বাস্তববাদী বাংলাদেশপন্থাই হোক রাজনীতির ভিত্তি
Published: 6th, May 2025 GMT
বিশ্ব রাজনীতি অনেক আগেই বুঝে গেছে, বাম আর ডান– এই দুই মেরুর সংঘাত কোনো বাস্তব সমাধান দিতে পারে না। নতুন শতাব্দীর চ্যালেঞ্জগুলো এতটাই জটিল, বাম বা ডান ঘরানার আদর্শিক কাঠামো দিয়ে উত্তর মেলে না। জলবায়ু পরিবর্তন, প্রযুক্তিগত নির্ভরতা, তথ্যযুদ্ধ, গণমনস্তত্ত্বের অস্থিরতা– এসব একুশ শতকের এমন প্রশ্ন, যার উত্তর দিতে গেলে প্রয়োজন দেশকেন্দ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি। এই প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের জন্যও সবচেয়ে প্রাসঙ্গিক স্লোগান হতে পারে– ‘বাংলাদেশপন্থির হবে বাংলাদেশ’।
বাম-ডানের ভাঙা আয়না
রাজনৈতিক দর্শনে ‘বাম’ বলতে বোঝায় সমাজতান্ত্রিক, সমতানির্ভর, রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থাকে। আর ‘ডান’ নির্দেশ করে ব্যক্তিস্বাধীনতা, মুক্তবাজার অর্থনীতি ও ঐতিহ্যভিত্তিক মূল্যবোধ। যদিও ফ্রেডরিক নিটশে বলেছিলেন, ‘সমস্ত সত্যই দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়’। অর্থাৎ কোনো নির্দিষ্ট ‘ইজম’ দিয়ে সব ব্যাখ্যা করা যায় না। বাংলাদেশের বাস্তবতা এই দার্শনিক সত্যটি আরও জীবন্ত করে তোলে। এখানে বামপন্থিরা বিপ্লবের কথা বলেন। কিন্তু যখনই ক্ষমতার কাছে যান, তখন রূপ পাল্টে যায়। ডানপন্থিরা কথা বলেন বাজার ও জাতীয়তাবাদের। অথচ বৈশ্বিক পুঁজির শৃঙ্খল থেকে নিজেদের মুক্ত করতে পারেন না।
বাংলাদেশপন্থি ভাবনার আবশ্যকতা
‘বাংলাদেশপন্থা’ কোনো একক মতবাদ নয়; একটি বাস্তববাদী রাজনৈতিক দর্শন, যার মূল কেন্দ্রবিন্দু বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণ। এই দর্শনে প্রাধান্য পাবে জনমানুষের চাহিদা, সংস্কৃতির স্বাতন্ত্র্য, অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা ও ভৌগোলিক বাস্তবতা। আধুনিক উন্নয়ন দর্শনের ভাষায়– ‘ডেভেলপমেন্ট ইজ অ্যাবাউট পিপল, নট থিংস’। আর্থিক প্রবৃদ্ধি যদি জনজীবনের উন্নয়ন না ঘটায়, তবে সে প্রবৃদ্ধি অন্তঃসারশূন্য। বাংলাদেশপন্থি রাজনীতি এই জায়গাতেই দাঁড়ায়– এটি সংখ্যা নয়, মানুষকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠে।
প্রয়োগের উদাহরণ
