ধর্মীয় অজুহাতে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে: নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম
Published: 5th, May 2025 GMT
নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশকে কেন্দ্র করে নারী বিদ্বেষী প্রচারণা ও বক্তব্যের প্রতিবাদে বিবৃতি দিয়েছে জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম (জেএনএনপিএফ)। জেএনএনপিএফ মনে করে, ধর্মীয় অজুহাতে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। সোমবার ফোরামের সভাপতি মমতাজ আরা বেগম এবং সাধারণ সম্পাদক জামিলা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন এবং তাদের প্রস্তাবনা বাতিলের দাবিতে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে নারীর প্রতি অসম্মানজনক, মানহানিকর এবং নারীবিদ্বেষী বক্তব্য ও আচরণে নারী জাতি স্তম্ভিত। এছাড়া, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, নারী প্রতিকৃতিতে জুতা দিয়ে পেটানো হচ্ছে। এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম।
নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম মনে করে, হেফাজতে ইসলামসহ ধর্মান্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলোর দ্বারা সংঘটিত এ ধরনের ঘটনা নারীর অধিকার আদায়ের পথে বাধা সৃষ্টি করছে। এসব ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে উল্লেখযোগ্য কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করার বিষয়টি আশ্চর্যজনক। ধর্মীয় অজুহাতে সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। এছাড়া, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল এবং ব্লাসফেমি আইন প্রণয়নের যে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে, তা অযৌক্তিক। এ বিষয়ে সরকারের নীতি ও অবস্থান স্পষ্ট করা প্রয়োজন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে সরকার ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। এর মধ্যে ১০টি কমিশন ইতোমধ্যে তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশের পর কতিপয় গোষ্ঠী এর বিরোধিতা করে আসছে। কমিশনটি নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদসহ সার্বজনীন মানবাধিকারকে বিবেচনায় এনে সরকারের জন্য প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কিন্তু ধর্মীয় অজুহাতে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনসহ এই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে, যা অযৌক্তিক এবং নারীবিদ্বেষী মনোভাবের প্রকাশ বলে মনে করে জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম।
জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করতে এবং বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হেফাজতে ইসলামের সকল অসাংবিধানিক দাবি-দাওয়া প্রত্যাখ্যান করে সমতার ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম।
জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম হলো জেলা পর্যায়ে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে কাজ করা একটি নেটওয়ার্ক। মুক্তি নারী ও শিশু উন্নয়ন সংস্থা, সবুজের অভিযান ফাউন্ডেশন, গ্রীন হিল, ভূমিজ ফাউন্ডেশনসহ ২৬টি সংস্থা এই নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
রাজধানীতে এনএসআই কর্মকর্তা পরিচয়ে তুরস্কের নাগরিকের কাছে অর্থ দাবি করে গ্রেপ্তার
রাজধানীতে তুরস্কের এক নাগরিকের কাছে নিজেকে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে অর্থ দাবি করার অভিযোগে মো. রুবেল হোসেন (৩৮) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছে গুলশান থানা–পুলিশ। গতকাল শনিবার দুপুরে মিরপুরের পূর্ব কাজীপাড়া এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
আজ রোববার এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয় বলে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়।
পুলিশ জানায়, গত ৩১ আগস্ট সকালে টার্কিশ এয়ারলাইনসের কর্মকর্তা সেরকান আকানের কাছে অজ্ঞাত নম্বর থেকে ফোন করে নিজেকে এনএসআই গুলশান জোনের এডি পরিচয় দেন প্রতারক রুবেল হোসেন। পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের কথা বলে তিনি প্রথমে পাঁচ হাজার টাকা এবং পরে এক লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সেরকানকে ভয়ভীতি দেখানো হয়।
টার্কিশ এয়ারলাইনস কর্তৃপক্ষের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গুলশান থানায় মামলা হয়। মামলার তদন্তে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় পুলিশ রুবেলকে গ্রেপ্তার করে। তাঁর কাছ থেকে একটি মোবাইল সিম ও বিভিন্ন লোকের পাসপোর্ট–সংক্রান্ত কাগজপত্র উদ্ধার করা হয়েছে। পরে তাঁকে আদালতে পাঠানো হয়।