এবার ছিটকে গেলেন হ্যাজলউড, চোটে জর্জরিত অস্ট্রেলিয়া
Published: 15th, November 2025 GMT
এবার অ্যাশেজের প্রথম টেস্ট থেকে ছিটকে গেলেন অস্ট্রেলিয়ার তারকা পেসার জশ হ্যাজলউডও। হ্যামস্ট্রিং চোটের কারণে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের প্রথম টেস্টে তিনি খেলতে পারবেন না। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া নিশ্চিত করেছে, চোটের কারণে হ্যাজলউড দলের সঙ্গে প্রথম টেস্টের ভেন্যু পার্থে যাবেন না। পার্থ টেস্ট দিয়ে এবারের অ্যাশেজ শুরু আগামী শুক্রবার।
চোটের কারণে অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের প্রথম টেস্টে খেলতে না পারা নিশ্চিত হয়েছে বেশ আগেই। কদিন আগে ছিটকে গেছেন আরেক পেসার শন অ্যাবট। এই তালিকায় যোগ হলো হ্যাজলউডের নাম। হ্যাজলউডের না থাকাটা অস্ট্রেলিয়ার জন্য বড় ধাক্কা।
হ্যাজলউড গত মাসে ভারতের সাদা বলের ক্রিকেটে দুর্দান্ত বোলিং করেছিলেন। শেফিল্ড শিল্ডের ম্যাচেও ভালো ছন্দে ছিলেন। তবে গত বুধবার নিউ সাউথ ওয়েলসের হয়ে ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে শেফিল্ড শিল্ড ম্যাচে বোলিং করার সময় হ্যাজলউড হ্যামস্ট্রিংয়ে টান অনুভব করেন।
অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের প্রথম টেস্টে খেলতে না পারা নিশ্চিত হয়েছে বেশ আগেই.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র প রথম ট স ট হ য জলউড
এছাড়াও পড়ুন:
শঙ্কা মুক্ত হ্যাজলউড, প্রথম টেস্টে নেই অ্যাবট
সিডনির এসসিজিতে জশ হ্যাজলউড হালকা টান অনুভব করতেই অস্ট্রেলিয়ান শিবিরে এক মুহূর্তের জন্য চিন্তার ছায়া নেমে এসেছিল। দলের অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ সঙ্গে সঙ্গে সিদ্ধান্ত নেন “কোনো ঝুঁকি নয়!” নির্দেশ পান হ্যাজলউড- সোজা ড্রেসিংরুমে ফিরে যেতে। পরবর্তী স্ক্যানের ফলেই মিলল স্বস্তির খবর, ইনজুরির আশঙ্কা নেই! ফলে প্রথম অ্যাশেজ টেস্টে (পার্থে) তাকে পাওয়া নিয়ে এখন বড় কোনো শঙ্কা নেই। যদিও পুরোপুরি নিশ্চিন্ত হওয়ার জন্য থাকবে নিবিড় পর্যবেক্ষণ।
তবে একই সুখবর মেলেনি শন অ্যাবটের ক্ষেত্রে। বাঁ পায়ের হ্যামস্ট্রিং স্ক্যানে ধরা পড়েছে মাঝারি মাত্রার চোট। ফলে পার্থ টেস্টে খেলা হচ্ছে না তার।
আরো পড়ুন:
আয়ারল্যান্ডের ঢিলেঢালা বোলিংয়ে বাংলাদেশের ‘রান উৎসব’
সেঞ্চুরিতে জয়ের ফেরা
তৃতীয় দিনের প্রথম সেশনেই দুজন মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান। এরপর আর মাঠে ফেরেননি এবং নিউ সাউথ ওয়েলসের দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটও হাতে নেননি, দলটি ৩০০ রানের বিশাল ব্যবধানে হারলেও।
“সে (হ্যাজলউড) শেষ বলটা করল, আমি জিজ্ঞেস করলাম- ‘কেমন লাগছে?’ সে বলল, ‘হ্যামস্ট্রিং একটু টান ধরছে।’ আমি সঙ্গে সঙ্গে বললাম, ‘তুমি এখনই মাঠ ছাড়ো, কোনো ঝুঁকি নয়।’ ভাগ্য ভালো, তেমন গুরুতর কিছু হয়নি,” স্মিথ পরে বলেন।
স্মিথ আরও যোগ করেন, “অবশ্য স্টেট দলের হয়ে খেলতে গিয়ে অনেক সময় সিদ্ধান্তটা কঠিন হয়ে যায়। কিন্তু সামনে যখন জাতীয় দলের টেস্ট সিরিজ- তখন সতর্কতাই সঠিক পথ। আমি শুধু চাচ্ছিলাম যেন ইনজুরিতে না পড়ে! বলেছিলাম, ‘বোল্যান্ড, তুমি একটা স্পেল করো। তারপর বিশ্রাম।’’
