Samakal:
2025-05-29@18:50:40 GMT

শারজাহ ভুলে লাহোরে আশা

Published: 28th, May 2025 GMT

শারজাহ ভুলে লাহোরে আশা

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রত্যাবর্তনের পর থেকে যে কয়টি দেশ পাকিস্তানে বেশি খেলতে গেছে, বাংলাদেশ তার অন্যতম। ২০২০ সালে দ্বিপক্ষীয় সিরিজ, ২০২৩ সালের এশিয়া কাপ আর গত মার্চে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ম্যাচ খেলেছে তারা। রাওয়ালপিন্ডি ও লাহোরে খেলা হয়েছে বেশি। লিটন কুমার দাসরা গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে টি২০, ওয়ানডে দুই সংস্করণই খেলেছেন। হার-জিত উভয় স্বাদ নেওয়া হয়েছে। 

আফগানিস্তানের বিপক্ষে এশিয়া কাপের ম্যাচ জিততে পারলেও স্বাগতিক পাকিস্তানের বিপক্ষে অভিজ্ঞতা সুখকর নয়। সাদা বলের ক্রিকেটে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়তে পারেননি লিটনরা। এবার গেরো খোলার পালা। কারণ পাকিস্তানের বিপক্ষে ভালো খেলতে না পারলে সমর্থকরা নেতিবাচক ধারণার ভেতরে থাকবেন। বাংলাদেশ সংযুক্ত আরব আমিরাতে সিরিজ হারের ক্ষতকে খুঁচিয়ে রক্তাক্ত করবেন সমালোচকরা। তাই আমিরাতের কাছে সিরিজ হারে হৃত আত্মবিশ্বাস ফেরাতে জয়ের বিকল্প নেই। কোচ ফিল সিমন্সের প্রত্যাশা পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ জিতবেন। অধিনায়ক লিটন কুমার দাসও গতকাল ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে দৃঢ়তার সঙ্গে বলেছেন, বিশ্বের যে কোনো দলকে হারাতে সক্ষম তারা। 
বাংলাদেশ টি২০ ক্রিকেটে অত ভালো খেলে না। পছন্দের ওয়ানডে সংস্করণেও খারাপ সময় পার করছে ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপ থেকে। 

লাহোরের সংবাদ সম্মেলনে তা মেনে নিয়ে লিটন বলেন, ‘আমরা ধারাবাহিক দল হলে র‍্যাঙ্কিংয়ের ওপরের দিকে থাকতাম। আমরা যেহেতু পেছনের দল, তার মানে আমাদের কোথাও না কোথাও খুঁত আছে। সে খুঁত সারানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। আশা করি, সামনে ভালো কিছু হবে।’

ভারতের সঙ্গে সামরিক লড়াইয়ের পর কিছু সীমাবদ্ধতা মেনে নিয়ে সিরিজ আয়োজন করে পিসিবি। পাঁচ ম্যাচের সিরিজ কমে হয়েছে তিন ম্যাচ, ডিআরএস ছাড়াই খেলতে হচ্ছে। এর পরও বাংলাদেশ সিরিজ খেলায় কৃতজ্ঞ দেশটি। তবে দেশটির সাংবাদিকরা ঠিকই লিটনকে দলের নেতিবাচক দিকগুলো মনে করিয়ে দেন।

ইউএইর কাছে হারের পর দলকে উজ্জীবিত করার চ্যালেঞ্জ কতটা জানতে চাইলে লিটন বলেন, ‘আমরা প্রত্যাশা অনুযায়ী খেলতে পারিনি। তবে এটি একটি নতুন সিরিজ। দক্ষতা কাজে লাগানোর চেষ্টা থাকবে। এটা ভিন্ন বলের গেম। আমাদের বিশ্বাস আছে, যে কোনো দলকে হারাতে পারি। অতীতে কী হয়েছে, সেগুলো নিয়ে ভাবছি না। আমরা আগামীর কথা ভাবছি।’

বাংলাদেশের মতো পাকিস্তান দলটিও ২০২৬ সালের টি২০ বিশ্বকাপ মাথায় রেখে গড়া। যে কারণে শাহিন আফ্রিদি, বাবর আজম, মোহাম্মদ রিজওয়ানের মতো সিনিয়র ক্রিকেটারদের বাদ দিয়ে নতুনদের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। বর্তমান প্রজন্ম আবার টি২০ পারদর্শী। চার-ছক্কা হাঁকাতে পারে। এই ব্যাটারদের বড় ইনিংস খেলার সুযোগ দিতেই গাদ্দাফি স্টেডিয়ামের উইকেট করা হয়েছে ব্যাটিংবান্ধব। পিএসএলের মতো আজকের ম্যাচেও বড় স্কোর হবে বলে মনে করেন টাইগার দলপতি। সমস্যা হচ্ছে লাহোরে পাকিস্তানের বিপক্ষে বড় ইনিংস খেলার অভিজ্ঞতা নেই টাইগারদের। ২০২০ সালে খেলা দুই ম্যাচ টি২০ সিরিজে দলীয় সংগ্রহ ছিল ১৪১ ও ১৩৪ রানের। এশিয়া কাপের ওয়ানডে ম্যাচেও লড়াই জমাতে পারেনি। 

