নাফাখুম ঝর্ণায় গোসলে নেমে পর্যটক নিখোঁজ
Published: 15th, November 2025 GMT
বান্দরবানের থানচি উপজেলার নাফাখুম ঝর্ণায় গোসলে নেমে ইকবাল হোসেন নামে এক পর্যটক নিখোঁজ হয়েছে।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে থানচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন মজুমদার জানান, নিখোঁজের খবর পাওয়ার পর থেকে উদ্ধার অভিযান চলছে। উদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত এ অভিযান চলবে।
আরো পড়ুন:
মাতামুহুরী নদীতে নিখোঁজ পর্যটকের লাশ উদ্ধার
পর্যটকে পরিপূর্ণ কুয়াকাটা
নিখোঁজ ইকবাল হোসেন ঢাকার ডেমরা থানার সারুলিয়া রসুলনগর গ্রামের মফিজুল ইসলামের ছেলে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) ১৭ জনের পর্যটক দল আলীকদম হয়ে থানচিতে পৌঁছে কোনো গাইড ও রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই নাফাখুম ঝর্ণা এলাকায় ঘুরতে যায়। সেখানে সকলে গোসল করতে নামে। অন্যরা তীরে উঠে এলেও ইকবাল হোসেন স্রোতে তলিয়ে যায়। সঙ্গে থাকা অন্যরা খোঁজাখুঁজি করেও তাকে উদ্ধার করতে পারেননি। পরে থানচি থানা পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করে। তবে দুর্গম এলাকা এবং পানির প্রবল স্রোতের কারণে তাকে পাওয়া যায়নি।
থানচি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল ফয়সাল বলেন, এখনো পর্যন্ত নাফাখুম এলাকায় পর্যটকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তবুও পর্যটক দলটি প্রশাসনকে অবহিত না করে সেখানে প্রবেশ করেছে। নিখোঁজ ব্যক্তিকে উদ্ধারে বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস ও প্রশাসনের যৌথ অভিযান চলছে।
ঢাকা/চাইমং/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর যটন পর যটক পর যটক উদ ধ র
এছাড়াও পড়ুন:
জবিতে উদীচীর কক্ষে গাঁজা সেবন, নিষেধ করায় সাংবাদিকদের হুমকি
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা উদীচীর কক্ষে গাঁজা সেবন করতে নিষেধ করায় এক সাংবাদিকদের হুমকি দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। সেখানে নিয়মিত গাঁজা সেবন করা হয় বলেও অভিযোগ রয়েছে।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) রাতে অবকাশ ভবনের চতুর্থ তলায় গাঁজা সেবনের প্রতিবাদ করায় এ হুমকির ঘটনা ঘটে।
আরো পড়ুন:
গাঁজা সেবনের অভিযোগে রাবির ৬ শিক্ষার্থী আটক
নড়াইলে হেরোইন ও ইয়াবাসহ নারী গ্রেপ্তার
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অবকাশ ভবনের চতুর্থ তলায় প্রেসক্লাবের সদস্যদের প্রশিক্ষণ কর্মসূচি চলছিল। এ সময় উদীচীর কক্ষ থেকে তীব্র গাঁজার গন্ধ পাওয়া গেলে কয়েকজন সাংবাদিক এর উৎস জানতে সেখানে যান। তারা সেখানে উদীচীর কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তি উপস্থিত আছেন কি না জিজ্ঞেস করে তার সঙ্গে কথা বলতে চান।
নাট্যকলা বিভাগের ১৬ ব্যাচের শোভন নামে এক শিক্ষার্থী নিজেকে দায়িত্বশীল হিসেবে পরিচয় দিলে সাংবাদিকরা তাকে জানান, এখান থেকে তীব্র গাঁজার গন্ধ আসছে। কাউকে তিনি গাঁজা সেবন করতে দেখেছেন কিনা জানাতে চান।
জবাবে শোভন নামের ওই শিক্ষার্থী জানান, অনেকেই সেখানে যাওয়া আসা করছে। কে গাঁজা সেবন করেছে তাকে তারা দেখেননি।
