শীতের শুরুতে পর্যটকে মুখর কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত
Published: 15th, November 2025 GMT
শীতের শুরুতে পর্যটকে মুখর হয়ে উঠেছে দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত কক্সবাজার। মিষ্টি রোদ আর শান্ত নীল সাগরের সৌন্দর্য মনের সঙ্গে মাধুরী মিশিয়ে উপভোগ করছেন তারা।
শুক্র ও শনিবার (১৪-১৫ নভেম্বর) সাপ্তাহিক ছুটিকে কেন্দ্র করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ছুটে আসছেন হাজারো ভ্রমণপিপাসু।
সকাল-সন্ধ্যা সৈকতের সুগন্ধা, লাবণী, কলাতলীসহ সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে দেখা যায় পর্যটকের ঢল নেমেছে। নানান বয়সের দর্শনার্থীরা বালুচরে উৎসবের আমেজ আর ঢেউয়ের তালে সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করছেন।
সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে গিয়ে দেখা যায়, সাগর তুলনামূলক শান্ত থাকায় পর্যটকদের বাড়তি উৎসাহ রয়েছে সমুদ্রস্নানে। বালুচরে বিচ বাইক, ঘোড়ায় চড়া, জেড স্কীতে সমুদ্র ভ্রমণ, সব মিলিয়ে জমজমাট দৃশ্য। শিশুরা ভেজা মাটি দিয়ে তৈরি করছেন খেলনার প্রাসাদ। বড়রা খুঁজে নিচ্ছেন ক্লান্তি দূর করার প্রশান্তি।
নরসিংদী থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক আবেদ খান বলেন, “বালিয়াড়িতে বসে সমুদ্র দেখা—এটাই যেন কক্সবাজারের আসল উপভোগ। এই দৃশ্য মনকে অন্যরকম প্রশান্তি দেয়।”
কুমিল্লা থেকে আসা নাসরিন আঞ্জুম বলেন, “ভাগিনার সাথে আকাশে রঙ্গিন ঘুড়ি উড়ালাম। তার আনন্দের সঙ্গে আমিও শৈশবে ফিরে গেলাম।”
রাজশাহী থেকে আসা পর্যটক আজিজুল হক জানান, “সমুদ্র সবসময়ই টানে। সুযোগ পেলেই কক্সবাজারে ছুটে আসি। এবারও বন্ধুরা মিলে এসেছি, খুব উপভোগ করছি।”
মৌসুমের শুরুতেই পর্যটকের ভিড় বাড়ায় সৈকতপাড়ের ব্যবসায়ীদের মধ্যেও নতুন আশার সঞ্চার হয়েছে।
জেড স্কী চালক হাসান বলেন, “শীতের শুরুতে পর্যটক আসছে কক্সবাজারে। ব্যবসা এখন বেশ ভালো যাচ্ছে। সামনে আরো বাড়বে বলে আশা করছি।”
ঝিনুক ব্যবসায়ী হাফিজুল করিম বলেন, “দিন দিন ঝিনুকের চাহিদা কমে যাচ্ছে। তবে আমরা চেষ্টা করছি ঝিনুক দিয়ে নানান ধরনের জিনিসপত্র, অলংকার তৈরি করে পর্যটকদের মাঝে আকর্ষণ বাড়াতে। শীতের শুরুতেই পর্যটকের ভিড় বাড়ায় আমরা বেশ আশাবাদী।”
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল-গেস্টহাউস অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক করিম উল্লাহ কলিম বলেন, “শীতের শুরুতেই পর্যটকের চাপ বাড়তে শুরু করেছে। পর্যটকের আগমনে কক্সবাজারের পর্যটন খাতে নতুন প্রাণ ফিরবে বলে আশা করছি। হোটেল-মোটেল ও গেস্টহাউসগুলোতে মানসম্মত সেবা নিশ্চিত করতে আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। নিরাপত্তা, পরিচ্ছন্নতা ও পর্যটকবান্ধব পরিবেশ বজায় রাখতে সবাই সমন্বিতভাবে কাজ করছি। পর্যটকের সন্তুষ্টিই আমাদের সবচেয়ে বড় অর্জন।”
এদিকে পর্যটকদের নিরাপত্তায় সৈকতের তিনটি পয়েন্টে ২৭ জন লাইফগার্ড, ৩৮ জন বিচকর্মী এবং অর্ধশত স্বেচ্ছাসেবী সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছেন।
বিচকর্মীদের সহকারী সুপারভাইজার মো.