তবে এবার ভালো খেলতে প্রেরণা তাড়া দিচ্ছে ইউএইর কাছে হারের ক্ষত আর লাহোরে আগে খেলার অভিজ্ঞতা। এ ভেন্যুতে বর্তমান দলের ৯ জন ম্যাচ খেলেছে। এ কারণে সিরিজে দল হিসেবে জ্বলে ওঠার সম্ভাবনা দেখেন লিটন। তাঁর মতে, ‘আমার ব্যাটিং রোল গুরুত্বপূর্ণ। আমি চেষ্টা করব ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে। তবে আমাদের দলের অনেক ব্যাটার ভালো ছন্দে আছে। দল হিসেবে ছন্দ দেখাতে পারলে ভালো কিছু হবে।’ এই ভালো শুরুতেই হোক।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারি চিকিৎসা সহায়তার অর্থ মিলছে রোগীর মৃত্যুর পর

ফুসফুসে ক্যান্সারের কারণে সরকারি অর্থ সহায়তার জন্য সমাজসেবা অফিসে আবেদন করেছিলেন মির্জাপুর উপজেলার চিতেশ্বরী গ্রামের ইসমাইল হোসেন। সম্প্রতি চেক নিয়ে তাঁর মেয়ে ইসমত আরা বলেন, তাঁর বাবা চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০২২ সালে মারা যান। তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৩ মে সমাজসেবা অফিস থেকে চিকিৎসা সহায়তা বাবদ ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে। বেঁচে থাকতে টাকাটা পেলে কাজে লাগত।
জামুর্কী ইউনিয়নের কড়াইল গ্রামের লুৎফর রহমান তালুকদারের মেয়ে ফাতেমা আক্তারের বাবা ২০২৩ সালে স্ট্রোক করে প্যারালাইজড হয়ে যান। তাঁর চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছিল পরিবার। চিকিৎসার জন্য ২০২৩ সালে সাজসেবা অফিসে আবেদন করেছিলেন তারা। কিন্তু গত বছরের মার্চে বাবা মারা যান জানিয়ে তিনি বলেন, বাবার মৃত্যুর এক বছর পর তারা সরকারি অর্থ সহায়তার চেক পেয়েছেন।
কিডনির সমস্যা, লিভার সিরোসিস, হৃদরোগ, ক্যান্সারের মতো জটিল রোগের চিকিৎসায় সহায়তা হিসেবে সমাজসেবা দপ্তরের মাধ্যমে সহায়তা দেয় সরকার। কিন্তু আবেদনের পর টাকা পেতে দীর্ঘ সময় লাগছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অর্থ মিলছে রোগীর মৃত্যুর পর। যখন টাকা হাতে আসছে, তখন তা রোগীর কোনো কাজে আসে না। এমন কিছু ঘটনা ঘটেছে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে।
বিভিন্ন এলাকার অন্তত ১০ জন জটিল রোগীর ক্ষেত্রে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর পর তাদের পরিবারের সদস্যরা পেয়েছেন সরকারি অর্থ সহায়তা। বিপুল সংখ্যক আবেদন যাচাই-বাছাই করে অনুমোদনের ক্ষেত্রে দীর্ঘ সময় লেগে যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
সমাজসেবা অফিস থেকে জানা গেছে, ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিস, স্ট্রোকে প্যারালাইজড, জন্মগত হৃদরোগ ও থ্যালাসেমিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা দেয় সরকার। আগে মন্ত্রণালয়ে সরাসরি আবেদন করলে এ সহায়তা পাওয়া যেত। ২০২১ সাল থেকে অনলাইনে আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়। আবেদনের হার্ড কপি উপজেলা সমাজসেবা অফিসে জমা দেওয়ার পর সেগুলো জেলা সমাজসেবা অফিস হয়ে সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে যায়।
জেলা প্রশাসককে সভাপতি ও জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তাকে নিয়ে ছয় সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি রয়েছে। সে কমিটি যাচাই-বাছাই শেষে যাদের মনোনীত করে, তারা এ সহায়তা পান। এ প্রক্রিয়া শেষ হতে ১৫ দিন থেকে তিন মাস সময় লাগে। সরকার তিন মাস পর পর এ খাতে অর্থ বরাদ্দ দেয়। যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ আসে, সে তুলনায় অন্তত ২০ গুণ আবেদন জমা হয়।
