শ্রমিকদল নেতাকে ছাড়িয়ে নিতে থানায় হামলা, গ্রেপ্তার ৪
Published: 26th, March 2025 GMT
কুমিল্লার মুরাদনগরে চাঁদাবাজির অভিযোগে আটক শ্রমিকদল নেতাকে ছাড়িয়ে নিতে যুবদল নেতার নেতৃত্বে থানায় হামলার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় থানায় থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীর ওপরও হামলা করা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।
গত সোমবার রাতে মুরাদনগর থানায় এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় নেতৃত্ব দেওয়া মাসুদ রানা উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। চাঁদাবাজির অভিযোগে গ্রেপ্তার আবুল কালাম নবীপুর ইউনিয়ন শ্রমিক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক। এ ঘটনায় দুটি মামলায় ৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, থানায় হামলা করে আসামি ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টায় একটি মামলা করেছেন থানার উপপরিদর্শক আলী আক্কাস। মামলায় যুবদল নেতা মাসুদ রানাকে প্রধান আসামি করে ৩১ জনের নামে মামলাটি করা হয়েছে। এ ছাড়া চাঁদাবাজি ও মারধরের ঘটনায় শ্রমিকদল নেতা আবুল কালামকে প্রধান আসামি করে ৩০ জনের নামে একটি মামলা করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা আবু ফয়সাল।
দুটি মামলায় গ্রেপ্তার ছয়জন হলেন– শ্রমিকদল নেতা আবুল কালাম, রহিমপুর গ্রামের মো.
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুরাদনগর উপজেলা শাখার আহ্বায়ক উবায়দুল সিদ্দিকী জানান, গত সোমবার ইফতারের আগে তিনিসহ তিনজন একটি অটোরিকশায় আকবপুর গ্রামে যাচ্ছিলেন। অটোরিকশাচালক মুরাদনগর হয়ে সরাসরি নবীনগর রাস্তায় না গিয়ে কোম্পানীগঞ্জ হয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কারণ জানতে চাইলে চালক বলেন, ওইদিক দিয়ে গেলে ৫০ টাকা জিপি (চাঁদা) দিতে হবে। তখন তিনি চালককে সোজা পথে যেতে বলেন। কিন্তু নবীনগর সড়কের মুখেই চালককে চাঁদার টোকেন আছে কিনা জিজ্ঞেস করা হয়। চালক টোকেন নেই জানালে কয়েকজন তাঁকে মারধর শুরু করেন। যাত্রীরা নেমে মারধরের কারণ ও চাঁদা কে তুলতে বলেছে জানতে চাইলে হামলা করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে আবুল কালামকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
উবায়দুল সিদ্দিকী বলেন, ‘আমাদের ওপর হামলার খবর পেয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৫ থেকে ২০ জন থানার সামনে এসে চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে মিছিল করেন। এর মধ্যে যুবদল নেতা মাসুদের নেতৃত্বে শতাধিক লোক দেশি অস্ত্র নিয়ে থানায় হামলা করেন। আমরা তিন-চারজন থানা ভবনের গেটের ভেতরে ছিলাম, বাকিরা ছিলেন বাইরে। তারা প্রথমে আমাদের বাইরে থাকা অন্তত ১৫ জনকে পিটিয়ে আহত করেন। এ সময় পুলিশ গেট বন্ধ করে দিলে তারা গেট ভেঙে থানায় প্রবেশের চেষ্টা করেন। পুরো ঘটনার নেতৃত্ব দেন যুবদল নেতা মাসুদ রানা।’
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, ঘটনার সময় পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অন্তত ৩০ মিনিট দফায় দফায় থানায় গেট ভাঙার চেষ্টা করা হয়। এ ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। এক পর্যায়ে থানার সামনে অবস্থান নেন হামলাকারীরা। সেখানে তারা অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়ার বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে থাকেন। এ ছাড়া পুলিশের বিরুদ্ধেও বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়। পরে কয়েক দফা চেষ্টা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা।
তবে থানায় হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন যুবদল নেতা মাসুদ রানা। তাঁর ভাষ্য, পুরো ঘটনার নেপথ্যে উপদেষ্টা আসিফের চাচাতো ভাই উবায়দুল সিদ্দিকী। আবুল কালামের স্ট্যান্ডের একটি অটোরিকশার সঙ্গে উবায়দুলকে বহনকারী অটোরিকশার ঘষা লাগে। এ সময় উবায়দুল নেমে অটোরিকশার চালককে থাপ্পড় দেন। তখন ঝামেলা হলে আবুল কালাম এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। তারা একটু দূরে গিয়ে পুলিশে খবর দিয়ে আবুল কালামকে গ্রেপ্তার করায়। তিনি বলেন, ‘আমাদের কিছু লোক থানায় গিয়ে ওসির কাছে জানতে চায় কেন অন্যায়ভাবে আবুল কালামকে গ্রেপ্তার করছেন। এ সময় ওসির কক্ষের ভেতরে আমাদের লোকদের জিম্মি করে পেটাতে থাকেন উবায়দুলসহ অন্যরা। এখন উল্টো মামলা দিয়ে হয়রানি করছে।’
মুরাদনগর থানার ওসি জাহিদুর রহমান সমকালকে জানান, একজন চাঁদাবাজকে আটকের খবর পেয়ে তার লোকজন থানায় হামলা করে। এ ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় আরেকটি মামলা হয়েছে। দুই মামলায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গ র প ত র কর য বদল ন ত ম র দনগর আম দ র এ সময় ঘটন য় ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলি হামলায় আইআরজিসির গোয়েন্দাপ্রধানসহ ৩ ইরানি জেনারেল নিহত
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করেছে যে, রোববার ইসরায়েলি বিমান হামলায় ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) গোয়েন্দা প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ কাজেমি এবং তার উপপ্রধান হাসান মোহাক্কিক নিহত হয়েছেন। খবর আল জাজিরার
এছাড়া হামলায় আরও একজন ঊর্ধ্বতন গোয়েন্দা কর্মকর্তা মোহসেন বাঘেরী নিহত হন বলে জানিয়েছে ইরানি রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থাগুলো।
এই হামলা ইসরায়েলের একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে চালানো বিমান ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলার অংশ, যা শুরু হয় ১৩ জুন ভোরে। ইসরায়েল জানায়, তারা ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি ও সামরিক অবকাঠামো ধ্বংসের লক্ষ্য নিয়ে অভিযান শুরু করেছে।
এর আগে হামলায় ইরানের একাধিক পারমাণবিক বিজ্ঞানী ও সামরিক নেতার বাড়িতে নির্ভুল আঘাত হানার খবর পাওয়া গেছে। ইসরায়েলি পক্ষ দাবি করেছে, এসব হামলা 'অস্তিত্বগত হুমকি নির্মুলের অংশ'।
এদিকে আধা সরকারি সংবাদ মাধ্যম তাসনিমের খবরে বলা হয়, রেভল্যুশনারি গার্ড কোরের গোয়েন্দা শাখার প্রধান মোহাম্মদ কাজেমি এবং জেনারেল হাসান মোহাক্বিক ও মোহসেন বাঘেরি তেহরানে এক বিমান হামলায় নিহত হয়েছেন।