‘সি সেইফ লাইফগার্ড’ প্রকল্পের ফিল্ড টিম ম্যানেজার ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, “পর্যটক বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের তৎপরতা আরো জোরদার করা হয়েছে। নিয়মিত মাইকিং করে সতর্কবার্তা দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, পানিতে নামা পর্যটকদের প্রতিটি পদক্ষেপ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে যেন যে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা এড়ানো যায়।”
ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজার অঞ্চলের প্রধান, অতিরিক্ত ডিআইজি আপেল মাহমুদ বলেন, “সমুদ্রসৈকতে আগত প্রতিটি পর্যটকই আমাদের অতিথি। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ট্যুরিস্ট পুলিশ সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। সৈকতের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আমাদের টহল ও নজরদারি জোরদার করা হয়েছে।”
কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন নৌরুটে ১ নভেম্বর থেকে জাহাজ চলাচলের অনুমতি থাকলেও রাত্রিযাপনের অনুমতি না থাকায় গত ১৪ দিনে কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করেনি।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান নুর আহমদ বলেন, “সেন্টমার্টিন কক্সবাজার শহর থেকে দূরে হওয়ায় আসা-যাওয়া করতে পুরো দিন লেগে যায়। তাই রাত্রিযাপন ছাড়া পর্যটক আসেন না, আর আমরা বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়েছি। দ্বীপের অর্থনীতি প্রায় অচল; হোটেল, রেস্টুরেন্ট, ট্রলার, দোকান সবকিছুই বন্ধের পথে। পুরো দ্বীপের জীবিকা পর্যটননির্ভর হওয়ায় মানুষ অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছে। পরিবেশ রক্ষা জরুরি, তবে স্থানীয়দের জীবিকার বিষয়টিও সরকার যেন গুরুত্ব দিয়ে দেখে এটাই আমাদের অনুরোধ।”
ঢাকা/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর যটক র ই আম দ র স কত র দ র কর করছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
পর্যটক টানতে ছাড়ের ছড়াছড়ি, নির্বাচন ঘিরে আশা-নিরাশা
দেশে শীতকালীন পর্যটন মৌসুম শুরু হয়েছে। সাধারণত এ সময় ভ্রমণ ও পর্যটনের চাহিদা সবচেয়ে বেশি থাকে। খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, এ বছরও পর্যটকেরা ঘুরতে যাওয়ার জন্য কক্সবাজার ও পার্বত্য অঞ্চলকে বেশি পছন্দ করছেন। নতুন গন্তব্য হিসেবে চাহিদা বেড়েছে সুন্দরবনের। নানা বিধিনিষেধ ও যাতায়াতে অসুবিধার কারণে সেন্ট মার্টিন ও সিলেটে যাওয়ার চাহিদা কমেছে।
এই খাতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপ করে জানা যায়, পর্যটক আকর্ষণে মূল্যছাড়সহ নানা ধরনের অফার ও সুবিধা রয়েছে। বিদেশি পর্যটকদের জন্যও বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজ ট্যুরের ব্যবস্থা করেন অপারেটররা। গত বছর রাজনৈতিক অস্থিরতা, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, বিধিনিষেধসহ বিভিন্ন কারণে পর্যটন ব্যবসায় কিছুটা নেতিবাচক প্রভাব পড়েছিল। এ বছর পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক থাকায় পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীদের আশা, এবার ভালো ব্যবসা হবে।
যেসব সুযোগ-সুবিধা থাকছে
পর্যটক আকর্ষণে হোটেল, মোটেল ও রিসোর্টগুলো এই মৌসুমে বিভিন্ন ধরনের ছাড় দিচ্ছে। এর মধ্যে সিলেট ও শ্রীমঙ্গলের রিসোর্টগুলো সপ্তাহের কার্যদিবস ও ছুটির দিন বিবেচনায় ২০ থেকে ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেয়। শ্রীমঙ্গলের বালিশিরা রিসোর্ট ও নভেম ইকো রিসোর্ট ২০ থেকে ৩০ শতাংশ এবং গ্র্যান্ড সুলতানের ওয়েবসাইটে ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় দেওয়ার উল্লেখ রয়েছে। শ্রীমঙ্গলে প্রায় দুই শ হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট আছে। তারা হানিমুনসহ বিভিন্ন প্যাকেজের আওতায় মূল্যছাড় দেয়।
