টাঙ্গাইল-৩ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে মানববন্ধন
Published: 18th, November 2025 GMT
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-৩ (ঘাটাইল) আসনে বিএনপি মনোনীত প্রর্থী ওবায়দুল হকের মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী লুৎফর রহমান খানের অনুসারী নেতা–কর্মীরা।
আজ মঙ্গলবার টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ আঞ্চলিক মহাসড়কে ঘাটাইল উপজেলার হামিদপুর বাসস্ট্যান্ড থেকে দেউলাবাড়ি বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত এলাকায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। বেলা ১১টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত ঘাটাইল উপজেলার হামিদপুর, কদমতলী, মোগলপাড়া, কালিদাসপাড়া, হরিপুর, গুণগ্রাম, ঘাটাইল, বানিয়াপাড়া, পোড়াবাড়ি, পাকুটিয়া ও দেউলাবাড়ি বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মানববন্ধন চলাকালে নেতা–কর্মীরা ‘বয়কট বয়কট, বহিরাগত বয়কট’, ‘বহিরাগতের ঠিকানা, ঘাটাইলে হবে না’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।
এ সময় স্থানীয় নেতারা ট্রাকে ভ্রাম্যমাণ মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন স্থানে বক্তব্য দেন। বক্তারা অভিযোগ করেন, কেন্দ্রীয় বিএনপি তৃণমূলের মতামতকে বিবেচনায় না নিয়ে দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য ওবায়দুল হককে দলীয় মনোনয়ন দিয়েছে। অথচ তিনি বাসাইলের বাসিন্দা। ঘাটাইল উপজেলার তৃণমূল বিএনপি নেতা–কর্মীরা তাঁকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তাঁরা ওই মনোনয়ন বাতিল করে লুৎফর রহমান খানকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানান।
ঘাটাইল পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন বলেন, ‘ওবায়দুল হকের সঙ্গে ঘাটাইলের নেতা–কর্মীদের কোনো সম্পর্ক নেই। তিনি ঘাটাইলের সন্তান নন, বহিরাগত। আমরা চাই, লুৎফর রহমান খান বা ঘাটাইলের স্থানীয় কাউকে মনোনয়ন দেওয়া হোক।’
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন উপজেলা বিএনপির সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি তোফাজ্জল হক, উপজেলা বিএনপির সাবেক যুববিষয়ক সম্পাদক কামরুজ্জামান ভূঞা, পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি মঞ্জুরুল হক, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফারুক হোসেন, উপজেলা যুবদলের সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম, সাবেক আহ্বায়ক খুররম মাসুদ, সাবেক সদস্যসচিব মোস্তাক আহমেদ, পৌর যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক শহিদুল ইসলাম ভূঞা, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি হাসানুজ্জামান প্রমুখ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল হক বলেন, ‘ঘাটাইলের সকল স্তরের নেতা–কর্মী ও সাধারণ মানুষের সমর্থন আমার প্রতি রয়েছে। কিছু মানুষ সিন্ডিকেট করে বিশৃঙ্খলা করার জন্য এসব করছেন।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র স ব ক উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
নওগাঁ-২ আসনে বিএনপির প্রার্থী পরিবর্তনের দাবিতে মানববন্ধন
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নওগাঁ-২ (ধামইরহাট-পত্নীতলা) আসনে বিএনপির দলীয় মনোনয়ন পরিবর্তনের দাবিতে দলটির একাংশের নেতা–কর্মীরা বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার পৌর বাজার এলাকায় নওগাঁ-জয়পুরহাট মহাসড়কে এই কর্মসূচি পালিত হয়। এতে পত্নীতলা ও ধামইরহাট উপজেলার ১৯টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভা থেকে বিএনপির একাংশের নেতা–কর্মীরা অংশ নেন।
