যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরে একটি নৌযানে হামলা চালিয়ে দুজন সন্দেহভাজন মাদক কারবারিকে হত্যা করেছে। বুধবার দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ এই কথা জানিয়েছেন। এই হামলার মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের মাদকবিরোধী অভিযানে সামরিক বাহিনীর ব্যবহার আরও সম্প্রসারিত হলো।

 ট্রাম্প প্রশাসনের মাদকবিরোধী অভিযান শুরুর পর প্রশান্ত মহাসাগরে মার্কিন সেনাবাহিনীর এটা প্রথম জ্ঞাত হামলা। তবে ক্যারিবীয় অঞ্চলে এরই মধ্যে এই ধরনের অন্তত সাতটি হামলা চালানো হয়েছে। একই বিষয়ে ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের উত্তেজনা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে।

 সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে এক পোস্টে হেগসেথ লিখেছেন, ‘আমাদের গোয়েন্দা তথ্য অনুযায়ী নৌযানটি অবৈধ নেশাদ্রব্য পাচারে জড়িত ছিল। এটি পরিচিত মাদক চোরাচালানের পথ ধরে চলাচল করছিল এবং নেশাদ্রব্য বহন করছিল।’ তবে নিজের দাবির পক্ষে তিনি কোনো প্রমাণ হাজির করেননি।

এক্সে হেগসেথ প্রায় ৩০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। এতে একটি নৌযানকে পানিতে চলতে এবং পরে বিস্ফোরিত হতে দেখা যায়।

ক্যারিবীয় অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের এই ধরনের হামলায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৩২ জন নিহত হয়েছেন। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন এসব ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দেয়নি। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, হামলার শিকার নৌযানগুলোতে কী পরিমাণ মাদকদ্রব্য ছিল বা নৌযানগুলো যে মাদকদ্রব্য ব্যবহার করছিল, তার সুনির্দিষ্ট প্রমাণ কী, এসব বিষয়ে তারা বিস্তারিত জানায়নি।

বিশেষজ্ঞদের প্রশ্ন, যুক্তরাষ্ট্রের মূল সামুদ্রিক আইন প্রয়োগকারী সংস্থা কোস্টগার্ডের বদলে সামরিক বাহিনী কেন এসব হামলা চালাচ্ছে? প্রাণঘাতী হামলায় যাওয়ার আগে মাদকবাহী চালান থামাতে অন্য কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না কেন?

সর্বশেষ হামলাটি নিয়ে প্রথমে প্রতিবেদন করে সিবিএস নিউজ। এমন এক সময়ে ঘটনাটি ঘটে, যখন যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি বাড়াচ্ছে। ওই অঞ্চলে দেশটির নিয়ন্ত্রিত ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসকারী জাহাজ, এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, একটি পারমাণবিক সাবমেরিন এবং প্রায় সাড়ে ছয় হাজার সেনা রয়েছে।

আগস্ট মাসে যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড ‘অপারেশন ভাইপার’ নামের একটি অভিযান শুরু করে, যার লক্ষ্য ছিল প্রশান্ত মহাসাগরে মাদক আটকানো। কোস্টগার্ড জানিয়েছে, ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত তারা ১ লাখ পাউন্ডেরও বেশি কোকেন জব্দ করেছে।

কিন্তু এই ক্ষেত্রে জাহাজটি আটকানোর বদলে কেন হামলা চালানো হয়েছে, তা স্পষ্ট নয়।

গত সপ্তাহে রয়টার্স প্রথম জানায়, ক্যারিবীয় অঞ্চলে মার্কিন সামরিক বাহিনীর এক হামলা থেকে দুজন সন্দেহভাজন মাদক পাচারকারী বেঁচে গিয়েছিলেন। পরে তাঁদের উদ্ধার করে একটি মার্কিন নৌবাহিনীর যুদ্ধজাহাজে তোলা হয়। পরবর্তীতে নিজ নিজ দেশ কলম্বিয়া ও ইকুয়েডরে তাঁদের ফেরত পাঠানো হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র দ রব য

এছাড়াও পড়ুন:

ফতুল্লায় ফের দুই যুবককে অপহরণ ও গুমের অভিযোগ রাজ্জাক বাহিনীর বিরুদ্ধে

ফতুল্লার ইসদাইরে রাজ্জাক বাহিনীর সদস্যরা গত দেড় মাসের ব্যবধানে মোবারক হোসেন (৩২) ও নজরুল ওরফে বগল (২০)  নামের দুই যুবক কে অপহরণ ও গুম করেছে বলেছে জানা গেছে। পুলিশ দুই যুবকের অপহরণ ও  গুমের ঘটনায় ছোট সাজু সহ  চার  জনকে গ্রেফতার করলেও অপহৃতদের উদ্ধার করতে পারেনি। 

