তিন দফা দাবি আদায় এবং শাহবাগে পুলিশি হামলার প্রতিবাদে গাইবান্ধার সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় দিনের মতো একযোগে কর্মবিরতি পালন করছেন শিক্ষকরা। ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে এলেও পাঠদান বন্ধ ছিল।

সরেজমিনে সোমবার (১০ নভেম্বর) জেলার রহমান নগর, কিশামত বালুয়া, আসাদুজ্জামান, এনএইচ মডার্ণ ও কলেজিয়েট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়, শিক্ষকরা নিয়মিত বিদ্যালয়ে উপস্থিত থাকলেও ক্লাসে যাচ্ছেন না। বিদ্যালয়ের বারান্দায় অনেক শিক্ষার্থীকে খেলাধুলা করতে দেখা গেছে। আবার অনেককেই বাড়ি ফিরে যেতে দেখা যায়।

আরো পড়ুন:

গোপালগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কর্মবিরতি চলছে

প্রাথমিকের শিক্ষকদের কর্মবিরতি স্থগিত, কর্মসূচি চলবে

সুমাইয়া, ময়না, প্রান্তর নামের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, স্যারদের দাবি না মানলে স্যাররা ক্লাস নেবেন না। আমরা চাই, তাদের দাবি পূরণ হোক, তাহলে স্যাররাও খুশি হয়ে ক্লাস নেবেন।

অভিভাবকরা হঠাৎ শিক্ষকদের এই কর্মবিরতিতে চিন্তিত। রহিম মিয়া নামে এক অভিভাবক বলেন, “হঠাৎ করে শিক্ষকরা কর্মবিরতি করায় সন্তানরা স্কুলে গিয়ে ফিরে আসছে। সামনে পরীক্ষা, এখন ক্লাস না হলে ওদের অনেক ক্ষতি হবে। শিক্ষকদের এই ন্যায্য দাবি সরকার মেনে নিলে শিক্ষকরা তাদের কর্মে ফিরে আসতে পারে এবং শিক্ষার্থীরা সুশৃঙ্খলভাবে পড়ালেখা করতে পারে।”

এ বিষয়ে গাইবান্ধা পৌরসভার কলেজিয়েট মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক আরেফিন আকতার বলেন, “আমাদের দশম গ্রেড প্রদানসহ তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য এই কর্মসূচি চলছে। কেন্দ্রীয় কর্মসূচির আন্দোলনে অনেক শিক্ষক পুলিশি লাঠিচার্জে আহত হয়েছেন। সরকারের উচিত দ্রুত বিষয়টি সমাধান করা। যত তাড়াতাড়ি দাবি মানবে, তত দ্রুত আমরা ক্লাসে ফিরব। শিক্ষার্থীদের এই সাময়িক ক্ষতি আমরা পরবর্তীতে পুষিয়ে দেব।”

গাইবান্ধা সদর উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সহকারি শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো.

ময়নুর রহমান মিলন জানান, প্রাথমিকের কেন্দ্রীয় শিক্ষক সংগঠনগুলোর ঘোষিত কর্মসূচি সফল করার জন্য গাইবান্ধায় সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি চলছে। তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন হলেই তারা পুনরায় ক্লাসে ফিরবেন।

ঢাকা/মাসুম/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ ক ষকদ র দ র কর ম শ ক ষকর সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

কয়েক মাসের বিদ্যুৎ বিল একসঙ্গে, আর্থিক চাপে কালীগঞ্জের গ্রাহকরা 

গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলার জাংগালিয়া ইউনিয়নের সরিষারচালা, বরাইয়া উত্তর পাড়া ও দুবরিয়া গ্রামে পল্লী বিদ্যুতের প্রায় ৮০০ গ্রাহককে কয়েক মাসের বিদ্যুৎ বিল ও জরিমানা একসঙ্গে দিতে হচ্ছে। গ্রাহকদের অভিযোগ, পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের গাফিলতির কারণে তাদেরকে আর্থিক চাপে পড়তে হচ্ছে।

দুবরিয়া গ্রামের অটোরিকশাচালক মো. মোজাফফ হোসেন (৫৮) বলেছেন, “কয়েক মাস ধরে আমাদের বাড়িতে কোনো বিল আসেনি। হঠাৎ ৩–৪ মাসের বিল একত্রে এসেছে। আমি নিয়মিত বিল পরিশোধ করি। বিদ্যুৎ অফিসের ভুলের জন্য আমাকে এত টাকা একসাথে দিতে হচ্ছে। এটা দিতে পারছি না।”

দুবরিয়া বাজারের রিকশা মেকার মুসাদ শেখ বলেন, “আমার বিল এসেছে ৫ হাজার টাকা। এত টাকা একসাথে পরিশোধ করা আমার পক্ষে সম্ভব নয়। সংসার চালাব নাকি বিল পরিশোধ করব, এই দ্বিধায় পড়েছি।” 

স্থানীয় মুদি দোকানদার শামসুল ভূঁইয়া বলেন, “প্রতি মাসে আমাদের বিল পাঠানো হোক, এতে সমস্যা নেই। কিন্তু, তিন-চার মাসের বিল একত্রে পাঠিয়ে জরিমানা নেওয়া পল্লী বিদ্যুতের দোষ। আমাদের কাছ থেকে কেন তা নেওয়া হবে?”

কলেজ শিক্ষার্থী কাউছার বলেন, “গ্রামে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ বসবাস করে। সব মানুষের পক্ষে একত্রে কয়েক মাসের বিল পরিশোধ করা সম্ভব নয়। মাসে মাসে বিল না নেওয়ায় সমস্যা হচ্ছে।”

বরাইয়া গ্রামের আব্দুল মান্নান ফকির বলেন, “আমরা বারবার ডিজিএমকে জানিয়েছি। তারপরও কয়েক মাসের বিল একত্রে পাঠানো হয়েছে। মিটার রিডিং নেওয়ার জন্য কেউ আমাদের বাড়িতে আসেনি।”

একই গ্রামের গৃহিনী আছমা বলেন, “আমরা প্রতি মাসে বিদ্যুৎ বিল দিই। চার মাস ধরে কোনো বিল আসেনি। এখন চার মাসের বিলসহ জরিমানা দিতে হচ্ছে। খেয়ে না খেয়ে বিল পরিশোধ করতে হচ্ছে। এ সমস্যা আমরা করি না, অথচ জরিমানা দিতে হচ্ছে।” 

এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুতের কালীগঞ্জ জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) আক্তার হোসেন রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেছেন, “গত মাসে একটি অভিযোগ পেয়েছিলাম। প্রাথমিক তদন্তে শেষ মাসের বিলের সত্যতা পেয়েছি। আগের মাসের বিষয়গুলো আমাদের জানা ছিল না। গ্রাহকরা বিল না পেলে সাথে সাথে অফিসে জানাতে হবে। চাইলে কালীগঞ্জ অফিসে এসে বিলগুলো ভেঙে ভেঙে নেওয়া সম্ভব। যে কর্মচারী এই কর্মকাণ্ডে জড়িত, তাকে লিখিত অভিযোগসহ পল্লী বিদ্যুৎ গাজীপুর জেনারেল ম্যানেজারের (জিএম) কাছে পাঠানো হয়েছে।”

ঢাকা/রফিক সরকার/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