পরে সাংবাদিকরা উদিচির জানালার পাশে সেবন করা গাঁজার ছাই দেখতে পান। সেখান থেকে তীব্র গন্ধও ভেসে আসছে জানিয়ে সাংবাদিকরা বলেন, “এখান থেকেই গাঁজার গন্ধ আসছিল, এখনো আছে। আপনাদের মধ্যে হয়তো কেউ হতে পারে। এগুলো এখানে করা ঠিক না। গাঁজার গন্ধে পাশের রুমগুলোতেও থাকা যায় না।”
এই কথা বলে সাংবাদিকরা সেখান থেকে চলে আসতে চাইলে গাঁজা সেবনের অভিযোগ অস্বীকার করে উদীচীর কক্ষে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা বলেন, “এখানে অনেকেই আসে, তাদের মধ্যে কেউ হতে পারে। আমরা কিছু জানি না।”
তবে সাংবাদিকরা জানান, ঘটনার সময় বাইরে কেউ প্রবেশ বা বের হননি। গন্ধের কারণে পাশের কক্ষে থাকা অসুবিধা হচ্ছে, এ কথা জানিয়ে তারা বের হয়ে আসার চেষ্টা করলে উদীচীর কক্ষের ভিতর থেকে নাট্যকলা বিভাগের ১৬ ব্যাচের মনন মোস্তাকিন নামের এক শিক্ষার্থী তেড়ে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকের ওপর চড়াও হয়। তখন পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা আরো জানান, এ সময় উদীচীর কক্ষ থেকে নাট্যকলা বিভাগের ১৬ ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তাকিন এসে সাংবাদিকদের ওপর ক্ষুব্ধ হন। সাংবাদিকরা তাকে উদীচীর দায়িত্বশীল কিনা জানতে চাইলে তিনি উল্টো চিৎকার করে বলেন, “আমিই উদীচীর দায়িত্বশীল। কি করার আছে কর।”
তখন সাংবাদিকরা তাকে বলেন, এখান থেকে গাঁজার গন্ধ আসছিল, আশেপাশে থাকা যাচ্ছে না গন্ধে। আপনাদের প্রেসিডেন্ট-সেক্রেটারির সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলব।
তখন মোস্তাকিন সবার উপস্থিতিতে সাংবাদিকদের দিকে তেড়ে এসে চিৎকার করে বলেন, “আমি গাঁজা খাই। ভিসি ভবনের সামনে চল, মাইকিং করে সবাইকে বলবো আমি গাঁজা খাই।” এরপর তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন।
পরে ঘটনাস্থলে উপস্থিত কয়েকজন সিনিয়র সাংবাদিক এগিয়ে এসে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করলে তাদের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার করা হয়। ওই সময় কক্ষে উপস্থিত দুই নারী শিক্ষার্থীও সাংবাদিকদের উদ্দেশে অশোভন অঙ্গভঙ্গি করেন। নিজেদের উদীচীর সদস্য পরিচয় দিয়ে নাট্যকলা ১৫ ব্যাচের শিক্ষার্থী সৌমিক বোসসহ উপস্থিত রুদ্র, মোস্তাকিনসহ আরো কয়েকজন উপস্থিত সাংবাদিকদের হুমকি প্রদান করেন।
পরে উদীচীর সাধারণ সম্পাদক আমরিন জাহান অপি এসে বলেন, “এমন ঘটনা আগেও অনেক ঘটেছে। অনেককেই আমিও সামনের জায়গাটায় গাঁজা সেবনসহ অনৈতিক কাজ করতে দেখেছি। আমি নিষেধও করেছি। উদীচীর আগের কমিটির অনেকে অফিসে বসেই এসব করতেন। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর উদীচীর সদস্যদেরও বারবার এসব বিষয়ে নিষেধ করা হয়েছে। যারা দোষী তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন ব্যবস্থা নিবে। আমরাও এ বিষয়ে অভিযোগ দেব। এর আগেও আমরা প্রক্টর অফিসে অভিযোগ দিয়েছিলাম।”
এ বিষয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, “আমি ঘটনাটি শুনেছি। একজন সহকারী প্রক্টরকে সেখানে পাঠিয়েছিলাম। ঘটনাটি তদন্ত করে দ্রুতই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
ঢাকা/লিমন/মেহেদী