‘রাজসাক্ষী’ হিসেবে আরেক পুলিশ সদস্যের জবানবন্দি
Published: 19th, November 2025 GMT
আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এবার অ্যাপ্রুভার বা রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দিয়েছেন পুলিশের সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) শেখ আবজালুল হক। তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ঢাকার আশুলিয়া থানায় কর্মরত ছিলেন। গণ-অভ্যুত্থানের সময় আশুলিয়ায় ছয়জনকে গুলি করে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল। এ ঘটনায় করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় পরে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
সাবেক এসআই শেখ আবজালুল আজ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২–এ ‘অ্যাপ্রুভার’ বা রাজসাক্ষী হিসেবে জবানবন্দি দেন। এ নিয়ে দ্বিতীয় কোনো পুলিশ সদস্য মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ‘অ্যাপ্রুভার’ হলেন। এর আগে পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের আরেকটি মামলায় ‘অ্যাপ্রুভার’ হন।
মামুনের সঙ্গে ওই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানও আসামি ছিলেন। মামলাটির রায় ঘোষণা হয় গত সোমবার। রায়ে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামানকে মৃত্যুদণ্ড এবং মামুনকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোআশুলিয়ায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আসামি ১৬ জন। এর মধ্যে সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, আশুলিয়া থানার তৎকালীন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এফ এম সায়েদ, এএসআই বিশ্বজিৎ সাহাসহ আট আসামি পলাতক। গ্রেপ্তার হওয়া বাকি আসামিরা হলেন ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহিল কাফী ও মো.
এ মামলার ২৩তম সাক্ষী হিসেবে আজ জবানবন্দি দেন শেখ আবজালুল। তিনি জবানবন্দিতে বলেন, ৫ আগস্ট (২০২৪ সাল) আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আশুলিয়া এলাকায় ছাত্র-জনতা বিজয় মিছিল বের করেন। সেই মিছিল থানার দিকে এলে তৎকালীন ওসি সায়েদের নির্দেশে বিশ্বজিৎসহ আরেকজন গুলি করেন।
আরও পড়ুনজুলাই হত্যাকাণ্ডে শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দিলেন ট্রাইব্যুনাল১৭ নভেম্বর ২০২৫জবানবন্দি শেষে আবজালুলকে জেরা করেন এ মামলার আসামি আবদুল্লাহিল কাফীর আইনজীবী সৈয়দ মিজানুর রহমান। তাঁর প্রশ্নের জবাবে আবজালুল বলেন, গত বছরের ১৫ আগস্ট আশুলিয়া থানার অস্ত্রাগারের দায়িত্বে থাকা এসআই আউয়ালের কাছে তিনি অস্ত্র ও গুলি জমা দেন। ৫ আগস্ট (২০২৪ সাল) তাঁর নামে ইস্যু করা ১০টি গুলিই জমা দেন।
জেরায় প্রশ্নের জবাবে আবজালুল বলেন, গত বছরের ৫ থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত তিনি ‘ট্রমায়’ ছিলেন। ১৫ আগস্ট অস্ত্র জমা দিতে এসে তিনি আশুলিয়া থানা এলোমেলো অবস্থায় দেখেন।
জবানবন্দি শেষে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে ব্রিফিং করেন প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম। তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, গত বছরের ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বর্ণনা দিয়েছেন আবজালুল। তবে আবজালুল আশুলিয়ায় লাশ পোড়ানোর ঘটনা দেখেননি। লাশে আগুন দেওয়ার কথা তিনি শুনেছেন। প্রসিকিউশন মনে করে, আবজালুল আশুলিয়ার ঘটনা সম্পর্কে পূর্ণ সত্য প্রকাশ করেছেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ খ আবজ ল ল ম নবত ব র ধ ৫ আগস ট অপর ধ র আবদ ল বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
সিরাজদিখানে পুলিশের সামনে ছাত্রলীগ-যুবলীগের মিছিল, এসআই প্রত্যাহার
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় শেখ হাসিনার রায়ের প্রতিবাদে পুলিশের টহল দলের সামনে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকালে উপজেলার বাসাইল ইউনিয়নের ইমামগঞ্জ বাজারে এ মিছিল করেন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা।
এ ঘটনায় পুলিশের এক উপপরিদর্শককে (এসআই) প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাঁর নাম কামরুজ্জামান সিকদার। তাঁকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে মুন্সিগঞ্জ পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, সিরাজদিখান উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক জহিরুল ইসলামের নেতৃত্বে আজ সকাল ৯টার দিকে ইমামগঞ্জ বাজারে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলে কার্যক্রম-নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের অর্ধশত নেতা-কর্মী অংশ নেন। মিছিলে গতকাল সোমবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে দেওয়া শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায়ের প্রতিবাদে স্লোগান দেওয়া হয়। মিছিলটি ইমামগঞ্জ বাজারের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করার সময় সেখানে টহলরত পুলিশের একটি গাড়ি ছিল। তবে পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এ ঘটনা জানাজানি হলে টহলের দায়িত্বে থাকা সিরাজদিখান থানার উপপরিদর্শক কামরুজ্জামান সিকদারকে প্রত্যাহার করা হয়।
সিরাজদিখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বকর সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, মিছিলটি তাৎক্ষণিক হয়ে যায়। তখন ঘটনাস্থলের কাছাকাছি পুলিশের একটি টহল গাড়ি যাচ্ছিল। পুলিশ কর্মকর্তা কিছু বুঝে ওঠার আগেই মিছিলের লোকজন পালিয়ে যান। এ ঘটনার পর এসআই কামরুজ্জামানকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনসে নেওয়া হয়েছে। মিছিলে থাকা তিনজনকে অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।