পর্যটকদের কাছে রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক খুব পছন্দের জায়গা। সেখানকার অধিকাংশ রিসোর্টে ২০ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড় পাওয়া যায়। সাজেকের মেঘকাব্য হিলটপ কটেজ, মেঘপল্লী ও ডিমোর সাজেক ভ্যালি হোটেল অ্যান্ড রিসোর্ট ইত্যাদি ২০ থেকে ৫০ শতাংশ ছাড় দেয়। তাদের বিভিন্ন ধরনের নানা প্যাকেজ রয়েছে। এ ছাড়া বাংলাদেশ পর্যটন করপোরশনও ৩০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্যছাড় দেয়।
কক্সবাজারে বেশি, সেন্ট মার্টিনে কম
দেশের অন্যতম শীর্ষ পর্যটন গন্তব্য কক্সবাজার ও সেন্ট মার্টিন। অনেকেই এক যাত্রায় এ দুটি গন্তব্য ঘুরতে যান। গত ৯ মাস সেন্ট মার্টিন ভ্রমণে সরকারি নিষেধাজ্ঞা ছিল। ১ নভেম্বর সেই নিষেধাজ্ঞা উঠে গেলেও চলতি মাসে পর্যটকেরা শুধু দিনের বেলায় দ্বীপটি ভ্রমণ করতে পারবেন। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে রাত যাপনের সুযোগ থাকবে। তবে প্রতিদিন গড়ে দুই হাজারের বেশি পর্যটক সেখানে যেতে পারবেন না। এরপর আবার ৯ মাসের নিষেধাজ্ঞা থাকবে। এ জন্য সেন্ট মার্টিনে রাত্রিযাপনে এবার হোটেল ও রিসোর্টের ভাড়া বেশি হবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
কক্সবাজারে প্রায় সাড়ে চার শ হোটেল, রিসোর্ট ও কটেজ রয়েছে। ইতিমধ্যে সেখানে রিজার্ভেশন নেওয়া শুরু হয়েছে। পর্যটক টানার জন্য সেখানে ২০ থেকে ৪০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হচ্ছে। তবে ডিসেম্বরে পর্যটকের সমাগম বেড়ে গেলে ছাড় কমে যেতে পারে, এমন ইঙ্গিতই দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
জানতে চাইলে কক্সবাজার হোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুকিম খান বলেন, ‘গত বছর পর্যটন মৌসুমে বেশির ভাগ হোটেল-রিসোর্টেরই প্রত্যাশিত লাভ হয়েছিল। এবারও ভালো ব্যবসা হবে বলে আশা করছি। বিশেষ করে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত সীমিত থাকায় কক্সবাজারের ওপর বেশি চাপ পড়তে পারে।’
সিলেটে এবার কমছে
সিলেটে সাধারণত শীত ও বর্ষা মৌসুমে পর্যটকের বেশি উপস্থিতি থাকে। সিলেটের হোটেল-মোটেলগুলো ভালো ব্যবসা করলে মাসে গড়ে দেড় কোটি টাকা রাজস্ব পায় সরকার। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে গত বছর বর্ষা মৌসুমে সিলেটে পর্যটকের উপস্থিতি কম ছিল। যদিও শীত মৌসুমে ব্যবসা বৃদ্ধি পায়।
স্থানীয় হোটেল-মোটেল ব্যবসায়ীরা জানান, বর্তমানে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের সংস্কারকাজ চলছে। এ কারণে মহাসড়কে ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজট লেগে থাকে। ৪-৬ ঘণ্টার জায়গায় ১৬-১৮ ঘণ্টা লেগে যায় গন্তব্যে পৌঁছাতে। আবার স্থানীয় সিলেট-তামাবিল মহাসড়কের অবস্থাও খারাপ। ফলে জাফলং ও জৈন্তাপুরে যেতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় পর্যটকদের। অন্যদিকে সিলেট রুটে বিমানভাড়া অত্যাধিক, আবার ট্রেনের টিকিট চাহিদামতো পাওয়া যায় না। এসব কারণে সিলেটে পর্যটক কমছে।
সিলেটের হোটেল অ্যান্ড গেস্টহাউস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া প্রথম আলোকে বলেন, নতুন মৌসুম শুরু হলেও হোটেল-মোটেল বুকিং তেমন নেই। নভেম্বর মাসের শেষের দিকে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের পরীক্ষা শেষ হবে। এর মধ্যে যোগাযোগব্যবস্থার উন্নতি না হলে চলতি মৌসুমে সিলেটের পর্যটন ব্যবসায় ধসের আশঙ্কা রয়েছে।
জাহাজে সুন্দরবনে যাওয়া
খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, এবার সুন্দরবনকে ঘিরে পর্যটকের বাড়তি আকর্ষণ রয়েছে। যদিও সেখানে সীমিতসংখ্যক পর্যটক যাওয়ার সুযোগ পান। সুন্দরবনে রাত্রিযাপনের জন্য কিছু রিসোর্ট রয়েছে। লঞ্চ বা বড় ট্রলার ভাড়া করে দিনে দিনে সুন্দরবন ঘুরে আসা যায়। এ ছাড়া আরেকটি জনপ্রিয় মাধ্যম হচ্ছে ক্রুজ বা জাহাজে ভ্রমণ। সুন্দরবন ভ্রমণে বর্তমানে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ৬০টি ক্রুজ তথা জাহাজের ব্যবস্থা রয়েছে। জাহাজে দুই রাত ও তিন দিনের প্যাকেজ ভ্রমণে খরচ পড়ে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা।
এ নিয়ে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট ও স্পা লিমিটেডের প্রধান বিপণন ও রাজস্ব কর্মকর্তা এ কে এম আসাদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের ক্রুজগুলোতে ইতিমধ্যে ডিসেম্বর মাসের ৯০ শতাংশ আগাম বুকিং হয়ে গেছে।’
হাওরে আড়াই শর বেশি হাউসবোট
পর্যটকদের কাছে হাউসবোটকেন্দ্রিক পর্যটনও দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। দেশে বর্তমানে প্রায় তিন শ হাউসবোট রয়েছে। এর মধ্যে আড়াই শর বেশি হাউসবোট চলে টাঙ্গুয়ার হাওরে। বাকিগুলোর কার্যক্রম চলে রাঙ্গামাটির কাপ্তাই, পদ্মা নদীর মাওয়া পয়েন্ট ও অন্যান্য এলাকায়। হাওরকেন্দ্রিক হাউসবোটের মূল পর্যটন মৌসুম হলো জুন-সেপ্টেম্বর চার মাস। হাওরের বোটগুলো শীত মৌসুমে পদ্মা নদীতে চলে আসে।
আলাপকালে জানা যায়, হাউসবোটে চড়ে ঘুরতে প্রতিজনের টাঙ্গুয়ার হাওরে ৪ থেকে ১২ হাজার টাকা, কাপ্তাই হ্রদে ৩ হাজার থেকে সাড়ে ৮ হাজার টাকা এবং পদ্মা নদীতে দেড় হাজার থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা খরচ হয়।
হাউসবোট অ্যাসোসিয়েসন অব বাংলাদেশের সভাপতি মো. আরাফাত হোসেন বলেন, ‘২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টে অনেকটা পর্যটকশূন্য ছিল হাওরের হাউসবোটগুলো। আবার সিলেট মহাসড়কের বেহাল অবস্থার কারণে এ বছরের আগস্ট-সেপ্টেম্বর মাসে হাওরে পর্যটক সমাগম কম ছিল। এখন শীত মৌসুমের পর্যটক টানার চেষ্টা করছি আমরা।’
বিদেশি পর্যটকে ভাটা
দেশে বিদেশি পর্যটক তুলনামূলক কম। পর্যটন খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, বিদেশি পর্যটক আকর্ষণে অন্যতম বড় বাধা তাঁদের ভ্রমণকালে মোট অর্থের ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয়। এ ছাড়া বিদেশি পর্যটকদের জন্য দেশে ভালো গাইডের স্বল্পতা রয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের নদী কিংবা পাহাড়ে ভ্রমণে রয়েছে নানা বিধিনিষেধ।
বিদেশি পর্যটক নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান রয়েল বেঙ্গল ট্যুরস জানায়, এই খাতে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তাদের মুনাফা হয়েছিল প্রায় ১১ লাখ টাকা, যা ২০২৪-২৫ অর্থবছরে কমে ৭ লাখে নেমেছে।
রয়েল বেঙ্গল ট্যুরসের স্বত্বাধিকারী মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, বিদেশি পর্যটক টানতে হলে বিদ্যমান বাধাগুলো দূর করতে হবে। বিশেষ করে রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকলে বিদেশি পর্যটকের আনাগোনা বাড়ে।
নির্বাচন ঘিরে আশা ও শঙ্কা
ব্যবসায়ীরা জানান, পর্যটক বৃদ্ধি পাওয়া বা কমে যাওয়া নির্ভর করে মূলত রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা ও যোগাযোগব্যবস্থা—এই তিন বিষয়ের ওপর। কিন্তু দেশের আগামী সাধারণ নির্বাচন ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। তখন রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছেন ব্যবসায়ীরা। আবার নির্বাচন উপলক্ষে অনেক প্রবাসী ও বিদেশি আসবেন দেশে। স্বাভাবিকভাবে তাঁরা বিভিন্ন স্থানে ঘুরতেও যাবেন। ফলে হোটেল-মোটেলগুলোর ব্যবসা বাড়বে, এমনটাও আশা করা হচ্ছে।
[প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন আমাদের সিলেট প্রতিনিধি]