বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়

সৃজনশীল প্রশ্ন: অধ্যায়–১

শহীদ মিয়া তরুণ বয়সে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। প্রথম থেকেই কিছু আত্মীয় নিজেদের সুবিধার জন্য শহীদ মিয়াকে জনগণের কাজে বাধা সৃষ্টি করে। সুযোগ বুঝে একসময় তারা তাঁকে ক্ষমতা থেকে সরাতে সক্ষম হয় এবং হত্যা করে।

প্রশ্ন

ক. সম্রাট আকবরের সেনাপতি কে ছিলেন?

খ.

বাংলায় নবজাগরণ কী, ব্যাখ্যা করো।

গ. উদ্দীপকের শহীদ মিয়ার ঘটনার সঙ্গে ঐতিহাসিক কোন ঘটনার মিল রয়েছে? ব্যাখ্যা করো।

ঘ. উক্ত ঘটনা কি বাংলার স্বাধীনতা হারানোর কারণ? তোমার উত্তরের পক্ষে যুক্তি দাও।

উত্তর

ক. সম্রাট আকবরের সেনাপতি ছিলেন মানসিংহ।

খ. বাংলায় ইংরেজ শাসনের প্রভাবে এ দেশের মানুষের মধ্যে যে সচেতনতা তৈরি হয়, তাকেই নবজাগরণ বলে। ইংরেজরা বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে ভারতবর্ষে এলেও একসময় তারা এখানে বিভিন্ন সমাজসংস্কার, শিক্ষা বিস্তার প্রভৃতি কাজ করে থাকে। আধুনিক শিক্ষার কারণে এখানকার মানুষের মধ্যে অধিকার নিয়ে সচেতনতা তৈরি হয়। তারা সমাজের কুসংস্কার থেকে মুক্ত হয়ে রাজনৈতিক আন্দোলনে অংশগ্রহণ করে। ইতিহাসে এটাই বাংলায় নবজাগরণ।

আরও পড়ুনজুনিয়র বৃত্তি পরীক্ষা—বিজ্ঞান : টিকটিকি সরীসৃপ কেন০১ ডিসেম্বর ২০২৫

গ. উদ্দীপকের শহীদ মিয়ার ঘটনার সঙ্গে নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করে হত্যার সঙ্গে মিল রয়েছে। নবাব আলীবর্দী খাঁর মৃত্যুর পর তাঁর প্রিয় নাতি সিরাজউদ্দৌলা মাত্র ২২ বছর বয়সে সিংহাসনে বসেন। তখন তাঁর সামনে একদিকে ইংরেজ শক্তি, পাশাপাশি বড় খালা ঘসেটি বেগম ও সিপাহশালার মীর জাফর আলী খানের ষড়যন্ত্রে আক্রান্ত হন। ১৭৫৭ সালের ২৩ জুন পলাশীর প্রান্তরে তিনি নিহত হন। তখন বাংলায় শাসন ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে ইংরেজদের প্রভাব প্রতিষ্ঠা পায়। শহীদ মিয়ার তরুণ বয়সে চেয়ারম্যান হওয়ার সঙ্গে সিরাজউদ্দৌলার কম বয়সে নবাব হওয়ার মিল দেখা যায়।

অন্যদিকে সিরাজউদ্দৌলার পরিবারের লোকজনও এই ক্ষমতা গ্রহণকে নেতিবাচক বলে মনে করে। উদ্দীপকের শহীদ মিয়াও ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে তাঁর পরিবারের আত্মীয়েরা বিরোধিতা করে, যা শহীদ মিয়ার ঘটনার সঙ্গে মিলে যায়। তাই পারিবারিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সিরাজউদ্দৌলার পতনের ঘটনার মিল রয়েছে।

ঘ. হ্যাঁ, সিরাজউদ্দৌলার ক্ষমতা হারানো ও মৃত্যু বাংলার পরাধীনতার কারণ। এ ঘটনায় শাসন ক্ষমতায় ইংরেজরা প্রভাব রাখতে শুরু করে।

মীর জাফর ও পরবর্তী সময়ে মীর কাশিমকে ইংরেজরা বাংলার নবাব মনোনীত করলেও নানা কারণে তাদের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়। ইংরেজ সেনাপতি রবার্ট ক্লাইভ ১৭৬৫ সালে দিল্লির সম্রাটের কাছ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার দেওয়ানি লাভ করে খাজনা ও প্রতিরক্ষার দায়িত্ব পালন শুরু করেন। অন্যদিকে নবাব ভাতা ভোগ করেন। নবাব শাসন ও বিচারের দিকটি দেখার সুযোগ পান। ক্লাইভ কর্তৃক এ অদ্ভুত শাসনই ইতিহাসে ‘দ্বৈত শাসন’ নামে পরিচিত। ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ১৭৯৩ সালে চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করে শাসন ক্ষমতা সুদৃঢ় করে। কিন্তু ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিদ্রোহের পর ব্রিটিশ সরকার ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানিকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে নিজেরাই শাসন শুরু করে। ব্রিটিশদের এই শাসন ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত চলতে থাকে। ফলে ১৭৫৭ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত বাংলার স্বাধীনতা ছিল ইংরেজদের হাতে। তাই সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় ও মৃত্যু বাংলার স্বাধীনতা হারানোর বড় কারণ।