সারা দেশে ঘোষিত বিএনপির প্রাথমিক ২৩৭টি মনোনয়নের মধ্যে নওগাঁ-২ আসনে সাবেক সংসদ সদস্য সামসুজ্জোহা খানকে প্রাথমিকভাবে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। মনোনয়ন পরিবর্তন করে এই আসনে আরেক মনোনয়নপ্রত্যাশী খাজা নাজিবুল্লাহ চৌধুরীকে বিএনপির প্রার্থী ঘোষণার দাবিতে আন্দোলন কর্মসূচি পালন করছেন তাঁর অনুসারী নেতা–কর্মী ও সমর্থকেরা।
আজ বেলা ১১টার দিকে ধামইরহাট উপজেলা পরিষদ চত্বরের সামনে থেকে আমইতাড়া মোড় পর্যন্ত প্রায় এক কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সড়কের উভয় পাশে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধন শেষে উপজেলা পরিষদের সামনে নওগাঁ-জয়পুরহাট মহাসড়কে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, নওগাঁ-২ আসনে সামসুজ্জোহা খানকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বর্তমানে তাঁর বিরুদ্ধে মানুষদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে। ২০২৪ সালের ৫ আগস্টের পর তাঁর অনুসারী নেতা–কর্মীদের চাঁদাবাজি ও মামলাবাজির কারণে তাঁর জনপ্রিয়তা শূন্যের কোঠায় নেমে গেছে। বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতা–কর্মীরাও সামসুজ্জোহার ওপর ক্ষুব্ধ। আওয়ামী লীগের শাসনামলে কোনো আন্দোলন-সংগ্রামে তিনি মাঠে ছিলেন না। নেতা–কর্মীরা মামলা-হামলার শিকার ও কারাবরণ করলেও তিনি কোনো খোঁজ নেননি। আওয়ামী লীগের শাসনামলে নাজিবুল্লাহ সব আন্দোলন-সংগ্রামে সক্রিয়ভাবে মাঠে ছিলেন। পরিচ্ছন্ন নেতা হিসেবে সাধারণ মানুষের মধ্যেও তাঁর জনপ্রিয়তা রয়েছে। নাজিবুল্লাহকে মনোনয়ন দিলে এই আসনে ধানের শীষ বিপুল ভোটে জয়ী হবে।
ধামইরহাট উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আখরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ‘নওগাঁ-২ আসন বিএনপির শক্ত ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। কিন্তু ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা আসনটিতে যে প্রার্থীকে প্রাথমিক মনোনয়ন দিয়েছেন, তাতে আসনটি জামায়াতের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর যাঁরা রাজপথে লড়াই সংগ্রাম করেছি, বিগত সরকারের সময়ে মামলা খেয়েছি, ঘরছাড়া হয়েছি, তাঁদের কোনো খোঁজখবর রাখেননি সামসুজ্জোহা। আমাদের দুঃসময়ে নাজিবুল্লাহ চৌধুরী পাশে ছিলেন। এই আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী পরিবর্তন করে নাজিবুল্লাহ চৌধুরীকে মনোনয়ন দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
এ বিষয়ে নওগাঁ-২ (ধামইরহাট-পত্নীতলা) আসনে দলীয় মনোনয়ন পাওয়া সামসুজ্জোহা খান বলেন, ‘যাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন, তাঁদের সঙ্গে আলোচনায় বসব। আশা করি, তাঁরা দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে বিএনপির পক্ষে এক হয়ে কাজ করবেন।’
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ধামইরহাট পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক নুরুল ইসলাম। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পত্নীতলা উপজেলা বিএনপির সদস্য ও নজিপুর পৌরসভার সাবেক মেয়র আনোয়ার হোসেন, ধামইরহাট উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আখরাজুল ইসলাম চৌধুরী, উপজেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক দেওয়ান ফেরদৌস, ধামইরহাট উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক রুহুল আমিন, ধামইরহাট পৌর বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজোয়ান হোসেন প্রমুখ।