‘দালাল আমার বাবারে বডি কন্ট্রাক্ট (শরীর চুক্তি) কইরা নিছে। বলছে, য্যামনে হোক, ইতালি লইয়া যাইবে। সাড়ে ২২ লাখ টাকা লইয়া ভাগছে। ওরা আমার বাবারে খারাপ নৌকায় দিয়া মাইরা ফালাইছে। দয়া কইরা আমার বাবার বডি (শরীর) আম্মেরা আইনা দেন। আম্মেগো পায় ধরি, আমার বাবার লাশটা আইনা দেন।’

আহাজারি করতে করতে কথাগুলো বলছিলেন ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে ‘গুলিবিদ্ধ হয়ে’ মারা যাওয়া মুন্না তালুকদারের (১৯) মা রাবেয়া বেগম (৪৫)। মুন্না মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বদরপাশা ইউনিয়নের পূর্ব দুর্গাবর্দি এলাকার এমারত হোসেন তালুকদারের ছেলে।

নিহত ব্যক্তির পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মুন্না ঢাকায় রংমিস্ত্রির কাজ করতেন। বাবা পেশায় কৃষক। ঢাকায় কাজ করে যা আয় হতো, তা দিয়ে কোনোমতে চলত সংসার। ঢাকা থাকতে উন্নত জীবনের আশায় বদরপাশা এলাকার দালাল নান্নু ও মঞ্জুর মাধ্যমে ইতালি যাওয়ার প্রলোভনে পড়েন মুন্না। পরে দালালের সঙ্গে সাড়ে ২২ লাখ টাকায় চুক্তি করে মুন্নার পরিবার।

চলতি বছরের ১২ অক্টোবর ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘর ছাড়েন মুন্না। প্রথমে তাঁকে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে নেওয়া হয়। পরে ওমরাহ হজ করতে যান মুন্না। হজ শেষে তাঁকে কুয়েত নেওয়া হয়। সেখানে কয়েক দিন রেখে নেওয়া হয় মিসরে। তারপর উড়োজাহাজে লিবিয়ার বেনগাজিতে নেওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে লিবিয়ার মিসরাতা শহরের নেওয়া হয়। ১ নভেম্বর মুন্নাকে লিবিয়ার উপকূল থেকে নৌকায় ইতালির উদ্দেশে পাঠানো হয়। একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় অন্য অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সঙ্গে মুন্নাকে তুলে দেয় দালালচক্র। মুন্নাকে বহন করার নৌকাটি ভূমধ্যসাগরের কিছু দূর যাওয়ার পরই মাফিয়াদের (জলদস্যুদের) হামলার শিকার হয়। এ সময় গুলিবদ্ধ হয়ে মারা যান মুন্নাসহ রাজৈর উপজেলার বদরপাশা ইউনিয়নের ঘোষালকান্দি এলাকার বায়েজিদ শেখ (১৮) নামের আরেক তরুণ। মুন্নার খবর না পেয়ে তাঁর স্বজনেরা বারবার দালালের বাড়িতে ধরনা দিতে থাকেন। বাধ্য হয়ে দালাল মুন্নার মৃত্যুর বিষয়টি গতকাল পরিবারকে জানান।

মুন্না তালুকদার.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আম র ব ব র

এছাড়াও পড়ুন:

‘আম্মেগো পায় ধরি, আমার বাবার লাশটা আইনা দেন’

‘দালাল আমার বাবারে বডি কন্ট্রাক্ট (শরীর চুক্তি) কইরা নিছে। বলছে, য্যামনে হোক, ইতালি লইয়া যাইবে। সাড়ে ২২ লাখ টাকা লইয়া ভাগছে। ওরা আমার বাবারে খারাপ নৌকায় দিয়া মাইরা ফালাইছে। দয়া কইরা আমার বাবার বডি (শরীর) আম্মেরা আইনা দেন। আম্মেগো পায় ধরি, আমার বাবার লাশটা আইনা দেন।’

আহাজারি করতে করতে কথাগুলো বলছিলেন ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি যাওয়ার পথে ‘গুলিবিদ্ধ হয়ে’ মারা যাওয়া মুন্না তালুকদারের (১৯) মা রাবেয়া বেগম (৪৫)। মুন্না মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলার বদরপাশা ইউনিয়নের পূর্ব দুর্গাবর্দি এলাকার এমারত হোসেন তালুকদারের ছেলে।

নিহত ব্যক্তির পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মুন্না ঢাকায় রংমিস্ত্রির কাজ করতেন। বাবা পেশায় কৃষক। ঢাকায় কাজ করে যা আয় হতো, তা দিয়ে কোনোমতে চলত সংসার। ঢাকা থাকতে উন্নত জীবনের আশায় বদরপাশা এলাকার দালাল নান্নু ও মঞ্জুর মাধ্যমে ইতালি যাওয়ার প্রলোভনে পড়েন মুন্না। পরে দালালের সঙ্গে সাড়ে ২২ লাখ টাকায় চুক্তি করে মুন্নার পরিবার।

চলতি বছরের ১২ অক্টোবর ইতালি যাওয়ার উদ্দেশ্যে ঘর ছাড়েন মুন্না। প্রথমে তাঁকে বাংলাদেশ থেকে সৌদি আরবে নেওয়া হয়। পরে ওমরাহ হজ করতে যান মুন্না। হজ শেষে তাঁকে কুয়েত নেওয়া হয়। সেখানে কয়েক দিন রেখে নেওয়া হয় মিসরে। তারপর উড়োজাহাজে লিবিয়ার বেনগাজিতে নেওয়া হয়। এরপর সেখান থেকে লিবিয়ার মিসরাতা শহরের নেওয়া হয়। ১ নভেম্বর মুন্নাকে লিবিয়ার উপকূল থেকে নৌকায় ইতালির উদ্দেশে পাঠানো হয়। একটি ইঞ্জিনচালিত নৌকায় অন্য অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সঙ্গে মুন্নাকে তুলে দেয় দালালচক্র। মুন্নাকে বহন করার নৌকাটি ভূমধ্যসাগরের কিছু দূর যাওয়ার পরই মাফিয়াদের (জলদস্যুদের) হামলার শিকার হয়। এ সময় গুলিবদ্ধ হয়ে মারা যান মুন্নাসহ রাজৈর উপজেলার বদরপাশা ইউনিয়নের ঘোষালকান্দি এলাকার বায়েজিদ শেখ (১৮) নামের আরেক তরুণ। মুন্নার খবর না পেয়ে তাঁর স্বজনেরা বারবার দালালের বাড়িতে ধরনা দিতে থাকেন। বাধ্য হয়ে দালাল মুন্নার মৃত্যুর বিষয়টি গতকাল পরিবারকে জানান।

মুন্না তালুকদার

সম্পর্কিত নিবন্ধ