‘আমি এখন ওকে বারবার বলি “মাম্মি” বলো, “মাম্মি” বলো। ও বলার চেষ্টা করে। কখনো ও বলতে পারে। কখনো পারে না। যখন “মাম্মি” বলতে পারে, আমার মনে এমন আনন্দ হয়! বারবার শুনেও মনটা ভরে না!’

আনন্দ নিয়ে প্রথম আলোকে কথাগুলো বলছিলেন মা নিশামনি। তিনি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত শিশু বাসিত খান মুসার (৭) মা। যে মুসার বেঁচে ওঠাই ছিল অলৌকিক, সেই মুসার মুখে ‘মাম্মি’ ডাক মা নিশামনির কাছে এক অনির্ণেয় আনন্দ।

সাড়ে ৯ মাস পর তিনি মা ডাক শুনেছেন। তাই দিনক্ষণও মনে রেখেছেন। ১ মে সকাল আটটায় ফিজিওথেরাপি চলার একপর্যায়ে ‘মাম্মি’ বলে ডেকেছিল মুসা।

গত ১৯ জুলাই গুলিবিদ্ধ হয় সাত বছর বয়সী শিশু বাসিত খান মুসা। অক্টোবর মাসে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তোলা ছবি (ডানে)। বাঁয়ে মুসার আগের ছবি.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

কৃষি ক্যাডারের তিন কর্মকর্তা সাময়িক বরখাস্ত

কৃষি ক্যাডারের তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়। প্রাথমিক তদন্তে তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

সাময়িকভাবে বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন- কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) সাবেক উপপরিচালক (প্রশাসন) ও সদ্য মেহেরপুর হর্টিকালচার সেন্টারে বদলিকৃত ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রশীদ, মৌলভীবাজার জেলা বীজ প্রত্যয়ন অফিসার মোহাম্মদ গোলাম মোস্তফা এবং ডিএই হবিগঞ্জের অতিরিক্ত উপপরিচালক মো. রেজাউল ইসলাম (মুকুল)।

মঙ্গলবার কৃষি মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯ এর ৩০ (ক), (খ), (গ) ও (ঘ) এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর বিধি ৩(খ) ও ৩(ঙ)-এর আওতায় অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮–এর ধারা ৩৯(১) অনুযায়ী তাঁদের সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বরখাস্তকালীন তাঁরা বিধি অনুযায়ী খোরপোষ ভাতা পাবেন।

কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তাসহ আরও কিছু কর্মকর্তা গত ৫ আগস্টের পর থেকে নিজেদের ‘বিএনপিপন্থী পরিচয়’ তুলে ধরে অনিয়ম ও বিশৃঙ্খল কর্মকাণ্ডে জড়ান। ড. মুহাম্মদ মাহবুবুর রশীদের বদলির আদেশকে কেন্দ্র করে তাঁরা রাজধানীর খামারবাড়ি এলাকায় অবস্থান কর্মসূচি, সংবাদ সম্মেলন এবং এমনকি সড়ক অবরোধের মতো কর্মসূচি পালন করেন।

এই কর্মকর্তাদের একাংশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে বিশৃঙ্খল করে তোলে বলে দাবি করেছে মন্ত্রণালয়। এতে সেখানে কর্মরত অন্যান্য কর্মকর্তারা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। বদলির প্রজ্ঞাপন জারির পরপরই এই কর্মকর্তারা নতুন পদায়ন হওয়া একজনকে নানা হুমকি দেন। পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছায় যে খামারবাড়ির অভ্যন্তরে স্বাভাবিক দাপ্তরিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়। একাধিক কর্মকর্তা সংবাদ সম্মেলন করে নিজের বদলি নিয়ে প্রকাশ্যে আপত্তি জানান। এতে সরকারি কর্মচারীদের নিরপেক্ষতা ও আচরণবিধি ভঙ্গ হয়েছে বলে মনে করছে মন্ত্রণালয়।

কৃষিসচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়ান স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে পাওয়া তথ্য ও দালিলিক প্রমাণ অনুযায়ী সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত চলবে। বিশৃঙ্খলা ও অনিয়মে জড়িত অন্য কর্মকর্তাদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

মন্ত্রণালয়ের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তাদের নিরপেক্ষতা রক্ষা ও দাফতরিক শৃঙ্খলা বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেউই ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক পরিচয়ে সরকারি ব্যবস্থাপনাকে অস্থিতিশীল করতে পারেন না।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই ঘটনা উদাহরণস্বরূপ ব্যবহৃত হবে, যেন ভবিষ্যতে আর কেউ প্রশাসনিক আদেশকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা তৈরির চেষ্টা না করেন।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