ভারতের ত্রিপুরায় হাঁড়িভাঙ্গা আম উপহার পাঠালেন প্রধান উপদেষ্টা
Published: 10th, July 2025 GMT
অন্তবর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের পক্ষ থেকে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য সরকার ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য উপহার হিসেবে হাঁড়িভাঙ্গা আম পাঠানো হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্তে আগরতলায় নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনারের প্রতিনিধির কাছে আমগুলো পৌঁছে দেওয়া হয়। মোট ৬০ কার্টন আম পাঠানো হয়েছে। প্রতি কার্টনে ছিল ৫ কেজি করে আম।
আখাউড়া কাস্টমস সূত্র জানায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাষ্ট্রাচার অনুবিভাগ থেকে কার্গোওয়ার্ল্ড লজিস্টিকস নামের একটি রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে কাভার্ড ভ্যানে করে পাঠানো আম বৃহস্পতিবার দুপুরে আখাউড়া স্থলবন্দরে পৌঁছায়। স্থলবন্দরের অনুষ্ঠানিকতা শেষে বিকেল সোয়া পাঁচটার দিকে দুই দেশের শূন্যরেখায় আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনের প্রতিনিধির কাছে আমগুলো হস্তান্তর করা হয়। আগরতলার বাংলাদেশ মিশনের তত্ত্বাবধানে উপহারের এসব আম সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে।
আখাউড়া স্থল শুল্ক স্টেশনের রাজস্ব কর্মকর্তা মো.
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যশোর-খুলনা মহাসড়ক যেন চাষের জমি
দেখলে মনে হবে চাষ দেওয়া কোনো জমি। এবড়োখেবড়ো কাদামাটির স্তূপ, তাতে বড় বড় গাড়ির চাকার দাগ। কোথাও গভীর গর্ত হয়ে জমে আছে পানি। যশোরের অভয়নগরে যশোর-খুলনা মহাসড়কের চিত্র এখন এমনই। এতে নওয়াপাড়া নদীবন্দরের কার্যক্রমেও বিরূপ প্রভাব পড়ছে।
বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার পর অভয়নগরের প্রেমবাগ থেকে চেঙ্গুটিয়া পর্যন্ত যশোর-খুলনা মহাসড়ক চলাচলের একেবারেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, গত কয়েক দিনের অতিবৃষ্টিতে সড়কটির প্রায় এক কিলোমিটার অংশ মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। গর্তে জমা পানি, কাদামাটির কারণে রাস্তাটি চেনার উপায় নেই। এর মধ্য দিয়েই ঝুঁকি নিয়ে থেমে থেমে চলছে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী বড় বড় ট্রাক। খানাখন্দে চাকা পড়ে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে। গত মঙ্গলবার পণ্যবোঝাই একটি ট্রাক উল্টে পাশের খাদে পড়ে যায়।
নওয়াপাড়া নদীবন্দর ও বেনাপোল স্থলবন্দরের বিভিন্ন পণ্য এ সড়ক দিয়ে ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য জেলায় পাঠানো হয়। দেশের চাহিদার ৬০ ভাগ আমদানীকৃত সার মোংলা থেকে নদীপথে নওয়াপাড়া নদীবন্দরে এনে খালাস করা হয়। সেই সার ট্রাকের মাধ্যমে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় পাঠানো হয়। বেহাল সড়কের কারণে নদীবন্দরে যেতে অনীহা দেখাচ্ছেন ট্রাকচালকরা। ফলে আমনের ভরা মৌসুমে সঠিক সময়ে সার কৃষকের কাছে পৌঁছানো নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
নওয়াপাড়া সার সিমেন্ট খাদ্যশস্য ব্যবসায়ী সমিতির নেতা নুরে আলম পাটোয়ারী বলেন, সড়কটির কারণে নওয়াপাড়া মোকাম থেকে সারসহ পণ্য পরিবহনে চালকরা আগ্রহ দেখাচ্ছেন না। এতে বন্দরের বার্জ কার্গো থেকে সারসহ বিভিন্ন পণ্য সঠিক সময়ে খালাস করা যাচ্ছে না। এতে অতিরিক্ত সময় লাগায় ব্যবসায়ীদের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হচ্ছে। ভুক্তভোগী উজ্জ্বল কুমার কুণ্ডু বলেন, বৃষ্টি হলেই সড়কটি কাদামাটিতে একাকার হয়ে যায়। সড়কের গর্তে পানি জমে। আর বৃষ্টি না হলে গাড়ির চাকার সঙ্গে ওড়ে ধুলা। মোটরসাইকেলচালকরা বেশি দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।
যশোরের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শাহজাদা ফিরোজ মোবাইল ফোনে জানান, ঠিকাদারদের ডাকা হয়েছিল, তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। যত দ্রুত সম্ভব আমরা এই সমস্যার সমাধান করব। ভারী বর্ষণের কারণে কাজে বিলম্ব হচ্ছে। আশা করছি, দ্রুতই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। আপাতত ইট ফেলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছি।
মোংলা সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে বেনাপোল স্থলবন্দর এবং নওয়াপাড়া নদীবন্দরের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জেলার যোগাযোগের প্রধান মাধ্যম এই মহাসড়ক। খুলনা থেকে ঢাকাগামী বিভিন্ন পরিবহনের বাসও অভয়নগর হয়ে যাতায়াত করে। খুলনা থেকে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়ায় যাতায়াতের এটিই প্রধান সড়ক। এখন বাসগুলোকে মনিরামপুর, সাতক্ষীরা ঘুরে যেতে হয়।
বর্তমানে সড়ক ও জনপথ বিভাগের তত্ত্বাবধানে সড়কটির বিভিন্ন অংশে আরসিসি ঢালাইয়ের কাজ চলছে। ২ হাজার ৩৫২ মিটার কাজের মধ্যে ৭০২ মিটার পড়েছে যশোর মুরলী মোড়ে। বাকিটা নওয়াপাড়া থেকে প্রেমবাগ গেট পর্যন্ত বিভিন্ন অংশে। কাজটি বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩১ কোটি ৬৮ লাখ ৪৮ হাজার টাকা। কাজটি শুরু হয়েছে গত ২৩ মার্চ।
এর আগে ২০১৮ সালে দু’জন ঠিকাদার ৩২১ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়কের অভয়নগরের রাজঘাট থেকে যশোরের পালবাড়ি মোড় পর্যন্ত ৩৮ কিলোমিটার নির্মাণকাজ বাস্তবায়ন করে। কাজটি ২০২২ সালের জুনে শেষ হয়। ওই সময় কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। তিন বছরের মধ্যেই সড়কটির বিভিন্ন অংশ বেহাল হয়ে পড়ায় আবার সংস্কারকাজ করতে হচ্ছে।