লন্ডনে দীর্ঘ চার মাস চিকিৎসা শেষে আজ মঙ্গলবার (৬ মে) দেশে ফিরেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার আগমনকে কেন্দ্র করে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বস ও উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে।

মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল দশটায় রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামের সামনের রাস্তায় দেখা যায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা দুই হাতে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা নিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন। 

এসময় নেতাকর্মীরা ‘খালেদা জিয়ার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’; ‘খালেদা জিয়ার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’; ‘দেশ মাটি মানুষের নেতা, খালেদা জিয়া খালেদা জিয়া’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে থাকেন।

রূপনগর থানা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল আউয়াল রাইজিংবিডিকে বলেন, “বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন, এতে নেতাকর্মীরা অনেক খুশি। হাসিনা তাকে দীর্ঘদিন ধরে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত রেখেছিল। তিনি এই দেশের আপসহীন নেত্রী। কোন অন্যায়ের কাছে তিনি কখনো আপোস করেননি। রূপনগর থানার সকল স্তরের বিএনপির নেতাকর্মীরা আজকে দেশনেত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে অপেক্ষা করছি।”

রামপুরা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মো.

মাসুদুর রহমান নাহিদ রাইজিংবিডিকে বলেন, “আমার নেতাকর্মীরা সকাল আটটা থেকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানানোর জন্য অপেক্ষা করছি। বাংলাদেশ এবং খালেদা জিয়া এই দুইটি নাম একে অপরের পরিপূরক। খালেদা জিয়ার তার জীবন এই দেশের মানুষ জন্য উৎসর্গ করে দিয়েছেন। আমরা তার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি।”

সাভার থানা মহিলা দলের নেত্রী জান্নাতুল ফেরদাউস রাইজিংবিডিকে বলেন, “বাংলাদেশের নারীদের কাছে এক নক্ষত্রের নাম। তিনি এ দেশের সকল নারীদের প্রতীক। আমরা সাভার থানার মহিলা দলের সকল নেতাকর্মীরা সকাল সাতটায় নেত্রীকে স্বাগত জানানোর জন্য এসেছি। তিনি হলেন গণতন্ত্রের মাতা। তাকে এতদিন হাসিনা বিভিন্নভাবে অসম্মানিত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এখন হাসিনা দেশ থেকে পালিয়েছে। সম্মান দেওয়ার মালিক আল্লাহ। কেউ চাইলে কাউকে সম্মান দিতে অথবা নিতে পারে না।’’

খালেদা জিয়া এবং তার দুই পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শর্মিলা রহমানকে ঢাকায় বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত রয়েছেন।

ঢাকা/রায়হান/এস 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ন ত কর ম ন ত কর ম র ব এনপ র

এছাড়াও পড়ুন:

মুগ্ধের ভাই স্নিগ্ধ: বিএনপিতে যোগ দিলেন যে কারণে 

জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ মুগ্ধের ভাই মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ সম্প্রতি বিএনপিতে যোগ দিয়েছেন। দলের প্রাথমিক সদস্য ফরম পূরণ করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের হাতে তুলে দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপিতে যোগদান করেন তিনি।

স্নিগ্ধর হঠাৎ বিএনপিতে যোগদান নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। বিএনপিতে যোগদান বিষয়ে তিনি নিজেই মুখ খুলেছেন।

বৃহস্পতিবার এ প্রসঙ্গে ফেসবুক পেজে মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধর স্ট্যাটাস হুবহু তুলে ধরা হলো:

‘‘আসসালামু আলাইকুম 
আমি মীর মাহবুবুর রহমান স্নিগ্ধ। জুলাইয়ের পর থেকে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মানের যে জোয়ার উঠেছে, বিশেষ করে তরুণদের মধ্যে, সেই তরুণদের একজন প্রতিনিধি হিসেবে আমিও সামাজিকভাবে নানা কার্যক্রমের প্রতিনিধিত্ব করেছি। পাশাপাশি তরুণদের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়তে রাজনৈতিক পরিবর্তনের যে প্রচেষ্টা চলছে সেই লক্ষ বাস্তবায়নে  রাজনীতিতে যুক্ত হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছি।