বাংলাদেশের নীতি নির্ধারণে ‘বাংলাদেশপন্থি’ দৃষ্টিভঙ্গি এক নতুন বাস্তবতাভিত্তিক ধারা উপস্থাপন করে, যেখানে প্রথাগত বাম-ডান রাজনীতির সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে স্থানীয় অভিজ্ঞতা, সাংস্কৃতিক অন্তর্দৃষ্টি ও স্বার্থভিত্তিক সিদ্ধান্তই মুখ্য হয়ে ওঠে। যেমন– বামপন্থিরা বরাবরই কৃষকের পক্ষে রাষ্ট্রীয় সহায়তার কথা বলেন। অন্যদিকে ডানপন্থিরা কৃষিকে বাজারের হাতে ছেড়ে দিতে চান। কিন্তু বাংলাদেশের বাস্তবতা এত সরল নয়। এখানে কৃষক মাটির মানুষ। তার শতাব্দীপ্রাচীন অভিজ্ঞতা আছে; তবে দরকার আধুনিক প্রযুক্তির সহায়তা এবং এমন নীতি, যা রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ ও বাজারচালিত প্রণোদনার মধ্যে ভারসাম্য রাখে। বাংলাদেশপন্থা স্থানীয় চাহিদা ও জ্ঞানকে প্রাধান্য দিয়ে বাস্তবভিত্তিক সমাধান খোঁজে।
যেখানে বামপন্থি নীতিনির্ধারকরা বিজ্ঞানমনস্কতা ও ধর্মনিরপেক্ষতার ওপর জোর দেন; ডানপন্থিরা ধর্মীয় মূল্যবোধ ও ঐতিহ্যের পক্ষে থাকেন। সেখানে বাংলাদেশপন্থা বলে, শিক্ষা হতে হবে সর্বাঙ্গীণ। বিজ্ঞান, সাহিত্য, দর্শন ও ধর্ম– সবই শিক্ষার্থীর জ্ঞানভান্ডারে থাকা চাই; তবে সেটি তার নিজস্ব ভাষায় ও সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে। এই দৃষ্টিভঙ্গি তাকে বিশ্বমানব তৈরি করবে ঠিকই, তবে শিকড়হীন নয়, সংস্কারশীল নয়,
বরং সমন্বয়ধর্মী।
যেমন পররাষ্ট্রনীতির প্রশ্নে বামপন্থিরা কিছুটা চীনের দিকে ঝোঁকেন; ডানপন্থিরা পশ্চিমা শক্তিকে অগ্রাধিকার দেন। কিন্তু বাংলাদেশপন্থি পররাষ্ট্রনীতি বলে– অন্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক নির্ধারণ হবে কেবল একটি মাত্র মানদণ্ডে: বাংলাদেশের স্বার্থ যেখানে বেশি রক্ষা পায়, সেই চুক্তিই গৃহীত হবে। এটি কোনো এক পক্ষের প্রতি আনুগত্য নয়, বরং বাস্তবভিত্তিক, অনুগমন নয়। নিজস্ব অবস্থান থেকে পারস্পরিক শ্রদ্ধাভিত্তিক সম্পর্ক গড়ে তোলার কৌশল।
তিনটি নীতির ক্ষেত্রেই বোঝা যায়, বাংলাদেশপন্থা শূন্য থেকে তৈরি শব্দ নয়; গভীর বাস্তবতার প্রতিফলন, যা দেশের মানুষ, মাটি, সংস্কৃতি ও বৈশ্বিক অবস্থানের সমন্বয় ঘটিয়ে ভবিষ্যতের পথ রচনা করতে চায়।
দর্শন ও মনস্তত্ত্বের ভাষ্যে
এই রাজনীতির ভিত গড়ে তোলা যায় ‘প্রাগমাটিজম’ দর্শনের ওপর। উইলিয়াম জেমস ও জন ডিউই বলেছিলেন, ‘সত্য সেই, যা কার্যকর।’ আদর্শ নয়, বাস্তবতায় দাঁড়ানো মতবাদই টিকে থাকে। এ ছাড়া ‘কগনিটিভ ডিজোন্যান্স’ তত্ত্বমতে, মানুষ নিজের বিশ্বাস ও বাস্তব অভিজ্ঞতার মিল না পেলে অস্বস্তিতে পড়ে। বর্তমান প্রজন্মও দেখতে পাচ্ছে, আদর্শিক কথার চেয়ে প্রয়োজন বাস্তব পরিবর্তন। এই পরিবর্তনই ‘বাংলাদেশপন্থা’র ভিত্তি গড়তে পারে।
সামাজিক বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে
তরুণদের বড় অংশ আদর্শিক রাজনীতিতে ক্লান্ত। তাদের চাওয়া ভালো চাকরি, সুশাসন, নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা। তারা দেখতে চায় এমন রাজনৈতিক দর্শন, যেখানে ব্যক্তিগত স্বাধীনতা ও সামাজিক দায়িত্ববোধ দুটোই থাকে। তারা কোনো দল নয়, বাংলাদেশকে ভালোবাসে। যেমন ইতালির ফাইভ স্টার বা ফ্রান্সের ইয়েলো ভেস্ট আন্দোলন বাম-ডানের সীমা অতিক্রম করে সমাজকেন্দ্রিক আন্দোলন গড়ে তুলেছে, তেমনি বাংলাদেশেও সময় এসেছে এমন নতুন ঘরানার রাজনীতির।
সাংস্কৃতিক পুনর্জাগরণ
বাংলাদেশপন্থা শুধু রাজনৈতিক বা নীতিনির্ধারণের ধরন নয়; বরং সাংস্কৃতিক পুনর্নির্মাণের প্রয়াস। যে দৃষ্টিভঙ্গি জাতীয়তাবাদের সংকীর্ণতা থেকে বেরিয়ে এসে সংস্কৃতিকে মানবিক অভিজ্ঞতার কেন্দ্রে স্থাপন করে। এখানে ‘বাংলাদেশ’ বলতে বোঝানো হচ্ছে এমন পরিসর, যেখানে মানুষের অভিজ্ঞতা, অনুভূতি ও ঐতিহ্য স্থান পায় গভীর মানবিক চেতনায়।
রবীন্দ্রনাথ যে মানবতাবাদের কথা বলেছিলেন, সেটি ছিল রাষ্ট্রের সীমানা অতিক্রম করে বিশ্বনাগরিক চেতনার আকাঙ্ক্ষা; বাংলাদেশপন্থা সেই চিন্তাকে বাঙালি অভিজ্ঞতার পরিসরে ধারণ করে। এই দৃষ্টিভঙ্গিতে গান, নাটক, লোককথা, ঘুড়ি ওড়ানো, পুকুরপাড়ে বসে গল্প বলার সংস্কৃতিকে নিছক ‘লোকজ’ বলে পেছনে ফেলে দেওয়া যায় না। বরং এগুলো হচ্ছে জীবনের গভীর সৌন্দর্য ও সহনশীলতার ধারক, যা মানুষকে মানুষ হিসেবে ভাবতে শেখায়। বাংলাদেশপন্থা সংস্কৃতিকে অস্তিত্ববাদী অভিব্যক্তি হিসেবে দেখছে– যেখানে ‘আমি কে’ প্রশ্নটি রাজনীতি দিয়ে নয়; অভিজ্ঞতা, গল্প, সুর ও ভাষার মধ্য দিয়ে উত্তর পায়। তাই এই দৃষ্টিভঙ্গি নতুন মতবাদ চাপিয়ে দেওয়ার বদলে মানুষের অভ্যন্তরীণ বিকাশ, মর্মজ্ঞান ও সহানুভূতির বিকাশে বিশ্বাস রাখে। এটি মূলত ‘কালচারাল হিউম্যানিজম’। যেখানে মানবতাকে কেন্দ্র করে সংস্কৃতির নতুন পাঠ রচনা করা হয়; যেখানে ‘বাঙালি হওয়া’ মানে শুধু জাতিগোষ্ঠী নয়, বরং অভিজ্ঞতালব্ধ দার্শনিক অবস্থান।
সময় এসেছে, পথ বদলানোর আজকের তরুণ, আজকের শিক্ষক, আজকের কৃষক– তারা আর কোনো লেবেল চায় না। তারা চায় উত্তর। উত্তর দিতে হলে পুরোনো আদর্শের খোলস ছাড়তে হবে। বাংলাদেশের সামনে এখন সুবর্ণ সুযোগ নতুন রাজনৈতিক ভাষা গড়ে তোলার; যেখানে ‘ইজম’ নয়; ‘স্বার্থ’, ‘সংস্কৃতি’ আর ‘মানবিকতা’ হবে মূল চালিকাশক্তি।
আজকের এই স্লোগান তাই শুধু কথার কথা নয়; আগামী দিনের রাজনীতির নতুন যাত্রার সূচনা– ‘বাম’-‘ডান’-এর দিন শেষ। বাংলাদেশপন্থির হোক বাংলাদেশ।
আলাউদ্দীন মোহাম্মদ: যুগ্ম সদস্য সচিব, জাতীয় নাগরিক পার্টি
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড নপন থ র ল দ শপন থ র জন ত ক র জন ত র ব মপন থ ব স তবত আদর শ আজক র
