পুলিশের সঙ্গে হামলায় ‘লাঠিয়াল’ বাহিনী, অভিযোগ ছাত্রসেনার
Published: 5th, May 2025 GMT
চট্টগ্রামের মুরাদপুরসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘লাঠিয়াল বাহিনী’ পুলিশের সঙ্গে মিলে ইসলামী ছাত্রসেনা ও আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ইসলামী ছাত্রসেনার কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ সাহেদুল আলম।
আজ সোমবার বিকেলে নগরের চেরাগী পাহাড় এলাকায় আয়োজিত এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে এ কথাগুলো বলেন তিনি। ইসলামী ছাত্রসেনার দলীয় কার্যালয়ে অবরোধ কর্মসূচি ও সার্বিক বিষয়ে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাত ও বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মুহাম্মদ সাহেদুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা ঘোষিত দেশব্যাপী শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচিতে দেশের বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং চিহ্নিত কিছু সন্ত্রাসীর যৌথ হামলার ঘটনা ঘটেছে, যা আমরা গভীর ক্ষোভ, নিন্দা ও উদ্বেগের সঙ্গে জানাচ্ছি।’
মুহাম্মদ সাহেদুল আলম আরও উল্লেখ করেন, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রামের মুরাদপুর, অক্সিজেন মোড়, রাঙ্গুনিয়া, বাঁশখালী ও ফটিকছড়ি এলাকায় পুলিশের লাঠিচার্জ, গ্রেপ্তার ও আক্রমণে বহু নেতা–কর্মী গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের কেন্দ্রীয় সদস্য এনাম রেজা, মিডিয়া সেলের প্রধান ফরিদুল ইসলাম প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, চট্টগ্রাম পাঁচলাইশ থানা এলাকা থেকে ১৪ জন, চান্দগাঁও থানা এলাকা থেকে ১৩ জন এবং সারা দেশ থেকে আরও বহু নেতা–কর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। আজকের হামলার দায়ে পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। গ্রেপ্তারকৃত নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।
পরবর্তী কর্মসূচির প্রশ্নে নেতা-কর্মীরা বলেন, ‘আজকের হামলার প্রতিবাদে আগামীকাল মঙ্গলবার বেলা তিনটায় দেশব্যাপী বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হবে। প্রতিটি জেলা ও মহানগরে রাজপথে নামবে ছাত্রসেনা। ঢাকা ও চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে কালো পতাকা মিছিল। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনা কখনো অশান্তি চায় না, কিন্তু ন্যায়বিচারের প্রশ্নে আমরা আপস করব না।’
এর আগে এদিন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রসেনার ঢাকা মহানগরীর সাবেক সভাপতি মাওলানা মুহাম্মদ রইস উদ্দিনকে হত্যার প্রতিবাদ এবং এ ঘটনার বিচারের দাবিতে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে মুরাদপুর মোড়ে সড়ক অবরোধ শুরু করেন বাংলাদেশ আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের নেতা-কর্মীরা। মিছিলের এক পর্যায়ে অবরোধকারী ব্যক্তিদের সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করে পুলিশ।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল দ শ ইসল ম ছ ত রস ন র ম হ ম মদ অবর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
আবু সাঈদ হত্যা মামলায় রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্যসহ ৩০ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মো. হাসিবুর রশীদসহ ৩০ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এই মামলায় ২৭ আগস্ট সূচনা বক্তব্যের দিন ধার্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল–২।
বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-২ বুধবার অভিযোগ গঠন ও সূচনা বক্তব্যের দিন ধার্য করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারক মো. মঞ্জুরুল বাছিদ ও বিচারক নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
পরে বিকেলে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রসিকিউটর মো. মিজানুল ইসলাম বলেন, আবু সাঈদের মামলায় রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য হাসিবুরসহ ৩০ জনের বিরুদ্ধ হওয়া মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। এই মামলায় সূচনা বক্তব্য ও সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে ২৭ ও ২৮ আগস্ট।
এই মামলায় ৩০ আসামির মধ্যে ছয়জন গ্রেপ্তার আছেন। তাঁরা হলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, সাবেক সহকারী রেজিস্ট্রার রাফিউল হাসান, রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের সাবেক চুক্তিভিত্তিক কর্মচারী মো. আনোয়ার পারভেজ, পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন, সাবেক কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় ও নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতা ইমরান চৌধুরী ওরফে আকাশ।
বাকি ২৪ জন আসামি পলাতক। তাঁরা হলেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মো. হাসিবুর রশীদ, গণিত বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক মো. মশিউর রহমান, লোকপ্রশাসন বিভাগের সাবেক সহযোগী অধ্যাপক আসাদুজ্জামান মণ্ডল, চিকিৎসক মো. সরোয়ার হোসেন, সাবেক সহকারী রেজিস্ট্রার মো. হাফিজুর রহমান, সাবেক সেকশন অফিসার মো. মনিরুজ্জামান পলাশ, রংপুর মহানগর পুলিশের (আরপিএমপি) সাবেক কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান, সাবেক উপকমিশনার মো. আবু মারুফ হোসেন, সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. শাহ নূর আলম পাটোয়ারী, সাবেক সহকারী কমিশনার মো. আরিফুজ্জামান, সাবেক পরিদর্শক (নিরস্ত্র) রবিউল ইসলাম, সাবেক এসআই (নিরস্ত্র) বিভূতিভূষণ রায়, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি পোমেল বড়ুয়া, সাধারণ সম্পাদক মাহাফুজুর রহমান, সহসভাপতি ফজলে রাব্বি ও আখতার হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক সেজান আহম্মেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ধনঞ্জয় কুমার, দপ্তর সম্পাদক বাবুল হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাসুদুল হাসান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এমএলএসএস মোহাম্মদ নুরুন্নবী মণ্ডল ও আমির হোসেন, নিরাপত্তা প্রহরী নুর আলম মিয়া ও অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর মো. মাহাবুবার রহমান।