আপনারা জানেন যে আমি বা আমার ভাইদের কেউই রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলাম না, মুগ্ধ একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবেই দেশের জন্য জীবন দিয়েছে। তাই আমি মনে করি মুগ্ধসহ সকল শহিদ কোন রাজনৈতিক দলের নয়, তারা সকল মানুষ এবং দেশের সম্পদ। 

বর্তমান প্রেক্ষাপটে এবং এই নতুন বাস্তবতায় সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত জায়গা থেকে বাংলাদেশের একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে রাজনীতিতে  অংশগ্রহণ করছি। এবং সম্পূর্ণ নিজ যোগ্যতায় এগিয়ে যেতে চাই।

অরাজনৈতিক প্লাটফর্ম থেকে জুলাইকে নানাভাবে প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়েছি, এখন সময় এসেছে রাজনৈতিকভাবে জুলাইয়ের প্রতিনিধিত্ব করার। আমার রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার পিছনে অন্যতম কয়েকটি কারণ হলো- 

সর্বোচ্চ জায়গা থেকে জুলাইকে প্রতিনিধিত্ব করা। জুলাই শহিদ, আহত যোদ্ধা,  শহিদ পরিবার এবং সর্বোপরি জুলাইয়ের ভয়েস হয়ে উঠা, রাজনীতিতে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব করা এবং বাংলাদেশপন্থী ও জুলাইপন্থী সকল অংশীজনের মধ্যে ঐক্য গড়ে তোলা। রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলে যোগদান কারার পিছনে আমার কয়েকটি কারণ রয়েছে। প্রথমত বিএনপির দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রামের ইতিহাস রয়েছে তাছাড়া বিএনপির রাজনৈতিক দর্শন এবং রাষ্ট্র মেরামতের ৩১ দফা রূপরেখা ২০২৩ এর অনেক জায়গা আছে যেগুলো নিয়ে সরাসরি কাজ করতে আমি আগ্রহী। 

দ্বিতীয়ত আমি মনে করি, সকল পরিসরে জুলাইয়ের প্রতিনিধিত্ব থাকা প্রয়োজন। তাই আমি বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত হচ্ছি। এতে করে জুলাইয়ের ঐক্য শক্তিশালী এবং দীর্ঘায়িত হবে বলে আমি মনে করি।

তাছাড়া বিএনপির সন্মানিত ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান চাচ্ছেন যে আমি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের হয়ে তরুণদের প্রতিনিধিত্ব করি যা আমারও অন্যতম রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার একটি। এর মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী দল এবং তরুণদের মধ্যে সেতুবন্ধন তৈরীতে ভূমিকা রাখতে পারবো বলে আমি মনে করি।

তবে সর্বোপরি আমি সকল রাজনৈতিক দল এবং বাংলাদেশ ও   জুলাইপন্থী সকলের সাথে কাজ করে যেতে চাই। রাজনৈতিক ঐক্যের মাধ্যমে সুন্দর বাংলাদেশ বিনির্মান আমার রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষার আরেকটি অন্যতম লক্ষ্য। আমার এই পথচলাই  সকলের সহযোগিতা ও পরামর্শ কামনা করছি। মুক্তিযুদ্ধ ও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানসহ জনমানুষের সকল সংগ্রাম চির অম্লান হোক।

আরেকটি বিষয়, এতদিন যত দায়িত্ব আমি পালন করেছি সব দায়িত্ব নিষ্ঠা এবং সততার সাথে পালন করেছি। যদি কোন অভিযোগ থাকে দয়া করে অভিযোগে সীমাবদ্ধ না রেখে প্রমাণসহ উপস্থাপন করবেন এবং গঠনমূলক সমালোচনা করবেন। নতুন বাংলাদেশে সবাই মিলে এতটুকু সংস্কার তো আমরা আশাই করতে পারি।’’

ঢাকা/নঈমুদ্দীন// 

সম্পর্কিত নিবন্ধ