় তিন আফগান ক্রিকেটার নিহত, সিরিজ থেকে সরে দাঁড়ালো আফগানিস্তান

আগের দিনই তাদের কোচ ড‌্যারেন স‌্যামি উইকেট নিয়ে এমন আভাস দিয়েছিলেন, ‘‘এমন কিছু কখনো দেখেননি।’’ তার বিস্ময় প্রকাশ করা উইকেটে রিশাদ হোসেনের ঘূর্ণিতে বাংলাদেশ জয়ের ছবি আঁকল। ৩৫ রানে ৬ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশের জয়ের নায়ক তিনি। প্রথমবার বাংলাদেশের কোনো স্পিনার ওয়ানডেতে পেলেন ৬ উইকেট। 

যদিও বাংলাদেশের ব‌্যাটিং ভালো হয়নি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের আমন্ত্রণে ব‌্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশ ৪৯.

৪ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২০৭ রান করে। জবাব দিতে নেমে রিশাদের ৬ উইকেট ওয়েস্ট ইন্ডিজ গুটিয়ে যায় ১৩৩ রানে। ৭৪ রানের জয়ে তিন ম‌্যাচের ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশ এগিয়ে ১-০ ব‌্যবধানে। 

আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে হোয়াইটওয়াশের পর এই ফরম‌্যাটে একটি জয় প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। ঘরের মাঠে চিরচেনা স্পিন দূর্গে মিলল কাঙ্খিত সাফল‌্য। তবে এই জয় কতোটুকু উপভোগ‌্য হতে পারে তা সময়ই বলে দেবে। 

বোলিংয়ে রিশাদ ৬ উইকেট নেওয়ার আগে ব‌্যাটিংয়ে ১৩ বলে ১ চার ও ২ ছক্কায় গুরুত্বপূর্ণ ২৬ রান করেন। তার শেষের এই ঝড়েই বাংলাদেশের রান কোনোমতে দুইশ পেরিয়ে যায়। 

কালো মাটির নতুন উইকেট কেমন আচরণ করে সেটাই ছিল দেখার। বাংলাদেশের শুরুর ব‌্যাটিংয়ে স্পষ্ট ধারনাও পাওয়া যাচ্ছিল। দুই ওপেনার ৮ রানে ফেরার পর শান্ত ও তাওহীদের ১২০ বলে ৭১ রানের জুটি প্রতিরোধ দেয়। মূলত এই জুটির লক্ষ‌্য ছিল কেবলই টিকে থাকা, উইকেট আগলে রাখা। কেননা রান তোলা সহজ ছিল না। 

শান্ত ৩২ রান করে ফিরলেও তাওহীদ তুলে নেন ৫১ রান। এরপর অভিষিক্ত মাহিদুল দু‌্যতি ছড়িয়ে করেন ৪৬ রান। ফিফটি পেলে তার ৭৬ বলে ৩ বাউন্ডারিতে সাজানো ইনিংসটি পূর্ণতা পেত। মূলত এই তিন ব‌্যাটসম‌্যানের ব‌্যাটেই বাংলাদেশের পুঁজি সাজানো হয়। 

ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেরা বোলার ছিলেন জেডেন সিলস। ৪৮ রানে ৩ উইকেট নেন তিনি। ২টি করে উইকেট নেন গ্রেভস ও চেজ।

লক্ষ‌্য তাড়ায় তাদের শুরুটা ছিল দারুণ। প্রথম দুই ওভার মেডেনের পর তৃতীয় ও চতুর্থ ওভারে চার-ছক্কার জোয়ার ছুটে যায়। চতুর্থ ওভারে তানভীরকে তিন চার ও এক ছক্কা হাঁকান আথানাজে। তৃতীয় ওভারে কিং তাসকিনকে একটি চার ও ছক্কা উড়ান।   পাওয়ার প্লে’তে ১০ ওভারে বিনা উইকেটে তাদের রান ৪৫। 

