খালেদা জিয়ার আগমনে নেতাকর্মীদের উচ্ছ্বাস
Published: 6th, May 2025 GMT
লন্ডনে দীর্ঘ চার মাস চিকিৎসা শেষে আজ মঙ্গলবার (৬ মে) দেশে ফিরেছেন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার আগমনকে কেন্দ্র করে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উচ্ছ্বস ও উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে।
মঙ্গলবার (৬ মে) সকাল দশটায় রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামের সামনের রাস্তায় দেখা যায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিএনপির অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা দুই হাতে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা নিয়ে স্লোগান দিচ্ছেন।
এসময় নেতাকর্মীরা ‘খালেদা জিয়ার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’; ‘খালেদা জিয়ার ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’; ‘দেশ মাটি মানুষের নেতা, খালেদা জিয়া খালেদা জিয়া’ প্রভৃতি স্লোগান দিতে থাকেন।
রূপনগর থানা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আব্দুল আউয়াল রাইজিংবিডিকে বলেন, “বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা শেষে দেশে ফিরেছেন, এতে নেতাকর্মীরা অনেক খুশি। হাসিনা তাকে দীর্ঘদিন ধরে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত রেখেছিল। তিনি এই দেশের আপসহীন নেত্রী। কোন অন্যায়ের কাছে তিনি কখনো আপোস করেননি। রূপনগর থানার সকল স্তরের বিএনপির নেতাকর্মীরা আজকে দেশনেত্রীকে শুভেচ্ছা জানাতে অপেক্ষা করছি।”
রামপুরা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব মো.
সাভার থানা মহিলা দলের নেত্রী জান্নাতুল ফেরদাউস রাইজিংবিডিকে বলেন, “বাংলাদেশের নারীদের কাছে এক নক্ষত্রের নাম। তিনি এ দেশের সকল নারীদের প্রতীক। আমরা সাভার থানার মহিলা দলের সকল নেতাকর্মীরা সকাল সাতটায় নেত্রীকে স্বাগত জানানোর জন্য এসেছি। তিনি হলেন গণতন্ত্রের মাতা। তাকে এতদিন হাসিনা বিভিন্নভাবে অসম্মানিত করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু এখন হাসিনা দেশ থেকে পালিয়েছে। সম্মান দেওয়ার মালিক আল্লাহ। কেউ চাইলে কাউকে সম্মান দিতে অথবা নিতে পারে না।’’
খালেদা জিয়া এবং তার দুই পুত্রবধূ ডা. জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শর্মিলা রহমানকে ঢাকায় বিমানবন্দরে অভ্যর্থনা জানাতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটির নেতৃবৃন্দ উপস্থিত রয়েছেন।
ঢাকা/রায়হান/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ন ত কর ম ন ত কর ম র ব এনপ র
এছাড়াও পড়ুন:
কোটি টাকার প্রকল্পে থাবা বিএনপি নেতাদের
লক্ষ্মীপুরের বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) শিল্পনগরীতে কোটি টাকার একটি প্রকল্পে ঠিকাদারকে সরিয়ে বিএনপি নেতারা কাজ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। চলতি মাসে শেষ হওয়া ওই প্রকল্পে নিম্নমানের কাজে ক্ষোভ জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
জানা গেছে, শিল্পনগরীতে সড়ক, ড্রেন ও কালভার্ট নির্মাণের লক্ষ্যে ১ কোটি ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়। গত মার্চে শিপড়া ট্রেডার্স নামে একটি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানকে প্রকল্পের ওয়ার্ক অর্ডার দেওয়া হয়। গত ২২ মে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। পরে সময় বাড়িয়ে ৪ জুন পর্যন্ত মেয়াদ বৃদ্ধি করা হয়। প্রকল্পের আওতায় ৪২০ ফুট দীর্ঘ সড়ক, তিনটি কালভার্ট, নতুন ড্রেন এবং বিসিক ভবনের সংস্কার করা হয়েছে। তবে বাস্তবে মূল ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে কাজ করতে দেওয়া হয়নি। স্থানীয় বিএনপি নেতারা প্রভাব খাটিয়ে নিজেরাই কাজটি করেন।
শিপড়া ট্রেডার্সের স্বত্বাধিকারী চন্দন ঘোষ অভিযোগ করেন, প্রকল্পের ওয়ার্ক অর্ডার পেলেও স্থানীয় বিএনপি নেতারা তাঁকে কাজটি করতে দেননি। প্রভাব খাটিয়ে এই প্রকল্পের নিয়ন্ত্রণ নেন পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক কাজী হেলাল উদ্দিন, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান মাহমুদ ইব্রাহিম ও চররুহিতা ইউনিয়ন বিএনপি নেতা মো. সবুজ। তারা নিজেরা কাজ ভাগাভাগি করে নেন। এতে কাজের গুণগত মান ঠিক থাকেনি।
স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্যমতে, বিসিকের নতুন সড়কে পানি জমা, ঢেউয়ের মতো উঁচু-নিচু জায়গা এবং ভাঙন দেখা দিয়েছে। সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কে পানি জমে রয়েছে। এ ছাড়া সড়ক ও ড্রেনের নির্মাণকাজে পাথর, রড ও সিমেন্ট ঠিকমতো
দেওয়া হয়নি।
বিসিকসংলগ্ন এলাকার বাসিন্দা সিরাজ মিয়া, তাজুল ইসলাম ও রফিক জমাদার জানান, ঠিকভাবে মাটি না ভরাট করেই ঢালাই দেওয়া হয়েছে। এতে নতুন সড়কে ঢেউয়ের মতো তৈরি হয়েছে, যা যান চলাচলের জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
স্থানীয় বাসিন্দা আবদুল কাদের বলেন, ‘আমরা ভেবেছিলাম কোটি টাকার কাজ হবে মানসম্মত। কিন্তু এখনই রাস্তায় পানি জমে যাচ্ছে, মানুষ পড়ে গিয়ে আহত হচ্ছে। এটা দেখে মনে হয়, কাজ শুরু হওয়ার আগেই শেষ হয়ে গেছে।’
বিসিকের প্রকল্পের কাজে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করে পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক কাজী হেলাল উদ্দিন বলেন, ঠিকাদারের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমেই কাজটি তারা করেছেন। জোর করে নিয়ে নয়।
অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা ছাত্রদলের সভাপতি হাসান মাহমুদ ইব্রাহিম বলেন, আগে বিভিন্ন
উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ ছাত্রলীগ (নেতারা) করেছে। এখন ছাত্রদল উন্নয়ন কাজ করবে এটা স্বাভাবিক, সবাই জানে।
সড়কের কিছু জায়গায় পানি জমার বিষয়টি নজরে এসেছে জানিয়ে বিসিক প্রকৌশল শাখার টেকনিক্যাল অফিসার আশিকুর রহমান বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার নির্দেশে কাজের মান পুনরায় মূল্যায়ন করা হচ্ছে। অনিয়ম প্রমাণিত হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিসিক শিল্পনগরীর উপব্যবস্থাপক মো. ফজলুল করিম জানান, কাজটি দেখতে আঞ্চলিক
পরিচালক, টেকনিক্যাল কর্মকর্তাসহ অনেকে এসেছেন। অনিয়মের অভিযোগের বিষয়টি তারাও তদন্ত করে গেছেন।