এছাড়াও পড়ুন:
আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসা নিচ্ছেন তো
ইসলামে সুস্থতার লক্ষ্য হলো আল্লাহর ইবাদতের পথে অবিচল থাকা। যদি কোনো বাধা এই পথে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে, তবে তা দূর করা প্রয়োজন। ইসলাম বলে, মানসিক অসুস্থতা শুধু ক্লিনিক্যাল লক্ষণে সীমাবদ্ধ নয়।
ইসলাম চরিত্রের ত্রুটি, যেমন অহংকার (কিবর), হিংসা (হাসাদ) বা দুনিয়ার প্রতি অতিরিক্ত ভালোবাসা (হুব্বুদ দুনিয়া), যা ক্লিনিক্যাল মাত্রায় না পৌঁছালেও আধ্যাত্মিক অসুস্থতা হিসেবে বিবেচনা করে।
নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যার হৃদয়ে এক পরমাণু পরিমাণ অহংকার থাকবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯১)
কীভাবে চিকিৎসা নেবেনইসলামি ঐতিহ্যে আধ্যাত্মিক প্রশিক্ষণ (রিয়াদাহ আন-নাফস) এবং আধ্যাত্মিক গুরুর সঙ্গে কাজ করা আধ্যাত্মিক স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায়। এই প্রশিক্ষণ আমাদের দৈনন্দিন চাপ মোকাবিলার জন্য মানসিক ও আধ্যাত্মিক কৌশল শেখায়।
যার হৃদয়ে এক পরমাণু পরিমাণ অহংকার থাকবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯১আরও পড়ুনআয়েশা (রা.) রাগ করলে নবীজি (সা.) কী করতেন১২ জুন ২০২৫যখন কেউ ক্লিনিক্যাল মানসিক অসুস্থতায় ভোগেন, তখন প্রথমে ক্লিনিক্যাল চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের দৈনন্দিন কার্যকারিতা পুনরুদ্ধার করা হয়। এরপর আধ্যাত্মিক ত্রুটিগুলোর চিকিৎসা শুরু হয়, যাতে তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি (মারদাতিল্লাহ) অর্জন করতে পারে।
এ জন্য ভালো হলো, কোনো আল্লাহভীরু মানুষের সান্নিধ্য গ্রহণ করা। পবিত্র কোরআন বলছে, ‘হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যপন্থীদের সান্নিধ্য গ্রহণ করো’ (সুরা তাওবা, আয়াত: ১১৯)।
শারীরিক স্বাস্থ্যের মতো, মানসিক ও আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যের জন্যও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা অপরিহার্য। আধুনিক সমাজের ক্রমাগত উৎপাদনশীলতার চাপ থেকে মুক্তি পেতে আমাদের জীবনে বিরতি (পজ) আনতে হবে।
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাচারটি অভ্যাস আমাদের আত্মাকে পুষ্টি দেয় এবং ভারসাম্য ফিরিয়ে আনে:
১. চিন্তামূলক অভ্যাস: নামাজের আগে বা পরে চোখ বন্ধ করে ধীরে ধীরে শ্বাস নিন। প্রকৃতির মধ্যে বসে ‘আল্লাহ’ নাম জপ করুন, আল্লাহর প্রতি নিমগ্ন ধ্যান করুন; যাকে ইসলামে মুরাকাবা। এ ছাড়া বই পড়া (বিবলিওথেরাপি) মানসিক চাপ কমায় এবং আত্মসচেতনতা বাড়ায়। যেমন: গাজার মুসলিমদের দুঃখের কথা ভেবে নিজের দুঃখকে কম গুরুত্বপূর্ণ মনে হতে পারে।
২. সৃজনশীল অভ্যাস: ধাঁধা, আসবাব তৈরি বা অঙ্কনের মতো সৃজনশীল উপকারী কাজ মননশীলতা বাড়ায়। এটি ইসলামের ইহসান (শ্রেষ্ঠত্ব) ধারণার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা উদ্দেশ্য ও নিয়তের সঙ্গে কাজ করতে উৎসাহিত করে। এই কাজগুলো মানসিক শান্তি দেয় এবং বার্নআউট প্রতিরোধ করে।
আরও পড়ুননামাজে দাঁড়িয়ে নানা চিন্তার আনাগোনা২২ জানুয়ারি ২০২৩শারীরিক স্বাস্থ্যের মতো, মানসিক ও আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যের জন্যও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা অপরিহার্য। আধুনিক সমাজের ক্রমাগত উৎপাদনশীলতার চাপ থেকে মুক্তি পেতে আমাদের জীবনে বিরতি (পজ) আনতে হবে।৩. শারীরিক অভ্যাস: ব্যায়াম, বাগান করা বা তিরন্দাজির মতো কার্যকলাপ আত্মার প্রশিক্ষণ (রিয়াদাহ আন-নাফস) দেয়। নবীজি (সা.) সাঁতার, ঘোড়দৌড়, এবং তিরন্দাজিকে উৎসাহিত করেছেন, কারণ এগুলো শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বাড়ায়। প্রকৃতিতে হাঁটা আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি কৃতজ্ঞতা জাগায় এবং আধ্যাত্মিক সংযোগ গড়ে।
৪. আধ্যাত্মিক অভ্যাস: পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আবশ্যক। এরপর রাতের নামাজ (তাহাজ্জুদ), সোমবার ও বৃহস্পতিবার সুন্নত রোজা রাখা এবং কোরআন তিলাওয়াতের মতো অভ্যাস বাড়ানো যেতে পারে। প্রতিদিন কয়েকটি পয়সা দিয়ে হলেও সামান্য সাদাকা আত্মার পুষ্টি জোগায়। এই অভ্যাসগুলো আমাদের নফসকে নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য বাড়ায়।
প্রতিবেশীদের ভূমিকামহানবী (সা.)-এর জীবন থেকে আমরা শিখি, নির্জনতা নয়, বরং মানুষের সঙ্গে সংযোগ মানসিক ও আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। তিনি একজন ব্যক্তির দুঃখ লক্ষ করে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন এবং দোয়া শিখিয়ে সান্ত্বনা দিয়েছেন।
আমাদেরও পরিবার, বন্ধু এবং প্রতিবেশীদের প্রতি সতর্ক থাকতে হবে। জুমার নামাজ বা জামাতে নামাজে আমরা একে অপরের খোঁজ নিতে পারি। যদি কেউ দুর্বল মনে হয়, তবে তাদের সমর্থন দিন বা বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠান। এই সহানুভূতি ইসলামের শিক্ষার মূল।
সূত্র: মুসলিম ডটএসজি
আরও পড়ুনহিজরি কালপঞ্জি: ইসলামি পরিচয়ের ধারণা২৩ মে ২০২৫