অপহরন ও গুমের ঘটনায় ফতুল্লা মডেল থানায় পৃথক পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেছে মোবারক হোসেন ও নজরুল ওরফে বগলের  পরিবার।

পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা যায় চলতি বছরের ১২ অক্টোবর  ফতুল্লার ইসদাইরস্থ ভাড়া বাসা থেকে রাত দুইটার দিকে লেগুনা নজরুল  ওরফে বগল কে ডেকে নিয়ে যায় ওয়াসিম ও তার সহোযোগিরা।

কিন্ত রাত শেষ হয়ে দিন অতিবাহিত হলেও নজরুল ওরফ বগল ফিরে আসায় পরিবারের  সদস্যরা ওয়াসিমের বাবা রাজ্জাক সহ অপর অভিযুক্তদের নিকট যায়।

সেখানে তারা নজরুল ওরফে বগলের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা বলে যে তাদের নিকট আছে। এ বিষয়ে বেশী কথা বললে বা আইনের আশ্রয় নিলে তাদেরকে হত্যা করার হুমকি প্রদান করে।

বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুজিঁ করে না পেয়ে নজরুল ওরফে বগলের বাবা হরমুজ মুন্সি ৫ ডিসেম্বর ফতুল্লা মডেল থানায় ওয়াসিম(২০),জসিম(২৩) তাদের পিতা রাজ্জাক(৫০), ফরিদ(৪৮) ও আলী (৪৮) সহ অজ্ঞাতনামা আরো ৪/৫ জনকে আসামী করে ফতুল্লা মডেল থানায় অপহরন এবং গুমের অভিযোগ এনে একটি   মামলা দায়ের করেন।

অপরদিকে এই একই চক্রের হাতে ১৮ নভেম্বর রাত একটার দিকে  ইসদাইর নতুন বাজার মসিজদ সংলগ্ন রাস্তা থেকে মোবারক হোসেন নামের অপর এক যুবক অপহৃত হয়। এঘটনায় মোবারক হোসেনের বাবা খলিল বাদী হয়ে ঘটনার ৫ দিন পর ২৩ ডিসেম্বর ফতুল্লা মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। 

মামলায় উল্লেখ্য করা হয় ১৮ নভেম্বর রাত ১ টার দিকে চাষাড়া বালুর মাঠ থেকে বাসায় ফেরার পথে ইসদাইর নতুন বাজার মসজিদের সামনে আসা মাত্র লিটন আলীর নেতৃত্বে ৮/১০ সন্ত্রাসী মেবারক হোসেন কে অপহরন করে।

পরবর্তীতে ২৩ নভেম্বর অপহৃত যুবক মোবারকের বাবা  মোঃ খলিল বাদী হয়ে লিটন আলী, জাকির হোসেন, জসিম, বুলু ও রাজ্জাক সহ অজ্ঞাত নামা আরো ৪/৫ জনকে আসামী করে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি অপহরন মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরর পর লিটন আলী ওরফে সোর্স লিটন সহ তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। 

দেড় মাসের ব্যবধানে মোবারক হোসেন ও নজরুল ওরফে বগল নামের দু যুবক অপহরন ও গুমের ঘটনায় স্থানীয়বাসীর মাঝে আতংক ছড়িয়ে পরেছে।

এদিকে অপহৃত যুবক মেবারক হোসেন কে উদ্ধার সহ অভিযুক্ত আসামীদের গ্রেফতারে দাবীতে রোববার জেলা আদালত চত্ত্বরে মানব বন্ধন করেছে অপহৃতের পরিবারের সদস্য সহ স্থানীয় এলাকাবাসী।

স্থানীয় একাধিক নির্ভরযোগ্য তথ্য মতে,অপহৃত দুই যুবক মোবারক হোসেন ও নজরুল ওরফে বগল অভিযুক্ত রাজ্জাকের হয়ে কাজ করতো। হয়তো মাদক ব্যবসা নিয়ে কোন্দলের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক সার্কেল) হাসিনুজ্জামান জানান, দু যুবকের অপহরনের ঘটনায় পুলিশ প্রথমে লিটনসহ তিনজন কে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তীতে গতকাল (শনিবার) ছোট সাজু কে পুলিশ গ্রেফতার করে। তবে অপহৃত মোবারক ও নজরুলের বিষয়ে তারা কোন সন্ধান পায়নি।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