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার (সিএ) দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, “হ্যাজলউড ইনিংসের শেষ দিকে ডান হ্যামস্ট্রিংয়ে টান অনুভব করেন এবং সতর্কতামূলকভাবে স্ক্যান করানো হয়। যেখানে কোনো পেশির টান ধরা পড়েনি। তিনি পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রথম টেস্টের আগে ট্রেনিং চালিয়ে যাবেন। অন্যদিকে শন অ্যাবটের স্ক্যানে মাঝারি মাত্রার হ্যামস্ট্রিং ইনজুরি ধরা পড়েছে। ফলে পার্থ টেস্টে তাকে পাওয়া যাবে না, এবং পুনরুদ্ধার পরিকল্পনা করা হচ্ছে।”
অস্ট্রেলিয়ার নিয়মিত অধিনায়ক প্যাট কামিন্স, যিনি পিঠের চোটের কারণে প্রথম টেস্টে থাকছেন না, তিনিও জানালেন- “হ্যাজলউডের স্ক্যানের পর ওকে বেশ আশাবাদী মনে হয়েছে। সিরিজের আগে সতর্ক থাকাই ঠিক সিদ্ধান্ত। সে কিছুটা চিন্তিত ছিল। তাই টেস্টের এক সপ্তাহ আগে পরীক্ষা করানো বুদ্ধিমানের কাজ।”
হ্যাজলউড সম্প্রতি ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে দুর্দান্ত বোলিং করেছিলেন। এবার ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে ম্যাচেও স্যাম হারপারকে আউট করে নিয়েছিলেন প্রথম উইকেটটি। অপরদিকে অ্যাবট ৪ উইকেট নিয়ে অসাধারণ পারফর্ম করছিলেন। কিন্তু ইনজুরিতে ছিটকে গেলেন।
স্মিথ বলেন, “অ্যাবটের জন্য খারাপ লাগছে। সে গত কয়েক বছরে অবিশ্বাস্যরকম কঠোর পরিশ্রম করেছে আবার দলে ফেরার জন্য। ইনজুরি সবসময়ই কষ্টদায়ক।”
হ্যাজলউড ম্যাচে ১৮ ও ৯ ওভার করে দুই ইনিংসে বোলিং করেন। অ্যাবট করেন ১৯ ও ৯ ওভার। কিন্তু নিউ সাউথ ওয়েলসের ব্যাটিং ধসের কারণে (দ্বিতীয় দিনে মাত্র ১২৮ রানে অলআউট) বোলারদের বিশ্রাম নেওয়ার সময় খুব একটা মেলেনি।
অস্ট্রেলিয়ার সম্ভাব্য টেস্ট আক্রমণে থাকা মিচেল স্টার্ক, স্কট বোল্যান্ড ও নাথান লায়নও এই ম্যাচে খেলেছেন। পাশাপাশি অলরাউন্ডার ক্যামেরন গ্রিন চোট কাটিয়ে বোলিংয়ে ফিরেছেন। তাসমানিয়ার বিপক্ষে বু ওয়েবস্টার নিয়েছেন ৮ উইকেট।
১৫ সদস্যের টেস্ট স্কোয়াডে থাকা ব্রেন্ডন ডগেট (দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া) নিয়েছেন ৫ উইকেট ৬৬ রানে। তাকেও এখন টেস্টে দেখা যেতে পারে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন কামিন্স, “ডগি দারুণ বল করছে। সাম্প্রতিক ম্যাচগুলোয় সে সত্যিই ছন্দে আছে। এমন একজন ফর্মে থাকা পেসার থাকা আমাদের জন্য বড় সুবিধা।”
অ্যাবটের বিকল্প হিসেবে মাইকেল নেসারের নাম এখন সবচেয়ে জোরালোভাবে শোনা যাচ্ছে। তবে তার বাইরে গেলে অস্ট্রেলিয়ার ব্যাকআপ বোলিং রিজার্ভই বড় পরীক্ষায় পড়বে।
এদিকে কামিন্স নিজেও নেটে বোলিং শুরু করেছেন। তিনি প্রায় ৯০% ফিট। গ্যাবা টেস্টে ফেরার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, “আমরা আসলে পার্থকে সামনে রেখেই এগোচ্ছি। আশা করি তখন শতভাগ ফিট হয়ে যাব। এখন থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে টেস্টের উপযোগী হওয়া কঠিন। কিন্তু আমি আমার সর্বোচ্চটা চেষ্টা করব।”
ঢাকা/আমিনুল