প্রতি বছর উপজেলায় এভাবে অন্তত ১০০ থেকে ১১০ জন জটিল রোগী অর্থ সহায়তা পান বলে সমাজসেবা কর্মকর্তা জানিয়েছেন। ৫০ হাজার থেকে শুরু করে বিভিন্ন অঙ্কের টাকা দেওয়া হয়। সম্প্রতি উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সরকারি আর্থিক সহায়তার চেক বিতরণ করা হয়। এদিন ১০ জন রোগীকে অর্থ দেওয়া হয়েছে। তাদের সবার মৃত্যু হওয়ায় পরিবারের সদস্যরা চেক গ্রহণ করেন। এদিন প্রায় সবাই অশ্রুসিক্ত নয়নে দীর্ঘশ্বাস ফেলেছেন। কারণ, যার জন্য এ সহায়তা, তিনিই বেঁচে নেই।
উপজেলার ১০ জনের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আবেদনের দুই থেকে তিন বছর পর হওয়ার পর আর্থিক সহায়তা পেয়েছেন তারা। এরই মধ্যে সবাই মৃত্যুবরণ করেছেন। তাদের নামে বরাদ্দ হওয়া চেক পরিবারের সদস্যদের হাতে তুলে দিয়েছে সমাজসেবা অফিস। মীর দেওহাটা গ্রামের জুলহাস মিয়ার বাবা মোসলেম উদ্দিন কিডনি রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০২৩ সালে মারা যান। ২০২২ সালে তাঁর বাবা সহায়তার জন্য আবেদন করেছিলেন। গত ১৩ মে তাঁর পরিবার ৫০ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তার চেক পেয়েছে।
একইভাবে উপজেলার পেকুয়া গ্রামের শুকুর আলী, ভড়রা গ্রামের কহিনূর বেগম, ধেরুয়া গ্রামের ফুল খাতুন, কামারপাড়া গ্রামের জাহেদা বেগম, গোড়াই গ্রামের আলমগীর হোসেন, পাকুল্যা গ্রামের ওয়াসিম, বাঁশতৈল গ্রামের সুপিয়াদের নামে বরাদ্দ হয় সহায়তা। তাদের চেক পরিবারের সদস্যদের কাছে দেওয়া হয়েছে।
শফি উদ্দিন মিয়া অ্যান্ড একাব্বর হোসেন টেকনিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন বলেন, জটিল রোগের রোগীরা জীবিত থাকতে সহায়তা পেলে অর্থটা সঠিক কাজে ব্যবহার হবে। দ্রুত সহায়তা দিতে কর্তৃপক্ষের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
বিপুল সংখ্যক আবেদনের কারণে সহায়তা পেতে দীর্ঘ সময় লেগে যায় বলে জানান উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোবারক হোসেন। তিনি বলেন, জেলার পাশাপাশি উপজেলা কমিটি গঠন, সিভিল সার্জন নির্ভর না হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগকে এ কাজে যুক্ত করা প্রয়োজন। এতে চিকিৎসা সহায়তা দ্রুত ও অধিকতর মুমূর্ষুদের বাছাই করা সহজ হতো।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বগুড়ায় সাবেক এমপির বিরুদ্ধে হত্যা মামলা, দেড় বছর পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন
  • সৌদি আরবে দিনমজুর ওয়াহিদুর এখন ফ্রিল্যান্সার, মাসে আয় আড়াই লাখ টাকার বেশি
  • যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে কতটা অবদান রাখেন বিদেশি শিক্ষার্থীরা
  • গাজায় হামাসের প্রধান মোহাম্মদ সিনওয়ারকে হত্যার দাবি নেতানিয়াহুর
  • ইয়ামালের দর হাঁকাল বার্সা, তরুণ প্রতিভার মূল্য কত?
  • চট্টগ্রাম মেডিকেলে মাতৃমৃত্যু জাতীয় গড়ের চেয়ে বেশি
  • প্রসূতির মৃত্যু কমলেও লক্ষ্যপূরণ বহুদূর
  • চলতি বছর বিশ্বের প্রযুক্তি খাতে ছাঁটাই ৬১ হাজার, আরও হওয়ার আশঙ্কা
  • সরকারি চিকিৎসা সহায়তার অর্থ মিলছে রোগীর মৃত্যুর পর