খুলনা জেলা কারাগারে কয়েদিদের দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। শনিবার (১৮ অক্টোবর) বিকেলে সংঘর্ষ হয়। কারারক্ষীরা লাঠিচার্জে করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে কারারক্ষীসহ আটজন আহত হয়েছে। 

খুলনার জেল সুপার মো. নাসির উদ্দিন প্রধান রাতে এ সব তথ্য জানিয়েছেন।

আরো পড়ুন:

কিশোর গ্যাংয়ের দৌরাত্ম্য, অতিষ্ঠ মাদারীপুরবাসী

বিএনপি ২ পক্ষের সংঘর্ষ: মিলনের পর ভাই আলমের মৃত্যু

জেল সুপার রাইজিংবিডি-কে জানান, বাবু, শিমুল এবং লাভলু গ্রুপের অনুসারীদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি ও পরে মারামারি শুরু হয়। আধাঘণ্টার বেশি সময় ধরে সংঘর্ষ হয়। এ সময় পাগলা ঘণ্টা বাজিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়। এক পর্যায়ে কারারক্ষীরা লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। 

তিনি জানান, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে পরিস্থিতি কারা কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে আসে। এতে একজন কারারক্ষীসহ আটজন সামান্য আহত হয়েছে। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কারারক্ষী জানান, খুলনার দুটি প্রভাবশালী সন্ত্রাসী গ্রুপ গ্রেনেড বাবু গ্রুপ ও কালা লাভলু গ্রুপের অনুসারীদের মধ্যে প্রায় ৪০ মিনিট ধরে সংঘর্ষ চলে। কথা-কাটাকাটির এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। পরে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। 

কারারক্ষীরা আরো জানান, বন্দিদের মধ্যে অনেকে এতটা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে, কারা কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মানছে না। কারাগারে দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ সীমিত থাকায় তাদের মধ্যে বেপরোয়া আচরণ বাড়ছে।

একটি গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য জানান, বিকেল ৫ টা ৪৫ মিনিট থেকে ৬ টা ২০ মিনিট পর্যন্ত সংঘর্ষ চলে। এতে অন্তত ৪ থেকে ৫ জন বন্দি আহত হয়েছে। ৪০ থেকে ৪৫ জন কয়েদি সংঘর্ষে অংশ নেয়। শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রেনেড বাবুর ভাই রাব্বি চৌধুরী, তার অনুসারী হিরন; রুহান-পলাশ গ্রুপের পলাশ, কালা লাবলু, সৈকত ও মইদুল প্রমুখ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। 

ঘটনার খবর পেয়ে জেল সুপার নাসির উদ্দিন প্রধানের নেতৃত্বে কারারক্ষীরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে লাঠিচার্জ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এক পর্যায়ে উভয় পক্ষ কারারক্ষীদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে হামলার চেষ্টা চালায়। পরে উত্তেজিত বন্দিদের আলাদা লকারে স্থানান্তর করা হয়।
 

ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স ঘর ষ আহত ক র রক ষ র পর স থ ত স ঘর ষ

এছাড়াও পড়ুন:

শিশুদের হত্যার ভয় দেখিয়ে মিরসরাইয়ের দুই বাড়িতে ডাকাতি

চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে একই গ্রামের দুটি বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ডাকাত দল ওই দুই বাড়ির চার পরিবারের পরিবারের পুরুষ সদস্যদের বেঁধে শিশু ও নারীদের জিম্মি করে টাকা, স্বর্ণালংকার, কম্বল ও মুঠোফোন নিয়ে যায়। গতকাল বুধবার দিবাগত রাত দেড়টা থেকে ভোর সাড়ে চারটা পর্যন্ত উপজেলার হিঙ্গলী ইউনিয়নের একটি গ্রামের পাশাপাশি দুই প্রবাসী বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে।

ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরা জানান, বুধবার রাত দেড়টার দিকে ডাকাত দল প্রথম হানা দেয় কুয়েত প্রবাসীর বাড়িতে। দ্বিতল পাকা বাড়ির মূল ঘর লাগোয়া রান্নাঘরের গ্রিল কেটে ডাকাত দল ঘরে ঢোকে। দলে সাত থেকে আটজন ছিল বলে ভুক্তভোগীরা জানিয়েছেন। এ সময় প্রবাসীর স্ত্রী ও সন্তান একা ছিলেন ঘরে। ডাকাত দল ওই বাড়িতে ঢুকে প্রবাসীর স্ত্রীকে ধর্ষণ ও সন্তানকে হত্যার হুমকি দিয়ে ৫০ হাজার টাকা, দুই ভরি স্বর্ণালংকার ও একটি মুঠোফোন নিয়ে যায়।