মো. আবুল হাছান, সিনিয়র শিক্ষক, আদমজী ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল, ঢাকা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স র জউদ দ ল র র ঘটন র ক ষমত

এছাড়াও পড়ুন:

সোনিয়া ও রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে নতুন ষড়যন্ত্র মামলা

ন্যাশনাল হেরাল্ড অর্থ পাচার মামলায় জ্যেষ্ঠ কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী ও সোনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে। এই অভিযোগ সোনিয়া, রাহুলসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে করা একটি নতুন এফআইআরের অংশ। দিল্লি পুলিশের অর্থনৈতিক অপরাধ শাখা (ইকোনমিক অফেন্সেস উইং) এ মামলা করে। ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, এই মামলায় অর্থ পাচারের বিষয়টি তদন্ত করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। তাদের অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৩ অক্টোবর এফআইআর করে দিল্লি পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে অনুযায়ী, ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র), ৪০৩ (অসৎভাবে সম্পত্তি আত্মসাৎ), ৪০৬ (বিশ্বাসভঙ্গের শাস্তি), ৪২০ (প্রতারণা) ধারায় মামলা হয়েছে। এফআইআরে রাহুল, সোনিয়া ছাড়াও নাম রয়েছে কংগ্রেস নেতা সুমন দুবে, শ্যাম পিত্রোদার। সেই সঙ্গে কিছু সংস্থা ও সংগঠনের নামও রয়েছে এফআইআরে। যেমন ইয়ং ইন্ডিয়ান, ডটেক্স মার্চেন্ডাইস লিমিটেড, ডটেক্সের প্রোমোটার সুনীল ভান্ডারি, অ্যাসোসিয়েটেড জার্নাল লিমিটেড ও অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজন।

ইডি গত এপ্রিলে চার্জশিট জমা করেছিল আদালতে। সেখানেও নাম রয়েছে সোনিয়া, রাহুলসহ বাকিদের। সেই চার্জশিট এখনো গ্রহণ করেননি আদালত। আগামী ১৬ ডিসেম্বর পরবর্তী শুনানি। কংগ্রেস ইডির তদন্ত নিয়ে আগেই আঙুল তুলেছে। অভিযোগ করেছে, রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতেই এসব করা হচ্ছে।

জওহরলাল নেহরু প্রতিষ্ঠিত ন্যাশনাল হেরাল্ড পত্রিকা আগাগোড়াই কংগ্রেস পরিচালিত। ২০০৮ সালে ওই ইংরেজি দৈনিকের প্রকাশনা বন্ধ হয়ে যায়। ২০১৬ সালে এটির ডিজিটাল সংস্করণ শুরু হয়।

বিজেপি নেতা সুব্রামানিয়াম স্বামী ন্যাশনাল হেরাল্ড–এর আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ এনে মামলা করেছিলেন ২০১২ সালে। তাঁর অভিযোগ ছিল, গান্ধী পরিবার কংগ্রেস দলের তহবিল ব্যবহার করে এজেএল সংস্থার (যারা ওই পত্রিকার মালিক) কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি দখল করেছে।

স্বামীর অভিযোগ, এজেএলের ৫ হাজার কোটি টাকার স্থাবর সম্পত্তি ইয়ং ইন্ডিয়ান নামের এক সংস্থা কিনে নেয় মাত্র ৫০ লাখ টাকায়। সেই ইয়ং ইন্ডিয়ান সংস্থার মোট শেয়ারের ৭৬ শতাংশের মালিক সোনিয়া ও রাহুল। দুজনেরই শেয়ার ৩৮ শতাংশ করে। বাকি ২৪ শতাংশ শেয়ার ছিল তৎকালীন কংগ্রেস কোষাধ্যক্ষ মোতিলাল ভোরা, অস্কার ফার্নান্দেজ, সুমন দুবে ও শ্যাম পিত্রোদার নামে।

অধিগ্রহণের ফলে এজেএলের ৯০ কোটির দেনা যেমন ইয়ং ইন্ডিয়ানের ওপর বর্তায়, তেমনই দিল্লি, মুম্বাই, লক্ষ্ণৌ, পাটনা, ভোপাল, ইন্দোরসহ বিভিন্ন শহরে থাকা স্থাবর সম্পত্তির অধিকারও চলে আসে তাদের হাতে। অধিগ্রহণের পরই কংগ্রেস এজেএলের অনাদায়ী ৯০ কোটি ঋণ মওকুফ করে দেয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অপূর্ব বললেন, বয়স হয়েছে, বেশি দৌড়ঝাঁপ করতে পারি না
  • মোহাম্মদপুরে বিড়াল হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ
  • ৫ দিনের ছাতক যুদ্ধ বেকায়দায় ফেলে পাকিস্তানি বাহিনীকে
  • যুক্তরাষ্ট্রের আদালতে মাদক সম্রাট ‘এল চাপো’র ছেলের মাদক মামলায় দোষ স্বীকার
  • আলোচিত রায়হান হত্যার রায় ৭ জানুয়ারি
  • সোনিয়া ও রাহুল গান্ধীর বিরুদ্ধে নতুন ষড়যন্ত্র মামলা
  • এক নজরে দেখে নিন বিপিএলের সব দলের স্কোয়াড
  • বিদেশিদের কারা কাকে দলে নিল: নিলাম শেষে দলগুলোর চিত্র
  • পাখি ও প্রজাপতির বিলুপ্তিতে রাসায়নিক কৃষির দায়