ব্রেক থ্রুর প্রয়োজন ছিল বাংলাদেশের। ১২তম ওভারে বাংলাদেশকে কাঙ্খিত ব্রেক থ্রু এনে দেন লেগ স্পিনার রিশাদ। দারুণ এক ঘূর্ণিতে বাঁহাতি ব‌্যাটসম‌্যান আথানাজকে এলবিডব্লিউ করেন রিশাদ। পরের গল্পটা একেবারেই তার। 

পরপর ৩ ওভারে পেয়ে যান ৪ উইকেট। তাতে পূরণ হয় তার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম ফাইফার। যা লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে দ্বিতীয়। এর আগে ২০০৪ সালে শাইনপুকুরের হয়ে ব্রাদার্সের বিপক্ষে ৪৯ রানে ৫ উইকেট পেয়েছিলেন রিশাদ। 
২০তম ওভারে কেসি কার্টি স্লিপে সাইফ হাসানের হাতে ক‌্যাচ দেন। এর আগে উইকেট কিপার সোহান ও সাইফের গ‌্যাপ দিয়ে একটি ক‌্যাচ ছুটে যায়। কিন্তু এবার সাইফ সহজেই ক‌্যাচ তালুবন্দি করেন। 

পরের ওভারে রিশাদের শিকার ব্রেন্ডন কিং ও শেফরায়ান রাদারফোর্ড। ৬০ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৪৪ রান করেন কিং। তার লেগ ব্রেকে উইকেটের পেছনে সোহানের গ্লাভসবন্দী হন। বাংলাদেশের জন‌্য বড় হুমকি হতে পারতেন রাদারফোর্ড। আক্রমণাত্মক এই ব‌্যাটসম‌্যানকেও রিশাদ টিকতে দেননি। ৩ বল খেলে রানের খাতা খুলতে না পেরে আউট হন রাদারফোর্ড। 

পরের ওভারে রিশাদের ফাইফার পূর্ণ হয়ে যায়। এবার তার ঘূর্ণি, বাউন্সে পরাস্ত রোস্টন চেজ। সোহানের গ্লাভসে ক‌্যাচ দিয়ে ফেরেন ৬ রান করা চেজ।

রিশাদের ওই ধাক্কার পর ক‌্যারিয়ানরা আর ফিরতে পারেনি। ১৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে পরাজয়ের নাগালে পৌঁছে যায়। পরের কাজটা করেন তানভীর, মিরাজ, মোস্তাফিজুরা। তাদের কফিনে শেষ পেরেকটি ঢুকে দেন রিশাদই।

টানা চার ম‌্যাচ পর বাংলাদেশ জয়ে ফিরল। এ জয় নিশ্চিতভাবে আত্মবিশ্বাস বাড়াতে পারে। মঙ্গলবার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে এই ধারাবাহিকতা থাকে কিনা দেখার।

ঢাকা/ইয়াসিন

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উইন ড জ ক র ক ট ৬ উইক ট উইক ট ন র ন কর

এছাড়াও পড়ুন:

জন্মদিনে তাহসানের শেষ গান, ২২ বছর পর ‘প্রাকৃতিক’ ফিরল

‘তিনটা গান বানানো আছে। কিন্তু আর রিলিজ করব না। পোরসেলিনা তাহসানস প্লেলিস্ট প্রকল্পের শেষ গানটা হয়তো শুধু প্রকাশিত হবে। তারপর শেষ। এরপর আর কোনো নতুন গান প্রকাশ করব না।’ এভাবেই বলেছিলেন তাহসান খান, সেপ্টেম্বরের চতুর্থ সপ্তাহে প্রথম আলোকে দেওয়া তাঁর জীবনের শেষ সাক্ষাৎকারে। তখন তিনি স্পষ্ট জানিয়েছিলেন—এ সাক্ষাৎকারই তাঁর ক্যারিয়ারের শেষ মিডিয়া কথোপকথন, আর সামনের পথে তিনি কেবল নিজের মতো বাঁচতে চান, দূরে থাকতে চান প্রচারণা আর আলোচনার বৃত্ত থেকে।

তাহসান খান

সম্পর্কিত নিবন্ধ