ওই বাড়ির দ্বিতীয় তলায় দুই ভাড়াটিয়ার বাড়িতেও ডাকাতেরা হানা দেয়। সেখান থেকে চার হাজার টাকা ও দুটি মুঠোফোন নিয়ে যায় তারা।

রাত চারটার দিকে প্রথম বাড়ি থেকে ৫০০ মিটার পশ্চিমে আরেক প্রবাসীর বাড়িতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে পড়ে ডাকাত দলের সদস্যরা। সেখানে একতলা নির্মাণাধীন বাড়ির মালিক সৌদি আরব প্রবাসীর শ্বশুর, তাঁর স্ত্রী ও ছোট দুই শিশুপুত্র ছিল। শাবল দিয়ে সদর দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে পুরুষ সদস্যদের হাত পা বেঁধে ফেলে ডাকাতেরা। পরে দুই শিশুকে হত্যা ও বাড়ির নারীদের ধর্ষণের হুমকি দিয়ে নগদ ৫০ হাজার টাকা, সাতটি কম্বল ও একটি মুঠোফোন নিয়ে যায়। ২২ মিনিটের মধ্যে ডাকাতি শেষ করে নির্বিঘ্নে চলে যায় তারা।

ডাকাতির শিকার এক প্রবাসীর স্ত্রী প্রথম আলোকে বলেন, রাত দেড়টার দিকে রান্নাঘরের জানালা ভেঙে ডাকাত দলের সদস্যরা ঘরে ঢুকে পড়ে। তাদের পরনে হাফপ্যান্ট ও কালো রঙের মুখোশ ছিল। তাদের সবার হাতে দেশি ধারালো অস্ত্র ছিল। ডাকাতেরা তাকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে। ধর্ষণের হমকি দেয়। তাঁর ছেলেকেও মারধর করে। এরপর তারা দ্বিতীয় তলায় তাঁর দুই ভাড়াটিয়ার ঘরেও হানা দেয়।

ডাকাতি হওয়া আরেক বাড়ির বাসিন্দা প্রবাসীর শ্বশুর প্রথম আলোকে বলেন, মেয়ের স্বামী প্রবাসে থাকায় একা বাড়িতে তিনি সবার দেখভাল করেন। বুধবার ভোর চারটার দিকে ঘরের দরজা ভেঙে সাত–আটজন ডাকাত ঢুকে দেশি অস্ত্রের মুখে তাঁকে বেঁধে ফেলে। এরপর মেয়েকে ধর্ষণ ও দুই নাতিকে হত্যার হুমকি দেয় তারা। এ সময় ঘরে থাকা ৫০ হাজার টাকা, ৭টি কম্বল ও একটি মুঠোফোন নিয়ে গেছে ডাকাতরা। ২২ মিনিট সময়ের মধ্যে ঘরের ভেতর তাণ্ডব চালিয়ে চলে যায় তারা।

দুই বাড়ির চারটি পরিবারে ডাকাতির ঘটনার বিষয় জানতে চাইলে জোরারগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম আবদুল হালিম প্রথম আলোকে বলেন, বুধবার রাতে হিঙ্গুলী ইউনিয়নে এক বাড়িতে গ্রিল কেটে ও আরেক বাড়িতে দরজা ভেঙে চুরি বা ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার তদন্ত হচ্ছে। গ্রামটি ফেনী নদীর পাড়ে হওয়ায় নদীর উত্তর পাশের ছাগলনাইয়া উপজেলার সমিতির বাজার এলাকা থেকে শেষ রাতে ডাকাত দল এখানে এসে হানা দেয় বলে ধারণা করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভিক্ষা চাইতে বাড়িতে সাত নারী, প্রবাসীর স্ত্রীকে অজ্ঞান করে স্বর্ণালংকার লুট
  • শিশুদের হত্যার ভয় দেখিয়ে মিরসরাইয়ের দুই বাড়িতে ডাকাতি