মূল ক্যাম্পাসে ফিরছে চবি চারুকলা ইনিস্টিটিউট, অনশন প্রত্যাহার
Published: 23rd, April 2025 GMT
অবশেষে মূল ক্যাম্পাসে ফিরছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) চারুকলা ইনস্টিটিউট। শিক্ষার্থীদের ৩২ ঘণ্টা আমরণ অনশন কর্মসূচির পর জরুরি সিন্ডিকেট সভার ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। আগামী ১৪ মে অনুষ্ঠেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠানের পর এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সভা শেষে মঙ্গলবার মধ্যরাতে সিদ্ধান্তসমূহ অনশনরত শিক্ষার্থীদের কাছে ব্রিফিং করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন। সিদ্ধান্তের পর শিক্ষার্থীরা তাদের চলমান আমরণ অনশন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেন। প্রায় ৩৪ ঘণ্টা পর অনশন ভাঙেন তারা। এর আগে দুই শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে স্যালাইন নিয়েও অনশনে অবস্থান করেন।
অনশন শেষে চারুকলার শিক্ষার্থী মো.
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) কামাল উদ্দিন সমকালকে বলেন, ‘চারুকলাকে ক্যাম্পাসে ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সিন্ডিকেট সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সমাবর্তনের পর এটি বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সিন্ডিকেটের এই সিদ্ধান্ত চারুকলার ইনিস্টিটিউটের প্রশাসনকেও জানিয়ে দেওয়া হবে।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে চারুকলা বিভাগের যাত্রা শুরু হয় ১৯৭০ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর। এরপর ২০১০ সালে নগরের সরকারি চারুকলা কলেজের সঙ্গে এক করে গঠন করা হয় চারুকলা ইনস্টিটিউট। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২২ কিলোমিটার দূরে নগরীর মেহেদীবাগের বাদশা মিয়া সড়কে এখন এর অবস্থান। ২০২২ সালের ২ নভেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চবি চারুকলা ইনস্টিটিউটের এক দফা দাবিতে আন্দোলন চলে। এসময় শিক্ষার্থীরা চারুকলা ইনিস্টিটিউট মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের দাবি জানান। ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনের প্রেক্ষিতে চারুকলা ইনিস্টিটিউট বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ৯ ফেব্রুয়ারি আন্দোলনের ১০০তম দিনে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বাধা ও হামলা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পরে প্রায় তিন মাস বন্ধ থাকার পর সেশনজট কমাতে ক্লাসে ফিরে যান শিক্ষার্থীরা। এরপর বিভিন্ন সময়ে এই দাবি তুলেছেন শিক্ষার্থীরা।
সর্বশেষ জুলাই অভ্যুত্থানের পর গত বছরের ডিসেম্বরে আবারও আন্দোলন নামেন চারুকলার শিক্ষার্থীরা। ১২ ডিসেম্বর শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের প্রেক্ষিতে চলতি বছরের মার্চের মধ্যেই চারুকলা ইনিস্টিটিউট বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে স্থানান্তরের ঘোষণা দেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শামীম উদ্দিন খান। তবে এই প্রক্রিয়ার দৃশ্যমান অগ্রগতি না দেখায় মঙ্গলবার থেকে আবারও আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চ র কল
এছাড়াও পড়ুন:
টানা ৩০ ঘণ্টা অনশনে তিন জবি শিক্ষার্থী অসুস্থ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রূপরেখা ঘোষণাসহ তিন দফা দাবিতে চলমান অনশনে অংশ নেওয়া চার শিক্ষার্থীর মধ্যে তিনজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। প্রায় ৩০ ঘণ্টা ধরে তারা এ অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুর থেকে ভাষা শহীদ রফিক ভবনের নিচে অনশন শুরু করেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) ও ছাত্র অধিকার পরিষদের চার নেতা। বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৭টার দিকেও তাদের অনশনে থাকতে দেখা যায়।
আরো পড়ুন:
চাকসু: ফয়জুন্নেছা হলে ১৪ পদে ১৪ মনোনয়নপত্র বিক্রি
‘নভেম্বরে সম্পূরক বৃত্তির আশ্বাস দিয়েছেন ইউজিসি চেয়ারম্যান’
অনশনকারী শিক্ষার্থীরা হলেন— ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি একেএম রাকিব, বাগছাস সভাপতি ফয়সাল মুরাদ, সদস্য সচিব শাহিন মিয়া ও মুখ্য সংগঠক ফেরদৌস শেখ।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো- শিক্ষার্থীদের সম্পূরক বৃত্তি কার্যকর শুরুর তারিখ স্পষ্ট ঘোষণা; জকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ প্রকাশ; ক্যাফেটেরিয়ায় ভর্তুকি ও স্বাস্থ্যকর খাবার নিশ্চিতকরণ, লাইব্রেরিতে সুযোগ-সুবিধা ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা।
অনশনকারী বাগছাসের সদস্য সচিব শাহিন মিয়া বলেন, “প্রশাসন আগের মতোই বাহানা করছে। হচ্ছে, হবে—এই বক্তব্য থেকে তারা বের হতে পারছে না। আর কোনো টালবাহানা আমরা শুনব না।”
বাগছাস সভাপতি ফয়সাল মুরাদ বলেন, “২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অনশন চলছে, কিন্তু প্রশাসন এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি। ইতোমধ্যে আমি ও আরো দুজন অসুস্থ হয়ে পড়েছি।”
ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি একেএম রাকিব বলেন, “আমরা অবস্থানসহ নানা কর্মসূচি পালন করেছি, কিন্তু প্রশাসন কর্ণপাত করেনি। তাই বাধ্য হয়ে অনশনে বসেছি। যতক্ষণ দাবি আদায় না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এই অনশন চলবে।”
দাবি ও অনশনের বিষয়ে জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সাদমান সাম্য বলেন, “শিক্ষার্থীদের তিন দফা যৌক্তিক দাবির প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাই। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। কোনো সিন্ডিকেটের স্বার্থ সফল হতে দেওয়া হবে না।”
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় অনশনকারীদের সঙ্গে কথা বলতে উপাচার্য অধ্যাপক রেজাউল করিম ও প্রশাসনের কর্মকর্তারা রফিক ভবনে উপস্থিত হন। এ সময় উপাচার্য আশ্বাস দেন, ডিসেম্বরের মধ্যে জকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং আগামী জানুয়ারি থেকে সম্পূরক বৃত্তি দেওয়া হবে।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী