বাংলাদেশ জাস্ট ট্রানজিশন একাডেমির যাত্রা
Published: 6th, May 2025 GMT
আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), লউডস ফাউন্ডেশন এবং থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশন (টিআরএফ) সম্মিলিতভাবে মঙ্গলবার (৬ মে) বাংলাদেশ জাস্ট ট্রানজিশন একাডেমির আয়োজন করে।
বাংলাদেশ জাস্ট ট্রানজিশন একাডেমি একটি দুই দিনব্যাপী অনুষ্ঠান। ৬ মে এবং ৭ মে ঢাকায় এই একাডেমি অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এতে দেশের প্রধান স্টেকহোল্ডাররা অংশগ্রহণ করে পরিবেশগতভাবে টেকসই ও সহনশীল অর্থনীতি ও সমাজের জন্য জাস্ট ট্রানজিশনের অর্থ কী তা উপলব্ধি ও উন্নত করার লক্ষ্যে আলোচনা করবেন।
একাডেমিতে স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে প্যানেল আলোচনা, যুব জলবায়ু উদ্যোক্তাদের উপস্থাপনা, ইন্টারেক্টিভ ব্রেকআউট সেশনসহ নানা কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হবে এবং সরকারের, নিয়োগকর্তা ও শ্রমিক সংগঠনগুলোর মধ্যে যৌথভাবে জাস্ট ট্রানজিশনের লক্ষ্যে কাজ করার আহ্বানে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
ঢাকায় একাডেমি উদ্বোধনকালে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, “বাংলাদেশ অর্থনীতি ও সমাজ টেকসইতার দিকে এগিয়ে নিতে সরকারের ভিশন ও হস্তক্ষেপে জাস্ট ট্রানজিশনের মূল্যবোধ প্রতিফলিত করা উচিত। এই পরিবর্তন আমাদের শ্রমিক, মাটি ও বাতাসের রক্ষা করবে এবং আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করবে।”
আইএলওর কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পোটিআইনেন বলেন, “আইএলওর জাস্ট ট্রান্সিশন ফ্রেমওয়ার্ক শুধুমাত্র আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের কথা নয়, বরং তাদের জীবনের প্রভাবিত করে এমন বিষয়গুলিতে তাদের ক্ষমতায়ন ও কণ্ঠস্বর দেওয়ার লক্ষ্যে কমিউনিটিকে অন্তর্ভুক্ত করে।”
সুইডেন দূতাবাসের হেড অব ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন মারিয়া স্ট্রিডসম্যান নীতিনির্ধারণে খণ্ডখণ্ড পদ্ধতি এড়ানো এবং নারীদের ও অনানুষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের নীতিনির্ধারণ সংলাপ ও প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান, যাতে তারা ন্যায়সঙ্গত পরিবর্তনের সুফল পায়।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) বাংলাদেশের প্রতিনিধি জিয়াওকুন শি বলেন, “জাতিসংঘ বাংলাদেশ সরকারকে জলবায়ু অর্থায়নের অংশীদারিত্ব এবং সুবিধা গ্রহণে সহায়তা করছে। যার মধ্যে রয়েছে সবুজ জলবায়ু তহবিল এবং অন্যান্য প্রক্রিয়ার মাধ্যমে অভিযোজন এবং স্থিতিস্থাপকতার ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করা।”
উদ্বোধনী সেশনে আরো উপস্থিত ছিলেন ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেশন কমিটি ফর ওয়ার্কার্স এডুকেশনের (এনসিসিডব্লিউই) চেয়ারম্যান বাদল খান এবং বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের (বিইএফ) সভাপতি আরদাশির কবির। তারা দেশে জাস্ট ট্রানজিশনে শ্রমিক, কমিউনিটি এবং নিয়োগকর্তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরেন।
লউডস ফাউন্ডেশনের ঢাকার প্রধান নওরিন চৌধুরী আইএলওর জাস্ট ট্রানজিশন অ্যাকশন প্রোগ্রাম, এফএও, বাংলাদেশি শ্রম সংস্কার কমিশনের প্রধান এবং ইউনিলিভার ইএসজি বিশেষজ্ঞের সহযোগিতায় বাংলাদেশের জন্য ন্যায়সঙ্গত রূপান্তরের অর্থ কী তা নির্ধারণের ওপর প্রথম প্যানেল আলোচনাটি পরিচালনা করেন।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ডেনমার্ক, নেদারল্যান্ডস, সুইডেনসহ টিম ইউরোপ ইনিশিয়েটিভ এবং গ্লোবাল অ্যাফেয়ারস কানাডাও এই অনুষ্ঠানে সহায়তা করছে।
আইএলও-এর সামাজিক অংশীদার, সরকারের মন্ত্রণালয়, লাইন ডিপার্টমেন্ট, কর্পোরেট ও ব্যবসায়িক সংস্থা, শ্রমিক, যুব সংগঠন ও অর্থায়ন অংশীদাররা এই একাডেমিতে অংশগ্রহণ করে।
ঢাকা/হাসান/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অন ষ ঠ এক ড ম সরক র জলব য
এছাড়াও পড়ুন:
নভেম্বর মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন: সাখাওয়াত
শিশু শ্রমের শাস্তি বাড়িয়ে আগামী নভেম্বর মধ্যে শ্রম আইন সংশোধন করা হবে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম সাখাওয়াত হোসেন।
বুধবার (১৮ জুন) বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “বর্তমানে বাংলাদেশের পরিসংখ্যান কতটা বিশ্বাসযোগ্য আমি জানি না। তবে, বর্তমান সংজ্ঞা অনুযায়ী শিশু শ্রমিকের সংখ্যা ৩৫ লাখ। ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমে রয়েছে ১০ লাখ শিশু। এখান থেকে কীভাবে কমানো যায়, সেটা দেখছি। আর সংজ্ঞাটার কি হবে?”
আরো পড়ুন:
পুনরায় ভিসা কার্যক্রম চালু করায় অস্ট্রেলিয়াকে ধন্যবাদ জানালেন প্রধান উপদেষ্টা
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস স্থাপনে কারো দ্বিমত নেই: উপদেষ্টা
তিনি বলেন, “অনেকে বাপের সঙ্গে মাছ ধরতে যায়। আবার সে স্কুলেও যায়। এগুলোর কি হবে? অনেক পরিবার কাজের জন্য শিশুকে পাঠায় ওস্তাদের সঙ্গে কাজ করার জন্য, পরে সে নিজেই মেকানিক হয়ে যায়। আমি অনুরোধ করব, জোর করে কাউকে পাঠাবেন না। বাচ্চারা স্কুল টাইম শেষ করে যদি ভলান্টিয়ারি কোনো কাজ করে সেটা হয়তো আমরা অন্যরকমভাবে দেখব। জোর করে কাউকে (শিশু) কাজে পাঠানো যাবে না, এটা দণ্ডনীয় অপরাধ।”
সম্প্রতি সুইজারল্যান্ডে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ১১তম সম্মেলনে যোগ দেওয়ার বিষয়ে উপদেষ্টা বলেন, “শ্রমিকদের আইনগুলো শ্রমিকবান্ধব করার চেষ্টা করছি- সেখানে এটা শ্রমিক ও মালিকদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে আমরাও বলেছি। আমরা সবাই এক সুরে কথা বলেছি। এটা ছিল বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় পাওনা।”
“আমি আইএলও ডিজিসহ অনেকে সঙ্গে কথা বলেছি। সবাই বাংলাদেশের এখন যে অগ্রগতি হচ্ছে এটা নিয়ে বেশ সন্তুষ্ট। আমাদের যাওয়ার আগে এগুলো শেষ করতে হব”, যোগ করেন তিনি।
বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো আইএলও-তে এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপভুক্ত (এএসপিএজি) দেশগুলোর সমন্বয়কারী হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছে বলেও জানান সাখাওয়াত হোসেন।
শ্রম উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশে প্রতিবছর ১২ জুন বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস পালন করা হয়। এ বছর ১২ জুন সরকারি ছুটি থাকায় ১৯ জুন দিবসটি উদযাপন করা হবে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য হলো- ‘স্বপ্নের ডানায় ভর করি, শিশু শ্রমের শৃঙ্খল ছিড়ি- এগিয়ে চলি দীপ্ত পায়ে, আশার আগুন বুকে জ্বালি’।
আইএলও শ্রম আইনের বিভিন্ন স্থানে সংশোধনের কথা বলেছিল- এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “আলোচনা হয়নি, তবে তারা জানে আমরা এটা নিয়ে কাজ করছি। আমরা চেষ্টা করছি যাতে আগামী দুই-তিন মাস বা নভেম্বরের মধ্যেই শ্রম আইনের সংশোধনটা কমপ্লিট করতে পারি।”
তিনি বলেন, “শিশু শ্রমের বিষয়ে আমাদের আইনের যে বিধান আছে, এরই মধ্যে সেটার খসড়া করা হয়েছে। সেখানে জরিমানার পরিমাণ কয়েকগুণ বাড়ানো হচ্ছে।”
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/মাসুদ