নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সুপারিশকে কেন্দ্র করে নারী বিদ্বেষী প্রচারণা ও বক্তব্যের প্রতিবাদে বিবৃতি দিয়েছে জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম (জেএনএনপিএফ)। জেএনএনপিএফ মনে করে, ধর্মীয় অজুহাতে জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। সোমবার ফোরামের সভাপতি মমতাজ আরা বেগম এবং সাধারণ সম্পাদক জামিলা সুলতানা স্বাক্ষরিত সংবাদ বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন এবং তাদের প্রস্তাবনা বাতিলের দাবিতে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে নারীর প্রতি অসম্মানজনক, মানহানিকর এবং নারীবিদ্বেষী বক্তব্য ও আচরণে নারী জাতি স্তম্ভিত। এছাড়া, সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, নারী প্রতিকৃতিতে জুতা দিয়ে পেটানো হচ্ছে। এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম।

নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম মনে করে, হেফাজতে ইসলামসহ ধর্মান্ধ মৌলবাদী গোষ্ঠীগুলোর দ্বারা সংঘটিত এ ধরনের ঘটনা নারীর অধিকার আদায়ের পথে বাধা সৃষ্টি করছে। এসব ঘটনায় সরকারের পক্ষ থেকে উল্লেখযোগ্য কোনো উদ্যোগ গ্রহণ না করার বিষয়টি আশ্চর্যজনক। ধর্মীয় অজুহাতে সাধারণ জনগণকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। এছাড়া, নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিল এবং ব্লাসফেমি আইন প্রণয়নের যে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে, তা অযৌক্তিক। এ বিষয়ে সরকারের নীতি ও অবস্থান স্পষ্ট করা প্রয়োজন।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে সরকার ১১টি সংস্কার কমিশন গঠন করেছে। এর মধ্যে ১০টি কমিশন ইতোমধ্যে তাদের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। সম্প্রতি নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন প্রকাশের পর কতিপয় গোষ্ঠী এর বিরোধিতা করে আসছে। কমিশনটি নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য বিলোপ সনদসহ সার্বজনীন মানবাধিকারকে বিবেচনায় এনে সরকারের জন্য প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। কিন্তু ধর্মীয় অজুহাতে নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনসহ এই গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে, যা অযৌক্তিক এবং নারীবিদ্বেষী মনোভাবের প্রকাশ বলে মনে করে জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম। 

জেন্ডার সমতা নিশ্চিত করতে এবং বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হেফাজতে ইসলামের সকল অসাংবিধানিক দাবি-দাওয়া প্রত্যাখ্যান করে সমতার ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠনের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম।

জাতীয় নারী নির্যাতন প্রতিরোধ ফোরাম হলো জেলা পর্যায়ে নারীর প্রতি সহিংসতা প্রতিরোধে কাজ করা একটি নেটওয়ার্ক। মুক্তি নারী ও শিশু উন্নয়ন সংস্থা, সবুজের অভিযান ফাউন্ডেশন, গ্রীন হিল, ভূমিজ ফাউন্ডেশনসহ ২৬টি সংস্থা এই নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

আওয়ামী দোসরদের নিয়ে এনসিপি সাজানো হচ্ছে: আমিনুল হক

ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের নিয়ে সাজানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্রীড়াবিষয়ক সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক। আওয়ামী লীগের লোক নিয়ে এনসিপি মিছিল–মিটিং করছে বলেও অভিযোগ করেছেন তিনি।

আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর খিলক্ষেত তলনা রুহুল আমিন উচ্চবিদ্যালয় মাঠে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে জিয়া আন্তথানা ফুটবল টুর্নামেন্টের একটি খেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এসব অভিযোগ করেন আমিনুল হক।

আমিনুল হক অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতা–কর্মীদের মামলা থেকে বাঁচানো এবং পুলিশের গ্রেপ্তার থেকে রক্ষা করার কথা বলে অর্থের বিনিময়ে এনসিপি নেতারা তাঁদের দলে নিচ্ছেন।

মিয়ানমারের সঙ্গে ‘মানবিক করিডর’ ইস্যুতে রাজনৈতিক দল ও জনগণকে অন্তর্বর্তী সরকার পাশ কাটিয়ে যাচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন আমিনুল হক। তিনি বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে ক্ষমতার মোহ ঢুকে গেছে। সংসদ ও জনগণকে পাশ কাটিয়ে করিডর দেওয়ার চেষ্টা করলে এ দেশের জনগণ মেনে নেবে না।’

জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে আমিনুল হক বলেন, ‘আমরা দীর্ঘ ১৭ বছর আন্দোলন–সংগ্রাম করেছি একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা যাদের সরকারে বসিয়েছি, তারা এখন নির্বাচন চাইলে জ্বালা মনে করে।’ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন না দিলে এ দেশের মানুষ ঐক্যবদ্ধভাবে রাজপথে নামবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

এ সময় বিএনপির কেন্দ্রীয় ক্ষুদ্র ঋণবিষয়ক সম্পাদক এম এ কাইয়ুম, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি সদস্যসচিব মোস্তফা জামান, যুগ্ম আহ্বায়ক এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আওয়ামী দোসরদের নিয়ে এনসিপি সাজানো হচ্ছে: আমিনুল হক